জুবাইদা গুলশান আরা
অবয়ব
জুবাইদা গুলশান আরা (জন্ম ১৯৪২ - মৃত্যু ২০১৭) একজন বাংলাদেশি গল্পকার, ঔপন্যাসিক, শিশুসাহিত্যিক। সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি ২০০৫ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদকে ভূষিত হন।
উক্তি
[সম্পাদনা]- "মায়ের কোল আলো করে শিশু যখন আসে, তার জন্য পরিবারের সবাই আনন্দিত মনে সুন্দর একটা স্বপ্ন গড়ে তোলেন। তাই পরিবারের স্নেহভরা পরিবেশ হলো শিশুর গড়ে ওঠার প্রথম চাহিদা।"
- —কিশোরকন্ঠ তে দেয়া সাক্ষাৎকার, নভেম্বর ২০১৫
- "সারা পৃথিবীজুড়ে এখন পরিবর্তনের প্রচন্ড আলোড়ন চলছে। ধর্ম, সংস্কৃতি, শিক্ষা, গণজাগরণ সব যেন চলছে এক জটিল ঘূর্ণিপাকের মধ্য দিয়ে। বন্ধুত্ব, শ্রদ্ধা, ভক্তি, সহনশীলতা সব যেন কোন অজানা সঙ্কটের মধ্যে পড়ে গেছে।"
- —কিশোরকন্ঠ তে দেয়া সাক্ষাৎকার, নভেম্বর ২০১৫
- "আমি একজন লেখক, এটাই আমার পরিচয়। তবে এ কথা অবশ্যই বলবো আমার বাবা ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার। আমার বড় পাঁচ ভাই। ছেলেবেলায় বাড়িতে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল ইসলাম, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও অগ্রগণ্য দেশী-বিদেশী কবি- সাহিত্যিকদের সাহিত্য নিয়ে সবাই ছিলেন আগ্রহী। ফলে আমার বড় হয়ে ওঠার পরিবেশ মোটামুটি বলিষ্ঠ সংস্কৃতিচর্চার মধ্যেই ছিল।"
- —কিশোরকন্ঠ তে দেয়া সাক্ষাৎকার, নভেম্বর ২০১৫
- "আমি একজন সাহিত্যিক। প্রত্যেক লেখকের মনের মধ্যে তার আর একজন মানুষ থাকে। পৃথিবীর প্রতিটি বিষয়বস্তু তার কাছে এনে দেয় অজানা আনন্দ আর গভীর জীবনদৃষ্টি।"
- —কিশোরকন্ঠ তে দেয়া সাক্ষাৎকার, নভেম্বর ২০১৫
- "শিশু-সাহিত্য এক বিশাল সৃষ্টির জগৎ। প্রায় সব সাহিত্যিকই শিশুদের নিয়ে লেখালেখি শুরু করেন। আসল কথা, সব মানুষের মধ্যেই বাস করে এক শিশু।"
- —কিশোরকন্ঠ তে দেয়া সাক্ষাৎকার, নভেম্বর ২০১৫
- "আমার আব্বা। তাঁর কাছে শিখেছি সাহস আর মানুষের পাশে দাঁড়ানো, কঠোর কষ্ট, সহিষ্ণুতা। তাকে কৃতজ্ঞতা জানাই।"
- —কিশোরকন্ঠ তে দেয়া সাক্ষাৎকার, নভেম্বর ২০১৫
- "আমি ছোটবেলায় টাঙ্গাইল শহরের বিখ্যাত বিন্দু বাসিনী গার্লস হাইস্কুলে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিলাম। তখন আমি খুব ছোট। গ্রামে খুব বেশি যাওয়ার সুযোগ হয়নি।"
- —কিশোরকন্ঠ তে দেয়া সাক্ষাৎকার, নভেম্বর ২০১৫
- "ঈদ মানে আনন্দ। আমরা ছোটবেলায় পেতাম সত্যিকার খুশিভরা ঈদ। দীর্ঘ এক মাস রোজা পালনের পর ঈদের চাঁদ এসে দেখা দিতো। বড়রা, ছোটরা সবাই নতুন চাঁদকে হাত তুলে জানাতেন আসসালামু আলাইকুম।"
- —কিশোরকন্ঠ তে দেয়া সাক্ষাৎকার, নভেম্বর ২০১৫
- "মাঝে মধ্যে খুব ইচ্ছে হতো খুব ভালো একজন মানুষ হওয়ার। দেখ তো, সে ইচ্ছে এখনও স্বপ্নই রয়ে গেছে।"
- —কিশোরকন্ঠ তে দেয়া সাক্ষাৎকার, নভেম্বর ২০১৫
- "শিশুদের সঙ্গে অনেক মজার সময় কাটিয়েছি আমি। সেসব নিয়েই তো লেখালেখি চলছে দিনের পর দিন।"
- —কিশোরকন্ঠ তে দেয়া সাক্ষাৎকার, নভেম্বর ২০১৫
- "সফলতা তো জানান দিয়ে আসে না ভাই। তবে ছোটদের জন্য বড়দের উপদেশ সবচেয়ে জরুরি।"
- —কিশোরকন্ঠ তে দেয়া সাক্ষাৎকার, নভেম্বর ২০১৫
- "লেখার শুরু হোক জানার ইচ্ছে দিয়ে। যতো পারো পৃথিবীর বিস্ময়কর বৈচিত্র্য, নদী, পশু-পাখি দু’চোখ ভরে দেখ। একদিন সুন্দর সুন্দর সৃষ্টি আপনা থেকেই ধরা দেবে।"
- —কিশোরকন্ঠ তে দেয়া সাক্ষাৎকার, নভেম্বর ২০১৫
- "ভুল কিছু হলে সেটাকে শোধরে নেয়া খুব বড় একটা শিক্ষা।"
- —কিশোরকন্ঠ তে দেয়া সাক্ষাৎকার, নভেম্বর ২০১৫
- "যে স্বপ্ন আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধে অশ্রু ও রক্তমাখা মানচিত্র দিয়েছে, সেই বাংলাদেশ চাই।"
- —কিশোরকন্ঠ তে দেয়া সাক্ষাৎকার, নভেম্বর ২০১৫
- "আমি মানুষ হয়েছি বিশাল প্রকৃতির সঙ্গে। কখন যেন লেখা এসে ধরা দিলো তারপর তো চলছি আর চলছি।"
- —কিশোরকন্ঠ তে দেয়া সাক্ষাৎকার, নভেম্বর ২০১৫
- "আমাদের ছেলেবেলায় পৃথিবী আর বর্তমান পৃথিবী আলাদা। মাঝখানে বিশ্বযুদ্ধ মানুষের পৃথিবীকে বদলে দিয়েছে। হিংসা, হানাহানি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সব কিছুর প্রভাবে পৃথিবী বদলে যাচ্ছে।"
- —কিশোরকন্ঠ তে দেয়া সাক্ষাৎকার, নভেম্বর ২০১৫
- "ঐ যে বলেছি লেখক হতে হলে আগে পরিচিত হতে হবে মানুষের পৃথিবী আর জীবনের সঙ্গে।"
- —কিশোরকন্ঠ তে দেয়া সাক্ষাৎকার, নভেম্বর ২০১৫
- "লেখালেখি মানুষের পৃথিবীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। একজন লেখক তিনি তাঁর হৃদয়ের সব শ্রদ্ধা এবং সম্মান নিয়ে জীবনকে দেখবেন।"
- —কিশোরকন্ঠ তে দেয়া সাক্ষাৎকার, নভেম্বর ২০১৫
- "আমার কাজ জীবনকে বোঝার চেষ্টা করা। লেখার মধ্যে তাকে ফুটিয়ে তুলতে পারলে খুশিটা পাঠককে পৌঁছাতে পারলে আমি খুশি।"
- —কিশোরকন্ঠ তে দেয়া সাক্ষাৎকার, নভেম্বর ২০১৫
- "আমার স্বপ্ন পৃথিবীর রক্তঝরা মৃত্যু থেকে শিশু হত্যার অবসান হোক। শিশুকে বাঁচার অধিকার দিতে হবে। তবেই পৃথিবী হয়তো একদিন শান্ত হবে।"
- —কিশোরকন্ঠ তে দেয়া সাক্ষাৎকার, নভেম্বর ২০১৫
গুলশান আরা সম্পর্কে
[সম্পাদনা]- "কথাশিল্পী জুবাইদা গুলশান আরা শুধু তো একজন লেখিকাই ছিলেন না, তিনি একাধারে ছিলেন সাহিত্যের পথে নিরলস কর্মী, সমাজসেবিকা, তার চেয়েও বড় কথা — তিনি ছিলেন শিশু-কিশোরদের একজন খুবই মমতাময়ী অভিভাবক।"
- —জুবাইদা গুলশান আরা স্মৃতির বুদ্বুদ -মোশাররফ হোসেন খান, সম্পাদক, কিশোরকন্ঠ, এপ্রিল ২০১৭।
- "আমি তাঁকে বরাবরই ভাবী বলে ডাকতাম। তিনি আমাকে ডাকতেন কবি ভাই বলে। কিন্তু সম্পর্কটা ছিলো একেবারেই ভাই-বোনের মতই।"
- —জুবাইদা গুলশান আরা স্মৃতির বুদ্বুদ -মোশাররফ হোসেন খান, সম্পাদক, কিশোরকন্ঠ, এপ্রিল ২০১৭।
- "বরাবরই তাঁর ভদ্রজনিত শালীন আলোচনা ও আমার সাথে ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় আমি মুগ্ধ হয়ে যেতাম।"
- —জুবাইদা গুলশান আরা স্মৃতির বুদ্বুদ -মোশাররফ হোসেন খান, সম্পাদক, কিশোরকন্ঠ, এপ্রিল ২০১৭।
- "তিনি হাসিমুখে আমার সকল অত্যাচার সয়ে নিতেন এবং নির্ধারিত সময়ের আগেই লেখা দিতেন।"
- —জুবাইদা গুলশান আরা স্মৃতির বুদ্বুদ -মোশাররফ হোসেন খান, সম্পাদক, কিশোরকন্ঠ, এপ্রিল ২০১৭।
"কিশোরকণ্ঠে তাঁর উপস্থিতি ছিলো যেন অনিবার্য। কিশোরকণ্ঠের বিভিন্ন সাহিত্য সভা, সাহিত্য সেমিনার, সাহিত্য সমাবেশ, লেখক সম্মেলন, ইফতার মাহফিলসহ প্রতিটি অনুষ্ঠানে ভাবীর উপস্থিতি ছিলো অবধারিত। তাঁকে না বলার কোনো সুযোগই আমি দিতাম না।"
- —জুবাইদা গুলশান আরা স্মৃতির বুদ্বুদ -মোশাররফ হোসেন খান, সম্পাদক, কিশোরকন্ঠ, এপ্রিল ২০১৭।
- "গত বছর ঈদ সংখ্যায় শারীরিক অসুস্থতার কারণে লিখতে পারবেন না বলে জানালে আমি অভিমানে মোবাইলের লাইন কেটে দিয়েছিলাম। ১০ মিনিট পরেই দেখি ভাবী কল ব্যাক করেছেন, বললেন ভাই আপনি তো নাছোড়বান্দা! ঠিক আছে উপন্যাস না পারি অন্য কিছু একটা লিখে দেবো।"
- —জুবাইদা গুলশান আরা স্মৃতির বুদ্বুদ -মোশাররফ হোসেন খান, সম্পাদক, কিশোরকন্ঠ, এপ্রিল ২০১৭।
- "২০০২ সালে তাঁকে কিশোরকণ্ঠ সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হয়। তিনি তাঁর অনুভূতি ব্যক্ত করার সময় বলেছিলেন, ‘কিশোরকণ্ঠ সাহিত্য পুরস্কার আমার জন্য সবচেয়ে মূল্যবান এবং গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার। কারণ আমি কিশোরকণ্ঠকে ভালোবাসি। শিশু-কিশোরদের অত্যন্ত ভালবাসি। তাদের জন্য গোটা জীবনই কাজ করে গিয়েছি এবং যাব।’"
- —জুবাইদা গুলশান আরা স্মৃতির বুদ্বুদ -মোশাররফ হোসেন খান, সম্পাদক, কিশোরকন্ঠ, এপ্রিল ২০১৭।
- "কথাশিল্পী এবং একজন লেখিকা হিসাবে তিনি অক্লান্তভাবে পরিশ্রম করেছেন। অন্যান্য সামাজিক কাজের পাশাপাশি তিনি ক্রমাগত লিখেছেন। শিশুদের জন্য প্রচুর লিখেছেন।"
- —জুবাইদা গুলশান আরা স্মৃতির বুদ্বুদ -মোশাররফ হোসেন খান, সম্পাদক, কিশোরকন্ঠ, এপ্রিল ২০১৭।
- "এই খ্যাতিমান কথাশিল্পী ও সমাজসেবিকার ইন্তেকালে জাতি এক অমূল্য রত্ন হারালো। এতে জাতির যে ক্ষতি সাধিত হলো সেটা সহসা পূরণ হবার নয়। বিশেষ করে আমার জন্য তো আরও বেশি কষ্টের বিষয়!"
- —জুবাইদা গুলশান আরা স্মৃতির বুদ্বুদ -মোশাররফ হোসেন খান, সম্পাদক, কিশোরকন্ঠ, এপ্রিল ২০১৭।
- "আমি এবং আমরা যেন এক অত্যন্ত স্নেহপরায়ণ অভিভাবককে হারালাম। এই বেদনার ভার হয়তো বয়ে বেড়াতে হবে দীর্ঘকাল যাবৎ।"
- —জুবাইদা গুলশান আরা স্মৃতির বুদ্বুদ -মোশাররফ হোসেন খান, সম্পাদক, কিশোরকন্ঠ, এপ্রিল ২০১৭।