বিষয়বস্তুতে চলুন

আদিবাসী (ভারত)

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

আদিবাসী হল ভারতীয় উপমহাদেশের নানা উপজাতি গোষ্ঠীর জন্য একটি সমষ্টিগত শব্দ। এই গোষ্ঠীগুলিকে সেই সব অঞ্চলের মূল অধিবাসী হিসেবে মনে করা হয়, যেখানে তারা বসবাস করে। কেউ কেউ বনজ সংগ্রহ করে জীবিকা চালায়। আবার কেউ কেউ বসবাসযোগ্য অঞ্চলে ঘরবসতি গড়ে সমাজ গঠন করে।

উক্তি

[সম্পাদনা]
  • 'এই দেশে, নৃবিজ্ঞানীদের দৃষ্টিভঙ্গিতে যেসব গোষ্ঠী উপজাতি হিসেবে বিবেচিত, তারা বহুদিন ধরে একেবারে ভিন্ন ধরনের অন্যান্য সমাজের সঙ্গে বসবাস করছে। কয়েকটি এলাকা ছাড়া, এমন কোনও সমাজ খুঁজে পাওয়া কঠিন, যারা এখনো পুরনো উপজাতীয় বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণরূপে ধরে রেখেছে। বাস্তবে দেখা যায়, বেশিরভাগ উপজাতি গোষ্ঠীর মধ্যে ভারতীয় বৃহত্তর সমাজের সঙ্গে নানা মাত্রায় সংযুক্তির উপাদান রয়েছে (...) ভারতে খুব কম উপজাতিই এখন পৃথক সমাজ হিসেবে টিকে আছে। প্রায় সব উপজাতিই কোনও না কোনও মাত্রায় বৃহত্তর ভারতীয় সমাজে একীভূত হয়ে গেছে। এই একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়া নতুন কিছু নয়, বরং তা বহু প্রাচীন যুগ থেকেই চলে আসছে। অধ্যাপক বেটেইল দেখিয়েছিলেন, জাতিগত দিক থেকে বর্তমান ভারতের বেশিরভাগ উপজাতির উৎপত্তি আশেপাশের অনউপজাতি জনগণের সঙ্গে মিল রয়েছে। ভারত বিভিন্ন জাতি ও গোষ্ঠীর এক মিলনস্থল ছিল। ইতিহাসবিদ ও নৃবিজ্ঞানীরা উপমহাদেশে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, জাতিগত ও ভাষাগত গোষ্ঠীগুলিকে সময়ের ধারায় সাজাতে গিয়ে অসুবিধায় পড়েন।'
    • আন্দ্রে বেটেইল, দলিত ভয়েস, ১৬-৪-১৯৯২ থেকে উদ্ধৃত। এবং কোনরাড এলস্ট, হু ইজ আ হিন্দু? হিন্দু রিভাইভালিস্ট ভিউস অফ অ্যানিমিজম, বৌদ্ধিজম, শিখিজম, অ্যান্ড আদার অফশুটস অফ হিন্দুয়িজম (২০০২) থেকে উদ্ধৃত। আইএসবিএন 978-8185990743
  • অধ্যাপক বেটেইল (...) বর্ণনা করেছেন—ভারতে জাত ব্যবস্থার ধারণা বহু প্রাচীন ও সুপরিচিত। ঔপনিবেশিক আমলে এটি কিছুটা বেশি কঠোর হয়েছে ঠিকই, তবে ভারতবাসী বহু প্রজন্ম ধরে এই ব্যবস্থার সঙ্গে পরিচিত ছিল। তিনি বলেছেন, “প্রত্যেক হিন্দু জানত সে একটি নির্দিষ্ট জাতের সদস্য এবং অন্যরাও বিভিন্ন জাতের অন্তর্ভুক্ত, যারা সমাজে কোথায় অবস্থান করে সে সম্পর্কে তার অন্তত কিছু ধারণা ছিল—হোক তা অস্পষ্ট কিংবা প্রচলিত ধ্যানধারণাভিত্তিক। কিন্তু যাদের আমরা আজ উপজাতি বলে জানি, তাদের ক্ষেত্রে এমন কোনো পরিষ্কার জাতগত ধারণা ছিল না। ভারতের সব উপজাতির একটি স্বতন্ত্র ও আলাদা পরিচয়বোধ—এই ভাবনাটি আধুনিক। এটি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময় তৈরি হয় এবং স্বাধীনতার পরবর্তীকালে ভারতের সরকার তা আরও দৃঢ় করে।”
    • আন্দ্রে বেটেইল: কলোনিয়াল কনস্ট্রাকশন অফ ট্রাইব', (টাইমস অফ ইন্ডিয়া-তে কলাম), ক্রনিকল অফ আওয়ার টাইম, পৃ. ১৮৭, থেকে উদ্ধৃত। এবং কোনরাড এলস্ট, হু ইজ আ হিন্দু? হিন্দু রিভাইভালিস্ট ভিউস অফ অ্যানিমিজম, বৌদ্ধিজম, শিখিজম, অ্যান্ড আদার অফশুটস অফ হিন্দুয়িজম (২০০২) থেকে উদ্ধৃত। আইএসবিএন 978-8185990743
  • প্রকৃতির পূজারী বা প্রাণবাদীদের সঙ্গে নিম্নবর্গীয় হিন্দুদের মাঝে খুব বেশি পার্থক্য ছিল না।
    • "ইমপেরিয়াল গেজেটিয়ার অফ প্রভিন্সিয়াল সিরিজ বম্বে প্রেসিডেন্সী খণ্ড ১" [১]
  • ...মধ্য ভারতের জঙ্গলের আদিবাসী গোষ্ঠীগুলিকে অনেক সময় "প্রকৃতির পূজারী" বলা হয়, যদিও এদের অনেকে দৃঢ়ভাবে দাবি করে যে তারা হিন্দু।
    • ইমপেরিয়াল গেজেটিয়ার অফ ইন্ডিয়া ইউনাইটেড প্রভিন্স অফ আগ্রা অ্যান্ড ওউধ [২]
  • হিন্দুধর্ম ও প্রকৃতিপূজার মাঝে স্পষ্ট কোন সীমারেখা নেই।
    • এডওয়ার্ড আলবার্ট গেট, ১৯০১ সালের জনগণনা প্রতিবেদন অন দ্য লোয়ার প্রভিন্সেস অফ বেঙ্গল অ্যান্ড দেয়ার ফিউডেটরিস, অরুণ শৌরি। মিশনারিজ ইন ইন্ডিয়া: কনটিনুইটিজ, চেঞ্জেস, ডিলেমাজ. নয়াদিল্লি : রূপা অ্যান্ড কো, ১৯৯৪ থেকে উদ্ধৃত।
  • সব ধর্মের ক্ষেত্রেই একটি বড় সমস্যা আছে— এখানে তা হল হিন্দুধর্ম কোথা থেকে শুরু হয় আর কোথায় শেষ হয় তা বোঝা খুব কঠিন। কারণ, অনেক ধর্মই হিন্দুধর্ম থেকে জন্ম নেওয়া শাখা বা উপশাখা। আবার অনেক উপজাতীয় ধর্ম আছে, যেখান থেকে ধীরে ধীরে মানুষ হিন্দুধর্মে দীক্ষিত হয়। এমন অনেক মানুষ আছেন যারা নিশ্চিতভাবে প্রকৃতিপূজক (অ্যানিমিস্ট), কিন্তু তারা হিন্দু উৎসবে যোগ দেন। আবার যারা নিশ্চিতভাবেই হিন্দু, এমনকি মুসলমান, তারাও আদিবাসী পুরোহিতের মাধ্যমে স্থানীয় আত্মাদের শান্ত করার কাজে অংশ নেন।
    • পি.সি. ট্যালেন্টস, সেনসাস অফ ইন্ডিয়া ১৯২১, অরুণ শৌরি। মিশনারিজ ইন ইন্ডিয়া: কনটিনুইটিজ, চেঞ্জেস, ডিলেমাজ. নয়াদিল্লি : রূপা অ্যান্ড কো, ১৯৯৪ থেকে উদ্ধৃত।
  • ‘প্রকৃতির পূজারী’ বা শব্দ দিয়ে যেসব মানুষকে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়, সেটা কখনোই সঠিক বা স্পষ্ট হয়নি। বরং এই শ্রেণিবিভাগ যদি পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়, তাহলে সেটা ভালো। কারণ বলা যায় না কখন প্রকৃতিপূজা শেষ হয় আর কখন হিন্দুধর্ম শুরু হয়। এই শ্রেণিবিভাগ এতটাই অস্পষ্ট আর কৃত্রিম যে তা কাজে লাগে না।
  • আগের আদমশুমারির তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, উপজাতীয় ধর্মগুলোকে কীভাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হবে তা অনেকাংশে গণনাকারীর ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর করত।
    • ডব্লিউ.এইচ. শুবার্ট, সেনসাস অফ ইন্ডিয়া ১৯৩১। অরুণ শৌরি। মিশনারিজ ইন ইন্ডিয়া: কনটিনুইটিজ, চেঞ্জেস, ডিলেমাজ. নয়াদিল্লি : রূপা অ্যান্ড কো, ১৯৯৪ থেকে উদ্ধৃত।
  • মধ্য ভারতের হিন্দুধর্মে প্রকৃতিপূজা ও প্রাণীপূজার প্রভাব অনেক বেশি। সাধারণত গ্রামে একাধিক দেবতা থাকে। এই দেবতাদের পূজার জন্য এক প্রকার বিশেষ পুরোহিত থাকেন। তারা আদিম উপজাতির অন্তর্ভুক্ত হন এবং তাঁদের ভুমকা বা বৈগা বলা হয়।
    • সেন্ট্রাল প্রভিন্সেস গেজেটিয়ার, ডব্লিউ.এইচ. শুবার্ট, সেনসাস অফ ইন্ডিয়া ১৯৩১। মিশনারিজ ইন ইন্ডিয়া: কনটিনুইটিজ, চেঞ্জেস, ডিলেমাজ. নয়াদিল্লি : রূপা অ্যান্ড কো, ১৯৯৪ থেকে উদ্ধৃত।
  • ভারতের ধর্মগুলো একে অন্যের থেকে কতটা আলাদা আর কতটা মিশে গেছে, সেটা বোঝা খুবই কঠিন। বিশেষ করে হিন্দুধর্ম কোথা থেকে শুরু আর কোথায় শেষ—এটা নির্ধারণ প্রায় অসম্ভব। আদিম বা আধা-আদিম উপজাতির ধর্মকে আদমশুমারিতে কীভাবে লিপিবদ্ধ করা হবে, তা অনেকাংশেই কাকতালীয়ভাবে নির্ধারিত হয়। ফলে পরিসংখ্যানগুলো তেমন নির্ভরযোগ্য নয়।
    • ওয়াল্টার গ্রাহাম লেসি, সেনসাস অফ ইন্ডিয়া ১৯৩১। মিশনারিজ ইন ইন্ডিয়া: কনটিনুইটিজ, চেঞ্জেস, ডিলেমাজ. নয়াদিল্লি : রূপা অ্যান্ড কো, ১৯৯৪ থেকে উদ্ধৃত।
  • ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম নেওয়া সংস্কারক আভাস চট্টোপাধ্যায়, যিনি ওরাঁও উপজাতির এক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন, তিনি লেখেন—‘এই সনাতন ধর্মের অসংখ্য শাখা-প্রশাখা আছে। এর মধ্যে রয়েছে বৈদিক ও তান্ত্রিক, বৌদ্ধ ও জৈন। আছে শৈব ও বৈষ্ণব, শাক্ত ও শিখ, আর্য সমাজ ও কবীরপন্থ। এর অন্তর্ভুক্ত আছে কেরালার অয়্যাপ্পা পূজারী, ছোটনাগপুরের সারনা বিশ্বাসী এবং অরুণাচলের দোনি-পোলো পূজারীরাও। (...) এই নানা রূপ ও বৈচিত্র্যের মধ্যে দিয়ে একটি অভিন্ন আধ্যাত্মিক স্রোত প্রবাহিত হয়, যা আমাদের সবাইকে হিন্দু করে তোলে এবং আমাদের এক অভ্যন্তরীণ সম্প্রীতির অনুভূতি দেয়।’
    • আভাস চ্যাটার্জী: হিন্দু নেশন, পৃ. ৪। হু ইজ আ হিন্দু? হিন্দু রিভাইভালিস্ট ভিউস অফ অ্যানিমিজম, বৌদ্ধিজম, শিখিজম, অ্যান্ড আদার অফশুটস অফ হিন্দুয়িজম (২০০২) থেকে উদ্ধৃত। আইএসবিএন 978-8185990743
  • “দান ও সমাজসেবা যদি নিরপেক্ষভাবে হয়, কোনো অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য ছাড়া, তাহলে তা উপকারী। কিন্তু দান আর ধর্মান্তর একসঙ্গে চলতে পারে না। ধর্ম শুধু তখনই এগোয়, যখন দান ও সেবার কাজ নিঃস্বার্থভাবে হয়। ... দরিদ্র ও নিরক্ষর মানুষদের ধর্মীয় স্বাধীনতা যেন সুনিসচ থাকে। আমাদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে তফসিলভুক্ত জনজাতির ব্যাপারে। কারণ তাদের সুরক্ষা শুধু দেশের আইনে নয়, সংবিধানেও নিশ্চিত করা হয়েছে। তাদের জীবনধারা, ধর্ম, ও উপাসনার রীতি– সবই রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। কোনো ধর্মীয় গোষ্ঠী তাদের রীতি-রেওয়াজে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। অনেক সংগঠন সমাজসেবা করে থাকে... তবে তা তখনই উপকারী হবে, যখন কোনো লুকানো উদ্দেশ্য ছাড়াই করা হবে।
    • মোরারজি দেশাই,মাদার টেরেজা, কে চিঠি, ২১ এপ্রিল ১৯৭৯। মধ্যপ্রদেশ (ইন্ডিয়া), সীতা রাম গোয়েল, এম.বি. নিয়োগী, ভিনডিকেটেড বাই টাইম: দ্য নিয়োগী কমিটি রিপোর্ট অন খ্রিস্টান মিশনারি অ্যাকটিভিটিজ (১৯৯৮) থেকে উদ্ধৃত। আইএসবিএন 9789385485121
  • "আদিম" শব্দটির সংস্কৃত অনুবাদ হিসেবে "আদিবাসী" শব্দটি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এই শব্দ আসলে বিভ্রান্তি ছড়ায়। মনে হয়, ভারতে অনেক আগে থেকেই কেউ কাউকে ‘আদিবাসী’ বা ‘অপদ্রব্য’ বলে চিহ্নিত করত। কিন্তু সেটা সত্য নয়। ‘আদিবাসী’ শব্দটি আসলে ঔপনিবেশিক শাসক ও মিশনারিদের বানানো। এই একটি শব্দই আধুনিক যুগের অন্যতম সফল ভ্রান্ত ধারণা। কারণ এটা এমন একটা বিভাজন তৈরি করে, যেখানে উপজাতিদের বলা হয় ‘আসল’ বা ‘স্থানীয়’ আর অন্যান্য ভারতীয়দের বলা হয় বহিরাগত। অথচ বাস্তবে এমন কোনো স্পষ্ট বিভাজন নেই।
  • ‘আদিবাসী’ মানে “আদিম জনগণ”। এই শব্দটি ব্রিটিশ শাসনের সময় তৈরি হয়। উদ্দেশ্য ছিল উপজাতি সম্প্রদায়কে ‘আদিম’ বা ‘স্থানীয়’ হিসেবে তুলে ধরা—যাতে অন্যরা ‘অস্থানীয়’ বা বহিরাগত হয়ে পড়ে। এই ধারণাটা ছিল একদম ভুল। এটা মূলত আমেরিকার পরিস্থিতিকে দক্ষিণ এশিয়ার ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। যেমন: আমেরিকায় ইউরোপীয়রা উপনিবেশ গড়ে তোলে এবং স্থানীয়দের বলা হয় “নেটিভ আমেরিকান”। ভারতেও অনেকে এই তত্ত্ব প্রচার করতে থাকে—বিশেষ করে মাওবাদী ও মিশনারি গোষ্ঠী। মানবাধিকার আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতিশীল মানুষরা প্রায়ই বুঝতেই পারেন না, এই ধরনের শব্দ ব্যবহার করে কীভাবে তারা ভুল উদ্দেশ্যের সহায়ক হয়ে উঠছেন।
    • কোনরাড এলস্ট, অন মোদি টাইম : মেরিটস অ্যান্ড ফ্লস অফ হিন্দু অ্যাকটিভিজম ইন ইটস ডে অফ ইনকামবেন্সি – ২০১৫, অধ্যায় ৬: দ্য হিন্দু রিপাবলিক অফ নেপাল?
  • স্বাধীনতার আগে থেকেই ‘আদিবাসী’ শব্দটি একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল। এর মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা চলত—এই দেশ বহু বছর ধরে বহিরাগতদের শাসনে চলছে। কিন্তু স্বাধীনতার পর এই শব্দটি আরও বেশি প্রচার পায়, যখন উপনিবেশবাদকে খারাপ চোখে দেখা শুরু হয় গোটা বিশ্বে। বাস্তবতা হলো—ভারতের প্রায় সব জনগণই এই দেশেরই সন্তান। এখানে কেউ আরেকজনের তুলনায় বেশি 'স্থানীয়' নন। খাঁটি জাতি বলে কিছু নেই—এই ভুল বিশ্বাসকে নাজি নেতা হিটলার বিপজ্জনকভাবে ব্যবহার করেছিল। তাই সেই ধারণা এখন বিশ্বজুড়ে প্রশ্নবিদ্ধ। তবু ভারতে কিছু গোষ্ঠী এখনও এই ‘জাতিগত বিশুদ্ধতা’-র মিথকে প্রচার করে চলেছে। ফাদার হারম্যান্স এটাকে বলেন “আদিবাসী অধিকার দাবি”, কিন্তু এটা আদতে পশ্চিমা ধারণা—যেটা মিশনারিরা উপজাতিদের শেখায়। কারণ এই শ্রুতি বিগত এক শতাব্দী ধরে তাদের স্বার্থে কাজ করে আসছে।
    • এলস্ট, কে. ইন্ডিজেনাস ইন্ডিয়ানস: আগস্ত্য টু আম্বেদকর (১৯৯৩)
  • “আমরা ‘প্রকৃতির পুূূজারী’, ‘আদিবাসী’—এই ধরণের শ্রেণিবিভাগ চিনতাম না। এইসব শব্দ আমরা ইংরেজ শাসকদের কাছ থেকেই শিখেছি।”
    • মহাত্মা গান্ধী, দ্য কালেক্টেড ওয়ার্কস, খণ্ড ৩৫, নয়াদিল্লি, ১৯৬৮, পৃ. ৪৬২–৬৩। সীতা রাম গোয়েল, হিস্ট্রি অফ হিন্দু-খ্রিস্টান এনকাউন্টারস (১৯৯৬) থেকে উদ্ধৃত।
  • “আমি জানি না কীভাবে ম্যাক্স ওয়েবার এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে ‘মুসলিম আক্রমণের পর অনেক উপজাতি হিন্দুধর্মে মিশে গিয়েছিল, যা সংখ্যায় ইসলাম ধর্মে রূপান্তরিত হিন্দুদের থেকেও বেশি’। হয়তো তিনি ভেবেছিলেন আসামের সেই মানুষদের কথা—যাদের বখতিয়ার খলজি ও আরও কয়েকজন মুসলিম আক্রমণকারী দমন করতে চেয়েছিল। হয়তো তিনি উত্তর সীমান্তের পার্বত্য জনগোষ্ঠীর কথা ভেবেছেন, যাদের মুহাম্মদ তুঘলক জয় করতে পারেননি। বা গোন্ডদের কথা, যারা রানি দুর্গাবতীর নেতৃত্বে আকবরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল। কিংবা ভীলদের কথা, যারা মহারানা প্রতাপের নেতৃত্বে লড়েছিল। বা পরে যেসব মাওলাস শিবাজির সঙ্গে যোগ দিয়েছিল। তবে মূল বিষয় হলো—এই তথাকথিত ‘উপজাতিরা’ মুসলিম আক্রমণকারীদের পক্ষে না গিয়ে বরং তাদের বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্তভাবে লড়েছিল। এই ঘটনাই প্রমাণ করে যে তারা দেশের বাকি মানুষের সঙ্গে একসাথে একটি সাধারণ সংস্কৃতি ভাগ করে নিচ্ছিল।”
    • সীতা রাম গোয়েল, দ্য স্টোরি অফ ইসলামিক ইম্পেরিয়ালিজম ইন ইন্ডিয়া (১৯৯৪)
  • ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের খ্রিস্টান-প্রভাবিত এলাকাগুলোতে বহুবার হিন্দু বিতাড়নের ঘটনা ঘটেছে। রামকৃষ্ণ মিশন ও আরএসএস-এর মতো হিন্দু সংগঠনগুলোকে সেখান থেকে সরাতে চাপ বা হিংসার পথ নেওয়া হয়েছে। ১৯৯০-এর দশকে, মিজোরামের খ্রিস্টান-প্রধান অঞ্চলে, যারা খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করতে চায়নি—সেই হাজার হাজার রিয়াং উপজাতিকে জোর করে বিতাড়িত করা হয়। খ্রিস্টান বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাতে যে সংখ্যক হিন্দু নিহত হয়েছে, তা ১৯৪৭ থেকে আজ পর্যন্ত খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে তথাকথিত ‘হিন্দু হিংসা’-য় নিহতের সংখ্যার তুলনায় অনেক বেশি। যেমন, ১৯৯৮-৯৯ সালে যে ‘হিন্দুদের হাতে খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে হিংসা’ হয়েছিল, তাতে মাত্র হাতে গোনা কয়েকজন মারা যায়। অথচ অস্ট্রেলীয় মিশনারি গ্রাহাম স্টাইনসের হত্যাকাণ্ড ছিল আন্তর্জাতিক সংবাদপত্রের প্রধান শিরোনাম। এবং আজও সাম্প্রদায়িকতার প্রসঙ্গে বারবার সেটাই উল্লেখ করা হয়। অথচ ঠিক সেই সময়েই, উত্তর-পূর্বে চারজন আরএসএস সদস্যকে খ্রিস্টান বিচ্ছিন্নতাবাদীরা অপহরণ করে ও পরে তাদের বিকৃত দেহ উদ্ধার হয়—এই ঘটনাটি ভারতের সংবাদমাধ্যমেই ঠিকমতো উঠে আসেনি, আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় তো একেবারেই না। (...) ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতা হিন্দুধর্মের বিরোধী ধর্মগুলোর মূল্যায়নে বরাবর পক্ষপাতদুষ্ট।
    • কোনরাড এলস্ট, রিলিজিয়াস ক্লিনজিং অফ হিন্দুজ (২০০৪, আগ্নি কনফারেন্স, দ্য হেগ), এবং দ্য প্রবলেম উইথ সেক্যুলারিজম (২০০৭) - কে. এলস্ট
  • “আলাদা জাতিসত্তার পক্ষের যারা যুক্তি দেন, তারা বলেন—এই উপজাতিরা গাছ, পাথর আর সাপের মতো বস্তু পূজা করে। তাই তারা ‘অ্যানিমিস্ট’, হিন্দু না। কিন্তু এই কথা শুধুমাত্র একজন অজ্ঞ লোকই বলতে পারেণ—যার হিন্দু ধর্ম সম্বন্ধে বিন্দুমাত্র ধারণা নেই। (...) সারা ভারতে হিন্দুরা গাছ পূজা করে না? তুলসি, বিল্ব, অশ্বত্থ—সবই তো হিন্দুদের কাছে পবিত্র। (...) সাপ, বিশেষ করে নাগদেবতার পূজাও তো সারা দেশে প্রচলিত। (...) তাহলে কি এইসব পূজারীদের সবাইকে ‘অ্যানিমিস্ট’ বলে হিন্দু ধর্মের বাইরে ফেলে দিতে হবে?”
    • এম.এস. গোলওয়ালকর, বান্চ অফ থটস, পৃ. ৪৭১–৪৭২। কোনরাড এলস্ট, হু ইজ আ হিন্দু? হিন্দু রিভাইভালিস্ট ভিউস অফ অ্যানিমিজম, বৌদ্ধিজম, শিখিজম, অ্যান্ড আদার অফশুটস অফ হিন্দুয়িজম (২০০২) থেকে উদ্ধৃত। আইএসবিএন 978-8185990743
  • হিন্দু ও উপজাতিদের মধ্যে যেহেতু ধারাবাহিকতা আছে, তাই গোলওয়ালকর বলেছিলেন—উপজাতি ও তথাকথিত ‘অস্পৃশ্যদের’ একীভূত করতে একই পন্থা নেওয়া উচিত। তিনি বলেন, ‘তাদের উপনয়ন (যজ্ঞোপবীত) করা যেতে পারে (...) ধর্মীয় অধিকার, মন্দিরে পূজা করার অধিকার, বেদ অধ্যয়নের অধিকার এবং সমাজ ও ধর্মজীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও তাদের সমান অধিকার দেওয়া উচিত। হিন্দু সমাজে আজ যে জাতিভেদের সমস্যা রয়েছে, তার একমাত্র সমাধান এই।'
    • এম.এস. গোলওয়ালকর, বান্চ অফ থটস, পৃ. ৪৭১–৪৭২। কোনরাড এলস্ট, হু ইজ আ হিন্দু? হিন্দু রিভাইভালিস্ট ভিউস অফ অ্যানিমিজম, বৌদ্ধিজম, শিখিজম, অ্যান্ড আদার অফশুটস অফ হিন্দুয়িজম (২০০২) থেকে উদ্ধৃত। আইএসবিএন 978-8185990743
    • গবেষক জেরার্ড হ্যুজে 'বনবাসী কল্যাণ আশ্রম'-এর আদিবাসী এলাকায় পরিচালিত বিদ্যালয়গুলোর বিষয়ে বলেছেন: 'এই নিখরচা আদিবাসী স্কুলগুলো—যার সংখ্যা ১৯৯০ সালে প্রায় একশো ছিল—একটি সহজ-সরল জনগোষ্ঠীকে শিক্ষা দেয়। এবং এই জনগোষ্ঠীর মধ্যেও যারা সবচেয়ে দরিদ্র, তাদেরই বেশি দেখা যায়। (...) এই শিশুদের 'বৈদিক পূর্বপুরুষদের' মতো জীবনযাপন করতে শেখানো হয়। কারণ ধারণা করা হয়, বনবাসীরা ওই বৈদিক যুগের সবচেয়ে কাছাকাছি ছিল। আদিবাসীদের জন্য যে 'মিশন' চলছে, তার পরিপ্রেক্ষিতেই হিন্দু জাতীয়তাবাদের প্রাচীনতম আদর্শগুলো—যেমন ঋষিদের শক্তি, সংস্কৃত শিক্ষালাভ—সবচেয়ে গুরুত্ব সহকারে এখানে চালু করা হয়েছে। তবে এসব আরএসএস পরিচালিত বিদ্যালয় খ্রিস্টান মিশনারি কলেজগুলোর তুলনায় প্রভাব ও মর্যাদার দিক থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। কারণ খ্রিস্টান কলেজগুলোর আর্থিক সহায়তা অনেক বেশি।'
    • জি. হেউজে, উ ভা ল’ঁদ মোদার্ন?, পৃ. ১৪১। কোনরাড এলস্ট, হু ইজ আ হিন্দু? হিন্দু রিভাইভালিস্ট ভিউস অফ অ্যানিমিজম, বৌদ্ধিজম, শিখিজম, অ্যান্ড আদার অফশুটস অফ হিন্দুয়িজম (২০০২) থেকে উদ্ধৃত। আইএসবিএন 978-8185990743
  • ভুবনেশ্বরে একাদশ শতকে নির্মিত লিঙ্গরাজ মন্দিরে দুই শ্রেণির পুরোহিত রয়েছেন। একদিকে ব্রাহ্মণ, অন্যদিকে 'বাদু' নামের একটি উপজাতি গোষ্ঠী। এই বাদুদের শূদ্র শ্রেণিভুক্ত ধরা হয় এবং তাদের উপজাতি উৎসের বলে বিবেচনা করা হয়। শুধু তাই নয়, বাদুরা এই গুরুত্বপূর্ণ মন্দিরের পুরোহিতও বটে। দেবতার ব্যক্তিগত সেবক হিসেবে তার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। শুধু তারাই লিংরাজকে স্নান করাতে ও সাজাতে পারে। উৎসবের সময় শুধু তারাই চলমান প্রতিমা বহন করতে পারে (...) এই দেবতা একসময় একটি আমগাছের নিচে ছিলেন (...) উপকথা অনুযায়ী, বাদুরা আদিবাসী (শবর) ছিল, যারা মূলত এই এলাকায় বাস করত এবং গাছের নিচে লিঙ্গের পূজা করত।
    • গিরিলাল জৈন, দ্য হিন্দু ফিনোমেনন, পৃ. ২৪; উল্লেখিত: অ্যানচারলট এশমান, গয়াচরণ ত্রিপাঠী, হারমান কুলকে: কাল্ট অফ জগন্নাথ, পৃ. ৯৭। হু ইজ আ হিন্দু? হিন্দু রিভাইভালিস্ট ভিউস অফ অ্যানিমিজম, বৌদ্ধিজম, শিখিজম, অ্যান্ড আদার অফশুটস অফ হিন্দুয়িজম (২০০২) থেকে উদ্ধৃত। আইএসবিএন 978-8185990743
  • এই উপাস্য মূর্তিগুলোর পুরনো ধাঁচের চিত্ররীতি এবং উচ্চপর্যায়ের হিন্দু ধর্মীয় ব্যাখ্যা—উভয়ের সংমিশ্রণ, আর এর সঙ্গে সাবেক উপজাতীয় (দৈত) ও বৈদিক ব্রাহ্মণ পুরোহিতদের উপস্থিতি—এই সবকিছুর মিশ্রণ। বরং এটি এক চমৎকার আঞ্চলিক সমন্বয়। যা একদিকে স্থানীয় এবং অন্যদিকে সর্বভারতীয় ঐতিহ্যের মিলন ঘটায়। (...) পুরীর জগন্নাথ দেবের উপাসনার মধ্য দিয়ে উপজাতীয়-হিন্দু ধারাবাহিকতা স্থায়ীভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
    • অ্যানচারলট এশমান, গয়াচরণ ত্রিপাঠী, হারমান কুলকে: দ্য কাল্ট অফ জগন্নাথ, পৃ.১৫, গিরিলাল জৈন, দ্য হিন্দু ফিনোমেনন, পৃ. ২৩-এ উদ্ধৃত। হু ইজ আ হিন্দু? হিন্দু রিভাইভালিস্ট ভিউস অফ অ্যানিমিজম, বৌদ্ধিজম, শিখিজম, অ্যান্ড আদার অফশুটস অফ হিন্দুয়িজম (২০০২) থেকে উদ্ধৃত। আইএসবিএন 978-8185990743
  • যে ব্যক্তি এই ভারতভূমিকে নিজের মাতৃভূমি বলে মনে করে—অর্থাৎ, যে ভূমিতে তার ধর্মের উৎপত্তি হয়েছে—সে হিন্দু। (...) সেই কারণে, যাদের আদিবাসী বা পাহাড়ি উপজাতি বলা হয়, তারাও হিন্দু। কারণ ভারত তাদের মাতৃভূমি, আবার ধর্মের জন্মভূমিও। তারা যেই ধর্ম বা উপাসনার ধারা অনুসরণ করুক না কেন।
    • বিনায়াক দামোদর সাভারকর: হিন্দু রাষ্ট্র দর্শন, পৃ. ৭৭। হু ইজ আ হিন্দু? হিন্দু রিভাইভালিস্ট ভিউস অফ অ্যানিমিজম, বৌদ্ধিজম, শিখিজম, অ্যান্ড আদার অফশুটস অফ হিন্দুয়িজম (২০০২) থেকে উদ্ধৃত। আইএসবিএন 978-8185990743
  • [হিন্দুত্ব আন্দোলনের বিষয়ে বলা হয়েছে:] ভারতের ক্ষেত্রে, হিন্দুত্ব আন্দোলনের লক্ষ্য হওয়া উচিত হিন্দুধর্মের পুনর্জাগরণ, নবজাগরণ ও পুনরুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া। এই নবজাগরণ শুধু বৈদিক বা সংস্কৃত উৎস থেকে আগত ধর্মীয়, আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক অনুশীলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং ভারতের অন্য যেসব উৎস রয়েছে—যা বৈদিক নয়—তাও এর অন্তর্ভুক্ত। আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের অধিবাসী এবং (খ্রিস্টানপূর্ব) নাগাদের রীতিনীতিও ভূখণ্ডগত অর্থে হিন্দু, আবার আধ্যাত্মিক অর্থে 'সনাতন'। (...) একজন প্রকৃত হিন্দুত্ববাদীর হৃদয়ে ব্যথা অনুভব করা উচিত, আর সেই সঙ্গে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদও থাকা উচিত—শুধু তখন নয় যখন সে শুনবে ভারতের জনসংখ্যায় হিন্দুদের অনুপাত কমছে (...) কিংবা হিন্দুদের প্রতি নানা দিক থেকে বৈষম্য করা হচ্ছে, বরং তখনও সে ব্যথা অনুভব করবে যখন শুনবে আন্দামান দ্বীপের জাতিগোষ্ঠী ও ভাষা বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে; লক্ষ লক্ষ বছরের পুরনো অরণ্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে; অসংখ্য শিল্প, হস্তশিল্প, স্থাপত্যরীতি, উদ্ভিদ ও প্রাণীর প্রজাতি, সংগীতধারা ও বাদ্যযন্ত্র হারিয়ে যাচ্ছে।
    • শ্রীকান্ত তালাগেরি, সীতা রাম গোয়েল (সম্পা.): টাইম ফর স্টক-টেকিং, পৃ. ২২৭–২২৮। হু ইজ আ হিন্দু? হিন্দু রিভাইভালিস্ট ভিউস অফ অ্যানিমিজম, বৌদ্ধিজম, শিখিজম, অ্যান্ড আদার অফশুটস অফ হিন্দুয়িজম (২০০২) থেকে উদ্ধৃত। আইএসবিএন 978-8185990743
  • উপজাতিদের ধর্মীয় মর্যাদা ও রাজনৈতিক অধিকার নিয়ে আলোচনা জটিল হয়ে পড়ে মূলত ‘আদিবাসী’ শব্দটির ব্যবহারের কারণে। খ্রিস্টান মিশনারি ও ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা এই বিশ্বাসকে জনপ্রিয় করে তুলেছে যে ‘আদিবাসী’ শব্দটি নাকি উপজাতিদের বহু পুরনো আত্ম-পরিচয়ের নাম। কিন্তু তারা এই বিষয়টি খেয়াল করেনি যে এই নামটি ব্যবহার করাও তাদের সংস্কৃত সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয়ের প্রমাণ দেবে। কারণ ‘আদিবাসী’ শব্দটি বিশুদ্ধ সংস্কৃত। উদাহরণস্বরূপ বলা হয়েছে: 'এই জনগোষ্ঠীগুলিকে আদিবাসী বলা হয়, যার অর্থ 'প্রথম বাসিন্দা'। যেমন আমেরিকায় আছে 'ইন্ডিয়ান', তেমনি ভারতে আছে এই ‘আদিবাসী’ নাম।... এই শব্দটি আদতে দেশীয় নয়। এটি ম. মনিয়ার-উইলিয়ামসের ১৯ শতকের সংস্কৃত অভিধানে নেই। অথচ তিনি ছিলেন একজন ধর্মপ্রাণ খ্রিস্টান যিনি মিশনারিদের খুশি করতেই পারতেন, যদি শব্দটি তিনি জানতেন। সংস্কৃত সাহিত্যে ‘বনের লোক’ বোঝাতে ‘আটবিকা’ (আটবী অর্থে বন) ধরনের শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে।... ঔপনিবেশিক সময়ে ‘আদিবাসী’ শব্দ চাপিয়ে দেওয়াটা ইতিহাসের বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে কল্পনার তত্ত্ব বসিয়ে দেওয়ার এক উদাহরণ।
    • কোনরাড এলস্ট, হু ইজ আ হিন্দু? হিন্দু রিভাইভালিস্ট ভিউস অফ অ্যানিমিজম, বৌদ্ধিজম, শিখিজম, অ্যান্ড আদার অফশুটস অফ হিন্দুয়িজম (২০০২) থেকে উদ্ধৃত। আইএসবিএন 978-8185990743
  • যারা আদিবাসী নন, সেই সমস্ত শহুরে এবং উন্নত কৃষিভিত্তিক জনগোষ্ঠী আচমকাই নিজেদের "অভিবাসী" বলে চিহ্নিত হতে দেখলেন, যেন তারাই আসলে ভারতের মূল অধিবাসীদের হঠিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছেন। 'আদিবাসী' শব্দটি আসলে ঔপনিবেশিক ধারণা, যার অর্থ দাঁড়ায়—এই দেশটির প্রকৃত মালিক আজ যারা স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছে তারা নয়, বরং যারা জঙ্গলে বা পাহাড়ে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন তারা। এর ফলে হিন্দুধর্ম, যেটির নামই ভারতের নাম থেকে এসেছে, তাকেও বাইরের জোরপূর্বক চাপানো ধর্ম হিসেবে দেখা শুরু হল। কেবলমাত্র যারা দলিত বা অস্পৃশ্য, তারাই একমাত্র 'আদিম' বা স্থানীয় বলে বিবেচিত হলেন—এটা বলা হল যে তারা হলেন সেই কালো-চামড়ার স্থানীয় শ্রমিকশ্রেণি, যাদের ওপর শ্বেতাঙ্গ আর্যরা নিজেদের জাতিগত পরিচিতি বাঁচিয়ে রাখতে এক বর্ণভিত্তিক পরিচয় চাপিয়ে দিয়েছে। এই জাতিগত ইতিহাস আসলে ঊনবিংশ শতাব্দীর বর্ণবাদী ঔপনিবেশিক মনোভাবেরই প্রতিফলন, যার খুব ভালোভাবে ব্যবহার হয়েছিল উপনিবেশ রক্ষার স্বার্থে। যেমন ১৯৩৫ সালের ভারতের শাসন আইন নিয়ে ব্রিটিশ সংসদে আলোচনার সময় উইনস্টন চার্চিল বলেছিলেন: "ভারতে আমাদের ঠিক ততটাই অধিকার আছে, যতটা অন্যদের—শুধু সম্ভবত নিম্নবর্ণের মানুষজন ছাড়া, কারণ ওরাই তো এ দেশের মূল জাতি।"
    • উদ্ধৃত হয়েছে: সি.এইচ. ফিলিপস (সম্পাদিত), সিলেক্ট ডকুমেন্টস অন দ্য হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়া অ্যান্ড পাকিস্তান, পার্ট IV, পৃ. ৩১৫।কোনরাড এলস্ট, হু ইজ আ হিন্দু? হিন্দু রিভাইভালিস্ট ভিউস অফ অ্যানিমিজম, বৌদ্ধিজম, শিখিজম, অ্যান্ড আদার অফশুটস অফ হিন্দুয়িজম (২০০২) থেকে উদ্ধৃত। ISBN 978-8185990743
  • অনেক পশ্চিমা এনজিও কর্মী এবং সদিচ্ছাসম্পন্ন মানুষ ভাবেন, ভারতের তথাকথিত 'আদিবাসীদের' স্বাধিকার আন্দোলনকে সমর্থন করা মানে হচ্ছে জোরজুলুম করা বহিরাগতদের বিরুদ্ধে লড়াই করা। বাস্তবে কিন্তু এদের অধিকাংশ আন্দোলন, বিশেষ করে বিচ্ছিন্নতাবাদী ধারা, ইউরোপীয় উপনিবেশবাদের তৈরি করা। এর উদ্দেশ্য ছিল ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে দুর্বল করা। এই উদ্দেশ্যে, নানা সংখ্যালঘু গোষ্ঠীকে বা কখনো কখনো নতুন সংখ্যালঘু তৈরি করাও হয়েছিল, যেন তারা ব্রিটিশদের সহযোগী হয়। ভারতীয়দের মধ্যে 'স্থানীয়' আর 'অভিবাসী' বলে এক কল্পিত বিভাজন তৈরি করা হয়েছিল। এটি শুরুতে এক প্রাচীন কালের জাতিগত তত্ত্ব মনে হলেও পরে এটাই হয়ে ওঠে রাজনৈতিক অস্ত্র। তাই যদি হিন্দুরা এই 'স্থানীয় বনাম অভিবাসী' তত্ত্বকে সহজভাবে না নেয়, তাহলে কি তাদের দোষ দেওয়া যায়?
    • কোনরাড এলস্ট, হু ইজ আ হিন্দু? হিন্দু রিভাইভালিস্ট ভিউস অফ অ্যানিমিজম, বৌদ্ধিজম, শিখিজম, অ্যান্ড আদার অফশুটস অফ হিন্দুয়িজম (২০০২) থেকে উদ্ধৃত। ISBN 978-8185990743
  • অনেকেই 'আদিবাসী' শব্দটি নির্দোষ মনে করে ব্যবহার করেন, কিন্তু এটা আসলে একটি রাজনৈতিক শব্দ, যার সবচেয়ে বড় প্রভাব হলো—এটি ভারতের মানুষের মধ্যে 'স্থানীয়' বনাম 'আক্রমণকারী' এক বিভাজন পাকাপোক্ত করে দিয়েছে, অনেকটা যেমনটা দেখা যায় আমেরিকা বা অস্ট্রেলিয়ায়। কিন্তু এখন আর সচেতন কোনও হিন্দু এই রাজনৈতিক শব্দটিকে মেনে নেন না, যদিও যারা হিন্দুধর্মকে ভারতের মূল ধর্ম হিসেবে অস্বীকার করতে চান, তারা এটিকে চালু রাখার চেষ্টা করেন। আদিবাসী কথাটিই একটি সফল বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা। হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা নয়, বরং যাঁরা বিজ্ঞানমনস্কতা বজায় রাখতে চান, তাঁরাও এই 'আদিবাসী' শব্দটি প্রত্যাখ্যান করবেন, কারণ এর মধ্যে একটি ভিত্তিহীন ধারণা লুকিয়ে আছে—যে ভারতের একমাত্র আসল অধিবাসী তারাই। বাস্তবে, এমন কেউ নেই যে ভারতের উপজাতিদের মূল অধিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চায় না। কিন্তু 'আদিবাসী' শব্দটি কার্যত বলেই দেয়, বাকি ভারতীয়রা বিদেশি, একেবারে যেমন ব্রিটিশরা ছিল। কাউকে আদি বাসিন্দার মর্যাদা দিতে অনীহা নেই — এমনকি হিন্দুত্ববাদীদেরও না। কিন্তু একজন নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক অবশ্যই এই শব্দের প্রকৃত অর্থ প্রত্যাখ্যান করবেন, যেখানে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে, অন্যান্য ভারতীয়রা আদি বাসিন্দা নয়। তারা যেন আমেরিকায় ইউরোপীয়দের মতো — যারা আসল আদিবাসীদের ধ্বংস করে দিয়েছে।
    • কোনরাড এলস্ট, হু ইজ আ হিন্দু? হিন্দু রিভাইভালিস্ট ভিউস অফ অ্যানিমিজম, বৌদ্ধিজম, শিখিজম, অ্যান্ড আদার অফশুটস অফ হিন্দুয়িজম (২০০২) থেকে উদ্ধৃত। ISBN 978-8185990743
  • আফগানিস্তানের কাফিরদের থেকে শুরু করে দক্ষিণ-মধ্য ভারতের গোঁড় গোন্ডদের পর্যন্ত — উপজাতি সম্প্রদায়গুলো প্রাচীন সমাজকে মুসলিম আক্রমণের বিরুদ্ধে রক্ষা করতে বড় ভূমিকা রেখেছে। মহাভারতের একলব্য, যিনি ছিলেন ভীল বংশের ছেলে, তিনি রাজকীয় অস্ত্রশিক্ষক দ্রোণাচার্যের কাছে তিরন্দাজির শিক্ষা নিতে গিয়েছিলেন। যদিও পরে দ্রোণ তাকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেন (যার কারণ সামাজিক পরিচয় নয়), তবুও এটি প্রমাণ করে যে ভীল উপজাতি এবং বৈদিক ভারতীয়রা নিয়মিত মেলামেশা করত। যারা এই গল্পকে হিন্দুধর্মের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেন, তারা হয় জানেন না, নয়তো ইচ্ছাকৃতভাবে উপেক্ষা করেন — যে একলব্য মহাভারতে (II.37.47; II.44.21) দুইবার “মহান রাজা” হিসেবে উল্লেখিত হয়েছেন, এবং যুধিষ্ঠিরের রাজসূয় যজ্ঞে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, তাকে যথাযোগ্য সম্মানও দেওয়া হয়েছিল। কৌটিল্য তার রচনায় উপজাতি (আতবী) বাহিনীকে হিন্দু রাজাদের সেনাবাহিনীতে উল্লেখ করেছেন। রামচন্দ্রও রাবণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বনের অধিবাসী বানরদের সহযোগিতা নিয়েছিলেন। উপজাতিরা হয়তো সমাজের প্রান্তে বসবাস করত, কিন্তু তারা ছিল হিন্দু সমাজের দৃষ্টিসীমার মধ্যেই।
    • কোনরাড এলস্ট, হু ইজ আ হিন্দু? হিন্দু রিভাইভালিস্ট ভিউস অফ অ্যানিমিজম, বৌদ্ধিজম, শিখিজম, অ্যান্ড আদার অফশুটস অফ হিন্দুয়িজম (২০০২) থেকে উদ্ধৃত। ISBN 978-8185990743। উল্লিখিত: কৌটিল্য, অর্থশাস্ত্র ৯:২:১৩-২০, পেঙ্গুইন সংস্করণ, পৃ. ৬৮৫।
  • বিরসা মুন্ডা, যিনি ১৮৯৯ সালে মিশনারি পোস্টে আক্রমণ চালিয়ে মুন্ডা বিদ্রোহ শুরু করেন, তিনি দাবি করেছিলেন তিনি বাইবেলীয় নবীদের মতো স্বপ্নদর্শন লাভ করেন। কিন্তু তিনি তার অনুসারীদের বলেছিলেন পশু বলি, ডাইনিবিদ্যা ও মাদক সেবন ত্যাগ করতে এবং উপনয়ন গ্রহণ করতে — যা এক ধরনের আত্ম-সংস্কৃতিকরণ। এমন চারিত্রিক নেতৃত্বরা আসেন এবং যান। কিন্তু উপজাতি জাতীয়তাবাদের ঐতিহ্য টিকে থাকে। এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সেই শক্তিকে বৃহত্তর হিন্দু কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে চায়। জেরার্ড হিউজে সঠিকভাবেই উল্লেখ করেছেন — উনিশ শতকে উপজাতিদের বিদ্রোহ যেমন ১৮৩০ সালের কোল আন্দোলন, ১৮৫৫ সালের সাঁওতাল হুল এবং ১৮৯৯ সালের বিরসা বিদ্রোহ — এগুলো পরে স্বাধীনতা আন্দোলনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এগুলোকে “জাতির প্রকৃত আত্মা” হিসেবে তুলে ধরা হয়। যদিও বাস্তবে হিন্দু ও মুসলিম জমিদার ও মহাজনদের শোষণও উপজাতিদের বিদ্রোহে বাধ্য করেছিল।
    • কোনরাড এলস্ট, হু ইজ আ হিন্দু? হিন্দু রিভাইভালিস্ট ভিউস অফ অ্যানিমিজম, বৌদ্ধিজম, শিখিজম, অ্যান্ড আদার অফশুটস অফ হিন্দুয়িজম (২০০২) থেকে উদ্ধৃত। ISBN 978-8185990743। । উল্লিখিত:জেরার হেউজে, উ ভা ল’ঁদ মোদার্ন?, পৃ. ১৩৩।
  • কিছু আদিবাসী ঐতিহ্য সংস্কৃত ঐতিহ্য থেকে অনুপ্রাণিত হতে পারে, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেগুলো বৈদিক ঐতিহ্যের সঙ্গে সমান্তরালে এবং স্বতন্ত্রভাবে বিকশিত হয়েছে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে, সেগুলোর উৎস অনেক প্রাচীন, সম্ভবত এমনকি প্রাক-বৈদিক যুগ পর্যন্ত বিস্তৃত, যদিও এত গভীর সময়ে সেগুলোর মূল উৎস সংস্কৃতধর্মী মূলধারার সঙ্গে অভিন্নও হতে পারে... যদি ঐতিহাসিক সংজ্ঞা অনুসরণ করি, তাহলে আদিবাসীরা হিন্দু কি না, এই প্রশ্নের উত্তর খুব সহজ: তারা ভারতীয়, কিন্তু তারা কোনো ঈশ্বরপ্রেরিত একেশ্বরবাদী ধর্মের অনুসারী নয়, তাই তারা ভারতীয় পৌত্তলিক বা হিন্দু। উপরন্তু, গঠনগতভাবে আদিবাসী ধর্মগুলো বৈদিক ধর্মের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। তাদের মধ্যে অনেক সাধারণ উপাদান রয়েছে... খ্রিস্টান বা ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে, আদিবাসী 'অ্যানিমিজম' আর হিন্দুধর্মের মধ্যে পার্থক্য শুধু একাডেমিক আলোচনার বিষয়, কারণ সব দিক থেকেই এই দুটি ধর্মই বহু-ঈশ্বরবিশ্বাসী ও পৌত্তলিক ধারার অন্তর্গত। তবে, এতে হিন্দুদের অনেক অংশের সঙ্গে আদিবাসীদের অনেক অংশের মধ্যকার ব্যবহারিক দূরত্ব অস্বীকার করা যায় না—একটা সাংস্কৃতিক ফারাক, যা হিন্দুত্ববাদী কর্মীরা দূর করতে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এই প্রচেষ্টায়, তাদের বড় সহায়তা করছে সমাজের মূলধারায় আদিবাসীদের অনিবার্যভাবে টেনে আনা প্রাকৃতিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিবর্তন, যার ফলে তারা প্রধান ধর্ম অর্থাৎ হিন্দুধর্মের অংশ হয়ে উঠছে।
    • কোনরাড এলস্ট, হু ইজ আ হিন্দু? হিন্দু রিভাইভালিস্ট ভিউস অফ অ্যানিমিজম, বৌদ্ধিজম, শিখিজম, অ্যান্ড আদার অফশুটস অফ হিন্দুয়িজম (২০০২) থেকে উদ্ধৃত। আইএসবিএন 978-8185990743
  • ব্রিটিশরা, যাদের উদ্দেশ্য ছিল সীমান্ত অঞ্চলগুলোকে সাম্রাজ্যের প্রতিরক্ষামূলক বলয় রূপে গড়ে তোলা, প্রায় ১৮৩০ সালের দিকে নাগাদেরকে 'আবিষ্কার' করে, কিন্তু এই অঞ্চলে কেউ যেন সরকারি বা সামরিক উদ্দেশ্য ছাড়া প্রবেশ করতে না পারে, তা নিষিদ্ধ করে—যদিও কৌতূহলোদ্দীপকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা খ্রিস্টান মিশনারিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল না!... বলা যায়, প্রশাসকরা এবং তাদের অনুসরণে নৃতত্ত্ববিদ ও মিশনারিরাই শ্রেণিবিন্যাস ও শৃঙ্খলার প্রয়োজনে 'নাগা' জনজাতির সৃষ্টি করেন এবং সেইসঙ্গে নাগা জাতীয়তাবাদেরও জন্ম দেন... আসামের চা-বাগান রক্ষার তাগিদে (যেমন নাগা আক্রমণের হাত থেকে), ব্রিটিশরা একটি দীর্ঘ 'শান্তিকরণ', প্রশাসনিক ও খ্রিস্টানীকরণের প্রক্রিয়া চালিয়ে যান পাহাড়ি অঞ্চলের গভীরে। নাগারা এই প্রসারণের তীব্র বিরোধিতা করে; তাদের বিদ্রোহের জবাবে আসে দমনমূলক অভিযানের মাধ্যমে তথাকথিত 'সভ্য করার' প্রচেষ্টা।
    • হেলেন উইলেমার, লে নাগা, মঁতাঞার আন্ত্র ল’ঁদ এ লা বীরমানি, উদ্ধৃত: কোনরাড এলস্ট, ডিকলোনাইজিং দ্য হিন্দু মাইন্ড: আইডিওলজিকাল ডেভেলপমেন্ট অফ হিন্দু রিভাইভালিজম (২০১৪), নয়াদিল্লি: রূপা, পৃ. ২৯১-২৯২।
  • মিশনারিদের প্রভাব অনেক জনজাতির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ক্ষয় করেছে, কারণ ঐতিহসিক পৌরাণিক কাহিনি, বিশ্বাস ও আচার-অনুষ্ঠানের সঙ্গে এই সংস্কৃতি গভীরভাবে সংযুক্ত ছিল, এবং সেগুলোর পরিত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে সংস্কৃতিটিও ম্লান হয়ে যায়। বিশেষ করে, কোনো গোষ্ঠীর একটি অংশের ধর্মান্তরণ গোটা জনগোষ্ঠীর সামাজিক ঐক্য ধ্বংস করে দেয়... [নিশি উপজাতির মধ্যে] ধর্মান্তরিতরা সহনশীলতা ও বিবেচনার অভাব দেখিয়েছে... ধর্মান্তরিত সন্তানেরা তাদের বৃদ্ধ পিতামাতাকে ত্যাগ করেছে, এই বলে যে তারা এমন ঘরে থাকতে পারে না যেখানে 'অসুর' পূজিত হয়... ধর্মান্তরিতরা আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে পুরাতন নিশি আচার অনুষ্ঠানে দেবতাদের আহ্বানরত পুরোহিতদের গালিগালাজ ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছনা করেছে।
    • উদ্ধৃত: কোনরাড এলস্ট, ক্রিস্টোফ ফন ফুরের-হাইমেনডর্ফ: ট্রাইব্স অফ ইন্ডিয়া, (২০০১)। ডিকলোনাইজিং দ্য হিন্দু মাইন্ড: আইডিওলজিকাল ডেভেলপমেন্ট অফ হিন্দু রিভাইভালিজম (২০১৪), নয়াদিল্লি: রূপা, পৃ. ৫৩১-৫৩৩।
  • কিছু তথাকথিত 'জনজাতি' আসলে পূর্বে পূর্ণাঙ্গ হিন্দু জাতিভুক্ত ছিল, যারা ইসলামি শাসন থেকে বাঁচতে জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছিল। সবচেয়ে সুপরিচিত উদাহরণ সম্ভবত গন্ড সম্প্রদায়...: "এইভাবে গন্ডরা, যারা মধ্যযুগীয় মানদণ্ড অনুযায়ী সভ্য জাতি ছিল, মুসলিম শাসনের অধীনে এক নিম্নবর্গীয় উপজাতিতে পরিণত হয় এবং তারপর থেকেই সেভাবেই রয়ে গেছে।"
    • কোনরাড এলস্ট উদ্ধৃত করছেন কে.এস. লালকে: গ্রোথ অফ স্ক্যজুলড ট্রাইবস, (২০০১)। ডিকলোনাইজিং দ্য হিন্দু মাইন্ড: আইডিওলজিকাল ডেভেলপমেন্ট অফ হিন্দু রিভাইভালিজম, নয়াদিল্লি: রূপা, পৃ. ৪০৫।
  • সরকারকে সময়ে সময়ে জানানো হয়েছে যে, খ্রিস্টান মিশনারিরা হয় জোর করে, নয় প্রতারণা বা অর্থ ও অন্যান্য প্রলোভনের মাধ্যমে নিরক্ষর আদিবাসী ও পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীকে ধর্মান্তর করে... যদি ধর্মান্তরণ একক ব্যক্তির সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে প্রত্যাশা করা যায় যে সে ধর্ম সম্পর্কে গভীর চিন্তা ও অধ্যয়ন করবে। কিন্তু যা আমরা দেখতে পেয়েছি তা হলো—অশিক্ষিত আদিবাসী জনগোষ্ঠী, পরিবারসহ ও শিশুদের নিয়ে মাথার চুলি কাটিয়ে খ্রিস্টান হিসেবে দেখানো হয়েছে। এদের বেশিরভাগই নতুন ধর্মের প্রাথমিক জ্ঞানটুকুও রাখে না... মিশনারিদের প্রচেষ্টায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠী, দূরবর্তী ও অরণ্য-আবৃত অঞ্চলে ব্যাপক ধর্মান্তরণ, বিদেশি অর্থ সাহায্যে সম্পন্ন হয়েছে—এগুলোকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের ভূমি প্রস্তুত করার প্রচেষ্টা বলে মনে করা হয়েছে, পাকিস্তানের মতো... “লুথেরান ও রোমান ক্যাথলিক মিশনের প্রভাবে আদিবাসীদের মধ্যে যে বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রবণতা তৈরি হয়েছে, তা সম্পূর্ণরূপে ব্রিটিশ সরকারের ধারাবাহিক নীতি এবং মিশনারিদের কার্যকলাপের ফল। ১৯৩১ সালের জনগণনায় আদিবাসীদের হিন্দুদের মূলদেহ থেকে পৃথক দেখানো এবং সাইমন কমিশনের সুপারিশসমূহ, যা ১৯৩৫ সালের ভারত সরকার আইনে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল, সম্ভবত ঝাড়খণ্ডকে পাকিস্তানের ধাঁচে একটি আলাদা রাষ্ট্র করার দাবি তোলার মঞ্চ তৈরি করে দেয়।”... “আদিবাসীদের এই প্রচেষ্টা, যার সূচনা খ্রিস্টান অংশ দ্বারা, বার্মা, আসাম ও ইন্দো-চীন অঞ্চলে কারেন, নাগা এবং অ্যাম্বয়ন জনগোষ্ঠীর মধ্যেও দেখা যায়। এটি ধর্মান্তরিত খ্রিস্টানদের মধ্যে, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের মতোই, ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের চেতনার জাগরণ হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে ধর্মান্তরণ জাতীয়তা পরিবর্তনের মাধ্যম—এই ধারণা মূলত মিশনারি মহলেরই সৃষ্টি... এইভাবে, যখন জনগণনা কর্মকর্তা নির্দিষ্ট অংশকে মূল জনগোষ্ঠী থেকে আলাদা করে দেন, তখন মিশনারিরা তাদের ধর্মান্তর করে একটি আলাদা জাতীয়তা দেন যাতে তারা নিজেদের জন্য একটি আলাদা রাষ্ট্র দাবি করতে পারে।”
    • মধ্যপ্রদেশ রিপোর্ট অন খ্রিস্টান মিশনারি অ্যাকটিভিটিজ (১৯৫৬), উদ্ধৃত: মধ্যপ্রদেশ (ইন্ডিয়া), সীতা রাম গোয়েল, এম. বি. নিয়োগী (১৯৯৮), ভিন্ডিকেটেড বাই টাইম: দ্য নিয়োগী কমিটি রিপোর্ট অন খ্রিস্টান মিশনারি অ্যাকটিভিটিজ। আইএসবিএন 9789385485121
  • যাই হোক না কেন, ধর্মীয় বিষয়ে ধরমনিরপেক্ষরা যতটা না জানে, খ্রিস্টান মিশনারিরা সবসময়ই অনেক চালাক আর ভালোভাবে জানত। ভারতীয় জনগণকে ভাগ করার জন্য তারা একটি নতুন কৌশল নেয়—একটি ছদ্ম-স্থানীয় সংস্কৃত শব্দ তৈরি করে—‘আদিবাসী’। এই ছোট্ট শব্দটি আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম সফল ভুল তথ্য প্রচারের মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায়। এর ফলে, উপজাতিদের নিয়ে চিন্তাভাবনায় একটা মিথ্যা ‘আদিবাসী বনাম অভিবাসী’ দ্বন্দ্ব ঢুকে যায়। এই ধরনের মিথ্যা ধারণা কেউ যত সহজে মেনে নেয়, তার মধ্যে সবচেয়ে আগ্রহী হলো সেকুলারপন্থীরা—ধর্মীয় এবং ভারতীয় বিষয় নিয়ে যাদের জ্ঞানের পরিমাণ খুব কম, কিন্তু যেকোনো কিছুতে যদি হিন্দুবিরোধিতা করা যায়, তাহলে তারা তৎপর হয়ে ওঠে।
  • তাদের কাছে বিপুল পরিমাণ টাকা, মিডিয়া শক্তি, আর ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ও ইসলামপন্থী গোষ্ঠীর সঙ্গে জোট থাকার কারণে তারা খ্রিস্টান মিশনারিদের কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললে সহজেই তার পাল্টা জবাব দিতে পারে—তারা হিন্দুত্ববাদীদের ওপর আরও গুরুতর অভিযোগ তুলে তা ঢেকে দেয়। কাশ্মীরে হাজারেরও বেশি হিন্দু নিহত হয়, লক্ষাধিক হিন্দুদের জাতিগতভাবে উৎখাত করা হয়—তবুও বিশ্ব মিডিয়া সেটা নিয়ে মাথা ঘামায় না। কিন্তু কোনো এলাকায় যদি সামান্য দাঙ্গা হয়, বা অজ্ঞাত উপজাতি কারও হাতে একজন-দুজন মিশনারি মারা যায়, তখন সারা বিশ্ব চেঁচিয়ে ওঠে। খ্রিস্টান নাগা সন্ত্রাসীরা বহু বছর ধরে অখ্রিস্টানদের হত্যা করে চলেছে, তবুও সেটা নিয়ে কেউ কিছু বলে না। উল্টে বলা হয়, 'হিন্দু ভারত' নাকি নাগাদের দমন করছে। সঙ্ঘের লোকেরা এত নিখুঁত কৌশলে দোষ চাপাতে পারে না, যেমনটা খ্রিস্টান লবি পারে। তারা এতটাই দক্ষ যে, বাইরের দেশগুলোর ভারতবিষয়ক বিশ্লেষকরা যখন দেখতে পেল যে বিজেপি সরকার আসার পরেও প্রত্যাশিত 'ফ্যাসিবাদ' দেখা যায়নি, বরং সবচেয়ে কম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে—তখন খ্রিস্টানদের 'নিপীড়নের গল্প' যেন স্বর্গ থেকে পাওয়া উপহার হয়ে গেল. ... পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, নৈতিক দিক দিয়ে হিন্দুরা পিছিয়ে পড়েছে। উপজাতি এলাকায় ধর্মান্তরের সময় হিন্দু মূর্তি ধ্বংস করাটা একটা স্বাভাবিক অংশ, কিন্তু যখন কোনো গির্জা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখনই সেটা বড় ঘটনা হয়ে ওঠে। খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত লোকেরা তাদের পার্শ্ববর্তী অধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালায়, অথচ তারা সব সময় পার পেয়ে যায়—এই অপরাধগুলো না মিডিয়ায় আসে, না শাস্তি হয়। ১৯৫০-এর দশকে নৃবিজ্ঞানী ভেরিয়ার এলউইন আর ফুয়েরার-হেইমেনডর্ফ দেখিয়েছিলেন, কীভাবে ধর্মান্তর উপজাতি সমাজের ঐক্য ধ্বংস করে দেয়। কিন্তু আজ সেই বাস্তবতা বললে বলে দেয়া হয়, তুমি নাকি ‘খ্রিস্টান বিরোধী ঘৃণা’ প্রচার করছ। খ্রিস্টান ধর্মযাজকরা যদি উপজাতি সংস্কৃতির মূলকে ভেঙে দেয়, তাহলে সেটা ‘নিঃস্বার্থ সেবা’। আর হিন্দু সন্ন্যাসীরা যদি উপজাতিদের তাদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে বলেন, তাহলে তারা নাকি ‘সাম্প্রদায়িক ঘৃণার বীজ বপন করছে’। ফলে, নৈতিক দিক থেকে শক্তি খ্রিস্টান মিশনারিদের হাতে, আর কোনো হিন্দু-খ্রিস্টান সংঘর্ষ হলে সেই লাভও তারাই পাবে—নৈতিক আর রাজনৈতিক, দুই ক্ষেত্রেই।
  • ভারতের সাহিত্যেও দেখা যায়, ঋগ্বেদিক যুগ থেকেই (যেমন ঋগ্বেদ দশম মন্ডল, সূক্ত ১৪৬), বনদেবী অরণ্যনীর বর্ণনা খুবই মঙ্গলময়। তাকে কখনোই কোনো ভয়ানক বা অশুভ শক্তি হিসেবে দেখানো হয়নি। বনভূমির আত্মাদেরও সবসময় শুভ বলে দেখা হয়েছে। আর বনবাসী মানুষদেরও বরাবরই প্রকৃতির সাথে মিশে থাকা স্বাধীন মানুষ হিসেবে শ্রদ্ধা করা হয়েছে। কখনো কখনো তাদের আরও সভ্য আর নিষ্পাপ বলে রোমান্টিক করে তোলা হয়েছে—যেমন দ্বাদশ শতাব্দীর বৈষ্ণব সাহিত্যে ‘তিরুবরঙ্গ কালম্বগম’ কবিতায় এক উপজাতি নেতাকে সম্মান করা হয়েছে, যিনি রাজকন্যার বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
    • . রাজীব মালহোত্রা, আর. নীলকণ্ঠন ও ইনফিনিটি ফাউন্ডেশন (প্রিন্সটন, এন.জে.), ব্রেকিং ইন্ডিয়া: ওয়েস্টার্ন ইন্টারভেনশনস ইন দ্রাবিড়িয়ান অ্যান্ড দলিত ফল্টলাইনস (২০১৬)।
  • ভারতের প্রতিটি স্তরের সমাজে কোনো না কোনো রকমের ‘প্রকৃতির পূূজারী’ বা প্রাণবাদী বিশ্বাস বর্তমান।
    • জনগণনা কমিশনার জে.এ. বেইনস, জনগণনা রিপোর্টে উদ্ধৃত [৪]
  • [[হিন্দুধর্ম নিজেই] “দর্শনের ছোঁয়ায় কিছুটা বদলে যাওয়া প্রাণবাদ (অ্যানিমিজম)”—এবং “হিন্দুধর্ম আর প্রাণবাদ (অ্যানিমিজম)-এর মধ্যে স্পষ্ট কোনো বিভাজনরেখা টানা যায় না।
    • স্যার হারবার্ট হাইসলি, জনগণনা কমিশনার, ১৯০১, জনগণনা রিপোর্টে উদ্ধৃত [৫]
  • গোণ্ড বা ভীলদের ধর্মীয় মনোভাবের মধ্যে এবং নিম্ন হিন্দু জাতিগুলোর মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই। উভয়েই মূলত প্রকৃতির পূূজারী। … তাই এটা পরিষ্কার যে "প্রাণবাদী" শব্দটি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সেই সাম্প্রদায়িক পার্থক্য তুলে ধরে না, যা আদমশুমারিতে ধর্ম বিভাগে মূল ভাবনার বিষয়। ... "বেদীয় ধর্ম" নিজেও মূলত প্রাণবাদী।
    • স্যার হারবার্ট হাইসলি, জনগণনা কমিশনার, ১৯১১ জনগণনা রিপোর্টে উদ্ধৃত[৬]
  • হিন্দুদের সঙ্গে প্রকৃৃতির পূজারীদের মধ্যে পার্থক্য করা কঠিন" … "আমি তাই নির্দ্বিধায় বলতে পারি, প্রাণবাদীকে একটি আলাদা ধর্ম হিসেবে রাখা উচিত নয়, এবং যাদের এতদিন প্রাণবাদী হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে, তাদের পরবর্তী আদমশুমারিতে হিন্দুদের সঙ্গেই গণ্য করা উচিত।"
    • পি.সি. ট্যালেন্টস, জনগণনা কমিশনার, ১৯২১ জনগণনা রিপোর্টে উদ্ধৃত[৭]
  • হিন্দুধর্ম আর উপজাতীয় ধর্মের মধ্যে পার্থক্য করা খুব কঠিন।
    • জে.এইচ. হাটন, জনগণনা কমিশনার, ১৯৩১, জনগণনা রিপোর্টে উদ্ধৃত[৮]
  • চেবরোলু লীলা প্রসাদ রাও ও অন্যান্য বনাম অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার মামলায় সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ যে রায় দিয়েছে, তা আবারও দেখিয়ে দিয়েছে যে সংবিধানের ৫ম তফসিল, যা আদিবাসীদের অধিকার রক্ষার কথা বলে, তা কতটা কম বোঝা হয়েছে। এই রায়ে ২০০০ সালের অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের সেই আদেশ খারিজ করে দেওয়া হয়েছে, যেখানে নির্ধারিত অঞ্চলে ১০০% উপজাতি শিক্ষক নিয়োগের কথা বলা হয়েছিল। এই যুক্তি সংবিধানের ৫ম তফসিলের পুরো কাঠামো ভেঙে দেওয়ার দিকে বিপজ্জনকভাবে এগোচ্ছে। যদি ১০০% সংরক্ষণই গ্রহণযোগ্য না হয়, তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপ হতে পারে উপজাতি ভূমির হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা, কিংবা একীভূত অন্ধ্রপ্রদেশে উপজাতি এলাকায় অজাতিদের খনির ইজারা দেওয়া নিষিদ্ধ করা সংক্রান্ত সামতা রায় বাতিলের চেষ্টা। কারণ, এ দুটোই তো অ-আদিবাসীদের প্রতি 'পক্ষপাত'। যখন অন্যান্য জেলার অ-আদিবাসীরা নির্ধারিত এলাকাগুলিতে ভিড় করতে শুরু করে এবং স্পষ্ট জনসংখ্যাগত পরিবর্তন ঘটে, তখন সংবিধানের ৫ম তফসিলের সুরক্ষামূলক ধারাগুলি বাতিল করার দাবিও ক্রমশ আরও জোরালো হয়ে উঠছে।
  • ২০০০ সালের অন্ধ্রপ্রদেশের সরকারি আদেশের লক্ষ্য ছিল উপজাতি এলাকায় শিক্ষা প্রচার এবং শিক্ষক অনুপস্থিতির ব্যাপক সমস্যা মোকাবিলা করা। যারা উপজাতি এলাকার সমস্যার সঙ্গে সামান্য পরিচিত, তারাও জানেন—অ-আদিবাসী শিক্ষকরা প্রায়ই দুর্গম আদিবাসী গ্রামে যেতে বা সেখানে থাকতে অনীহা দেখান। ভাষাও একটি বড় সমস্যা। অনেক অজাতি ব্যক্তি, এমনকি নিম্নপদস্থ সরকারি কর্মচারীরাও, বহু বছর উপজাতি এলাকায় বসবাস করেও উপজাতি ভাষা শেখার প্রয়োজন মনে করেন না। প্রাথমিক স্তরে, উপজাতি ছাত্রছাত্রী আর অজাতি শিক্ষকদের মধ্যে পারস্পরিক ভাষাগত অজ্ঞানতা শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে। বিচারপতিরা বলেছেন, “শুধু উপজাতিরাই উপজাতিদের পড়াবে—এই ধারণা আপত্তিকর” (অনুচ্ছেদ ১৩৩), কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাব্যবস্থায় যে সত্যিকারের আপত্তিকর ধারণাটি চালু আছে, এবং এই রায়েও যার প্রতিফলন রয়েছে, সেটি হল—উপজাতিদের শুধু আদিবাসীরাই পড়াবে। কারণ, “ওদের ভাষা আর আদিম জীবনধারা ওদের মূল স্রোতের উপযোগী করে তোলে না, ওরা সাধারণ আইনে শাসিত হওয়ার যোগ্য নয়” (অনুচ্ছেদ ১০৭)।
  • ভারতের আদিবাসীদের নিয়ে প্রচলিত এক সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি হল বিচারপতি এস.বি. সিনহার ২০০১ সালের অন্ধ্র প্রদেশ হাই কোর্টে দেওয়া সংখ্যালঘু রায়ে প্রতিফলিত হয়, যেখানে অ-আদিবাসী শিক্ষকদেরকে নিজগুণে অধিক দক্ষ ও যোগ্য বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল (প্যারা ৮৬); এবং তিনি বলেন, “শিক্ষাগতভাবে পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন এমন শিক্ষকদের দ্বারা শিক্ষা প্রদান, যারা বেশি জ্ঞানী ও বেশি যোগ্য, তাদের জাতপাত নির্বিশেষে” (প্যারা ১২৬)। সুপ্রিম কোর্ট যখন বলে, “তাদের (আদিবাসীদের) এক ধরনের মানব চিড়িয়াখানা হিসেবে দেখা উচিত নয়, যেখান থেকে আদিম সংস্কৃতি বা নাচের আনন্দ নেওয়া যায়” (চেব্রোলু মামলার প্যারা ১০৭), তখন এই মন্তব্য আসলে সেই মনোভাবকেই উন্মোচিত করে—যেটা আদিবাসীদের ঠিক এই দৃষ্টিতে দেখে, পরিবর্তে তাদের নিজস্ব শিক্ষা ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার স্বীকার করে না। দীর্ঘদিন ধরে ভারতের শিক্ষাব্যবস্থাকে একটা ‘সভ্যতা-প্রদান মিশন’ হিসেবে দেখা হয়েছে—যার লক্ষ্য ছিল আদিবাসী ও দলিতদের উচ্চবর্ণের মানসিক প্রতিচ্ছবিতে রূপান্তর করা, যদিও তারা অধীনস্থ কাজেই থেকে যাক না কেন। খানে ‘যোগ্যতা’ মানে আসলে এই রূপান্তরের দক্ষতা, না যে কেউ স্থানীয় বাস্তুসংস্থান সম্পর্কে জ্ঞান ব্যবহার করতে পারছে, না আদিবাসী ভাষা ও সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে পারছে, না আদিবাসী ছাত্রদের আত্মবিশ্বাস জোগাতে পারছে আদর্শ হিসেবে দাঁড়িয়ে। যদিও অনেক আদিবাসী শিক্ষকও অ-আদিবাসীদের শ্রেষ্ঠত্বের এই ধারণা মেনে নিয়েছেন, তবুও নির্ধারিত অঞ্চলে শতভাগ আদিবাসী শিক্ষক নিয়োগ এই অবমূল্যায়নের বিরুদ্ধে একটা ছোট কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ।
  • সুপ্রিম কোর্টের এই রায়টি এসেছিল কিছু অ-আদিবাসীর আপিলের প্রেক্ষিতে, যারা ২০০১ সালের সেই হাই কোর্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ রায়ের বিরুদ্ধে গিয়েছিল, যেখানে ২০০০ সালের সরকারি আদেশটিকে বৈধতা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায় কার্যত হাই কোর্টের সংখ্যালঘু মতকেই অনুকরণ করে অ-আদিবাসীদের পক্ষে যায়। তারা নিজেদের জন্য চারটি প্রশ্ন নির্ধারণ করেছিল—
    • পঞ্চম তফসিলভুক্ত এলাকায় রাজ্যপালের আইন প্রণয়নের ক্ষমতা মৌলিক অধিকার বা সংবিধানের তৃতীয় ভাগ অগ্রাহ্য করতে পারে কিনা;
    •. শতভাগ সংরক্ষণ সাংবিধানিকভাবে গ্রহণযোগ্য কিনা;;
    •সরকারি আদেশটি সংবিধানের ১৬(১)-এর অধীনে বৈষম্যমূলক শ্রেণীকরণ কিনা, না ১৬(৪)-এর অধীনে সংরক্ষণের আওতাভুক্ত কিনা;
    •সংরক্ষণের জন্য ধার্য আবশ্যিক যোগ্যতা—অর্থাৎ ১৯৫০ সাল থেকে ওই এলাকায় ধারাবাহিক বসবাস—এটি যুক্তিসংগত কিনা।
    Iএই প্রশ্নগুলির প্রত্যেকটির উত্তর দেওয়ার সময় আদালত দেশের বাস্তবতা ও সংবিধানের ইতিহাস সম্পর্কে গভীর অজ্ঞতা দেখিয়েছে। [...] মনে রাখা জরুরি, যখন সংবিধান রচনাকালে ব্যতিক্রমী ও আংশিক ব্যতিক্রমী এলাকার উপকমিটিতে পঞ্চম তফসিল অনুযায়ী রাজ্যপালের আইন প্রণয়নের ক্ষমতা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল, তখন বিতর্ক ছিল এই ক্ষমতা যেন গণতন্ত্রবিরোধীভাবে ব্যবহৃত না হয় এবং যেন তা নির্বাচিত আইনসভাকে পাশ কাটিয়ে প্রয়োগ না হয়। এই কারণেই 'ট্রাইবস অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল' গঠনের কথা বলা হয়েছিল এবং রাজ্যপালের সেই কাউন্সিলের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল (উপকমিটির রিপোর্টের প্যারা ১১খ)। এই বিশেষ ক্ষেত্রে, 'ট্রাইবস অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল' শতভাগ সংরক্ষণের নিয়মে একমত হয়েছিল। কিন্তু যে প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্ট নিজেদের সিদ্ধান্ত দিয়েছিল—যে রাজ্যপালের আইন প্রণয়নের ক্ষমতা কি মৌলিক অধিকারের উপরে—সেখানে তারা সরাসরি ‘না’ বলে দেয়।
  • ভারতের আদিবাসীরা মিশনারি কাজের জন্য এক অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র।
    • লর্ড নর্থ ব্রুকের ভূমিকা থেকে উদ্ধৃত, মি. ব্র্যাডলি বার্ডের - “ছোটনাগপুর” উদ্ধৃত : মধ্যপ্রদেশ (ইন্ডিয়া), সীতা রাম গোয়েল, এম.বি. নিয়োগী (১৯৯৮)। ভিন্ডিকেটেড বাই টাইম: দ্য নিয়োগী কমিটি রিপোর্ট অন খ্রিস্টান মিশনারি অ্যাকটিভিটিজ। আইএসবিএন 9789385485121
  • তবে এটা মানতেই হবে, বহু ক্ষেত্রেই যারা নিজেদের অঞ্চলে প্রথম খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেন, তারা সেটা করেননি জ্ঞানের বা নৈতিকতার খোঁজে। বরং তারা বিশ্বাস করতেন, ইউরোপীয়দের সংস্পর্শে এসে ও তাদের ধর্ম গ্রহণ করে নিজেদের সামাজিক সমস্যাগুলোর সমাধানে তারা সাহায্য পাবে।
    • ‘অ্যান এনকোয়ারি ইনটু দ্য কজেস অফ ল্যান্ড অ্যাকুইজিশন ইন ছোটনাগপুর প্রপার, উদ্ধৃত: মধ্যপ্রদেশ (ইন্ডিয়া), সীতা রাম গোয়েল, এম.বি. নিয়োগী (১৯৯৮)। ভিন্ডিকেটেড বাই টাইম: দ্য নিয়োগী কমিটি রিপোর্ট অন খ্রিস্টান মিশনারি অ্যাকটিভিটিজ। আইএসবিএন 9789385485121
  • এ নিয়ে একটুও সন্দেহ নেই যে, চার্চে সদস্যপদ চেয়ে যারা ধর্মান্তরিত হচ্ছেন, তাদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠের প্রেরণা মূলত পার্থিব বা ধর্মবহির্ভূত উদ্দেশ্য থেকেই আসে।
    • জার্মান মিশন রিপোর্ট ফর ১৮৭৫, উদ্ধৃত: মধ্যপ্রদেশ (ইন্ডিয়া), সীতা রাম গোয়েল, এম.বি. নিয়োগী (১৯৯৮)। ভিন্ডিকেটেড বাই টাইম: দ্য নিয়োগী কমিটি রিপোর্ট অন খ্রিস্টান মিশনারি অ্যাকটিভিটিজ। আইএসবিএন 9789385485121
  • “ছোটনাগপুরে লক্ষ লক্ষ আদিবাসী খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেছে। সুন্দর সাঁওতাল পরগনা দ্রুত এক খ্রিস্টান অধ্যুষিত অঞ্চলে পরিণত হচ্ছে। গাংপুর রাজ্যে প্রতিটি আদিবাসীই ধর্মান্তরিত হয়েছে। কারেন জনগোষ্ঠী সম্পূর্ণরূপে বাপ্তিস্ম হয়েছে, যেমন হয়েছে প্রতিটি লুশাই-ও। পশ্চিম ভারতে ভীল এবং অন্যান্য জনজাতিগুলিকে জোরেশোরে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। এই গতিতে চললে, পুরো আদিবাসী জনসংখ্যাই খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে যাবে। তারা হয়ে উঠবে এক অস্থির, রাষ্ট্রীয় বিরোধী ও আগ্রাসী সংখ্যালঘু গোষ্ঠী—পুরনো গুণাবলীর কিছুই থাকবে না, নতুনদেরও খুব একটা অর্জন হবে না—যা ভবিষ্যতের ভারত সরকারের জন্য এক কাঁটার মতো হয়ে দাঁড়াবে।”
    • ড. ভারিয়ার এলউইন, ১৯৪৪. উদ্ধৃত: মধ্যপ্রদেশ (ইন্ডিয়া), সীতা রাম গোয়েল, এম.বি. নিয়োগী (১৯৯৮)। ভিন্ডিকেটেড বাই টাইম: দ্য নিয়োগী কমিটি রিপোর্ট অন খ্রিস্টান মিশনারি অ্যাকটিভিটিজ। আইএসবিএন 9789385485121
  • তুমি আমাকে হিন্দুধর্মের খারাপ দিক নিয়ে লিখতে বলেছ। আমার আশঙ্কা, আমাকে তখন খ্রিস্টধর্মের খারাপ দিকও তুলে ধরতে হবে। একে যদি আমরা নিছক নৃতাত্ত্বিক ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি, তাহলে বলতে হয় খ্রিস্টীয় সভ্যতা আদিবাসী সমাজের জীবন ও নৈতিকতাকে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে যেকোনো সংস্কৃতির চেয়ে বেশি বিধ্বংসী।
    • ভারিয়ার এলউইন, দিন-সেবক: ভারিয়ার এলউইনের লাইফ অফ সার্ভিস ইন ট্রাইবাল ইন্ডিয়া, খ্রিস্টান ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ রিলিজিয়ন অ্যান্ড সোসাইটি, বেঙ্গালুরু, ১৯৯৩। একইভাবে উদ্ধৃত: মধ্যপ্রদেশ (ইন্ডিয়া), সীতা রাম গোয়েল, এম.বি. নিয়োগী (১৯৯৮)। ভিন্ডিকেটেড বাই টাইম: দ্য নিয়োগী কমিটি রিপোর্ট অন খ্রিস্টান মিশনারি অ্যাকটিভিটিজ। আইএসবিএন 9789385485121
  • প্রাপ্তবয়স্ক আদিবাসী পুরুষ ও নারীদের জন্য ধর্ম পরিবর্তনের তেমন কোনও তাৎপর্য নেই। রোমান ক্যাথলিক মিশনারিরা যেভাবে কাজ করে, তা থেকে আমার মনে হয়েছে তারাও জানে যে 'অন্তরের স্বাধীনতা' নিয়ে যা বলা হয়, তা এক প্রহসন। তারা খুব ভালো করেই জানে—আমার উপস্থাপিত ইতিহাস থেকেই এটা স্পষ্ট—এই অঞ্চলের আদিবাসীরা ধর্মান্তরিত হয় কেবলমাত্র বস্তুগত লাভের আশায়। প্রকৃত ধর্মের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্কই নেই।”
    • লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ.এস. মীক, ১৯৩৬, এজেন্ট টু দ্য গভর্নর-জেনারেল, ইস্টার্ন স্টেটস, রাঁচি, রিপোর্ট টু দ্য গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া অন দ্য ন্যাচার অফ দ্য অ্যাকটিভিটিজ অফ দ্য ফরেন খ্রিস্টান মিশনারিজ। উদ্ধৃত: মধ্যপ্রদেশ (ইন্ডিয়া), সীতা রাম গোয়েল, এম.বি. নিয়োগী (১৯৫৬, [১৯৯৮ পুনর্মুদ্রণ])। ভিন্ডিকেটেড বাই টাইম: দ্য নিয়োগী কমিটি রিপোর্ট অন খ্রিস্টান মিশনারি অ্যাকটিভিটিজ।
  • খ্রিস্টান আদিবাসীরা কলেজ ও সরকারি চাকরির সমস্ত সংরক্ষিত পদ দখল করে রেখেছে। মিশনারিরা খ্রিস্টান আদিবাসীদের জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেছে, তাদের জন্য স্কুল তৈরি করেছে। তাহলে সরকার কেন তাদের স্কুলকে আর্থিক সাহায্য দেবে, আর যারা খ্রিস্টান নয়, তারা কিছুই পাবে না? সরকার আসলে মিশনারি কাজকেই সাহায্য করছে স্কুলগুলোকে অনুদান দিয়ে। সত্যি বলতে কি, কেউ ধর্ম প্রচার করবে কেন? এক ধর্ম প্রচার মানে তো অন্য ধর্মের বিরুদ্ধাচরণ, আর সেটা থেকে শুরু হয় এক সম্প্রদায়ের প্রতি অন্য সম্প্রদায়ের ঘৃণা। এখানে খ্রিস্টানরাই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। ঝাড়খণ্ড পার্টির মাধ্যমে তারা আদিবাসী রাজনীতিকে কবজা করেছে। ঝাড়খণ্ড হলো এক খ্রিস্টান পার্টি, যার উদ্দেশ্য হল অ-খ্রিস্টানদের দমন করা। সরকার যে সব সুযোগ সুবিধা দেয়, তার সবই পায় খ্রিস্টানরা। যদি সরকার একশোটি চাকরি সংরক্ষিত করে, তার সবগুলোই চলে যায় খ্রিস্টানদের দখলে।
    • কে. ওরাঁও, যিনি ১৯৬৭ সালে সংবিধানে অনুষূচীভুক্ত জনজাতিদের মর্যাদা নিয়ে সংশোধনের প্রস্তাব দেন, উদ্ধৃত: এম. ওয়েইনার, সন্স অফ দ্য সয়েল: মাইগ্রেশন অ্যান্ড এথনিক কনফ্লিক্ট ইন ইন্ডিয়া, পৃ. ১৮৪ ইত্যাদি; এবং ইন্ডিজেনাস ইন্ডিয়ানস: আগস্ত্য টু আম্বেদকর (১৯৯৩), কোনরাড এলস্ট, পৃ. ২৩৫ ইত্যাদি।
  • বিশেষভাবে কোনও কোনও জনজাতির উপর নিবিড় গবেষণা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমার বিশ্বাস, ভারতের নৃতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ASI) সবসময়ই এই ধরনের গবেষণায় সহায়তা করবে। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের জনজাতিদের সমাজ নিয়ে আমাদের নিজেদেরই গবেষণা করা উচিত। আমরা তামিলনাড়ুর নাদার বা গুজরাটের পাটিদারদের অধ্যয়ন বিদেশিদের উপর ছেড়ে দিতে পারি না। আমাদের নিজেদেরই তা করতে হবে। এটা খুবই জরুরি, বিশেষ করে এই কারণে যে, তাদের বৌদ্ধিক ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির চেয়ে অনেকটাই ভিন্ন।
    • এম.এন. শ্রীনিবাস (১৯৯২), উদ্ধৃত: চক্রবর্তী, ডি.কে., কলোনিয়াল ইন্দোলজি: সোশিওপলিটিক্স অফ দ্য এনসিয়েন্ট ইন্ডিয়ান পাস্ট, নয়াদিল্লি: মুন্সীরাম মনোহরলাল পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, পৃ. ৫।

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]