অনঙ্গমোহিনী দেবী
অবয়ব

অতল বিষাদে মোরে ডুবাইয়ে আজ!
নিয়ে গেছে সুখ সাধ সুখের বাসনা,
রেখে গেছে জন্ম শোধ হৃদয় বেদনা।
—অনঙ্গমোহিনী দেবী
অনঙ্গমোহিনী দেবী (২০ ফেব্রুয়ারি ১৮৬৪ - ১৩ মে ১৯১৮) ছিলেন ব্রিটিশযুগের ত্রিপুরার রাজকন্যা ও কবি। তিনি ত্রিপুরার রাজা বীরচন্দ্র মাণিক্যের কন্যা ছিলেন। তার তিনটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কণিকা’ (১৮৯৯), দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘শোকগাথা’ (১৯০৬), তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘প্রীতি’ (১৯১০)। তিনি স্বামীর প্রয়াণের পর তিনি শোকগাথা নামক কাব্যগ্রন্থটি লেখেন। তার কবিতা একসময়ে প্রায় সকল বাংলা মাসিকপত্রেই নিয়মিত প্রকাশিত হতো। প্রকৃতির সঙ্গে আপন অনুভবের সংমিশ্রণের কাব্যময় প্রকাশ ঘটে তার লেখায়। তিনি সঙ্গীত ও চিত্রবিদ্যায় নিপুণ ছিলেন। তার শিল্পনৈপুণ্য আমেরিকা ও জাপান থেকে প্রশংসালাভ করে।
উক্তি
[সম্পাদনা]- চির তরে চ’লে গেছে হৃদয়ের রাজ,
অতল বিষাদে মোরে ডুবাইয়ে আজ!
নিয়ে গেছে সুখ সাধ সুখের বাসনা,
রেখে গেছে জন্ম শোধ হৃদয় বেদনা।- চির স্মৃতি, শোকগাথা - অনঙ্গমোহিনী দেবী, কুন্তলীন প্রেসে মুদ্রিত, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১১
- সুখ রবি চিয় অস্তাচলে!
দিবস যামিনী মোর, কেবলি আঁধার ঘোর
আঁধার আমার তরে চিরোজ্জ্বল রবি,
স্মৃতি-দরপনে শুধু ভাসে শোক-ছবি।- নিশীথে, শোকগাথা - অনঙ্গমোহিনী দেবী, কুন্তলীন প্রেসে মুদ্রিত, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৮
- তাই ভাবি মানব জীবন,
নহে বালকের খেলা,
ক্ষণিক মায়ার মেলা,
এ নহে গো নিশার স্বপন;
জীবনের পর পারে আছে নব দেশ―
চির বিভাময়, নাহি মলিনতা লেশ।- মৃত্যু, শোকগাথা - অনঙ্গমোহিনী দেবী, কুন্তলীন প্রেসে মুদ্রিত, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫১
অনঙ্গমোহিনী দেবীকে নিয়ে উক্তি
[সম্পাদনা]- পাঠকগণ এই কবিতাগ্রন্থের প্রত্যেক কবিতায় রচয়িত্রীর কবিত্বশক্তির সবিশেষ পরিচয় পাইবেন। এই কবিতাগুলি, রাজকুমারী অনঙ্গমোহিনী দেবী, তাঁহার স্বর্গবাসী স্বামীর চরণে উৎসর্গ করিয়াছেন; এবং তাঁহারই স্মৃতিতে গ্রন্থের সকল গুলি কবিতা রচিত। যে ছবি সম্মুখে বাখিয়া এই শোক-গাথা গুলি গীত হইয়াছে, সে দিকে তাকাইতে গেলে পাষাণ হৃদয়ও গলিয়া যায়:―
- ‘শোকগাথা’ কাব্যগ্রন্থের ভূমিকায় সাহিত্যিক বিজয়চন্দ্র মজুমদার, শোকগাথা - অনঙ্গমোহিনী দেবী, কুন্তলীন প্রেসে মুদ্রিত, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৩ বঙ্গাব্দ)
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]উইকিপিডিয়ায় অনঙ্গমোহিনী দেবী সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।
উইকিসংকলনে অনঙ্গমোহিনী দেবী রচিত অথবা সম্পর্কিত রচনা রয়েছে।