উইকিসংকলন
উইকিসংকলন হলো উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত একটি উইকি-ভিত্তিক অনলাইন ডিজিটাল গ্রন্থাগার, যেখানে মুক্ত লাইসেন্সযুক্ত পাঠ্য উৎসসমূহ সংরক্ষণ ও সম্পাদনা করা হয়। "উইকিসংকলন" শব্দটি একইসঙ্গে সমগ্র প্রকল্প এবং এর প্রতিটি ভাষাগত উপপ্রকল্পকে (যেমন: বাংলা উইকিসংকলন, ইংরেজি উইকিসংকলন) নির্দেশ করে। সমস্ত ভাষার উইকিসংকলন সম্মিলিতভাবে এই বৈশ্বিক প্রকল্প গঠন করে। প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হলো সকল ভাষায় রচিত ও অনূদিত মুক্ত পাঠ্য (গ্রন্থ, ঐতিহাসিক দলিল, কবিতা, আইন ইত্যাদি) ডিজিটালভাবে সংরক্ষণ করা। শুরুতে এটিকে কেবল ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বা উপযোগী পাঠ্যের আর্কাইভ হিসেবে কল্পনা করা হয়েছিল, কিন্তু বর্তমানে এটি যেকোনো বিষয়ের মুক্ত পাঠ্যের একটি সর্বজনীন গ্রন্থাগারে পরিণত হয়েছে। এই উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় ২৪ নভেম্বর, ২০০৩ তারিখে "প্রকল্প সোর্সবার্গ" নামে এটি অনলাইন পাঠ্যভাণ্ডারের মাধ্যমে যা "প্রকল্প গুটেনবার্গ"-এর পরিবর্তিত নাম।

উক্তি
[সম্পাদনা]
- প্রকল্প গুটেনবার্গের কাছে উইকিপিডিয়া ঠিক তেমনই হবে, যেমন নুপিডিয়ার কাছে যেমন।
- দ্য কাঙ্কটেটর, «প্রাইমারি সোর্সেস পিডিয়া, অথবা প্রকল্প সোর্সবার্গ», উইকিপিডিয়া, (১৬ অক্টোবর, ২০০১)।
- আমরা প্রকল্প গুটেনবার্গের প্রচেষ্টার নকল করতে চাই না; বরং তাদের পরিপূরক হতে চাই। প্রকল্প সোর্সবার্গ মূলত (দুটি কাজে ব্যবহৃত হতে পারে): উইকিপিডিয়া থেকে প্রকল্প গুটেনবার্গের ফাইলে সহজে সংযোগ দেওয়ার একটি মাধ্যম হিসেবে, এবং নতুন কাজ সহজে প্রকল্প গুটেনবার্গে জমা দেওয়ার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে।
- দ্য কাঙ্কটেটর, «প্রাইমারি সোর্সেস পিডিয়া, অথবা প্রকল্প সোর্সবার্গ», উইকিপিডিয়া, (১৬ অক্টোবর, ২০০১)।
- প্রতি সপ্তাহে কয়েকবার সিডনির প্রেসবাইটেরিয়ান থিওলজিকাল সেন্টারের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী অ্যালাস্টেয়ার হেইনেস গ্রিক ভাষায় লেখা নূতন নিয়ম নিয়ে বসেন এবং পৌলের প্রথম করিন্থীয় পত্রের অংশবিশেষ অনুবাদ করেন। হেইনেস গ্রিক ভাষায় কথা বলতে পারেন না, তবে পড়তে পারেন। অনুবাদ শেষে তিনি তার কাজটি উইকিপিডিয়ার একটি পাতায় আপলোড করেন—এটি "উইকি বাইবেল প্রকল্প"-এর অংশ, যা জানুয়ারিতে শুরু হয়েছে একটি "মুক্ত ও সম্পূর্ণ নতুন বাইবেল অনুবাদ" তৈরির লক্ষ্যে। এই অনুবাদের মূল উৎস হলো প্রায় ৩০,০০০ পান্ডুলিপি। হেইনেসের মতোই আরও ২১ জন স্বেচ্ছাসেবক এই প্রকল্পে যোগ দিয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের এক উদারপন্থী খ্রিস্টান এবং টেক্সাসের একজন পদ্ধতিপন্থী আর্থিক পরামর্শদাতা। কেউ কেউ দাবি করেন বাইবেলীয় হিব্রু ও প্রাচীন গ্রিক ভাষায় তাদের প্রশিক্ষণ আছে; অন্যদিকে, ব্যবহারকারী জন ক্লোস্টারম্যানের মতো কেউ স্বীকার করেন যে তাদের "কোনো প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা নেই"। প্রকল্পটির প্রধান সমন্বয়ক জন ভ্যান্ডেনবার্গের মতে, এটি সম্পূর্ণ হতে কয়েক বছর লাগবে এবং নিয়মিত পরিমার্জনা প্রয়োজন। তবে তিনি লিখেছেন, "এটাই এর সৌন্দর্য—এটি একটি মুক্ত-পদ্ধতির অনুবাদ।"
কিন্তু বাইবেল বিশেষজ্ঞরা এটি ভুলপূর্ণ ও পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন। চ্যাপেল হিলে অবস্থিত নর্থ ক্যারোলাইনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক বার্ট আরম্যান, যিনি ১৯৮৮ সালে নিউ রিভাইজড স্ট্যান্ডার্ড সংস্করণ অনুবাদে কাজ করেছিলেন, বলেন, "গণতান্ত্রিক পদ্ধতি গবেষণার জন্য ভালো নয়। সেসময় দেশের সেরা গ্রিক ও হিব্রু ভাষাবিদরা ২০ বছর ধরে কাজ করেছিলেন।"- ম্যাথিউ ফিলিপস, "ঈশ্বরের বাক্য, উইকিপিডিয়া অনুসারে", নিউজউইক, (১৪ জুন, ২০০৮)।
- কঠিন প্রশ্নটি হলো— ইতোমধ্যে প্রকল্প গুটেনবার্গ থাকতে আমরা নতুন করে চক্র আবিষ্কার করছি কেন? প্রকল্প গুটেনবার্গকে 'পরিপূরক' করতে চাই। সেটি কীভাবে সম্ভব?
- ল্যারি সিঙ্গার,«প্রাইমারি সোর্সেস পিডিয়া, অথবা প্রকল্প সোর্সবার্গ», উইকিপিডিয়া, (১৭ অক্টোবর, ২০০১)।
- ল্যারির মতো আমিও এতে আগ্রহী যে প্রকল্প গুটেনবার্গে আমরা কী যোগ করতে পারি তা নির্ধারণ করতে এই বিষয়টি গভীরভাবে বিবেচনা করা উচিত। সাধারণভাবে প্রাথমিক উৎসগুলো (যেমন শেক্সপিয়ারের রচনা) যে কারও দ্বারা সম্পাদনাযোগ্য হওয়া উচিত—এ ধারণা যুক্তিসঙ্গত নয়। কারণ, শেক্সপিয়ার হচ্ছেন শেক্সপিয়ার; তাঁর মূল রচনায় পরিবর্তনের অবকাশ নেই। তবে তাঁর কাজের ওপর আমাদের ব্যাখ্যা বা ভাষ্য যেকোনো রকমের হতে পারে, সেটি সম্পূর্ণভাবে আমাদের ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল।
- জিমি ওয়েলস, «প্রাইমারি সোর্সেস পিডিয়া, অথবা প্রকল্প সোর্সবার্গ», উইকিপিডিয়া, (১৭ অক্টোবর, ২০০১)।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]
