বিষয়বস্তুতে চলুন

ধূপ

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

ধূপ বা 'আগরবাতি' হলো সুগন্ধযুক্ত বায়োটিক উপাদান যা পোড়ালে সুগন্ধি ধোঁয়া বের হয়। এই শব্দটি উপাদান বা সুগন্ধের জন্য ব্যবহৃত হয়। নান্দনিক কারণ, ধর্মীয় উপাসনা, অ্যারোমাথেরাপি, ধ্যান এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ধূপ ব্যবহার করা হয়। দুই হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে, চীনারা ধর্মীয় অনুষ্ঠান, পূর্বপুরুষের পূজা, এবং দৈনন্দিন জীবনে ধূপ ব্যবহার করে আসছে। অনেক তিব্বতি ধূপের ঔষধি গুণ আছে বলে মনে করা হয়।

উক্তি

[সম্পাদনা]
  • ধূপ তিন প্রকার; গ‍ুগ্‌গ‍ুলু প্রভৃতিকে নির্যাস, কাষ্ঠময় ধূপকে সারী, এবং মিশ্রিত উপাদান থেকে প্রস্তুত ধূপকে কৃত্রিম বলে। নির্যাসের মধ্যে গ‍ুগ্‌গ‍ুলু শ্রেষ্ঠ, সারী ধূপের মধ্যে অগ‍ুরু শ্রেষ্ঠ। শল্লকী[১] ও তজ্জাতীয় নির্যাসের ধূপ দৈত্যদের প্রিয়। সর্জরস (ধুনা) ও গন্ধকাষ্ঠ প্রভৃতির সংযোগে যে কৃত্রিম ধূপ হয় তা দেব দানব মানব সকলেরই প্রীতিকর। দীপ দান করলে মানুষের তেজ বৃদ্ধি পায়, উত্তরায়ণের রাত্রিতে দীপদান কর্তব্য।
    • কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস, মহাভারত, অনুশাসনপর্ব, অনুবাদক- রাজশেখর বসু, প্রকাশক- এম. সি. সরকার এন্ড সন্স লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৬২২
  • ধূপ আপনারে মিলাইতে চাহে গন্ধে,
    গন্ধ সে চাহে ধূপেরে রহিতে জুড়ে।
    সুর আপনারে ধরা দিতে চাহে ছন্দে,
    ছন্দ ফিরিয়া ছুটে যেতে চায় সুরে।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, উৎসর্গ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩৯৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৮-৩৯
  • অশ্বত্থ বটের পথে অনেক হয়েছি আমি তোমাদের সাথী;
    ছড়ায়েছি খই ধান বহ‍ুদিন উঠানের শালিখের তরে;
    সন্ধ্যায় পুকুর থেকে হাঁসটিরে নিয়ে আমি তোমাদের ঘরে
    গিয়েছি অনেক দিন,—দেখিয়াছি ধূপ জ্বাল, ধর সন্ধ্যাবাতি
    থোড়ের মতন শাদা ভিজে হাতে,—এখুনি আসিবে কিনা রাতি
    বিনুনি বেঁধেছ তাই—কাঁচপোকাটিপ তুমি কপালের ’পরে
    পরিয়াছ...
    • জীবনানন্দ দাশ, রূপসী বাংলা - জীবনানন্দ দাশ, প্রকাশক- সিগনেট প্রেস, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫২
  • আমার অবস্থা দেখে বাড়িওয়ালা কৃষ্ণগোপাল দেবনাথ আমাকে নিয়ে গেলেন কাঁকুড়গাছিতে তাঁর পরিচিত এক তান্ত্রিকের কাছে। প্রণামী হিসেবে দিতে হল এক কেজি চিনি, একটা মোমবাতি, একপ্যাকেট ধূপকাঠি ও একশো টাকা। তান্ত্রিকের নাম ধীরেন্দ্রনাথ গোস্বামী। ঠিকানা ৬৮ মানিকতলা মেন রোড। “তান্ত্রিকবাবা ধূপ মোমবাতি জ্বালিয়ে মড়ার খুলি নিয়ে কী সব মন্ত্র পড়লেন, ওটাকে নাকি খুলি চালান বলে। তারপর জানালেন—আনন্দ পালিত রোডের ওই ট্রেনে কাটা পড়া লোকটার আত্মাই আমার এই বর্তমান অবস্থার সৃষ্টি করেছে। অতৃপ্ত আত্মা তিনজনকে রেললাইনে টেনে নিয়ে আত্মহত্যা করাবে। তৃতীয় যে ব্যক্তিকে মারবে সে হল আমি।
    • প্রবীর ঘোষ, অলৌকিক নয়, লৌকিক (দ্বিতীয় খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ, প্রকাশক- দে’জ পাবলিশিং, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ২০১৭ খ্রিস্টাব্দ (১৪২৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮০
  • অন্যমনস্ক হইয়া সেইখানেই বসিয়া ছিলাম; সন্ধ্যার সময় ধূনোচিতে ধূপ-ধূনা দিয়া সেটা হাতে করিয়া রজলক্ষ্মী এই বারান্দা দিয়াই আর একটা ঘরে যাইতেছিল; থমকিয়া দাঁড়াইয়া বলিল, মাথা ধরেচে, হিমে বসে কেন, ঘরে যাও।
    হাসি পাইল। বলিলাম, অবাক্ কর্‌লে লক্ষ্মী! হিম এখানে কোথায়?
    • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শ্রীকান্ত (প্রথম পর্ব), দ্বাদশ পরিচ্ছেদ, শ্রীকান্ত (প্রথম পর্ব)-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশক-গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় এণ্ড সন্স, সপ্তদশ মুদ্রণ, পৃষ্ঠা ১৮২

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]