ইলিয়াস আলি (সার্জন)
অবয়ব
ইলিয়াস আলি (জন্ম ১৯৫৫) হলেন ভারতীয় রাজ্য আসামের একজন সার্জন। ২০১৯ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ তাঁকে পশ্চাদপদ অঞ্চলে পরিবার পরিকল্পনা ও জন্মনিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রী প্রদান করেন।
উক্তি
[সম্পাদনা]- দারিদ্র্য, অশিক্ষা, ধর্মীয় গোঁড়ামি এবং পরিবার পরিকল্পনার অভাব প্রভৃতি ইবিওএম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধির প্রধান কারণ। শিক্ষার অভাব, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, দারিদ্র্য ইত্যাদি বিষয় এই জনসংখ্যাজনিত সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলছে… চর-চাপরি অঞ্চলের নিরক্ষর মানুষ বিশ্বাস করে, বেশি সন্তানই দারিদ্র্য দূর করতে পারে এবং তাই দারিদ্র্য দূরীকরণের উপায় হচ্ছে বেশি সন্তান জন্মদান। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ধর্মীয় গোঁড়ামি ও কুসংস্কার—তারা বিশ্বাস করে সন্তান হলো আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ দান এবং তিনিই তাদের আহার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করবেন। মানুষের কিছুই করার নেই—তারা শুধু বাহক মাত্র। সেইজন্য জন্মনিয়ন্ত্রণকে তারা ইসলামবিরোধী কর্ম হিসেবে বিবেচনা করে।
- ইলিয়াস আলি, জনবিস্ফোৰণৰ পম খেদি (অসমীয়া), গুৱাহাটী: মালেকা ফাউন্ডেশন, ২০১৫, পৃষ্ঠা ৮৫-৯০; উদ্ধৃত—ননী গোপাল মহন্ত, সিটিজেনশীপ ডিবেট ওভার এনআরসি এন্ড সিএএ: আসাম এন্ড দ্য পলিটিক্স অফ হিস্ট্রি (২০২১, সেজ পাবলিকেশনস ইন্ডিয়া), পৃষ্ঠা ২৭২
- চর-চাপরি অঞ্চলে বাল্যবিবাহ বা অপ্রাপ্তবয়স্কদের বিয়ে আজও একটি বিপজ্জনক প্রথা হিসেবে বিদ্যমান। অভিবাসী মুসলিম সমাজে মেয়েদের ১২–১৪ বছর বয়সেই জোর করে বিয়ে দেয়া হয়, যেন সেটিই তাদের সমাজ সংস্কারের প্রধান লক্ষ্য। অল্প বয়সেই মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দুই-তিনটি সন্তানের মা বানানো হয়। এর ফলে তারা শারীরিকভাবে কখনোই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারে না। অধিকাংশই অপুষ্টি ও রক্তস্বল্পতায় ভোগে। তাদের জীবনচক্রও খুব সংক্ষিপ্ত হয়। অধিকাংশ নারী শোষিত, অবহেলিত এবং নিগৃহীত… এর পাশাপাশি পারিবারিক সহিংসতা ও নির্যাতন অভিবাসী মুসলিম নারীদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ। বর্তমানে তারাই পরিবারের প্রধান উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হয়ে উঠছেন। দিনমজুর হিসেবে কাজ করা মহিলার সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গৌহাটি ও অন্যান্য মহানগরীগুলোতে এসব অভিবাসী নারী—কোলের শিশুকে সঙ্গে নিয়ে—প্রতিদিন পুরুষ সহকর্মীদের সঙ্গে দিনমজুর হিসেবে কাজ করতে আসছেন।
- ইলিয়াস আলি, জনবিস্ফোৰণৰ পম খেদি (অসমীয়া), গুৱাহাটী: মালেকা ফাউন্ডেশন, ২০১৫, পৃষ্ঠা ৮৫-৯০; উদ্ধৃত—ননী গোপাল মহন্ত, সিটিজেনশীপ ডিবেট ওভার এনআরসি এন্ড সিএএ: আসাম এন্ড দ্য পলিটিক্স অফ হিস্ট্রি (২০২১, সেজ পাবলিকেশনস ইন্ডিয়া), পৃষ্ঠা ২৭২
- মুসলিম সমাজের মধ্যে একটি গভীর সামাজিক সংকট বিদ্যমান। এই সংকট শুধু মাত্র ধর্মীয় কারণে নয়, এটি এক জটিল অর্থনৈতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত সংকটের ফল। একজন চিকিৎসক হিসেবে আমি দেখেছি, বহু মুসলিম নারী গর্ভাবস্থায় ন্যূনতম চিকিৎসা সুবিধাও পান না। সন্তান প্রসবের সময় বহু নারী মৃত্যুবরণ করেন বা মারাত্মক জটিলতায় ভোগেন। অথচ জন্মনিয়ন্ত্রণের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এখনো নেতিবাচক। এই বিষয়ে প্রচলিত ধ্যানধারণা পরিবর্তন না করলে সমাজের স্বাস্থ্য ও ভবিষ্যৎ দুটোই হুমকির মুখে পড়বে।
- ইলিয়াস আলি, জনসংখ্যা আৰু সমাজ: এখন সংকটৰ চিত্র (অসমীয়া), গুৱাহাটী: মালেকা ফাউন্ডেশন, ২০১৭, পৃষ্ঠা ৬১; উদ্ধৃত—আবুল কাসেম, আসাম অ্যান্ড ডিলেমা অফ ডেভেলপমেন্ট (২০২২, ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট), পৃষ্ঠা ১৪৮
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]
উইকিপিডিয়ায় ইলিয়াস আলি সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।