মন্ত্র
অবয়ব
মন্ত্র বলতে বোঝায় একটি ঐশ্বরীক বাচনভঙ্গী, ভক্তিমূলক শব্দ, বা শব্দাংশ, বাক্য, ধ্বনি বা শব্দের সমষ্টি এবং বিশ্বাস করা হয় যে এর মধ্যে ঐশ্বরিক, মনস্তাত্ত্বিক এবং আধ্যাত্মিক শক্তি রয়েছে। মন্ত্রের হয়ত কোন বাক্যরীতি বা আক্ষরিক অর্থ নেই; মন্ত্রের আধ্যাত্মিক মূল্য বোঝা যায় যখন এটি শোনা, দেখা বা মনের গভীরে ধারণ করা হয়। ভারতীয় হিন্দুদের দ্বারা বৈদিক যুগ থেকেই মন্ত্রের বিষয়ে জানা যায়। তাই অনেক মন্ত্রই প্রায় ৩০০০ বছরের পুরনো। অন্যান্য ধর্মবিশ্বাসেও মন্ত্রের প্রচলন দেখা যায়।
উক্তি
[সম্পাদনা]- আমরা মহর্ষির উপদেশে জানলুম যে উপবীত গ্রহণের মুখ্য তাৎপর্য গায়ত্রী মন্ত্রে দীক্ষা। তা হতেই আমাদের নূতন জন্ম— তখন থেকে আমরা দ্বিজ। ব্রহ্মসাধনের অঙ্গরূপে গায়ত্রী মন্ত্রের উপর পিতৃদেবের কতটা আস্থা ছিল তা তাঁর আত্মচরিতে দেখতে পাই। তিনি বলছেন “পুরুষানুক্রমে আমরা এই গায়ত্রী মন্ত্রে দীক্ষিত হইয়া আসিতেছি। এই মন্ত্র আমাদের শিরায় শিরায়। যদিও আমি বুঝিলাম যে ব্রহ্মউপাসনার জন্য গায়ত্রী সাধারণের পক্ষে উপযুক্ত নহে, কিন্তু আমি সেই সাবিত্রী দেবীকেই ধরিয়া রহিলাম, কখনো পরিত্যাগ করিলাম। না। গায়ত্রীর গূঢ় ভাবার্থ আমার মনে দিন দিন আরো প্রকাশ হইতে লাগিল। ক্রমে ক্রমে ‘ধিয়োয়োনঃ প্রচোদয়াৎ’ আমার সমস্ত হৃদয়ে মিশিয়া গেল। ইহাতে আমার দৃঢ় নিশ্চয় হইল যে, ঈশ্বর আমাকে কেবল মূক সাক্ষীর ন্যায় দেখিতেছেন তাহা নহে। তিনি আমার অন্তরে থাকিয়া অনুক্ষণ আমার বুদ্ধিবৃত্তি সকল প্রেরণ করিতেছেন। ইহাতে তাঁহার সহিত একটি ঘনিষ্ঠ জীবন্ত সম্বন্ধ নিবদ্ধ হইল।”
- সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর, উপনয়ন, আমার বাল্যকথা- সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বৈতানিক প্রকাশনী, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫৯
- রামমােহনের পরে ‘বন্দেমাতরম্’ মন্ত্রের উদ্গাতা ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র ভারতের জাতীয় আশা-আকাঙ্ক্ষাকে জাতির সম্মুখে স্পষ্টরূপে তুলিয়া ধরেন। বঙ্কিমচন্দ্র ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম স্রষ্টা। ভারতের জাতীয় মন্ত্র ‘বন্দেমাতরম্’ সঙ্গীত এই মহাপুরুষের অক্ষয় অবদানের কথা স্মরণ করাইয়া দেয়।
- বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র- প্রফুল্লরঞ্জন বসু রায় ও শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রকাশক- বিদ্যাসাগর বুক ষ্টল, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৬
- সকল গ্রন্থের মধ্যে আদি গ্রন্থ বেদ। তাহার মধ্যে আদিতম ঋগ্বেদ। এই ঋগ্বেদ সম্বন্ধে দুই একটী কথা বলা আবশ্যক বোধ হইতেছে। এই ঋগ্বেদ কতকগুলি মন্ত্রের সমষ্টি মাত্র। এই মন্ত্রগুলি ছন্দোবদ্ধ গীতের ন্যায়। এই সকল মন্ত্র এককালের রচিত মন্ত্র নয়। তাহাদের ভাষা, বর্ণনীয় বিষয়, বর্ণিত সমাজের ছবি প্রভৃতি দেখিলেই তাহাদিগকে নানা যুগের রচিত বলিয়া বোধ হয়। এই সকল মন্ত্রের অধিকাংশ এমন সময়ে রচিত হইয়াছিল, যখন বর্ণমালার সৃষ্টি হয় নাই এবং লিখিবার প্রথা প্রবর্তিত ছিল না। তখন ঐ সকল মন্ত্র মথে মুখে রচিত হইয়া মুখে মুখে শেখা হইত, এবং মুখে মুখে বিচরণ করিত। লোকে ইহার মুখে, উহার মুখে, তাহার মুখে মন্ত্রগুলি সর্ব্বদা শুনিত কিন্তু কেহ কখনও তাহা লিখিত দেখে নাই। এই জন্য ঐ সকলের নাম শ্রুতি হইয়াছিল।
- শিবনাথ শাস্ত্রী, জাতিভেদ - শিবনাথ শাস্ত্রী, সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ পুস্তক প্রচার বিভাগ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দ (১২৯১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২
- এক যে আছে কুজ্বাটিকার দেওয়াল-ঘেরা কেল্লা,—
মৌনমুখী সেথায় নাকি থাকে!
মন্ত্র প’ড়ে বাড়ায় কমায় জোনাক্-পোকার জেল্পা,
মন্ত্র প’ড়ে চাঁদকে সে রোজ ডাকে!- সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, ফুলের রাণী, ফুলের ফসল - সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, তৃতীয় সংস্করণ, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান্ প্রেস লিমিটেড, এলাহাবাদ, পৃষ্ঠা ৯৯
- মহে। দীক্ষা কি? দীক্ষিত হইতে হইবে কেন? আমি ত ইতিপূর্ব্বেই মন্ত্র গ্রহণ করিয়াছি।
সত্য। সে মন্ত্র ত্যাগ করিতে হইবে। আমার নিকট পুনর্ব্বার মন্ত্র লইতে হইবে।
মহে। মন্ত্র ত্যাগ করিব কি প্রকারে?
সত্য। আমি সে পদ্ধতি বলিয়া দিতেছি।
মহে। নূতন মন্ত্র লইতে হইবে কেন?
সত্য। সন্তানেরা বৈষ্ণব।- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, আনন্দমঠ, একবিংশ পরিচ্ছেদ, দ্বিতীয় সংস্করণ, প্রকাশস্থান- চুঁচুড়া, প্রকাশসাল- ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দ (১২৯০ বঙ্গাব্দ),পৃষ্ঠা ৮১
- প্রত্যহ অন্তত একবার তাঁকে চিন্তা করবে। তাঁকে চিন্তা করবার মন্ত্র আমাদের বেদে আছে। এই মন্ত্র আমাদের ঋষিরা দ্বিজেরা প্রত্যহ উচ্চারণ ক’রে জগদীশ্বরের সম্মুখে দণ্ডায়মান হতেন। সেই মন্ত্র, হে সৌম্য, তুমিও আমার সঙ্গে সঙ্গে একবার উচ্চারণ করো:
ওঁ ভূর্ভুবঃ স্বঃ তৎসবিতুর্বরেণ্যং ভর্গো দেবস্য ধীমহি ধিয়ো য়ো নঃ প্রচোদয়াৎ।- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, খৃষ্ট - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫৮ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫২
- জৈমিনির বেদের প্রাধান্য স্বীকারের মধ্যে একটু বিশেষত্ব আছে। ইনি বলেন বেদ যে সকল কর্ম্ম অনুষ্ঠান করিতে বলিতেছেন আমাদিগের তাহা অবশ্য কর্ত্তব্য, এবং বেদে যে সমস্ত মন্ত্র আছে তাহা আমাদিগের সাধন করা অবশ্য কর্ত্তব্য। কিন্তু মন্ত্রাদিতে বর্ণিত কোনও ঈশ্বর বা দেবতা বা পিতৃপুরুষ আমাদিগের কর্ম্মফলদাতা বলিয়া কল্পনা করা উচিত নহে, কারণ সে কল্পনা আমাদিগের মানসিক ব্যাপার মাত্র, তাহা বেদবিহিত নহে। ইনি বলেন মন্ত্রের নিমিত্তই মন্ত্র এবং যজ্ঞাদি কর্ম্মের নিমিত্তই যজ্ঞ; ঐ মন্ত্র ও যজ্ঞই কর্ম্মীকে শুভাশুভ ফল দান করিয়া থাকে। ইনি বলেন বেদ-কথিত বর্ণাশ্রম ধর্ম্মপালনই কর্ত্তব্য, তদ্বিপরীতাচরণে প্রত্যবায় হয়।
- বিনয় কুমার সান্যাল, মীমাংসা দর্শন, চিদ্বিলাস - বিনয় কুমার সান্যাল, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩২-৩৩
- ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের যে গ্রন্থিবন্ধনের প্রয়োজন আছে মন্ত্র তার সহায়তা করে। এই মন্ত্রকে অবলম্বন করে আমরা তাঁর সঙ্গে একটা-কোনো বিশেষ সম্বন্ধকে পাকা করে নেব। সেইরূপ একটি মন্ত্র হচ্ছে: পিতা নোহসি।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শান্তিনিকেতন ব্রহ্মচর্যাশ্রম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল-১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫২
- যোগীন বললে, এই বাঘিনীটির নাম রামপিয়ারী। রামখেলাওন আর রামপিয়ারী দুটোই বছর দুই আগে গয়া জেলার গড়বড়িয়ার জঙ্গলে ধরা পড়ে। এদের দস্তুর মত মন্ত্র পড়িয়ে বিবাহ হয়েছিল, কিন্তু মনের মিল হল না, তাই আলাদা খাঁচায় রাখতে হয়েছে।
- রাজশেখর বসু ,কৃষ্ণকলি ইত্যাদি গল্প ,১৯৫৩ (পৃ. ২২)
- মাতাজি। গুরুর কাছে যে বশীকরণমন্ত্র শিখেছিলেম, আগে সেইটে প্রয়ােগ ক’রে তবে আত্মপরিচয় দিলেম, এখন আর তােমার নিষ্কৃতি নেই।
অন্নদা। আর কারাে উপর এ মন্ত্রের পরীক্ষা করা হ’য়েচে?
মাতাজি। না তােমার জন্যেই এতোদিন এ মন্ত্র ধারণ ক’রে রেখেছিলেম! আজ এর আশ্চর্য্য প্রত্যক্ষফল পেয়ে গুরুর চরণে মনে মনে শতবার প্রণাম ক’র্চি। অব্যর্থ মন্ত্র! মন্ত্রে তােমার কি বিশ্বাস হ’লাে না?
অন্নদা। বশীকরণের কথা অস্বীকার ক’র্তে পারি নে! এখন তােমাকে এক বার এই মন্ত্রগুলাে পড়িয়ে নিতে পার্লে আমি নিশ্চিন্ত হই।- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বশীকরণ, ব্যঙ্গকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৯৭
- সাম্যবাদ ও স্বাধীনতা মন্ত্র প্রচার করিবার জন্য তােমরা গ্রামে গ্রামে ছড়াইয়া পড়। স্বাধীন ভারতের যে দৃশ্য আজ তােমাদের সম্মুখে ধরিলাম তাহা সমগ্র দেশবাসীর সম্মুখে ধর। স্বাধীনতার পুর্ব্বাস্বাদ নিজের অন্তরে পাইলে সকলেই পাগল হইয়া উঠিবে। এই আস্বাদ—এই অনুভূতি নিজের অন্তরে আগে অবশ্য পাওয়া চাই। নিজের অন্তরে এই আলােক জ্বালাে—সেই দীপ হস্তে লইয়াই দেশবাসীর দ্বারস্থ হও। যাও চীনা ছাত্রদের মত—রুষ তরুণদের মত—চাষীর পর্ণকুটীরে ও মজুরদের আবর্জ্জনাপূর্ণ ভগ্ন গৃহে। তাহাদের জাগাও। আর যাও—মাতৃজাতির সমীপে। যাঁরা শক্তিরূপিনী অথচ সমাজের চাপে আজ যাঁরা হইয়াছেন— “অবলা”—তাঁদেরও জাগাও—
- সুভাষচন্দ্র বসু, হুগলী জেলা ছাত্র-সম্মেলনে প্রদত্ত ভাষণ, নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু, শ্রীগোপাললাল সান্যাল কর্ত্তৃক সঙ্কলিত ও প্রকাশিত, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৪
- বালক আসনে বসিল। যজ্ঞনাথ তাহার কপালে চন্দন দিলেন, সিঁদুরের টিপ দিয়া দিলেন, গলায় মালা দিলেন; সম্মুখে বসিয়া বিড়্ বিড়্ করিয়া মন্ত্র পড়িতে লাগিলেন।
দেবতা হইয়া বসিয়া মন্ত্র শুনিতে নিতাইয়ের ভয় করিতে লাগিল; ডাকিল, “দাদা।”
যজ্ঞনাথ কোনো উত্তর না করিয়া মন্ত্র পড়িয়া গেলেন।- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সম্পত্তি-সমর্পণ, গল্পগুচ্ছ (প্রথম খণ্ড)- প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭৭-৭৮
- গুণাকর কৃতাঞ্জলি হইয়া কহিল মহাশয় যদি কৃপা করিয়া উপদেশ দেন তাহা হইলে আমিও সেই বিদ্যার সাধনা করি। যোগী তদীয় বিনয়ের বশীভূত হইয়া এক মন্ত্র উপদেশ দিয়া কহিলেন তুমি এই মন্ত্র লইয়া চত্বারিংশৎ দিবস অর্দ্ধরাত্র সময়ে জলাবগাহনপূর্ব্বক একাগ্র চিত্তে জপ কর।
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, সপ্তদশ উপাখ্যান, বেতালপঞ্চবিংশতি - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, নবম সংস্করণ, প্রকাশক- সংস্কৃত প্রেস ডিপোজিটরি, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দ (১২৭৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৭২
- মা। থাক্ থাক্ তবে, থাক্ এই মায়া।
প্রাণপণে ফিরিয়ে আনব মোর মন্ত্র—
নাড়ী যদি ছিঁড়ে যায় যাক,
ফুরায়ে যায় যদি যাক নিশ্বাস।
প্রকৃতি। সেই ভালো, মা, সেই ভালো।
থাক্ তোর মন্ত্র, থাক্ তোর—
আর কাজ নাই, কাজ নাই, কাজ নাই।
না না না— পড়্ মন্ত্র তুই, পড়্ তোর মন্ত্র—- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, চণ্ডালিকা, গীতবিতান- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দ (১৪০০ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭২৬
- লামার ডানদিকে একটা ঘটির মুখে ঝুমঝুমির ন্যায় যে জিনিস দেখিতেছ, তাহ তাঁহার “যপ-চক্র”। এইযপ-চক্র অতি অদ্ভুত জিনিস। ইহার ভিতরে ইহাদের সর্বপ্রধান মন্ত্র অনেকবার লেখা আছে। হাতলে ধরিয়া পাক দিয়া চক্র ঘুরাইতে হয়। চক্র এক পাক ঘুরিয়া আসিলে ঐ মন্ত্র হয়ত দশ হাজার বার (যতবার তাহা লেখা আছে) যপ করিবার ফল হইবে। চক্র আবার ঘুরাইবার উল্টা সোজা আছে। উল্টা ঘুরাইলে ফলও উল্টা হইবে। এ চক্রটি নিতান্তই ছোট। এমন চক্রও আছে, যে তাহা ঘুরাইতে দুজন বলিষ্ঠ লোকের দরকার। তাহার ভিতরে অনেক কাগজ ধরে, সুতরাং মন্ত্রও অনেকবার লেখা যায়, আর তাহাতে ফলও সেই পরিমাণে বেশী হয়। বড় বড় মঠে ১০ হাত ২০ হাত উচু প্রকাণ্ড যপ-চক্র খাটান থাকে। পয়সা
- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, তিব্বত, বিবিধ প্রবন্ধ, উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, প্রকাশক- বসাক বুক স্টোর প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল-১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৯২৪
- বঙ্কিমের স্মৃতি প্রসঙ্গে “বন্দে মাতরম্” গান ও মন্ত্রের স্মৃতি ভেসে না উঠে যায় না। সে গান বঙ্কিম-ভক্তিতে ডোবা আমার প্রাণে প্রথম ফোটেনি। তার ফোটানতে ছিল রবীন্দ্রের হাত। জীবনের প্রথম দিকে কাব্য বা সঙ্গীতের রসগ্রাহিতায় রবীন্দ্রের আত্মপর বিচার ছিল না। যে কবির যেটি ভাল লাগত সেটিতে নিজের সুর বসিয়ে, গেয়ে ও গাইয়ে তার প্রচার করতেন।
- সরলা দেবী চৌধুরানী, জীবনের ঝরাপাতা- সরলা দেবী চৌধুরানী, পরিচ্ছেদ সাত, প্রকাশক- শিশু সাহিত্য সংসদ প্রাইভেট লিমিটেড, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৪৭
- নূতন ব্রাহ্মণ হওয়ার পরে গায়ত্রী মন্ত্রটা জপ করার দিকে খুব একটা ঝোঁক পড়িল। আমি বিশেষ যত্নে এক মনে ওই মন্ত্র জপ করিবার চেষ্টা করিতাম। মন্ত্রটা এমন নহে যে সে বয়সে উহার তাৎপর্য আমি ঠিকভাবে গ্রহণ করিতে পারি। আমার বেশ মনে আছে আমি “ভূভুর্বঃস্বঃ” এই অংশকে অবলম্বন করিয়া মনটাকে খুব করিয়া প্রসারিত করিতে চেষ্টা করিতাম। কি বুঝিতাম কি ভাবতাম তাহা স্পষ্ট করিয়া বলা কঠিন, কিন্তু ইহা নিশ্চয় যে, কথার মানে বােঝাটাই মানুষের পক্ষে সকলের চেয়ে বড়ো জিনিস নয়। শিক্ষার সকলের চেয়ে বড়াে অঙ্গটা-বুঝাইয়া দেওয়া নহে,——মনের মধ্যে ঘা দেওয়া।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পিতৃদেব, জীবন-স্মৃতি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দ (১৩৪৮ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭৭-৭৮
- কাল্যাণদায়িনী জননীগণ যদি সন্তানগণকে স্বদেশের মঙ্গলমন্ত্রে—প্রেমের মন্ত্রে দীক্ষিত করেন, তাহাদের সুকুমার প্রাণ কর্তব্য শিক্ষায় সুগঠিত করিতে আরম্ভ করেন,—তাহাদিগকে অভেদব্রতে উদ্বোধিত করিয়া তোলেন, তবে তাহারা নিশ্চয়ই ভবিষ্যৎ জীবনে আপনাদের দেশকে শত শত কুসংস্কার ও জাতিবিদ্বেষরূপ আবর্জনার হস্ত হইতে উদ্ধার করিবার জন্য যত্নশীল হইবে। শক্তিরূপিণী নারীগণ সকলেই এই ব্রত গ্রহণ করুন।
- কুমুদিনী বসু, সমাজ-ব্যাধি ও তাহার প্রতিকার, সাহিত্য-চিন্তা - কুমুদিনী বসু, প্রকাশস্থান- ঢাকা, প্রকাশসাল- ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩২২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৪
- মাথার ওপরে শরতের নির্মল নীলিমা। দূরে বোধনের বাজনা। অকাল-বোধন নয়, আকাল-বোধন। কিন্তু কে জাগবে এই বোধন মন্ত্রে? চৌরঙ্গীর হোটেলে সে আজ রঙমাখানো মুখে মদের গেলাসে চুমুক দিয়েছে।
- নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়, তীর্থযাত্রা, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড, মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স, পৃষ্ঠা ৩১৯
- কে কাহার পিতা কে কাহার মাতা কে কাহার পুত্ত্র। সকলই ভ্রান্তিমূলক। অতএব আর আমি বৃথা মায়ায় মুগ্ধ হইব না এবং শ্রেয়ঃসাধন বোধ করিয়া যে পথ অবলম্বন করিয়াছি তাহাও পরিত্যাগ করিব না। এই বলিয়া পিতা মাতার নিকট বিদায় হইল এবং সন্ন্যাসীর আশ্রমে উপস্থিত হইয়া অগ্নিপ্রবেশপূর্ব্বক মন্ত্রসাধনে যত্ন করিতে লাগিল কিন্তু সিদ্ধ হইতে পারিল না। ইহা কহিয়া বেতাল বিক্রমাদিত্যকে জিজ্ঞাসা করিল মহারাজ কি কারণে ব্রাহ্মণ সাধনা করিয়া সিদ্ধ হইতে পারিল না বল। বিক্রমাদিত্য কহিলেন একাগ্রচিত্ত না হইলে মন্ত্রসিদ্ধি হয় না। ব্রাহ্মণের মনে একান্ত নিষ্ঠা ছিল না সেই বৈগুণ্য প্রযুক্তই তাহার সাধনা বিফল হইল। ইহা শুনিয়া বেতাল কহিল যে সাধক মন্ত্র সিদ্ধ করিবার উদ্দেশে এতাদৃশ-দুঃসহ ক্লেশ স্বীকার করিলেক সে একাগ্রচিত্ত হয় নাই তাহার প্রমাণ কি।
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, সপ্তদশ উপাখ্যান, বেতালপঞ্চবিংশতি - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, নবম সংস্করণ, প্রকাশক- সংস্কৃত প্রেস ডিপোজিটরি, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দ (১২৭৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৭৪-১৭৫
- বাঁশরী- সন্ন্যাসীর উপদেশ সোনার জলে বাঁধানো খাতায় লিখে রাখতুম। তার পরে প্রবৃত্তির জোর কলমে তার প্রত্যেক অক্ষরের উপর দিতুম কালীর আঁচড় কেটে। প্রকৃতি জাদু লাগায় আপন মন্ত্রে, সন্ন্যাসীও জাদু করতেই চায় উল্টো মন্ত্রে; ওর মধ্যে একটা মন্ত্র নিতুম মাথায় আর-একটা মন্ত্রে প্রতিদিন প্রতিবাদ করতুম হৃদয়ে।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাঁশরী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৬৫
- আমার অবস্থা দেখে বাড়িওয়ালা কৃষ্ণগোপাল দেবনাথ আমাকে নিয়ে গেলেন কাঁকুড়গাছিতে তাঁর পরিচিত এক তান্ত্রিকের কাছে। প্রণামী হিসেবে দিতে হল এক কেজি চিনি, একটা মোমবাতি, একপ্যাকেট ধূপকাঠি ও একশো টাকা। তান্ত্রিকের নাম ধীরেন্দ্রনাথ গোস্বামী। ঠিকানা ৬৮ মানিকতলা মেন রোড। “তান্ত্রিকবাবা ধূপ মোমবাতি জ্বালিয়ে মড়ার খুলি নিয়ে কী সব মন্ত্র পড়লেন, ওটাকে নাকি খুলি চালান বলে। তারপর জানালেন—আনন্দ পালিত রোডের ওই ট্রেনে কাটা পড়া লোকটার আত্মাই আমার এই বর্তমান অবস্থার সৃষ্টি করেছে। অতৃপ্ত আত্মা তিনজনকে রেললাইনে টেনে নিয়ে আত্মহত্যা করাবে। তৃতীয় যে ব্যক্তিকে মারবে সে হল আমি।
- প্রবীর ঘোষ, অলৌকিক নয়, লৌকিক (দ্বিতীয় খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ, প্রকাশক- দে’জ পাবলিশিং, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ২০১৭ খ্রিস্টাব্দ (১৪২৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮০
- প্যাগোডার দরজায় বর্মী ফুলওয়ালী ফুল ও মোমবাতি বিক্রয় করিতেছে। বুদ্ধদেবের মূর্ত্তির সম্মুখে সারি সারি মোমবাতি জ্বলিতেছে। ফুঙ্গী ঘণ্টা বাজাইয়া জয়মঙ্গল গাথা পাঠ করিতেছেন। জগদ্ব্যাপী এই মহাযুদ্ধ ও হত্যাকাণ্ডের মধ্যে বুদ্ধদেবের মুখ তেমনি অচঞ্চল—অধরে তেমনি রহস্যময় হাসি। পূজারীগণের কণ্ঠে ধ্বনিত হইল অহিংসার অবতার বুদ্ধদেবের প্রতি আনুগত্য—বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি—ধম্মং শরণং গচ্ছামি। কিন্তু একা ব্রহ্মের নরনারী শরণ লইলে কি হইবে? যতদিন না সারা জগৎ অহিংসা মন্ত্রে ব্রতী না হয়, ততদিন যুদ্ধ চলিবে—সাইরেন বাজিবে—বোমা পড়িবে—মানুষ পতঙ্গের ন্যায় মরিবে।
- এম. জি. মুলকর, আজাদী সৈনিকের ডায়েরী- এম. জি. মুলকর, বার্মা ত্যাগের বৃথা চেষ্টা, প্রকাশক-ওরিয়েন্টাল এজেন্সী, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৪-২৫
- লোকটা তখন বলল, “মহারাজ, আমি একটা মন্ত্র জানি, আমি যুগজন্ম ধরে বসে আছি, দ্রিঘাংচুর দেখা পেলে সেই মন্ত্র তাকে যদি বলতে পারতাম তা হলে কি যে আশ্চর্য কাণ্ড হত তা কেউ জানে না। কারণ, তার কথা কোন বইয়ে লেখে নি। হায় রে হায়, এমন সুযোগ আর কি পাব?” রাজা বললেন, “মন্ত্রটা আমায় বল তো।” লোকটা বলল, “সর্বনাশ! সে মন্ত্র দ্রিঘাংচুর সামনে ছাড়া কারুর কাছে উচ্চারণ করতে নেই। আমি একটা কাগজে লিখে দিচ্ছি—আপনি দুদিন উপোস ক’রে তিন দিনের দিন সকালে উঠে সেটা পড়ে দেখবেন। আপনার সামনে দাঁড়কাক দেখলে, তাকে আপনি মন্ত্র শোনাতে পারেন, কিন্তু খবরদার, আর কেউ যেন তা না শোনে—কারণ, দাঁড়কাক যদি দ্রিঘাংচু না হয়, আর তাকে মন্ত্র বলতে গিয়ে অন্য লোকে শুনে ফেলে, তা হলেই সর্বনাশ!”
- সুকুমার রায়, দ্রিঘাংচু, সুকুমার সমগ্র রচনাবলী (প্রথম খণ্ড), সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী, কল্যাণী কার্লেকর, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১২০
- আশু। আমাকে আপনার পুত্র ক’রেই রাখবেন, এমন সুবাসঙ্গীত শােন্বার অধিকার থেকে বঞ্চিত ক’র্বেন না। যা পাওয়া গেল, এই আমি পরম লাভ মনে ক’র্চি। মন্ত্রতন্ত্রের কথা ভুলেই গেচি। এখন বুঝতে পার্চি, মন্ত্রের কোনো দরকারই নেই!
শ্যামা। অমন কথা বােলাে না বাবা! মন্ত্রের দরকার আছে বৈ কি! নইলে শাস্ত্র—
আশু। সে তো ঠিক কথা! মন্ত্র আমি অগ্রাহ্য করি নে। আমি ব’ল্ছিলেম মন্ত্র প’ড়্লেই যে মন বশ হয়, তা নয়, গানের মােহিনী শক্তির কাছে কিছুই লাগে না। (স্বগত) মেয়েটি আবার লজ্জায় লাল হ’য়ে উঠ্লো! ভারি লাজুক!- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বশীকরণ, ব্যঙ্গকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৬
- আর্য্যগণ পুণ্যারণ্য ভারতক্ষেত্রে যখন তাঁহাদের ধর্ম্মানুষ্ঠানে প্রবৃত্ত হইলেন, তখন তাঁহাদের মন্ত্র সকলের সংখ্যা দিন দিন বর্দ্ধিত হইতে লাগিল। সে সময়ে বর্ণমালার সৃষ্টি হয় নাই সুতরাং এক শ্রেণীর লোককে যত্ন সহকারে এই সকল মন্ত্র অভ্যাস করিয়া রাখিতে হইত। ইহাঁরা বালক কাল হইতে ঐ সকল মন্ত্র কণ্ঠস্থ করিতেন; যজ্ঞস্থলে ঐ সকল মন্ত্র উচ্চারণ করিয়া হোম কার্য্যের সহায়তা করিতেন। বর্ত্তমান সময়ে আপনারা পল্লীগ্রামে অনেক ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের সন্তান দেখিয়া থাকিবেন, ইহাঁরা বর্ণজ্ঞান-বিহীন, সংস্কৃত ভাষার বিন্দু বিসর্গ জানেন না; অথচ ইহাঁরা দশকর্ম্মান্বিত অর্থাৎ গৃহস্থের গৃহে যে সকল নিত্য নৈমিত্তিক ক্রিয়ার অনুষ্ঠান হয় তাহার সমুদায় প্রকরণ ইহাঁরা কণ্ঠস্থ করিয়া রাখিয়াছেন। জিজ্ঞাসা করুন পিতৃশ্রাদ্ধ কিরূপে করিতে হয়? অমনি ইঁহারা শ্রাদ্ধের মন্ত্র সকল অনর্গল বলিয়া যাইবেন। মধুবাতা ঋতায়তে প্রভৃতি মন্ত্র সকল পাঠ করিতে আরম্ভ করিবেন। শুদ্ধ হউক অশুদ্ধ হউক যেরূপ শিখিয়াছেন অবিকল আবৃত্তি করিতে পারিবেন। বর্ত্তমান হিন্দু সমাজের ধর্ম্মানুষ্ঠানের সাহায্যের জন্য যেমন এক শ্রেণীর দশকর্ম্মান্বিত লোক দৃষ্ট হয়, প্রাচীন আর্য্য সমাজেও বেদ মন্ত্র সকলের রক্ষা ও শিক্ষার নিমিত্ত এক শ্রেণীর লোক নিযুক্ত হইয়াছিলেন। ইহাঁরাই উত্তরকালে “ব্রাহ্মণ” বলিয়া প্রসিদ্ধ হইলেন। ব্রাহ্মণ শব্দের বুৎপত্তি-লব্ধ অর্থ যিনি ব্রহ্মকে জানেন বা ধারণ করেন। প্রাচীন সংস্কৃতে ব্রহ্ম শব্দের অনেক অর্থঃ—এক অর্থ ঈশ্বর, দ্বিতীয় অর্থ ব্রাহ্মণ জাতি তৃতীয় অর্থ বেদ মন্ত্র। এখানে ব্রহ্ম অর্থে বেদমন্ত্র। বেদমন্ত্র যাঁহারা ধারণ করেন তাঁহারা ব্রাহ্মণ।
- শিবনাথ শাস্ত্রী, জাতিভেদ - শিবনাথ শাস্ত্রী, সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ পুস্তক প্রচার বিভাগ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দ (১২৯১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২০-২১
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]
উইকিপিডিয়ায় মন্ত্র সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।

উইকিঅভিধানে মন্ত্র শব্দটি খুঁজুন।