বিল রাসেল
অবয়ব

‘’’উইলিয়াম ফেল্টন রাসেল’’’ (১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৪ – ৩১ জুলাই ২০২২) ছিলেন একজন আমেরিকান পেশাদার বাস্কেটবল খেলোয়াড়, যিনি ন্যাশনাল বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশন (এনবিএ)–এর বস্টন সেলটিকস দলের হয়ে সেন্টার পজিশনে ১৯৫৬ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত খেলেন। তিনি সেলটিকসের ডাইনাস্টির মূল ভরসা ছিলেন, যে সময়ে দলটি তার ১৩ বছরের ক্যারিয়ারে ১১টি এনবিএ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতে। রাসেলকে সর্বকালের অন্যতম সেরা বাস্কেটবল খেলোয়াড় হিসেবে গণ্য করা হয়।
সান ফ্রান্সিসকো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়, রাসেল সান ফ্রান্সিসকো ডনস দলকে পরপর দুইবার এনসিএএ চ্যাম্পিয়নশিপে নেতৃত্ব দেন—১৯৫৫ এবং ১৯৫৬ সালে। তিনি এনসিএএ টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন এবং ১৯৫৬ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে স্বর্ণপদকজয়ী যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় বাস্কেটবল দলের অধিনায়ক ছিলেন।
উদ্ধৃতি
[সম্পাদনা]
- সে আমাকে বলেছিল, সে মুখিয়ে আছে কখন বাস্কেটবল মৌসুম শেষ হবে, যাতে সে আবার বেসবলে ফিরে গিয়ে নিজের ফিটনেস হারাতে পারে।
- প্রাক্তন বস্টন সেল্টিকসের সতীর্থ ও মেজর লীগ পিচার জিন কনলি-কে নিয়ে; উদ্ধৃত “Morning Briefing: Craig Never Asked Zimmer, but He Got the Plane Truth” — হার্লে টিঙ্কহ্যাম, ‘‘দ্য লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস’’ (২৯ এপ্রিল ১৯৯০)
- “তুমি কী ভাবো, শিকাগো বুলস টানা তিনবার চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিয়ে?” — রাসেল: “বিশেষ কিছু না।”
- প্রসঙ্গত, রাসেল সেল্টিকসের হয়ে টানা আটবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন।
- [১]
‘‘আই’ম নট ইনভল্ভড এনিমোর’’ (১৯৬৯)
[সম্পাদনা]

- ‘’‘আমি বেশ সরাসরি মানুষ। তুমি কিছু বললে যা আমার ভালো লাগে, আমি সেটা জানাবো; আর যদি ভালো না লাগে, তাও জানাবো। আমি কোনো কূটনীতিক নই।’’’ তাই আমি সরাসরি বলছি — এর পেছনে কোনো গোপন কারণ নেই, আর্থিক বা দার্শনিকও নয়। আমি আর খেলতে ইচ্ছুক নই। কোচিংয়ের ব্যাপারে — যেটা আলসারের প্রধান উৎস — না, ধন্যবাদ। আমি আর কোচিংও করতে চাই না। আমি নিজেকে কখনোই মূলত কোচ হিসেবে ভাবিনি। আমি যখনই কোচদের মাঝে থাকতাম, অস্বস্তি লাগতো — সেই সব ফালতু কথা, কিভাবে “শিক্ষার্থীদের সামলাতে হয়”, কীভাবে “তাদের প্রেরণা দিতে হয়!” আমি ছিলাম একজন খেলোয়াড়। আর এখন আমি আর খেলোয়াড় বা কোচ নই।
- যদি তুমি সত্যিই জানতে চাও কেন আমি মনে করি আমার খেলা শেষ, তাহলে বলি — ‘’‘খেলাধুলায় পেশাদার ও ভাড়াটে খেলোয়াড় থাকে। তাদের পার্থক্য হলো পেশাদার সম্পৃক্ত থাকে। আমি কখনোই ভাড়াটে ছিলাম না।’’’ যদি আমি খেলা চালিয়ে যেতাম, তবে আমি ভাড়াটেতে পরিণত হতাম, কারণ আমি আর সম্পৃক্ত নই। আমার চুক্তি অনুযায়ী সেল্টিকসের সঙ্গে এখনও এক বছর বাকি। এটি খেলাধুলার অন্যতম লাভজনক চুক্তি, এবং আমি এতে খুব খুশি ছিলাম। আমার কয়েকজন বন্ধু বলেছে শুধু টাকার জন্য হলেও অন্তত ওই বছরটা খেলতে পারতাম। বিশ্বাস করো, আমি ওই টাকা পেতে আপত্তি করতাম না। কিন্তু ‘’‘আমি শুধু টাকার জন্য বাস্কেটবল খেলবো না। যদিও আমি পারিশ্রমিক পেয়েছি, কিন্তু আমি খেলেছি আরও অনেক কারণে।’’’
- ‘’‘আমি খেলতাম কারণ আমি উপভোগ করতাম — কিন্তু ব্যাপারটা শুধু এটুকু নয়। আমি খেলতাম কারণ আমি শ্রেষ্ঠ হতে অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলাম।’’’ আমি ছিলাম একটি দলের অংশ, এবং আমি নিজেকে উৎসর্গ করেছিলাম সেই দলটিকে শ্রেষ্ঠ বানানোর জন্য। ‘’‘আমার কাছে সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্যগুলোর একটি হলো, একদল মানুষ যখন একটি সাধারণ লক্ষ্য অর্জনে একসাথে কাজ করে — কখনো নিজেদেরকে অনুচ্চ করে তোলে, আবার কখনো নিজেদেরকে জোরালোভাবে তুলে ধরে, যাতে প্রকৃত দলগত প্রচেষ্টা বাস্তবায়িত হয়।’’’ আমি সেটা করতে চেয়েছিলাম — আমরা সবাই সেটা করতে চেয়েছিলাম — সেল্টিকসে। আমি মনে করি আমরা সফল হয়েছি। আমি প্রায়শই কল্পনায় দাঁড়িয়ে সেই প্রচেষ্টা দেখতাম। সেটি দেখতে আমার ভালো লাগতো। খেলাধুলা ছাড়াও এটি দেখা তেমনই সুন্দর। সেল্টিকসের সেই প্রচেষ্টার অংশ হওয়া আমার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এটা আমাকে গড়ে তুলেছে, বিকশিত করেছে, এবং আমি মনে করি এটা আমাকে খেলাধুলার বাইরের জীবনের জন্য প্রস্তুত করেছে। কিন্তু খেলার দিক থেকে বললে, আমার প্রতিযোগিতার ইচ্ছা শেষ হয়ে গেছে। যদি আমি এখন খেলতে নামি, তাহলে অন্যরা বুঝে যাবে আমি আর মন থেকে খেলছি না। এটা কোনোভাবে খেলার মতো নয় — আসলে এটা কোনো কিছু করারই উপায় নয়।
- গত মৌসুমে আমরা যতটা ভালো খেলেছি, লোকে আমাদের ততটা কৃতিত্ব দেয়নি। ব্যক্তিগতভাবে, আমি মনে করি আমরা জিতেছি কারণ আমাদের দলে সেরা খেলোয়াড়রা ছিল। অনেকে অন্য দলগুলোর তারকাদের নিয়ে কথা বলেছে, আর পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেছে যে অন্য দলগুলো ভালো ছিল। চল দেখি পরিসংখ্যান। বাস্কেটবলে গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান হলো — পয়েন্ট স্কোর, রিবাউন্ড আর অ্যাসিস্ট। কিন্তু কেউ পরিসংখ্যান রাখে না আরও গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলোর — যেমন, এমন একটা চমৎকার ফেক যা তোমার সতীর্থকে স্কোর করতে সাহায্য করে; এমন একটা খারাপ পাস তুমি প্রতিপক্ষকে করতে বাধ্য করো; তোমার দীর্ঘ পাস যা অন্য আরেকটা পাস তৈরি করে এবং সেটা থেকে আবার আরেকটা পাস হয়, যেটা থেকে স্কোর হয়; অথবা যখন তুমি বুঝে ফেলো তোমার কোনো সতীর্থ সেই রাতে দারুণ খেলছে, তখন তুমি নিজের শট ছেড়ে তাকে সুযোগ দাও। এই সবকিছু। এসব ছিল এমন কিছু জিনিস যেখানে আমরা শ্রেষ্ঠ ছিলাম, অথচ পরিসংখ্যানে তার কোনো ছাপ নেই। ‘’‘আমাদের জন্য একটাই পরিসংখ্যান গুরুত্বপূর্ণ ছিল — জয় ও পরাজয়।’’’
- সবাই পারতো কোচকে ভালো পরামর্শ দিতে — শুধু বিল রাসেল বাদে। সিদ্ধান্ত আমি নিতাম, কিন্তু আমি প্রচুর শুনতাম। কখনো কখনো প্র্যাকটিসে অন্যরা আধা ঘণ্টা কথা বলতো, আমি একটা শব্দও বলতাম না। আমি তাদের উৎসাহ দিতাম নিজেদের মতামত জানাতে।
- ‘’‘কেউ সেল্টিকস সম্পর্কে লিখতে পারবে না যদি রেড আওয়ারবাখকে নিয়ে কিছু না বলে। পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে আমার সাফল্যের বড় একটা অংশ এসেছে যেভাবে তিনি প্রথম আমাকে মূল্যায়ন করেছিলেন তা থেকে।’’’ অনেকেই বলেছিল আমি সফল হবো না, কারণ আমি স্কোর করতে পারি না। রেড আমাকে প্রথম দিনেই বলেছিলেন, তিনি পরোয়া করেন না আমি পয়েন্ট করি কি না। তিনি বলেছিলেন, সেল্টিকসে এমন খেলোয়াড় আছে যারা স্কোর করতে পারে। তিনি আমার কাছ থেকে চেয়েছিলেন ডিফেন্স আর রিবাউন্ড। সেটা আমার একেবারে ভালো লেগেছিল। ‘’‘আমাদের মধ্যে একটা বড় মিল ছিল — জেতার ইচ্ছা।’’’ তিনি যখন আমাকে কোচ বানালেন, শুধু বললেন, “তোমার কাজ এটা।” তিনি কখনো আমার ওপর চাপ দেননি। এমনকি প্র্যাকটিসেও আসতেন না, যদি আমি তাকে আমন্ত্রণ না দিতাম। অবশ্যই আমি দিতাম — প্রায়ই। খেলাটির ইতিহাসের অন্যতম মেধাবী একজনের পরামর্শ না নেওয়া পাগলামি হতো। দুর্বল মুহূর্তে, আমি রেডকে প্রায় পছন্দ করে ফেলতাম — সামান্য।
রাসেল সম্পর্কে উক্তি
[সম্পাদনা]- ওই লোকটা বছরে কত উপার্জন করে? যদি সে আমাদের কাছ থেকে দূরে থাকে, তাহলে আমাদের লাভ হবে যদি আমরা তাকে পাঁচ বছরের জন্য টাকা দিয়ে বিদায় করে দিই।
- হল-অব-ফেম খেলোয়াড় ডল্ফ শেইজ; [২]
- [রাসেলের বমি করার শব্দ] সেটাও স্বাগত জানানো হয়, কারণ এর মানে সে খেলার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। লকার রুমে আমরা হেসে বলি, ‘ভাই, আজ রাতে আমরা ঠিক থাকব।’
- কোচ ও প্রাক্তন সেলটিকস খেলোয়াড় জন হ্যাভলিসেক
- ‘’‘টনি ডিনোজ্জো’’’: উইলিয়াম ফেল্টন রাসেল, ৫ বার MVP (এমবিপি), সর্বকালের সেরা বাস্কেটবল চ্যাম্পিয়ন। সে এতটাই নার্ভাস হয়ে যেত, এতটাই উত্তেজিত থাকত, যে প্রতিটি খেলায় নামার আগে তাকে বমি করতে হতো… এক রাতে, সেলটিকস কোর্টে নামছে। বিশাল এক খেলা, খুব গুরুত্বপূর্ণ। রেড সাইডলাইনে দাঁড়িয়ে ওদের ওয়ার্ম-আপ দেখছে, কিন্তু কিছু একটা ঠিকঠাক লাগছে না। সে সবাইকে কোর্ট থেকে নামিয়ে আবার লকার রুমে নিয়ে যায়। কেন? কারণ রাসেল বমি করেনি। জানো রেড এরপর কী বলে?’’‘লারয় জেথ্রো গিবস’’’: “ভিতরে গিয়ে বমি করো, আমাদের খেলা জিততে হবে।”
- ‘’এনসিআইএস’’, পর্ব ৬.০৮, “ক্লোক” (২০০৮)