বাবরি মসজিদ
অবয়ব
বাবরি মসজিদ (অনু. বাবরের মসজিদ) ভারতের উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদ জেলার অযোধ্যা শহরের রামকোট পাহাড়ে অবস্থিত ছিল। যা হিন্দুধর্মের প্রধান দেবতা রামের অনুকল্পিত জন্মভূমি রাম জন্মভূমিতে নির্মিত হয়েছিল বলে মনে করা হয়। এটি আঠারো শতক থেকেই হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরোধের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছিল, যা অযোধ্যা বিবাদ নামে পরিচিত। মসজিদটি মুঘল সম্রাট বাবরের আদেশে সেনাপতি মীর বাকী ১৫২৮–২৯ (৯৩৫ হিজরি বর্ষে) একটি মন্দির কাঠামোর উপর নির্মাণ করেছিলেন। ১৯৯২ সালে উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী কর্তৃক এটি ভেঙে ফেলা হয়েছিল। যা সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকে প্রজ্বলিত করেছিল।
উক্তি
[সম্পাদনা]- ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের নিচে রামমন্দির থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
- প্রত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ সুপ্রিয় ভার্মা ও জয়া মেনন, হাফিংটন পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে। [১]
- বাবরি মসজিদের নিচে পুরোনো ছোট মসজিদ ছিল। এর পশ্চিম পাশের দেয়াল, ৫০টি পিলার ও স্থাপত্যশৈলী তারই প্রমাণ। পশ্চিম পাশে দেয়াল দেখলেই বোঝা যায় যে এই পাশে মুখ করে নামাজ পড়া হয়েছে। এর কাঠামো মসজিদের মতো, মন্দিরের মতো নয়।...বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় থাকায় খননকাজে নিয়োজিত বিশেষজ্ঞরা চাপের মধ্যে ছিলেন। তাঁদের আসলে বাধ্য করা হয়েছিল মন্দিরের পক্ষে বলতে। অনুসন্ধানের নেতৃত্বে ছিলেন বি আর মানি, যাঁকে এলাহাবাদ হাইকোর্ট দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার মানিকে জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক পদে বসায়।
- প্রত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ সুপ্রিয় ভার্মা, হাফিংটন পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে। [২]
- ৯২ সালে মসজিদ ভাঙা বে–আইনি কাজ ছিল।
- ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি "রঞ্জন গগৈ", অযোধ্যার বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে রায় দিতে গিয়ে। [৩]
- এমনকি জামে মসজিদের মতো বড় কোনও মসজিদ ছিল বাবরি। যদি আপনারা বলেন রামচন্দ্রের জন্ম হয়েছে এখানে আর আমি বলি মহানবী (সা.) এর জন্ম হয়েছে সেখানে, তাহলে আমাদের মধ্যে বিরোধ থাকত।
- বিইং দ্য আদার: দ্য মুসলিম ইন ইন্ডিয়া বইয়ের লেখক ও সাংবাদিক সাঈদ নাকবির। [৪]
- বিরোধপূর্ণ স্থানটিতে ‘ধর্মনিরপেক্ষ উদ্দেশ্য’ মুসলমানদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে: স্থানটিতে রাম মন্দিরের পক্ষে খুব কম প্রমাণ রয়েছে, স্থানটি ভারতের জাতীয় ঐতিহ্য এবং বিরোধটি শুধু স্থানীয় নয়, এই বিরোধটি ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকারের কথা বলে।
- মুসলিম পলিটিক্যাল ডিসকোর্স ইন পোস্টকলোনিয়াল ইন্ডিয়া: মন্যুমেন্টস, মেমোরি, কনটেস্টেশন বইয়ে হিলাল আহমদ। [৫]
- স্থানীয় মুসলিমদের ভাষ্য আইন ও ঐতিহাসিকতার সঙ্গে মিথ ও লোকাচারবিদ্যা সম্পর্কিত। স্থানীয় লোক কথা অনুসারে, অযোধ্যার পাহাড়ি চূড়াটি ছিল সুফিদের প্রার্থনার স্থান। সুফিদের প্রার্থনার কারণে বাবর সিকান্দার লোদির বিরুদ্ধে পানি পথ যুদ্ধে জয়ী হয়েছিলেন। আর এই কারণে মোঘল সম্রাট স্থানটিতে মসজিদ নির্মাণের আদেশ দেন। স্থানীয় ইতিহাসে হিন্দু বৈরাগীদের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। যারা জোর করে মসজিদের বাইরে একটি প্রার্থনার স্থান গড়ে তোলে এবং আওয়াদের নবাবের ইচ্ছায় তাদের পূজা অব্যাহত থাকে। স্থানীয় আখ্যান অনুসারে, আওয়াদের হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি বজায় ছিল ব্রিটিশদের হস্তক্ষেপের পূর্ব পর্যন্ত। ব্রিটিশরাই এই বিরোধ সৃষ্টি করে।
- রাষ্ট্র বিজ্ঞানী হিলাল আহমেদ। [৬]
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]
উইকিপিডিয়ায় বাবরি মসজিদ সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।