বিষয়বস্তুতে চলুন

গগন হরকরা

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

গগন হরকরা বা গগন চন্দ্র দাস বাংলা লোকসঙ্গীতশিল্পী, সঙ্গীত রচয়িতা ও বিশিষ্ট বাউল গীতিকার। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত আমার সোনার বাংলার সুর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সংগ্রহ করেছিলেন গগন হরকরার রচিত একটি গানের সুর হতে। জন্ম অধুনা বাংলাদেশের শিলাইদহের নিকটস্থ আড়পাড়া গ্রামে। পেশা ছিল শিলাইদহ ডাকঘরে চিঠি বিলি করা। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তার বিশেষ অন্তরঙ্গতা ছিল এবং প্রায়ই দুজনে রসালাপ ও সঙ্গীত চর্চা করতেন। রবীন্দ্রনাথ তার গুণমুগ্ধ ছিলেন। রবীন্দ্রনাথের "যে তোমায় ছাড়ে ছাড়ুক" ও "আমার সোনার বাংলা" গান দুটি, গগন হরকরার যথাক্রমে "ও মন অসাড় মায়ায় ভুলে রবে" ও "আমি কোথায় পাব তারে" গান দুটির সুর ভেঙে রচিত হয়।

গগন হরকরা সম্পর্কে উক্তি

[সম্পাদনা]
  • আমি এই প্রথম একটি বাউল গান গভীর মনোযোগ সহকারে শুনেছিলাম, যা আমার মনে গভীর আলোড়ন তুলেছিল। এই গানের ভাষা এতটাই সরল যে, এটিকে আমি অন্য কোনো ভাষায় অনুবাদ করে সমালোচনামূলক দৃষ্টিতে উপস্থাপন করতে দ্বিধা বোধ করি।...এর প্রথম লাইন এইভাবে অনুবাদ করা যেতে পারে: 'আমি কোথায় পাব তারে, আমার মনের মানুষ যে রে?' এই "মনের মানুষ" — শব্দবন্ধটি শুধু এই গানেই নয়, বরং বাউল সম্প্রদায়ের গানে এটি প্রায়শই ব্যবহৃত হয়। এই গানটির রচয়িতা কবির নাম ছিল গগন। তিনি প্রায় নিরক্ষর ছিলেন এবং তাঁর বাউল গুরুর কাছ থেকে পাওয়া ধারণাগুলো আধুনিক যুগের আত্মসচেতনতা দ্বারা প্রভাবিত হয়নি। তিনি গ্রামের একজন ডাকপিয়ন ছিলেন এবং মাসে প্রায় দশ শিলিং উপার্জন করতেন।
  • আমার লেখা যাঁরা পড়েছেন, তাঁরা জানেন বাউল পদাবলীর প্রতি আমার অনুরাগ আমি অনেক লেখায় প্রকাশ করেছি। শিলাইদহে যখন ছিলাম, বাউল দলের সঙ্গে আমার সর্বদাই দেখা–সাক্ষাৎ ও আলাপ-আলোচনা হত। আমার অনেক গানেই আমি বাউলের সুর গ্রহণ করেছি এবং অনেক গানে অন্য রাগরাগিণীর সঙ্গে আমার জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে বাউল সুরের মিলন ঘটেছে। এর থেকে বোঝা যাবে বাউলের সুর ও বাণী কোন্‌ এক সময়ে আমার মনের মধ্যে সহজ হয়ে মিশে গেছে। আমার মনে আছে, তখন আমার নবীন বয়স, শিলাইদহ অঞ্চলেরই এক বাউল কলকাতায় একতারা বাজিয়ে গেয়েছিল—
    “কোথায় পাব তারে
    আমার মনের মানুষ যে রে!
    হারায়ে সেই মানুষে তার উদ্দেশে
    দেশ-বিদেশে বেড়াই ঘুরে।”’
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। মুহম্মদ মন্‌সুর উদ্দিনের হারামণি গ্রন্থের ভূমিকায় বাউল গান শীর্ষক প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এটি লিখেছেন। [১]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]