দাদাভাই নওরোজি

দাদাভাই নওরোজি (Hindi: दादाभाई नौरोजी) (৪ সেপ্টেম্বর, ১৮২৫ – ৩০ জুন, ১৯১৭) ছিলেন একজন প্রখ্যাত ভারতীয় নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি। তাঁকে ভারতের মহান বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ, নামে অভিহিত করা হতো। তিনি বোম্বাই (বর্তমানে মুম্বই) শহরের পারসি সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। নওরোজি ছিলেন একজন বিদ্বান, শিক্ষাবিদ, তুলাব্যবসায়ী এবং প্রাথমিক পর্যায়ের একজন ভারতীয় রাজনীতিবিদ এবং সামাজিক নেতা। তাঁকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদের একজন পথপ্রদর্শক হিসেবেও মনে করা হয়। দাদাভাই নওরোজি ছিলেন এশীয় বংশোদ্ভূত দ্বিতীয় ব্যক্তি (ডেভিড অক্টারলনি ডাইস সাম্বরের পরে), যিনি যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্সে এমপি (সাংসদ) নির্বাচিত হন। তিনি ১৮৯২ থেকে ১৮৯৫ সাল পর্যন্ত ফিন্সবুরি সেন্ট্রাল এলাকা থেকে উদারপন্থী দল (যুক্তরাজ্য)উদারপন্থী দলের সাংসদ ছিলেন। নওরোজি অ্যালান অক্টোভিয়ান হিউম এবং দিনশ এদুলজি ওয়াচার সঙ্গে মিলে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন।
উক্তি
[সম্পাদনা]- আগের শাসকেরা ছিল মাংস কাটা কসাইয়ের মতো—যেখানে খুশি কোপ মারত। কিন্তু ইংরেজরা বৈজ্ঞানিক ছুরির মতো সূক্ষ্মভাবে কেটেছে, একেবারে হৃদয়ে পৌঁছে গেছে। তবুও দেখো! কোনো ক্ষতের চিহ্নই চোখে পড়ে না। আর অচিরেই সভ্যতা, উন্নয়ন, আর নানান উচ্চকথার মরিচিকা দিয়ে সেই অদৃশ্য ক্ষতটিকে ঢেকে দেয়। ইংরেজ শাসকেরা ভারতের সামনের দরজায় প্রহরীর মতো দাঁড়িয়ে থাকে। তারা সারা দুনিয়াকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলে, তারা ভারতকে সব শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করছে এবং করবে। অথচ তারাই পেছনের দরজা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সেই ধনভাণ্ডার, যার রক্ষাকর্তা সেজে তারা দাঁড়িয়ে আছে সামনের দরজায়।
- (সূত্র: প্রোভাটি এন্ড আনব্রিটিশ রুল ইন ইন্ডিয়া - দাদাভাই নওরোজি - পৃষ্ঠা ২১১-২১৩). [১]
ডঃ দাদাভাই নওরোজি: "ভারতের মহান বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ"
[সম্পাদনা]"Dr. Dadabhai Naoroji: "The Grand Old Man of India""। Zoroastrian Organization। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০১৩।
- আমি আজ যা, তিনি আমাকে তৈরি করেছেন।
- তার মা সম্পর্কে
- ভারতবাসীরা ছিলেন ব্রিটিশ নাগরিক। জন্মসূত্রে তারা স্বাধীন হওয়ার অধিকার রাখে। তাদের সম্পূর্ণ অধিকার আছে সেই সম্মানজনক প্রতিশ্রুতি পূরণের দাবি জানাতে, যেটা ব্রিটিশরা তাদের দিয়েছিল। …আমাকে এটা বলে লাভ নেই যে, আমাদের অপেক্ষা করতে হবে যতক্ষণ না সব মানুষ প্রস্তুত হয়। ব্রিটিশরাও তো তাদের সংসদের জন্য অপেক্ষা করেনি। …স্বশাসনই একমাত্র এবং প্রধান প্রতিকার। স্বশাসনের মধ্যেই রয়েছে আমাদের আশা, আমাদের শক্তি, এবং আমাদের মহত্ত্ব। আমি হিন্দু, আমি মুসলমান, আমি পারসি—তবুও সবার আগে আমি একজন ভারতীয়।
- ১৯০৪ সালে দাদাভাই নওরোজি ভারতবর্ষের জন্য "স্বরাজ", অর্থাৎ স্বশাসনের দাবি জানান।
- ভারতের মহান বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ" নামে আমাকে ডাকা হচ্ছে—এতে আমি যে গভীর আনন্দ পাই, সেটা কি অহংকার? না, এই উপাধি আমার কাছে জীবনের সবচেয়ে বড় পুরস্কার। আমি সেটা প্রাপ্য কিনা সেটা বড় কথা নয়। এই উপাধি প্রমাণ করে আমার দেশের মানুষ কত উষ্ণ হৃদয়ের, কত কৃতজ্ঞ এবং উদার।
- একত্রিত হও, অধ্যবসায় দেখাও, এবং স্বশাসন অর্জন করো—যাতে দারিদ্র্য, দুর্ভিক্ষ আর মহামারিতে যে কোটি কোটি মানুষ ধ্বংস হচ্ছে, তাদের রক্ষা করা যায়। এবং ভারত আবারও যেন অতীতের মতো বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ও সভ্য জাতিগুলোর মধ্যে তার গৌরবময় স্থান অধিকার করতে পারে।".
- ১৯০৬ সালে, ৮০ বছর বয়সে, কলকাতায় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে তিনি এই আহ্বান জানান।
সীমিত সংখ্যাগরিষ্ঠতা’ এবং ‘নতশিরে সম্মতি’: ব্রিটেনে প্রথম এশীয় সংসদ সদস্যদের নির্বাচন নিয়ে জনসাধারণের মনোভাব — দাদাভাই নওরোজি ও মানচারজি মেরওয়ানজি ভাওনাগরি, ১৮৮৫-১৯০৬
[সম্পাদনা]Sumita Mukherjee। "'Narrow-majority' and 'Bow-and-agree': Public Attitudes Towards the Elections of the First Asian MPs in Britain, Dadabhai Naoroji and Mancherjee Merwanjee Bhownaggree, 1885-1906." (PDF)। Journal of the Oxford University History Society (2 (Michaelmas 2004)। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০১৩।
- “হলবর্ন নির্বাচন নিয়ে যখন মারকুইস অব স্যালিসবুরি আমার সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন, তখন পুরো উদারপন্থী দল — আমাদের মহান নেতা, সংবাদমাধ্যম, এবং জাতীয় উদারপন্থী ক্লাবসহ — সকলেই উদার সহানুভূতি প্রকাশ করেছিল।
- পৃষ্ঠা ৮
- নির্বাচন আমাকে স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে যে, একজন যোগ্য ভারতীয় প্রার্থী যেমন সুযোগ পেতে পারেন, তেমনি একজন ইংরেজও। বরং কখনো কখনো ভারতীয় প্রার্থীর কিছু বাড়তি সুবিধাও থাকতে পারে। কারণ, ইংরেজ ভোটারদের মধ্যে ভারতকে সাহায্য করার প্রতি একটি আন্তরিক এবং সাধারণ আগ্রহ দেখা যায়।
- বোম্বাইয়ে প্রদত্ত বক্তব্য, পৃষ্ঠা ১১
- আমার বিশ্বাস ছিল, আমরা সাধারণ ইংরেজ জনগণকে—বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষদের—এই কথা বোঝাতে সক্ষম হবো যে, আমি যে সংস্কারের কথা বলি, তা ইংরেজ জাতির জন্য, বিশেষ করে শ্রমিকদের জন্য, অনেক বেশি উপকারী হবে... যদি ভারত সমৃদ্ধ ও ধনী হয়, তাহলে ভারত আরও বেশি পরিমাণে ইংরেজ পণ্য কিনবে এবং সেই অনুযায়ী শ্রমিকদের জন্য কাজের সুযোগ বাড়বে।
- ১৮৮৬ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পর তার ডায়েরিতে লিখিত মন্তব্য, পৃষ্ঠা ১০
নিষ্কাশন তত্ত্ব
[সম্পাদনা]- এরও ২০ বছরের বেশি আগে, কিছু হিন্দু ছাত্র ও চিন্তাবিদ ভদ্রলোক গোপনে একত্র হতেন। তারা ব্রিটিশ শাসনের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করতেন। তাঁদের মূল অভিযোগ ছিল — ভারত থেকে ইংল্যান্ডে নানা উপায়ে পুঁজির স্থানান্তর, ব্রিটিশ শাসনের নামে 'হোম চার্জেস' বা ভারতে ব্রিটিশদের ব্যয়ের বোঝা চাপানো, এবং ভারতীয় সন্তানদের নিজেদের দেশের প্রশাসনে কোনো অংশগ্রহণ বা মত প্রকাশের সুযোগ না দেওয়া।
- দাদাভাই নওরোজি যখন তার “সম্পদের নিষ্কাশন তত্ত্ব” তুলে ধরেন, তখন তিনি এই বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করেন। এই বক্তব্যটি তিনি ১৮৬৭ সালের ২ মে লন্ডনের ইস্ট ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনে এক সভায় বলেন। "Forerunners of Dadabhai Naoroji's Drain Theory"। Jstor Organization। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০১৩।
- অর্থনৈতিক দিক থেকে: সম্পূর্ণ মনোযোগ কর আদায়ের নতুন নতুন উপায় খোঁজার পেছনে ব্যয় করা হচ্ছে, অথচ জনগণের আয় বাড়ানোর জন্য কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। এর ফলে আরোপিত করগুলো — কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় — হয়ে উঠেছে বিরক্তিকর ও শোষণমূলক। ইংল্যান্ড ও ভারতের মধ্যে আর্থিক সম্পর্ক ছিল অসম ও অন্যায়। উদাহরণস্বরূপ, ১০ কোটি পাউন্ডের রাজনৈতিক ঋণের বোঝা চাপানো হয়েছে ভারতের কাঁধে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ‘হোম চার্জেস’ বা ইংল্যান্ডে গৃহীত ব্যয়ের বোঝাও।
- ভৌত সম্পদের দিক থেকে: ভারত থেকে ইংল্যান্ডে এখন পর্যন্ত যে রাজনৈতিক সম্পদ নিষ্কাশন হয়েছে, তার পরিমাণ কমপক্ষে ৫০ কোটি পাউন্ড — শুধুমাত্র মূলধনের হিসাবেই। এই নিষ্কাশন এখনও চলছে, এবং বর্তমানে প্রতিবছর এই পরিমাণ ১ কোটি ২০ লক্ষ পাউন্ডের বেশি। ভবিষ্যতে এই হারে আরও বৃদ্ধির প্রবণতা রয়েছে।
- এই উক্তিগুলো দাদাভাই নওরোজি তার ১৮৭১ সালের প্রবন্ধ “দ্য বেনিফিটস অফ ব্রিটিশ রুল, ১৮৭১” (The Benefits of British Rule, 1871) -এ উল্লেখ করেছিলেন। B Shantanu (৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৬)। "Drain of Wealth during British Raj"। Ivarta.com। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০১৩।
দাদাভাই সম্বন্ধে
[সম্পাদনা]
- …আপনি যদি দয়া করে আমাকে দিকনির্দেশ ও পরামর্শ দেন, তবে আমি তা বাবার কাছ থেকে সন্তানের জন্য উপদেশের মতোই মেনে নেব – এতে আমি খুব উপকৃত হব। এত মহৎ অথচ এত সহজ-সরল এক জীবনের গল্পের জন্য আমার বা কারও পক্ষ থেকে কোনো ভূমিকার প্রয়োজন নেই। যেভাবে জীবিত অবস্থায় দাদাভাই আমার অনুপ্রেরণা ছিলেন, আশা করি পাঠকদের কাছেও তেমনই অনুপ্রেরণার উৎস হবেন। এইভাবেই দাদাভাই আমার কাছে সত্যিকারের ‘দাদা’ হয়ে উঠেছিলেন।
- গান্ধী ডঃ দাদাভাই নওরোজি: "দ্য গ্র্যান্ড ওল্ড ম্যান অফ ইন্ডিয়া" গ্রন্থে
- এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই… দাদাভাই তার দেশকে যে আত্মত্যাগ এবং একনিষ্ঠতার সঙ্গে সেবা করেছেন, তা অত্যন্ত বিরল।
তিনি ছিলেন জরথুস্ত্রের একনিষ্ঠ অনুসারী এবং সেই মহান ধর্মগুরুর নৈতিকতাকে তিনি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অনুসরণ করেছিলেন — চিন্তায়, কথায় এবং কাজে ছিলেন নিখুঁতভাবে পবিত্র।
- স্যার দিনশা ওয়াচা, ডঃ দাদাভাই নওরোজি: "দ্য গ্র্যান্ড ওল্ড ম্যান অফ ইন্ডিয়া" গ্রন্থে
- পারসিদের পক্ষ থেকে ভারতের প্রতি সবচেয়ে বড় উপহার আপনি নিজেই।
- লাহোরে কংগ্রেস অভ্যর্থনা কমিটির সভাপতি, যখন দাদাভাই নওরোজিকে স্বর্ণমন্দিরে (অমৃতসর) সম্মান জানানো হয়। উদ্ধৃত, ডঃ দাদাভাই নওরোজি: "দ্য গ্র্যান্ড ওল্ড ম্যান অফ ইন্ডিয়া" গ্রন্থে
- যিনি ব্রিটেনের জন্য উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন এবং যিনি সংস্কৃতি, বুদ্ধিমত্তা ও জনসেবার প্রতীক ছিলেন — তিনি হলেন দাদাভাই নওরোজি, প্রথম ভারতীয় যিনি [ব্রিটিশ] পার্লামেন্টের সদস্য হন।
- কুসুম ভাদগামা, তার বই ইন্ডিয়া ইন ব্রিটেন-এ। উদ্ধৃত, ডঃ দাদাভাই নওরোজি: "দ্য গ্র্যান্ড ওল্ড ম্যান অফ ইন্ডিয়া" গ্রন্থে।
- যদি আমরা তার জীবন ও আদর্শের মূল্যায়ন করি, তবে আমি নিঃসন্দেহে ও ন্যায়সঙ্গতভাবে বলতে পারি— তার জীবনের পথে, তার কর্মে, তার ত্যাগে এবং তার শিক্ষায় — তিনি যেন জরথুস্ত্রের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি ছিলেন। কারণ, তিনি ছিলেন এমন একজন মানুষ, যিনি অন্য যেকোনো মানুষের চেয়ে বেশি বিশুদ্ধ চিন্তা, বিশুদ্ধ বাক্য ও বিশুদ্ধ কর্মের ধারক। যে সূর্য আজ থেকে তিরানব্বই বছর আগে ভারতে উদিত হয়েছিল, তা এখন অস্ত গেছে। কিন্তু আমি বলি, সেটি আবার উদিত হবে — এক নবজাগ্রত ভারতের রূপে। কারণ, দাদাভাই আমাদের জন্য যে নিষ্ঠা ও আত্মনিবেদন নিয়ে জীবন কাটিয়েছেন, তা আমাদের সকলের জন্য চিরন্তন অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।"
- স্যার নারায়ণ চাঁদাভারকরের শ্রদ্ধার্ঘ্য থেকে উদ্ধৃত, ডঃ দাদাভাই নওরোজি: "দ্য গ্র্যান্ড ওল্ড ম্যান অফ ইন্ডিয়া" গ্রন্থে।
‘সীমিত সংখ্যাগরিষ্ঠতা’ এবং ‘নতশিরে সম্মতি’: ব্রিটেনে প্রথম এশীয় সংসদ সদস্যদের নির্বাচন নিয়ে জনসাধারণের মনোভাব — দাদাভাই নওরোজি ও মানচারজি মেরওয়ানজি ভাওনাগরি, ১৮৮৫–১৯০৬
[সম্পাদনা]- মানবজাতি যতই উন্নতি করুক না কেন, এবং আমরা যতই কুসংস্কার দূরীকরণের দিকে যাই না কেন, আমি সন্দেহ করি আমরা এখনও এমন মানসিক অবস্থানে পৌঁছেছি কিনা—যেখানে একটি ইংরেজ নির্বাচনী এলাকা একজন কৃষ্ণাঙ্গ মানুষকে নির্বাচিত করবে।
- আমি শুধু এটুকুই বলেছিলাম যে, ১৮৮৬ সালের হলবর্ন নির্বাচনের অর্থ তুমি তখনই বুঝতে পারবে, যদি মনে রাখো যে লিবারেল দলের প্রার্থী ছিলেন এমন একজন ব্যক্তি, যিনি আমাদের থেকে জাতিগতভাবে ভিন্ন — আমাদের থেকে বহু দূরে — এবং যার গায়ের রঙই তাঁকে আলাদা করত… এবং ইংরেজ জনমতের তৎকালীন অবস্থায়, এটিই ছিল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
- উপরের এই দুই মন্তব্য ছিল লর্ড স্যালিসবারি-র, যিনি তখন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ও ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৮৮৮ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি এ কথা বলেন, ১৮৮৬ সালের নির্বাচনে দাদাভাই নওরোজির পরাজয় প্রসঙ্গে। তিনি সেই সময় নওরোজিকে "কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ" বলে উল্লেখ করেছিলেন, যখন নওরোজি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে হলবর্ন এলাকা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, পৃষ্ঠা ৩।
- নওরোজির গায়ের রঙ ফর্সা হওয়াটা অনেক সময়েই একটি সুবিধা হিসেবে দেখা হতো, কারণ এতে ভোটাররা তাঁকে আফ্রিকানদের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলত না।
- দ্য উইকলি ডিসপ্যাচ, পৃষ্ঠা ৫
- অপমানের প্রকৃত যন্ত্রণা এখানেই যে, সাধারণ কথাবার্তায় ‘কৃষ্ণাঙ্গ’ মানেই বোঝায় একজন ‘নেগ্রো’।’
- পাল মল গেজেট, পৃষ্ঠা ৫
- তিনি কালো নন, এমনকি কালোর কাছাকাছিও নন — এবং যদি দেখা যায়, নতুন হাউস অফ কমন্সে তিনিই সবচেয়ে গাঢ় বর্ণের সদস্য, তাহলে আমরা বিস্মিত হব।
- অমৃত বাজার পত্রিকা, ভারত থেকে প্রকাশিত মন্তব্য, পৃষ্ঠা ৫
- তার চেহারাটা এতটাই ইংরেজদের মতো যে, তার নাম যদি 'ব্রাউন' বা 'জোনস' হতো, তা হলেও অবাক লাগত না। কিন্তু ঘটনাচক্রে তার নাম দাদাভাই নওরোজি।
- খ্রিস্টান মিলিয়ন, ১৮৮৬, পৃষ্ঠা ৫
- ব্রিটিশ প্রজাদের বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই কৃষ্ণাঙ্গ, আর শুধুমাত্র গায়ের রঙের জন্য একজন মানুষকে নিন্দা করা — তা আমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যায় দাসত্বের সবচেয়ে নিকৃষ্ট যুগে।
- নিউক্যাসল লিডার, লর্ড স্যালিসবারিকে মনে করি, পৃষ্ঠা ৬
- …হিন্দুর গভীর দৃষ্টি এবং প্রাচ্যের গূঢ় জ্ঞান সম্পর্কে তার ব্যাপক পড়াশোনা।
- দ্য ইভিনিং নিউজ অ্যান্ড পোস্ট, ১৮৯২ সালে মাত্র ৫ ভোটে নওরোজির বিজয়ের পর, তার চেহারা নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করে, পৃষ্ঠা ৬
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]
- Jayapalan, N. (১ জানুয়ারি ২০০১)। History Of India(from National Movement To Present Day)। Atlantic Publishers & Dist। পৃষ্ঠা 74–75। আইএসবিএন 978-81-7156-917-5।
- "Dadabhai Naoroji"। Encyclopaedia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০১৩।