বিষয়বস্তুতে চলুন

পরলোক

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

পরলোক বা পরকাল হলো একটি জগতের ধারণা, যে ধারণা অনুসারে ব্যক্তির শরীরের মৃত্যু হয়ে গেলেও তার আত্মপরিচয় বা চেতনার অস্তিত্ব থেকে যায়। পরকালের বিভিন্ন ধারণা অনুযায়ী মৃত্যুর পরেও থেকে যাওয়া ব্যক্তির এসেন্স কোন আংশিক উপাদান অথবা পূর্ণাঙ্গ আত্মা বা স্পিরিট হতে পারে। এই এসেন্স কোন ব্যক্তিগত পরিচয় বহন করতেও পারে আবার নাও পারে যেমন ভারতীয় দর্শনের নির্বাণ। পরকালের উপর বিশ্বাস প্রকৃতিবাদী দর্শন থেকে আসতে পারে অথবা অতিপ্রাকৃতে বিশ্বাস থেকে আসতে পারে। এই বিশ্বাস এটারনাল অবলিভিয়ন ধারণায় বিশ্বাসের বিপরীত।

উক্তি

[সম্পাদনা]
  • আর তোমার প্রতি যা নাযিল হয়েছে ও তোমার পূর্বে যা নাযিল হয়েছে তাতে তারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং পরকালের প্রতিও তারা নিশ্চিত বিশ্বাসী।
  • তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালকে ভয় করে এবং আল্লাহকে বেশি স্মরণ করে, তাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের জীবনে আছে উত্তম আদর্শ।’
    • (সূরা আহজাব, আয়াত : ২১)
  • "ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ; তাদের প্রত্যেককে একশ’ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকর কারণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক। মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।"
  • যে ব্যক্তি দুনিয়ার প্রতিদান চাইবে, আমি তাকে তার অংশ দিয়ে দেব। আর যে ব্যক্তি পরকালের প্রতিদান চাইবে, আমি তাকে তার অংশ দিয়ে দেব। আর যারা কৃতজ্ঞ, আমি শিগগিরই তাদেরকে তাদের পুরস্কার দিয়ে দেব।
    • (সূরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৪৫)
  • হে আমার প্রতিপালক! তুমি এ শহরকে নিরাপদস্থল কর এবং এর অধিবাসীদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালের উপর ঈমান আনে, তাদেরকে ফলমূল হতে জীবিকা প্রদান কর’।...
    হে আমাদের রব, আমাদের পক্ষ থেকে কবূল করুন। নিশ্চয় আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।...
    আমাদেরকে আপনার অনুগত করুন এবং আমাদের বংশধরের মধ্য থেকে আপনার অনুগত জাতি বানান। আর আমাদেরকে আমাদের ইবাদাতের বিধি-বিধান দেখিয়ে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন।...
    আর তাদের মধ্য থেকে তাদের কাছে এক রসূল প্রেরণ কর, যে তোমার আয়াতসমূহ তাদের নিকট আবৃত্তি করবে; তাদেরকে কিতাব (ধর্মগ্রন্থ) ও হিকমত (জ্ঞান ও প্রজ্ঞা) শিক্ষা দেবে এবং তাদেরকে (শিরক থেকে) পবিত্র করবে।
    • সূরা আল বাকারা ২:১২৬-১২৭; প্রথম আয়াতে বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসী নির্বিশেষে সমগ্র মক্কাবাসীর জন্য শান্তি ও সুখস্বাচ্ছন্দ্যের প্রার্থনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় স্তবকে যখন ইবরাহীমইসমাঈল কাবাঘরের ভিত্তি স্থাপন করছিলেন তখনকার প্রার্থনা উল্লেখিত হয়েছে। সর্বশেষ প্রার্থনাটি ইবরাহীম (আঃ)-এর শেষ দু'আ। তাঁর এ দু'আও আল্লাহ তাআলা কবুল করেন এবং ইসমাঈল (আঃ)-এর সন্তানের মধ্য থেকে মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে প্রেরণ করেন।
  • আপনাকে অবশ্যই ঘন ঘন অনুতপ্ত হওয়া এবং ক্ষমা চাওয়া উচিত, কেননা ইহকাল ও পরকালের ব্যাপারে সফলতা অর্জনের জন্য এগুলো দুটি বড় মাধ্যম।
    • জিলা আল-খাতির:আবদুল-কাদির আল-জিলানি, মনের শুদ্ধিকরণ:শেথা আল-দারগাজেলি ও লাউয়ে ফাতুহি(অনুবাদক)
  • আল্লাহর প্রতি ভালবাসা আপনার মধ্যে জীবিত হবে না যতক্ষণ না আপনার খারাপ অভ্যাস মরে যায় এবং আপনাকে ছেড়ে চলে যায়।
  • উভয় আবাস (ইহকাল ও পরকাল) বুদ্ধি দ্বারা আঁকড়ে থাকে এবং যে ব্যক্তি বুদ্ধি থেকে বঞ্চিত হয় সে উভয়ই থেকে বঞ্চিত হয়।
    • আল-ইরবিলি, কাশফ আল-গাম্মা, ভলিউম.৩, পৃষ্ঠা. ১৯৭
  • ক্বুররাহ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় লজ্জাশীলতা, যৌন-পবিত্রতা, মুখচোরামি ও দ্বীনী জ্ঞান ঈমানের অন্তর্ভুক্ত। এগুলি পরকালের সম্বল বৃদ্ধি করবে এবং ইহকালের সম্বল হ্রাস করবে। পক্ষান্তরে কার্পণ্য, অশ্লীলতা ও নোংরা ভাষা মুনাফিকীর অন্তর্ভুক্ত। এগুলি পরকালের সম্বল হ্রাস করে এবং ইহকালের সম্বল বৃদ্ধি করে। আর পরকালের যা হ্রাস পায়, তা ইহকালের যা বৃদ্ধি করে তা অপেক্ষা অধিক।
    • হাদীস সম্ভার ৯৯০, ত্বাবারানী ১৫৪০৭, সিলসিলাহ সহীহাহ ৩৩৮১
  • যে লোক পরকালের জন্য এ দুনিয়াকে একেবারে ছেড়ে দেয়, সে লোক উত্তম নয়। বরং উত্তম সে লোক যে লোক দুনিয়া এবং আখিরাত উভয়টির হক্ব রক্ষা করে চলে।
  • যদি তুমি ঈশ্বর এর সাধু হতে চাও, তাহলে এই জগতের বা পরকালের জিনিসের আকাঙ্ক্ষা করো না। ঈশ্বরের জন্য নিজেকে খালি করো। তাঁর দিকে মুখ ফেরাও যাতে তিনি তোমার দিকে ফিরে তোমাকে তাঁর সাধু করে তোলেন।
    • পৃষ্ঠা ২৬ ভ্রমণকারীর হৃদয় থেকে তিনটি পর্দা খুলে ফেলতে হবে যাতে তার জন্য সুখের দরজা খুলে যায়। প্রথমত, যদি তাকে উভয় জগতের আধিপত্য চিরন্তন উপহার হিসেবে দেওয়া হয়, তবে সে আনন্দিত হওয়া উচিত নয়। দ্বিতীয় পর্দা হল, যদি সে উভয় জগতের আধিপত্যের অধিকারী হয়, এবং যদি তা তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়, তবে তার দারিদ্র্যের জন্য সে দুঃখিত না হয়। তৃতীয়টি হল, সে কোনও প্রশংসা বা অনুগ্রহ দ্বারা বিভ্রান্ত না হয়, কারণ যে এইভাবে বিপথগামী হয়, সে একজন নীচ ব্যক্তি এবং নীচ ব্যক্তিটি পর্দায় আবৃত।
  • =ইসলামের মহান রহস্যবাদীদের উক্তি ও শিক্ষা (২০০৪) এর পৃষ্ঠা ২৬
  • রবীন্দ্রসাহত্যের মত বিচিত্র রবীন্দ্রজীবন । শুধু ভূমা আর জীবনদেবতার অন্বেষক তিনি নন, কখনও পরলোকের সঙ্গে আলাপচারী, কখনও কোন বিদেশিনীর অনুরাগী, কখনও আল কিংবা আখ চাষে আগ্রহী। কবি-দার্শনিকের বাইরে অন্য রবীন্দ্রনাথ।
  • প্‌জাসংখ্যা আনন্দবাজারে রবীন্দ্রনাথের পরলোকচর্চা‌ প্রকাশের পর চেনা অচেনা অসংখ্য লোক আমাকে চিঠি লিখেছেন, ফোন করেছেন। অনেকে বললেন, যাক, নিশ্চিন্তে মরতে পারব। পরলোক জায়গাটি দেখছি মন্দ না। কেউ কেউ ধরে নিলেন প্ল্যানচেট মিডিয়ামে আমি বিশ্বাসী। আমাকে নিয়ে প্ল্যানচেটের আসর বসানোর প্রস্তাবও এল। দু একজন প্ল্যানচেটে রবীন্দ্রনাথকে এনে জেনে নিলেন, আমি যা লিখছি, তা সত্যি কিনা। প্ল্যানচেট যাঁরা করে থাকেন, যাঁরা পরলোকতত্ত্বে বিশ্বাসী, তাঁদের কেউ কেউ বললেন, আমাদের ধারণার পরলোকের সঙ্গে এই পরলোকও বেশ মিলে গেছে।
  • আমি মরিব না, পরলোক আমি চাহি না। চাহি না বা কেন বলি, মরণ আছেই; মৃত্যু অলঙ্ঘনীয়, অপরিহার্য্য, যে জন্মিয়াছে সেই মরিয়াছে অথবা মরিবে। তুমি নিশ্চয় মরিবে। আমিও নিশ্চয় মরিব। সময় উপস্থিত হইলে যত্নে কি ঔষধে রক্ষা করিতে পারিবে না। অতএব আমার ইচ্ছা অনিচ্ছা বৃথা।
    • সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর "কণ্ঠমালা" (উপন্যাস) , চতুর্দশ পরিচ্ছেদ, পৃষ্ঠা - ৫৭, বঙ্গদর্শন যন্ত্রে শ্রীরাধানাথ বন্দ্যোপাধ্যায় কর্তৃক মুদ্রিত ও প্রকাশিত, প্রকাশকাল - ১৮৭৭
  • টাকাই বাহ্য সম্পদ। হর হর বম্ বম্‌! বাহ্য সম্পদের পূজা কর। এ পূজার তাম্রশ্মশ্রুধারী ইংরেজ নামে ঋষিগণ পুরোহিত; এডাম স্মিথ পুরাণ এবং মিল তন্ত্র হইতে এ পূজার মন্ত্র পড়িতে হয়; এ উৎসবে ইংরেজি সম্বাদ-পত্র সকল ঢাক ঢোল, বাঙ্গালা সম্বাদ-পত্র কাঁশীদার; শিক্ষা এবং উৎসাহ ইহাতে নৈবেদ্য, এবং হৃদয় ইহাতে ছাগবলি। এ পূজার ফল, ইহলোকে ও পরলোকে অনন্ত নরক।
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, আমার মন, কমলাকান্তের দপ্তর, কমলাকান্ত - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দ (১২৯২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫৭-৫৮
  • ঈশ্বরের অমূল্য দান দয়া, তাহা যদি আমরা রত্ন ভাবিয়া কণ্ঠে স্থান দিই তাহা হইলে অনায়াসে আমরা ধর্ম্মকে লাভ করিব কারণ দুইটি এক সূত্রে গ্রথিত জিনিষ। এই জন্য ভক্ত তুলসী দাস গাহিয়াছেন—দয়া ধরম কি মূল হ্যায় নরক মূল অভিমান, তুলসী কহে মৎ ছোড় দয়া যাবৎ কণ্ঠাগত প্রাণ। ধর্ম্ম আমাদের স্বর্গসুখ ভোগ করায় ও আমাদের জীবন মরণের সঙ্গী হইয়া থাকে ও মৃত্যুকালে পরলোকের অচেনা পথের পথ প্রদর্শক হইয়া আমাদের পরলোকে লইয়া যায়—এই দয়া বৃত্তিকে অনুশীলন দ্বারা আমরা স্বর্গের দ্বারকে মুক্ত করিয়া থাকি।
    • ইন্দিরা দেবী, দয়া, আমার খাতা - ইন্দিরা দেবী, প্রকাশক-শ্রীব্রজেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯১২ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৯ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৯৩-৯৪
  • হরিমোহন অগ্রসর হইয়া দেখিল, তিনকড়ি শীল দালানে বসিয়া সেই জনতার মধ্যে অশেষ ধন বিতরণ করিতেছেন, কেহই নিরাশ হইয়া ফিরিতেছে না। হরিমোহন উচচহাস্য করিল। সে ভাবিল, “একি স্বপ্ন! তিনকড়ি শীল আবার দাতা?” তাহার পরে সে তিনকড়ির মন দেখিল। বুঝিল, সেই মনে লোভ, ঈর্ষা, কাম, স্বার্থ ইত্যাদি সহস্র অতৃপ্তি ও কুপ্রবৃত্তি দেহি দেহি রব করিতেছে। তিনকড়ি পুণ্যের খাতিরে, যশের খাতিরে, গর্ব্বের বশে সেই ভাবগুলি ছাপাইয়া রাখিয়াছেন, অতৃপ্ত রাখিয়াছেন, চিত্ত হইতে তাড়াইয়া দেন নাই। এই সময় আবার কে হরিমোহনকে ধরিয়া তাড়াতাড়ি পরলোক ভ্রমণ করাইয়া আনিল। হরিমোহন হিন্দুর নরক, মুসলমানের নরক, গ্রীকদের নরক, হিন্দুর স্বর্গ, খৃষ্টানের স্বর্গ, মুসলমানের স্বর্গ, গ্রীকদের স্বর্গ, আর কত নরক, কত স্বর্গ দেখিয়া আসিল। তাহার পরে দেখিল, সে নিজ বাড়ীতে পরিচিত ছেঁড়া মাদুরে ময়লা তোসকে ভর দিয়া বসিয়া আছে, সন্মুখে শ্যামসুন্দর। বালক বলিল, “বড় রাত্রি হইয়াছে, বাড়ীতে না ফিরিলে সকলে আমাকে বকিবে, মারামারি আরম্ভ করিবে। সংক্ষেপে বলি। যে স্বর্গ নরক দেখিলে, সে স্বপ্নজগতের, কল্পনাসৃষ্ট। মানুষ মরিলে স্বর্গ নরকে যায়, গত জন্মের ভাব অন্যত্র ভোগ করে।
    • অরবিন্দ ঘোষ, স্বপ্ন, জগন্নাথের রথ - শ্রী অরবিন্দ, তৃতীয় সংস্করণ, প্রকাশক- শ্রী অরবিন্দ আশ্রম, প্রকাশস্থান- পণ্ডিচেরী, প্রকাশসাল- ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৪৩-৪৪
  • দেবতাদের প্রিয় রাজা পিয়াদাসি গৌরব ও খ্যাতিকে বড় করে দেখেন না, যদি না তা প্রজাদের দ্বারা ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা ও ধর্মাচরণের মাধ্যমে অর্জিত হয়—বর্তমানেও এবং ভবিষ্যতেও। এই কারণেই দেবতাদের প্রিয় রাজা পিয়াদাসি গৌরব ও খ্যাতি চান। এবং দেবতাদের প্রিয় রাজা পিয়াদাসি যা কিছু করছেন, তার সবই পরলোকের মঙ্গলের জন্য—যাতে মানুষ কম পাপ করে। আর পূণ্যহীন হওয়া একপ্রকার পাপ। এটি সাধারণ মানুষের জন্য যেমন কঠিন, তেমনি মহান ব্যক্তির জন্যও, যদি না অনেক চেষ্টা ও অন্য স্বার্থ ত্যাগ করে করা হয়। বরং মহান ব্যক্তির জন্যই হয়তো এটি আরও বেশি কঠিন।
    • অশোকের শিলালিপি (খ্রিস্টপূর্ব ২৫৭ অব্দ)
  • মাল্ডার: আচ্ছা, স্কালি, তুমি কি পরলোক বিশ্বাস করো?
    স্কালি: আমি বরং এই জীবনেই একটা ভালো জীবন চাই।
  • একদিকে আধুনিক উগ্র জড়বাদ আর অন্যদিকে আত পুরোনো অধ্যাত্ম- বাদ। প্রথমটি এক নিশ্বাসে অসংকোচে উড়িয়ে দেয় পরকাল আর ইহকালের সুখকেই মানুষের উন্নতির মাপকাঠি মনে করে। দ্বিতীয়টি তার ঠিক উল্টো। তার কাছে ইহকালের মূল্য অতি নগা। আর পরকালই প্রধান। সে এক নিশ্বাসে মানুষকে বলে ইহকালের সব বেচাকেনা বন্ধ রেখে সব সময় পরকালের জন্য তৈরী থাক। অথচ প্রয়োজনের নিক্তিতে এ দুটির ওজনই সমান।
  • ধর্মনীতি, ঈশ্বর ও পরকালের সহিত যাহাদিগের সম্বন্ধ নাই, অর্থই যাহাদিগের ঈশ্বর, দোষ গোপনই যাহাদিগের পরকাল, কপটতা যাহাদিগের আশ্রয়, আমরা তাহাদিগকেই অভদ্র বলি। পুলিশ বিভাগ অধিক অংখ্যক অভদ্রের আধার হওয়াতে, রক্ষক নাম ধারণ করিয়া ভক্ষক হইয়া উঠিয়াছে।
    • "দেশ নষ্ট কপটে, প্রজা মরে চপটে, কি করিবে রিপোর্টে", গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা, মাঘ ২য় সপ্তাহ ১২৭৯ থেকে প্রকাশিত। কাঙাল হরিনাথ মজুমদার: নির্বাচিত রচনা, আবুল আহসান চৌধুরী সংকলিত ও সম্পাদিত, বাংলা একাডেমি, ঢাকা, মার্চ ১৯৯৮ থেকে উদ্ধৃত।
  • তিনি আশা করেছিলেন এবং প্রার্থনা করেছিলেন যে পরকাল বলে কিছু নেই। তারপর তিনি বুঝতে পারলেন যে এখানে একটি বৈপরীত্য জড়িত এবং কেবল আশা করেছিলেন যে পরকাল বলে কিছু নেই।
    • ডগলাস অ্যাডামস , জীবন, মহাবিশ্ব এবং সবকিছু
  • ঘটনাক্রমে, মৃত্যু সম্পর্কে প্রধান সমস্যা হল এই ভয় যে পরকাল নাও থাকতে পারে - একটি হতাশাজনক চিন্তাভাবনা, বিশেষ করে যারা দাড়ি কামানোর চেষ্টা করেছেন তাদের জন্য। এছাড়াও, এই ভয়ও রয়েছে যে পরকাল আছে, কিন্তু কেউ জানবে না যে এটি কোথায় রাখা হচ্ছে।
    • উডি অ্যালেন , দ্য আর্লি এজেস
  • যতদিন তুমি পরকালের কল্পনা, আত্মার কল্পনা, ঈশ্বরের কল্পনা, প্রভৃতি জঞ্জালগুলি মনের মধ্যে থেকে পরিষ্কার করে ঝেঁটিয়ে না ফেলতে পারবে, ততদিন সংশয় তোমার থেকেই যাবে। সখেই যে জীবনের শেষ উদ্দেশ্য এবং সুখী হওয়াই যে জীবনের চরম সার্থকতা, এ কথা বঝেও বুঝবে না। কেবলই মনে হতে থাকবে, কে জানে, হয়ত বা আরো কিছু আছে। অথচ এই আরো-কিছুর সাধন কোনদিনই খুঁজে পাবে না। এ তোমাকে ব্যস্ত করে রাখবে, অথচ গতি দেবে না, আকাঙ্ক্ষা জাগিয়ে তুলবে, কিন্তু পরিতৃপ্তি দেবে না। পথের গল্পই বলবে, কিন্তু কোনদিন পথ দেখিয়ে দিতে পারবে না।
    • চরিত্রহীন - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশক- কামিনী প্রকাশালয়, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৩৮
  • জীবাত্মা, পরমাত্মা, সৃষ্টি, পরকাল সম্বন্ধে যে-সকল প্রহেলিকা মানব-হৃদয়ে স্বভাবতঃ উদয় হয়, বৌদ্ধ-ধর্ম্মশাস্ত্রে তাহার কোন সন্তোষজনক উত্তর পাওয়া যায় না। তাহার কারণ এই যে, বুদ্ধদেব এই সকল গূঢ় প্রশ্নের উত্তরদানে বিমুখ ছিলেন। তাঁহার কোন শিষ্য তাঁহার নিকট এই সকল প্রশ্ন উত্থাপন করিলে, তিনি কোন উচ্চবাচ্য করিতেন না, মৌনভাব ধারণ করিতেন।
    • বৌদ্ধধর্ম, প্ৰথম পরিচ্ছেদ, বৌদ্ধধর্ম - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিতীয় সংস্করণ, প্রকাশসাল- ১৯২২ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩০ বঙ্গাব্দ),পৃষ্ঠা ৩-৪
  • দুঃখকষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য যদি ঈশ্বর না থাকে, এবং মন্দের উপর ভালোর জয় নিশ্চিত করার জন্য যদি ঈশ্বর না থাকে, তবে অস্তিত্বের সমস্যাটি নতুন করে উপস্থিত হয়। জীবন কি আসলেই মূল্যবান যদি এতে সুখের চেয়ে বেশি দুঃখকষ্ট থাকে, ভালোর চেয়ে মন্দ বেশি থাকে এবং যদি তা পরকালে কোন পুরস্কার বা মুক্তির প্রতিশ্রুতি না দেয়?
    • - ফ্রেডরিক সি বেইজার, ওয়েল্টশ্মার্জ: জার্মান দর্শনে হতাশাবাদ, ১৮৬০-১৯০০ (২০১৬), পি।
  • মৃত্যুকে ভুলে গিয়ে যদি মৃত্যুর নিশ্চয়তার সঙ্গে নিজেকে মিলিয়ে নিতে পারি, তাহলেও আমি সুখী নই। আর যদি আমি আমার আরামদায়ক বাগানের মধ্যে আমার চিন্তাভাবনা এবং নিজেকে বন্ধ করে দিয়ে আমার সম্পর্কে মানুষের দুঃখের সত্যটি নিষ্পত্তি করতে পারি তবে আমি নিজেকে আশ্বস্ত করতে পারি যে আমি সুখী, কিন্তু আমি নই। মহাবিশ্বের আলমারিতে একটি কঙ্কাল রয়েছে এবং আমি যে কোনও মুহুর্তে এটির মুখোমুখি হতে পারি। কর্মের প্রতি আস্থা থেকে সুখ অবিচ্ছেদ্য; এবং কর্মের আত্মবিশ্বাস স্কুলের লোকেরা যাকে শান্তি বলে অভিহিত করেছিল তার সাথে অবিচ্ছেদ্য - অর্থাৎ, ভাগ্যের সম্ভাবনায় আমি যা কিছু সম্মুখীন হতে পারি তার সাথে মনের স্থিরতা। এখন অভিজ্ঞতার এই নিখুঁত উন্মুক্ততা সম্ভব নয় যদি ব্যথাই বেদনার শেষ কথা হয়। যতক্ষণ না দুঃখের সত্যের পেছনে এমন কিছু না থাকে, কোন ধরনের রহস্য বা সমস্যা থাকে যার সমাধান বেদনাকে যা ভান করে তা ছাড়া অন্য কিছু দেখায়, তবে ইহকাল বা পরকালে মানুষের জন্য সুখ নেই; কেননা কালক্রমে জগৎ যতই ন্যায্য হইয়া উঠুক না কেন, তাহা যতই খারাপ হউক না কেন, ঈশ্বর বা অন্য কোন শক্তির দ্বারা তাহা নির্বাসনীয় দুঃখ হইয়া থাকিবে।
    • উইলিয়াম আর্নেস্ট হকিং, Meaning of God in Human Experience: A Philosophic Study of Religion (১৯১২)
  • অপ্রত্যাশিতভাবে নয়, কেউ বিশ্বাস করে না যে সবকিছু নিরর্থক, এবং সঙ্গত কারণে। আমরা সকলেই আপেক্ষিক কাঠামোর মধ্যে বাস করি এবং সেই কাঠামোর মধ্যে অকেজোতা আদর্শ থেকে অনেক দূরে। কেউ যদি আলু ম্যাশ করতে চায় তবে একটি আলু ম্যাশার নিরর্থক নয়। কিছু লোকের জন্য, সত্তার একটি সিস্টেম যা অনন্ত সুখের পরবর্তী জীবনকে অন্তর্ভুক্ত করে তা অকেজো বলে মনে হতে পারে না। তারা বলতে পারে যে এই ধরনের সিস্টেম একেবারে দরকারী কারণ এটি তাদের এই জীবনের মাধ্যমে এটি তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় আশা দেয়। কিন্তু অনন্ত সুখের পরকাল একেবারেই উপযোগী নয় এবং হতে পারে না কারণ আপনার এটি হওয়া দরকার। এটি একটি আপেক্ষিক কাঠামোর অংশ এবং এর বাইরে কিছুই নয়, ঠিক যেমন একটি আলু ম্যাশার কেবল একটি আপেক্ষিক কাঠামোর অংশ এবং আপনার যদি আলু ম্যাশ করার প্রয়োজন হয় তবেই এটি কার্যকর। একবার আপনি এই জীবনের মধ্য দিয়ে অনন্ত সুখের পরকালে পৌঁছে গেলে, আপনার সেই পরকালের জন্য কোনও ব্যবহার থাকবে না। এর কাজ সম্পন্ন হবে, এবং আপনার যা থাকবে তা হ'ল অনন্ত সুখের একটি পরকাল - শ্রদ্ধাশীল সুখবাদী এবং ধার্মিক স্বাধীনতাকামীদের জন্য একটি স্বর্গ। তাতে লাভ কী? ইহকালে বা অনন্ত সুখের পরলোকে আপনার অস্তিত্ব নাও থাকতে পারে। যেকোনো ধরনের অস্তিত্বই অর্থহীন। কোনো কিছুই স্বতঃস্ফূর্ত নয়। সবকিছুই কেবল আপেক্ষিক আলু-মাশার অর্থে ন্যায়সঙ্গত।
    • - টমাস লিগোটি, 'The Conspiracy Against the Human Race (২০১১), আইএসবিএন ৯৭৮-০৯৮৪৪৮০২৭২
  • কান্টের অব্যবহিত উত্তরসূরি ফিচতে লাইবনিৎসের সাথে সরাসরি বিরোধিতা করে ঘোষণা করেছিলেন যে এই পৃথিবীটি সম্ভাব্য সবচেয়ে খারাপ, এবং কেবল এই ভেবে সান্ত্বনা পেয়েছিলেন যে তিনি বিশুদ্ধ চিন্তার সাহায্যে নিজেকে "অতিবোধ্য" এর আনন্দে উন্নীত করতে পারেন। তিনি বলেন, "সুখের প্রবল অনুসরণে পুরুষরা প্রথম যে বস্তুটি তাদের সন্তুষ্টির সম্ভাবনা দেয় তার প্রতি আঁকড়ে ধরে, কিন্তু তৎক্ষণাৎ তারা অন্তর্মুখী চোখ ঘুরিয়ে জিজ্ঞাসা করে, 'আমি কি সুখী?' এবং তৎক্ষণাৎ তাদের অন্তরতম সত্তা থেকে একটি কণ্ঠস্বর স্পষ্টভাবে উত্তর দেয়, 'না, তোমরা আগের মতোই দরিদ্র এবং দুঃখী। অতঃপর তারা মনে করে যে, বস্তুটিই তাদেরকে ধোঁকা দিয়েছে এবং দ্রুত অন্যের দিকে ঝুঁকে পড়ে। তবে দ্বিতীয়টি প্রথমটির মতো সামান্য সন্তুষ্টি রাখে ... অস্থির ও যন্ত্রণাকাতর জীবনের মধ্য দিয়ে ঘুরে বেড়াতে ঘুরতে প্রতিটি ধারাবাহিক স্টেশনে তারা মনে করে যে সুখ পরকালে বাস করে, কিন্তু যখন তারা সেখানে পৌঁছায় তখন সুখ আর থাকে না। যে অবস্থানেই তারা নিজেদের খুঁজে পাক না কেন, দূর থেকে তারা সর্বদাই অন্য একটি বিষয় দেখতে পায় এবং যাকে স্পর্শ করা ছাড়া আর কিছুই নয়, তারা মনে করে, কাঙ্ক্ষিত আনন্দ খুঁজে পাওয়া, কিন্তু যখন লক্ষ্যে পৌঁছানো হয় তখন অসন্তোষ পথে অনুসরণ করে এবং তাদের সামনে ভুতুড়ে স্থিরতায় দাঁড়িয়ে থাকে।
    • এডগার সল্টাস, The Anatomy of Disillusion (১৮৮৭)
  • টিএমটি [টেরর ম্যানেজমেন্ট থিওরি] এই প্রস্তাব দিয়ে শুরু হয় যে মৃত্যুর অনিবার্যতা (যা মানবজাতির জন্য অনন্য পরিশীলিত জ্ঞানীয় ক্ষমতার বিবর্তনের ফলে ঘটে) সচেতনতার সাথে জীবনের জন্য জৈবিকভাবে মূল আকাঙ্ক্ষার সংমিশ্রণ সন্ত্রাসকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত করার সম্ভাবনার জন্ম দেয়। আমাদের প্রজাতিগুলি একই পরিশীলিত জ্ঞানীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে অস্তিত্বের সন্ত্রাসের সম্ভাবনা দ্বারা উত্থাপিত সমস্যাটি "সমাধান" করেছে যা সাংস্কৃতিক বিশ্বদর্শন তৈরি করতে মৃত্যুর সচেতনতার জন্ম দিয়েছে: মানবিকভাবে নির্মিত বাস্তবতার ভাগ করে নেওয়া প্রতীকী ধারণাগুলি যা অস্তিত্বের অর্থ, আদেশ এবং স্থায়ীত্ব দেয়; যা মূল্যবান তার জন্য মানদণ্ডের একটি সেট সরবরাহ করুন; এবং যারা সাংস্কৃতিক বিশ্বদর্শনে বিশ্বাস করে এবং এর মূল্যের মান অনুসারে জীবনযাপন করে তাদের কাছে আক্ষরিক বা প্রতীকী অমরত্বের কিছু রূপের প্রতিশ্রুতি দেয়। আক্ষরিক অমরত্ব সাংস্কৃতিক বিশ্বদর্শনের স্পষ্টভাবে ধর্মীয় দিকগুলি দ্বারা প্রদান করা হয় যা সরাসরি মৃত্যুর সমস্যাকে সম্বোধন করে এবং সংস্কৃতির মান ও শিক্ষার দ্বারা জীবনযাপনকারী বিশ্বস্তদের স্বর্গ, পুনর্জন্ম বা পরকালের অন্যান্য রূপের প্রতিশ্রুতি দেয়। প্রতীকী অমরত্ব সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলি দ্বারা প্রদান করা হয় যা মানুষকে তাদের পরিবার, জাতি, পেশা এবং মতাদর্শের সাথে সংযোগ এবং অবদানের মাধ্যমে তাদের নিজস্ব ব্যক্তিগত জীবনের চেয়ে বৃহত্তর, আরও তাৎপর্যপূর্ণ এবং আরও শাশ্বত কিছুর অংশ বোধ করতে সক্ষম করে।
    • জেফ শিমেল এট আল, Why do people need self-esteem? A theoretical and empirical review
  • অকাল যৌনতা।- যৌন বিশেষত্বের খুব তাড়াতাড়ি বিকাশের কারণগুলি, যা শিশুসুলভ ফ্লার্টেশন এবং যৌন আবেগের প্রাথমিক লক্ষণগুলিতে প্রকাশিত হয়েছিল, পূর্ববর্তী সংযোগে বেশ সম্পূর্ণরূপে আলোকপাত করা হয়েছিল এবং আমাদের এখানে তাদের পুনরাবৃত্তি করার দরকার নেই। এটা নিশ্চিত যে কেবল বয়ঃসন্ধিকাল এবং পরবর্তী বছরগুলির অন্তর্গত সেই অনুভূতিগুলির অকাল বিকাশের চেয়ে কয়েকটি জিনিস পুণ্যের পক্ষে আরও বিপজ্জনক হতে পারে। কোমলমতি বয়সের একটি মেয়েকে সেই সমস্ত চরিত্রগুলি প্রকাশ করা সবচেয়ে অস্বাভাবিক, তবে অস্বাভাবিক নয়, যা বয়সের অযৌক্তিকতার পরিচয় দেয়। "পুরুষের অশ্লীলতা"- এটা অস্বীকার করা যাবে না যে "সামাজিক অনাচারের" জন্য পুরুষরাই সবচেয়ে বেশি দায়ী। সাধারণ নীতিটি অন্যান্য জায়গার মতো এখানেও সত্য যে সরবরাহ চাহিদা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। পতিতাবৃত্তির পৃষ্ঠপোষকরা যদি হঠাৎ পুণ্য অর্জন করে তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়, তবে কত তাড়াতাড়ি এই জঘন্যতম ট্র্যাফিক বন্ধ হবে! পতিতালয়ের বাসিন্দারা নিজেরাই মহাদেশ হয়ে উঠবে, যদি না পুণ্যময় না হয়, পুরুষদের মধ্যে সতীত্বের এমন স্প্যামের ফলস্বরূপ। আবার, পতিত নারীর সারি, যারা ঘৃণ্য রোগ এবং ভয়াবহ মৃত্যুর দ্বারা দ্রুত পাতলা হয়ে যায়, মূলত সেই হতভাগ্য শ্রেণী থেকে নিয়োগ করা হয় যাদের পতনের জন্য অবিশ্বাসী প্রেমিক বা ধূর্ত, হৃদয়হীন স্বাধীনতাগুলি প্রধানত দায়ী। যে দুর্বল মেয়েটি অত্যধিক বিশ্বাসের মাধ্যমে প্রতারিত হয়েছে এবং তার সবচেয়ে প্রিয় ধন লুট করেছে, আত্মীয়স্বজনদের দ্বারা ত্যাজ্য হয়েছে, তার পরিচিতদের দ্বারা পরিত্যাজ্য হয়েছে এবং অর্থহীন, বন্ধুহীন, চরিত্রহীন এক শীতল পৃথিবীতে পরিণত হয়েছে। সে কি করতে পারে ? সম্মানজনক চাকরি সে খুঁজে পায় না, কারণ গুজব তাকে অনুসরণ করে। মনে হয় কেবল একটি দরজা খোলা আছে, যেটি সে নিজেই অনিচ্ছাকৃতভাবে খুলেছিল। হতাশায়, তিনি "নরকের খোলা রাস্তায়" প্রবেশ করেন এবং তার প্রথম দুঃখজনক ভুলের সাথে লজ্জার জীবন যুক্ত হয়। এদিকে, যে খলনায়ক তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল সে এখনও সমাজে তার অবস্থান বজায় রাখে এবং অন্য শিকারকে জয় করার জন্য তার শিল্পকে চালিত করে। এখানে কি অন্যায় বৈষম্য নেই? অন্ততঃ বিশ্বাসঘাতকতার উপর সমাজ যতটুকু নিক্ষেপ করে ততটুকু কুখ্যাতি দিয়ে সুরক্ষিতকে কালো করা উচিত নয় ? ফ্যাশনঃ- পোশাক-পরিচ্ছদ, উত্তম বস্ত্র, দামী অলংকার এবং ধনী রমণীগণ যে সকল অমিতব্যয়িতার প্রলোভন পোষণ করিয়া থাকেন, তাহা অনেক ক্ষেত্রেই দরিদ্র দর্জি, অপারেটর ও চাকর-বালিকাদের দুর্বল গুণের পক্ষে অতিশয় প্রবল, যাহারা এত পাপ দেখিয়াছে যে, তাহারা তাহার সহজাত ঘৃণা হারাইয়াছে, যাহা তাহারা একসময় অনুভব করিয়াছিল। স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন লাভের চিন্তা করে, যার অর্থ তাদের শোয়ের ভালবাসাকে পরিতৃপ্ত করার জন্য, তারা এই পৃথিবীর জন্য তাদের মনের শান্তি বিনিময় করে, পরকালের জন্য সমস্ত আশা করে এবং কেবল তাদের সহচর-প্রাণীদের ঘৃণা এবং ঘৃণ্য রোগের একটি সামান্য মূল্যহীন টিনসেল লাভ করে।
    • বৃদ্ধ এবং তরুণদের জন্য সরল তথ্য এর পৃষ্ঠা ২৯৩-২৯৫