বিষয়বস্তুতে চলুন

লক্ষ্য

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হলো ভবিষ্যতের বা কাঙ্ক্ষিত ফলাফলের একটি ধারণা যা একজন ব্যক্তি বা একদল লোক কল্পনা করে, পরিকল্পনা করে এবং অর্জনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়। মানুষ সময়সীমা নির্ধারণ করে একটি সীমিত সময়ের মধ্যে লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করে।

উক্তি

[সম্পাদনা]
  • সকল জাতিরই এক একটা লক্ষ্য থাকা আবশ্যক— আছেও। লক্ষ্যহীন জাতি কদাচ অভ্যুদয়শালী ও কালজয়ী হইতে পারে না। এ পর্য্যন্ত পৃথিবীতে যে যে জাতি অভ্যুদিত হইয়াছে, তাহাদের প্রত্যেকেরই একটা না একটা স্থির লক্ষ্য ছিল; এবং সেই লক্ষ্য ধরিয়াই তাহারা ক্রমে তাহাদের আকাঙ্ক্ষিত বস্তু লাভ করিতে পারিয়াছে। লক্ষ্য স্থির রাখিতে পারিলে কিছুই অসম্ভব নহে,—অতি দুষ্কর এবং দুঃসাধ্য কার্য্যও সুসম্পন্ন করা যাইতে পারে।
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, জাতীয় সাহিত্য - আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩৪৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১০৩-১০৪
  • শুধুমাত্র সুখে জীবন কাটানোই আমাদের লক্ষ্য নয়। সুখভোগের দ্বারা মানপ্রতিষ্ঠা এবং কীর্তি হয় না। রাজপ্রাসাদে বসবাসকারী বিলাসী রানাপ্রতাপকে কে চেনে? তার আত্মত্যাগ এবং কঠোর ব্রতপালনই তো তাকে আমাদের জাতির কাছে সূর্য করে তুলেছে। শ্রীরামচন্দ্র যদি ত্তার জীবনটা সুখভোগে কাটাতেন, তাহলে আজ আমরা তার নামটাও জানতে পেতাম না। তার আত্মত্যাগই তাকে অমর করে তুলেছে।
    • মুন্সি প্রেমচাঁদ, ব্যাঙ্ক-দেউলে, প্রেমচন্দ গল্পসংগ্রহ- প্রেমচন্দ, প্রকাশক- পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি, কলকাতা, দ্বিতীয় সংস্করণ, প্রকাশসাল- নভেম্বর ২০০১, পৃষ্ঠা ৮২
  • যতদিন অহঙ্কারই কর্ত্তা, ততদিন প্রকৃত লক্ষ্যের সন্ধান পাওয়া অসম্ভব,—লক্ষ্য জানা গেলেও সেদিকে সোজা রথ চালানো অসাধ্য। অহঙ্কার যে ভাগবত পূর্ণতার প্রধান বাধা, এই তথ্য যেমন ব্যষ্টির, তেমনই সমষ্টির পক্ষেও সত্য।
    • অরবিন্দ ঘোষ, জগন্নাথের রথ - শ্রী অরবিন্দ, তৃতীয় সংস্করণ, প্রকাশক- শ্রী অরবিন্দ আশ্রম, প্রকাশস্থান- পণ্ডিচেরী, প্রকাশসাল- ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১-২
  • যখন গড়তে আরম্ভ করি তখনই প্রতিমা চোখের সম্মুখে জেগে থাকে, যখন শেষ ক’রে ফেলি তখন দেখি তা নিঃশেষ হয়ে গেছে। সুদূর লক্ষ্যাভিমুখে যখন যাত্রা আরম্ভ করি তখন লক্ষ্যের প্রতি এত টান যে লক্ষ্য যেন প্রত্যক্ষ, আর পথপ্রান্তে যখন যাত্রা শেষ করি তখন পথের প্রতি এত মায়া যে লক্ষ্য আর মনে পড়ে না। যাকে আশা করি তাকে যতখানি পাই আশা পূর্ণ হোলে তাকে আর ততখানি পাইনে। অর্থাৎ চাইলে যতখানি পাই পেলে ততখানি পাইনে।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নানা কথা, বিচিত্র প্রবন্ধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩৪২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২১
  • ভারতবর্ষে আজ আমরা একটা ভাবধারার ঘূর্ণাবর্ত্তের মাঝখানে রহিয়াছি। তাহার চারিদিক দিয়া বহু অনুকুল ও প্রতিকূল স্রোত বহিয়া চলিয়াছে। এই তুমুল মিশ্রণের অব্যবস্থার মধ্যে সাধারণ লোক ভালমন্দ ন্যায় অন্যায়ের মধ্যে প্রভেদ করিতে পারে না। কিন্তু আজ যদি আমাদিগকে জাতির লুপ্ত শক্তিকে ফিরাইয়া আনিয়া তাহাকে লক্ষ্যপথে চালাইতে হয়, তবে আমাদের লক্ষ্য কি এবং কেমন করিয়া সেই লক্ষ্যে পৌঁছান যায়, তাহার সম্বন্ধে স্পষ্ট ধারণা করিতে হইবে।
    • সুভাষচন্দ্র বসু, পঞ্জাব প্রাদেশিক ছাত্র-সম্মেলন, নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু, শ্রীগোপাললাল সান্যাল কর্ত্তৃক সঙ্কলিত ও প্রকাশিত, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩৭ বঙ্গাব্দ),পৃষ্ঠা ৪৭-৪৮
  • মহাজ্ঞানী মহাজন যে পথে করে গমন
    হয়েছেন প্রাতঃ স্মরণীয়,
    সেই পথ লক্ষ্য করে স্বীয় কীর্ত্তি ধ্বজা ধরে
    আমরাও হবো বরণীয়।
    সময়-সাগর তীরে পদাঙ্ক অঙ্কিত করে
    আমরাও হব হে অমর;
    সেই চিহ্ন লক্ষ্য করে অন্য কোন জন পরে
    যশোদ্বারে আসিবে সত্বর।
  • পুরুষ পাঠক মনে করিতে পারেন, যে, কথাটা স্বর্ণলতা নামক কোন দূরবর্ত্তিনী সঙ্গিনীকে লক্ষ্য করিয়া উচ্চারিত, কিন্তু পাঠিকারা সহজেই বুঝিতে পারিবেন, দূরে কেহই ছিল না, লক্ষ্য অত্যন্ত নিকট! কিন্তু হায়, অন্ধ পুরুষের প্রতি সে লক্ষ্য ভ্রষ্ট হইয়া গেল। শশিভূষণ যে, শুনিতে পান নাই, তাহা নহে, তিনি তাহার মর্ম্মগ্রহণ করিতে পারিলেন না। তিনি মনে করিলেন, বালিকা সত্যই ক্রীড়ার জন্য উৎসুক— এবং সে দিন তাহাকে খেলা হইতে অধ্যয়নে আকর্ষণ করিয়া আনিতে তাঁহার অধ্যবসায় ছিল না—কারণ তিনিও সে দিন কোন কোন হৃদয়ের দিকে লক্ষ্য করিয়া তীক্ষ্ণ শর সন্ধান করিতেছিলেন। বালিকার ক্ষুদ্র হস্তের সামান্য লক্ষ্য যেমন ব্যর্থ হইয়াছিল তাহার শিক্ষিত হস্তের মহৎ লক্ষ্যও সেইরূপ ব্যর্থ হইয়াছিল পাঠকেরা সে সংবাদ পূর্ব্বেই অবগত হইয়াছেন।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মেঘ ও রৌদ্র, কথা-চতুষ্টয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩০১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১০৫-১০৬
  • ভারতবর্ষ যে এত উন্নত হইয়াছিল, সে একমাত্র ধর্ম্ম লক্ষ্য করিয়া। যদি ভারতকে আবার বড় করিতে চাও, যদি আবার তোমাদের লুপ্ত সম্পদের, বিনষ্ট সম্মানের পুনরধিকার চাও, তবে সেই পিতৃপিতামহের লক্ষ্যে দৃষ্টি স্থির কর। একাগ্রচিত্ত হও, অবাধে তোমার অভিপ্রেত মৎস্যচক্র-ভেদ করিতে পারিবে। ধর্ম্মভাব হিন্দু জাতির প্রধান লক্ষ্য ছিল, ধর্ম্মভাবকেই তোমার বর্ত্তমান জাতীয়তারও প্রধান লক্ষ্য কর।
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, জাতীয় সাহিত্য - আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩৪৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১০৫
  • আধ্যাত্মিক-স্বাধীনতা বা মুক্তিই আদর্শ এবং তাহা লাভই আমাদের জীবনের লক্ষ্য হওয়া উচিত। উহা লাভ করিবার জন্য আমাদের প্রাণপণে চেষ্টা করা কর্তব্য, কারণ সর্বপ্রকার স্বাধীনতার মধ্যে উহাই শ্রেষ্ঠ ও সর্বোচ্চ।
    • স্বামী অভেদানন্দ, কলিকাতায় ছাত্রগণের উদ্দেশে স্বামী অভেদানন্দের বক্তৃতা, আমার জীবনকথা - স্বামী অভেদানন্দ, দ্বিতীয় ভাগ, প্রকাশক- শ্রীরামকৃষ্ণ বেদান্ত মঠ, কলিকাতা, দ্বিতীয় সংস্করণ, প্রকাশকাল- সেপ্টেম্বর ১৯৯৮, পৃষ্ঠা ৩৪০
  • দ্রোণাচার্য্য শিষ্যগণের পরীক্ষার্থ জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন, ‘গাছের উপর যে পাখীটি বসিয়া আছে তাহার চক্ষুই লক্ষ্য; পাখীটি কি দেখিতে পাইতেছ?’ অর্জ্জুন উত্তর করিলেন, ‘না, পাখী দেখিতে পাইতেছি না, কেবল তাহার চক্ষুমাত্র দেখিতেছি।’ এইরূপ একাগ্রচিত্ত হইলেই বাহিরের বাধা-বিঘ্নের মধ্যেও অবিচলিত থাকিয়া লক্ষ্য ভেদ করিতে সমর্থ হইবে। তবে সেই লক্ষ্য কি? লক্ষ্য, শক্তি সঞ্চয় করা, যাহা দ্বারা অসাধ্যও সাধিত হয়।
  • তোমাদের সুখ ছটফটানিতে, আমাদের সুখ ঝিমুনিতে। সুখ তোমাদের ideal, দুঃখ আমাদের real। তোমরা চাও দুনিয়াকে জয় করবার বল, আমরা চাই দুনিয়াকে ফাঁকি দেবার ছল। তোমাদের লক্ষ্য আরাম, আমাদের লক্ষ্য বিরাম। তোমাদের নীতির শেষ কথা শ্রম, আমাদের আশ্রম।
    • প্রমথ চৌধুরী, আমরা ও তোমরা, বীরবলের হালখাতা - প্রমথ চৌধুরী, প্রকাশক বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশস্থান-কলকাতা, প্রকাশসাল ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩২৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২০
  • যাহারা কেবল বিষয়-সুখের প্রতি লক্ষ্য করিয়া স্বর্গীয় ধর্ম্মকে প্রার্থনা করে, তাহাদের অতি নীচ লক্ষ্য। স্বোপর্জিত দুর্ল্লভ ধর্ম্ম-রত্নের বিনিময়ে ক্ষুদ্র বিষয়-সুখ কদাপি প্রার্থনীয় হইতে পারে না। ধর্ম্মের উপযুক্ত লক্ষ্য, ধর্ম্মের যোগ্য পুরস্কার, কেবল সেই ধর্ম্মাবহ একমাত্র পরমেশ্বর। ধর্ম্মপথ মধ্য পথ। ধর্ম্ম সংসার-বন্ধন রক্ষা করেল, ধর্ম্ম মোক্ষের সেতু হইয়া ঈশ্বরের নিকটে লইয়া যান। বিষয়সুখ ভোগের জন্য যে ধর্ম্ম, তাহা অতি নিকৃষ্ট—ঈশ্বরের জন্য যে ধর্ম্ম, তাহাই উৎকৃষ্ট ধর্ম্ম। আমরা প্রাণ পর্যন্ত পণ করিয়া যে ধর্ম্মকে উপার্জন ও রক্ষা করি; পার্থিব কোন বস্তু তাহার সম্যক্ লক্ষ্য কখনই হইতে পারে না। বিষয়-সুখের জন্য কে প্রাণ দিতে পারে? কিন্তু ধর্ম্মের জন্যই প্রাণ দেওয়া যায়।
    • দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস- দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, তৃতীয় সংস্করণ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দ (১২৭৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৩
  • যুদ্ধে যেমন জয়লাভটাই মুখ্য লক্ষ্য, পলিটিক্সে সেইরূপ উদ্দেশ্যসিদ্ধিটাই যে প্রধান লক্ষ্য, তাহা যদি-বা আমরা মুখে বলি, তবু মনের মধ্যে সে কথাটাকে আমল দিই না। মনে করি, আমাদের পোলিটিক্যাল্ কর্ত্তব্যক্ষেত্র যেন স্কুল-বালকের ডিবেটিং ক্লাব্‌—গবর্মে‌ণ্ট যেন আমাদের সহপাঠী প্রতিযোগী ছাত্র, যেন জবাব দিতে পারিলেই আমাদের জিত হইল।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সফলতার সদুপায়, আত্মশক্তি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- মজুমদার লাইব্রেরি, প্রকাশস্থান-কলকাতা, প্রকাশসাল-১৯০৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩১২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭০
  • মুমিনের জীবনের লক্ষ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি। আনুগত্যে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন, তাই মুমিনরা ইবাদতে আনন্দ লাভ করেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদারের জন্য দুটি খুশি—একটি ইফতারের সময়, অপরটি আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় (মুসলিম)।’ আল্লাহ তাআলার নির্দেশ, ‘তোমরা সন্ধ্যা (সূর্যাস্ত) পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ করো
  • আলোর কাছে কোনো জিনিস রাখিলে সেই জিনিসটার একটা ছায়া পড়ে। তুমি রৌদ্রে গিয়া দাঁড়াও দেখিবে তোমার একটি ছায়া পড়িয়াছে। এই রকমে যে ছায়া হয়, তাহা তোমার কোন্‌দিকে দেখা যায়, লক্ষ্য করিয়াছ কি? তোমার যে দিকে সূর্য্য থাকে ঠিক তাহার উল্টা দিকে ছায়া পড়ে।
    • জগদানন্দ রায়, চাঁদের গ্রহণ, গ্রহ-নক্ষত্র- জগদানন্দ রায়, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান প্রেস লিমিটেড, প্রকাশস্থান- এলাহাবাদ (প্রয়াগরাজ), প্রকাশসাল- ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩২২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮২
  • আমেরিকার শিল্পের সমস্যার একটি অংশ হলো কর্পোরেট ব্যবস্থাপকদের লক্ষ্য। অধিকাংশ মার্কিন ব্যবস্থাপক মনে করেন তারা ব্যবসায় করছেন টাকা উপার্জনের জন্য, পণ্য বা সেবা উৎপাদনের জন্য নয়। অপরদিকে জাপানের কর্পোরেট সংস্কৃতি হলো কোম্পানির লক্ষ্য তারা যে পণ্য বা সেবা প্রদান করে সেটায় বিশ্বের সবচেয়ে কার্যকর প্রদানকারী হওয়া। যখন তারা ভালো পণ্য দেওয়ার মাধ্যমে বিশ্বের সেরা হয়, তখন এমনিতেই মুনাফা অর্জিত হয়।
    • ডাব্লিউ. এডওয়ার্ড ডেমিং, আউট অব দ্য ক্রাইসিস, পৃ. ৯৯, ১৯৮২।
  • সকল রাজনীতির মতো আন্তর্জাতিক রাজনীতিও হলো ক্ষমতার লড়াই। আন্তর্জাতিক রাজনীতির চূড়ান্ত লক্ষ্য যা-ই হোক না কেন, স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্য হলো ক্ষমতা।
    • হানস মরগান্থেয়াউ, 'পলিটিক্স এমাং ন্যাশনস, নিউ ইয়র্ক, ১৯৮৫
  • যে ব্যক্তি পাপপূর্ণ উপায়ে একটি লক্ষ্য অনুসরণ করে, সে সেই লক্ষ্য থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখবে এবং সে যাকে ভয় পেয়েছিল তার কাছে যাবে।
  • আপনার লক্ষ্য এবং স্বপ্নকে এমনভাবে লালন করুন যেন তারা আপনার আত্মার সন্তান, আপনার চূড়ান্ত অর্জনের নীলনকশা।
    • নেপোলিয়ন হিল, ডায়মন্ড পাওয়ার: আমেরিকার গ্রেটেস্ট মার্কেটার থেকে জেমস অফ উইজডম (2003) ব্যারি ফারবার দ্বারা উদ্ধৃত , পৃষ্ঠা ৫৩
  • মানুষ অপরের কথা, ভাব ও ভঙ্গি লক্ষ্য করিয়া পুনরায় তাহা নকল করিতে ভালোবাসে ।এই প্রবৃত্তি আদিম, অসভ্য মানুষ হইতে চলিয়া আসিয়াছে।
  • আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, আধুনিক সাম্রাজ্যবাদ এশিয়াতে কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হল এবং প্রাচীন সভ্যতার দেশগুলোর উপরে তার কীরকম প্রতিক্রিয়া হল তাই লক্ষ্য করা। এই অধ্যয়নের পক্ষে আদর্শ সাম্রাজ্য হচ্ছে ভারতবর্ষ; এই শিল্পতন্ত্রী সাম্রাজ্যবাদ বিস্তারের আর-একটি নূতন এবং খুব লক্ষ্য করবার মতো রীতির দেখা পেলাম আমরা চীনদেশে।
  • ভারতবর্ষ একটি অতিবিস্তৃত মহাদেশ, বহু সংখ্যক ভিন্ন ভিন্ন দেশের একত্র সমাবেশে অসীম রহস্যের আধার হইয়া, এতকাল নীরবে কাল যাপন করিতেছিল। তাহার অতি পুরাতন ভূস্তর নিহিত পূর্বতন কীর্তি চিহ্ন অনাবিস্কৃত এবং অনালোচিত থাকিয়া, প্রকৃত তথ্যের সন্ধান প্রদান করিতে পারিতনা। তজ্জন্য ইউরোপীয়গণ ভারত পুরাতত্ত্বের প্রাচীনত্ত্ব সম্বন্ধে অনেক অলীক অনুমানের অবতারণা করিয়া আসিতেছিল এবং কোণ স্থলে অকস্মাৎ কোণ পুরাকীর্তি আবিস্কৃত হইলে তাহার মূলানুসন্ধানের জন্য যথাযোগ্য আয়োজন না করিয়াই, তাহাকে হয় ব্যাবিলনের, না হয় মিশরের, না হয় গ্রীস, রোমের প্রভাবচিহ্ন বলিয়া ব্যাখা করিতে চাহিতেন। তথাপি কোণ কোণ মনিষী ভারত স্থাপত্যের মধ্যে কোনপ্রকার পরপ্রভাবের চিহ্ন লক্ষ্য করিতে না পারিয়া, ভারতবর্ষকে প্রহেলিকাময় মনে করিতে বাধ্য হইত।
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়, রচনা সংগ্রহ -এর বঙ্গভূমী ও বাঙ্গালি পরিচ্ছেদ -এর অন্তর্গত মানব সভ্যতার আদি উদ্ভবক্ষেত্র উপপরিচ্ছেদ থেকে সংগৃহীত। প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় -এর পত্রিকা মানসী ও মর্ম্মবাণী -র ১৩৩৪ বঙ্গাব্দের ফাল্গুন সংখ্যায় রচনাটি প্রকাশিত হয়েছিল। অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়, রচনা সংগ্রহ
  • জীবনের লক্ষ্য শান্তি অর্জন। কেউ আমাদের শান্তি দিতে পারবে না। আমরা এটি কিনতে বা ধার করতে পারি না। আমাদের যম এবং নিয়ম (যোগ সংযম এবং পালন) অনুশীলন করে এটি চাষ করতে হবে।
  • বিষয়-সুখ যদি ধর্ম্মের লক্ষ্য হয়,তবে সে বিপরীত লক্ষ্য; সে লক্ষ্য সিদ্ধিতেও বিস্তর ব্যাঘাত। বিষয়-সুখ বিসর্জনের জন্য প্রস্তুত হইয়াই ধর্ম্ম-পথে গমন করিতে হয়; আনুষঙ্গিক যদি বিষয়-মুখ রক্ষা পায়, তবে ভালই। ধর্ম্ম কিছু বিষয়-সুখের অনুচর নহে—কিন্তু ধর্মের অনুচর যদি বিষয়সুখ হয়, তবে তাহা অবশ্য সেব্য। আমরা আত্মসুখের জন্য ধর্ম্মকে প্রার্থনা করিলে সে কেবল স্বার্থপরতা মাত্র। স্বর্গের লোভে বা নরকের ভয়ে নিরাহারে দিন যাপন করাতে ধর্ম্ম হয় না। ধর্ম্মের ভাব নিঃস্বার্থ ভাব। বিষয়সুখ যে ধর্ম্মের অব্যর্থ পুরস্কার তাহা নহে; কিন্তু সুবিমল আত্ম-প্রসাদই ধর্ম্মের পুরস্কার,ঈশ্বর ধর্ম্মের শেষ পুরস্কার। ধর্ম্মের স্বর্গীয় জ্যোতির নিকটে স্বর্ণ রৌপ্য হীরকের পার্থিব জ্যোতি কোথায় থাকে? কেবল এক লক্ষ্যের দোষে ধর্ম্মকেও দূষিত মনে হয়। বিষয়-সুখই যাহার লক্ষ্য থাকে, সে পৃথিবীতে ধর্ম্মের হীনাবস্থা ও পাপের স্ফীতভাব দেথিয়া ঈশ্বরের অখণ্ড মঙ্গল স্বরূপেতেও দোষারোপ করিতে প্রবৃত্ত হয়।
    • দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস- দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, তৃতীয় সংস্করণ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দ (১২৭৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৬
  • পাশ্চাত্য দেশে মানুষের জীবনের একটা লক্ষ্য আছে; সেখানকার শিক্ষা দীক্ষা সেই লক্ষ্যের দিকে মানুষকে নানা রকমে বল দিচ্ছে ও পথ নির্দেশ করছে। তারই সঙ্গে সঙ্গে অবান্তরভাবে এই শিক্ষাদীক্ষায় অন্য দশরকম প্রয়োজনও সিদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে আমাদের দেশে জীবনের বড়ো লক্ষ্য আমাদের কাছে জাগ্রত হয়ে ওঠে নি, কেবলমাত্র জীবিকার লক্ষ্যই বড়ো হয়ে উঠল। জীবিকার লক্ষ্য শুধু কেবল অভাবকে নিয়ে, প্রয়োজনকে নিয়ে; কিন্তু জীবনের লক্ষ্য পরিপূর্ণতাকে নিয়ে— সকল প্রয়োজনের উপরে সে। এই পরিপূর্ণতার আদর্শ সম্বন্ধে যুরোপের সঙ্গে আমাদের মতভেদ থাকতে পারে, কিন্তু কোনো-একটা আদর্শ আছে যা কেবল পেট ভরাবার না, টাকা করবার না, এ কথা যদি না মানি তা হলে নিতান্ত ছোটো হয়ে যাই।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিশ্বভারতী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দ (১৩৯৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৩
  • শিল্পবিজ্ঞানের সহায়তায় ও ধনদ্বারা লভ্য সর্ব্বপ্রকার সুখ ও ভোগবিলাস সংগ্রহ করাই পাশ্চাত্যদিগের চরম লক্ষ্য। প্রাচীন হিন্দুদিগের লক্ষ্যের সহিত কি বৈষম্য! হিন্দু সাংসারিক সুখদুঃখে সম্পূর্ণ উদাসীন। কিরূপে আত্মজ্ঞান লাভ করা যায়, কিরূপে পূর্ণতা প্রাপ্ত হওয়া যায়, কিরূপে পরব্রহ্মের সহিত যোগ সাধন করা যায়—এই সমস্তই তাহার চরম লক্ষ্য। এই প্রাচীন আদর্শ হইতে অধঃপতনের কথা ভাবিতে চিত্ত বিষাদময় হইয়া উঠে।
    • বিনয়কৃষ্ণ দেব, কলিকাতার ইতিহাস- বিনয়কৃষ্ণ দেব, একাদশ অধ্যায়, অনুবাদক সুবলচন্দ্র মিত্র, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৪৪
  • রাজা কহিলেন, “তবে তোমাকে সমস্ত বলি। আমি ধ্রুবকে সঙ্গে করিয়া বনে যাইব। ঠাকুর, আমার জীবন অত্যন্ত অসম্পূর্ণ রহিয়া গিয়াছে। যাহা মনে করিয়াছিলাম তাহার কিছুই করিতে পারি নাই– জীবনের যতখানি চলিয়া গেছে তাহা ফিরিয়া পাইয়া আর নূতন করিয়া গড়িতে পারিব না– আমার মনে হইতেছে, ঠাকুর, অদৃষ্ট যেন আমাদিগকে তীরের মতো নিক্ষেপ করিয়াছে, লক্ষ্য হইতে যদি একবার একটু বাঁকিয়া গিয়া থাকি, তবে আর যেন সহস্র চেষ্টায় লক্ষ্যের মুখে ফিরিতে পারি না। জীবনের আরম্ভ-সময়ে আমি সেই যে বাঁকিয়া গিয়াছি, জীবনের শেষকালে আমি আর লক্ষ্য খুঁজিয়া পাইতেছি না। যাহা মনে করি তাহা আর হয় না।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রাজর্ষি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ষট‍্‌ত্রিংশ পরিচ্ছেদ, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৮ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৩০
  • জীবনে যেন আর আঁট নেই, কোন লক্ষ্য নেই, একটা নির্দ্দিষ্ট গতি নেই। কার জন্যে কিসের জন্যে বেঁচে থাকা—জীবনের হাট জমানো, সুখসাধের ঘর বাঁধা? কোন একটা বড় আদর্শ বা লক্ষ্য তখনও জীবনকে আচ্ছন্ন ও আপাদ মস্তক দীপ্ত উজ্জ্বল করে জাগে নি। আদর্শ তখন যাও বা ছিল তা হচ্ছে স্বপ্ন—নিছক মানস তেমনি অলীক ও অস্পষ্ট, কাজে ফলাবার সুস্পষ্ট পথ নয়। সে সব স্বপ্নই গুঞ্জন করে একটি লাবণ্যমাখা মধুমাখা মানুষকে ঘিরে, আমার সাধ আশা তার নীড় রচনা করে আর একজনের চোখের নিবিড়তায়, আমার লক্ষ্যের সে অস্পষ্ট, মিলিয়ে যাওয়া পথরেখা উধাও হয় কার যেন রক্ত পদপল্লবটি ছুঁয়ে তারই কুঞ্জ দুয়ার অভিমুখে।
    • বারীন্দ্রকুমার ঘোষ, আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশক- আর্য্য পাবলিশিং হাউস, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩৮ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৪৩
  • এই যে ইউরোপ এত অতুল ঐহিক শ্রীবৃদ্ধিতে সম্পন্ন, ইহার কারণ কি? অর্থ বা অর্থকর বাণিজ্য উহার একমাত্র লক্ষ্য। আজ যে জাপান এত উন্নত, ঐ অর্থকর বাণিজ্য উহার একমাত্র লক্ষ্য। ঐ লক্ষ্যের প্রতি স্থির দৃষ্টি আছে বলিয়াই অন্য কোন বাধা-বিপত্তিতে উহাদিগকে ব্যাহত করিতে পারে না। লক্ষ্যস্থলে উপনীত হইবার জন্য প্রাণকেও উহারা অতি তুচ্ছ জ্ঞান করে। লক্ষ্য স্থির ছিল বলিয়াই, ধর্ম্মপ্রাণ অগ্নি-উপাসকগণ অম্লান বদনে ইরান ছাড়িয়া ভারতবর্ষে চলিয়া আসিয়াছিলেন,— পিউরিটানেরা মাতৃভূমি পরিত্যাগপূর্ব্বক আমেরিকার গহন বনে আশ্রয় লইয়াছিলেন। যে যে জাতি যে যে বৃহৎ কার্য্যই করুক না কেন, তাহার মূলে কিন্তু একটা স্থির লক্ষ্য থাকা চাই। তাই বলিতেছিলাম, আমাদের এই জাতীয় সাহিত্যের মন্দির-নির্মাণেও একটা স্থির লক্ষ্য আবশ্যক; অন্যথা আমরা সফলকাম হইতে পারিব না। আমাদের সেই লক্ষ্য কি হওয়া উচিত? কোন্ লক্ষ্যে স্থিরচিত্ত থাকিয়া আমাদের পূর্ব্বপুরুষগণ জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি হইতে পারিয়াছিলেন? কোন্ লক্ষ্য হইতে ভ্রষ্ট হইয়াছি বলিয়াই আমরা ক্রমে অধঃপতিত হইতেছি? ইহাই আমাদের সর্ব্বাগ্রে দ্রষ্টব্য ও বিবেচ্য।
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, জাতীয় সাহিত্য - আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩৪৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১০৪-১০৫
  • পাখির গানের মধ্যে পক্ষিসমাজের প্রতি যে কোনো লক্ষ্য নাই, এ কথা জোর করিয়া বলিতে পারি না। না থাকে তো না’ই রহিল, তাহা লইয়া তর্ক করা বৃথা, কিন্তু লেখকের প্রধান লক্ষ্য পাঠকসমাজ।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সাহিত্যের সামগ্রী, সাহিত্য-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৩
  • তখন ধৃষ্টদ্যুম্ন দ্রৌপদীকে সভার মাঝখানে আনিয়া গম্ভীরস্বরে বলিতে লাগিলেন, “আপনারা সকলে শুনুন। এই ধনুর্বাণ আর ঐ লক্ষ্য আপনারা দেখিতেছেন। ঐ যে একটা কলের মতন, তাহাতে ছিদ্র আছে তাহাও দেখুন। ঐ ছিদ্রের ভিতর দিয়া পাঁচটি তীর মারিয়া লক্ষ্য বিঁধিয়া মাটিতে ফেলিতে হইবে। এ কাজ যিনি করিতে পারিবেন, তিনিই দ্রৌপদীকে পাইবেন।”
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, ছেলেদের মহাভারত, উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, প্রকাশক- বসাক বুক স্টোর প্রাইভেট লিমিটেড, পৃষ্ঠা ১৯৭
  • অতীতের আলো-ছায়ার খেলায় মানুষের মনে যে বিস্ময়রসের সৃষ্টি করে ইতিহাসের তাই প্রধান আকর্ষণ। আর ছবি এঁকে, মুর্তি গড়ে, অক্ষরে লিখে অনাগত কালকে নিজের কথা জানাবার মানুষের যেসব উপায়, তারাই ইতিহাসের প্রধান উপকরণ। ভবিষ্যৎকে লক্ষ্য না করে শুধু বর্তমানে আবদ্ধ মানুষের যে ক্রিয়াকলাপ ও জীবনখাতা, তার প্রত্নখণ্ড দিয়ে ইতিহাসকে পরীক্ষা করা চলে, সৃষ্টি করা চলে না। মানুষ প্রাচীন ইতিহাস জানতে পারে, প্রাচীন কালের লোকেরা কোনও-না-কোনও উপায়ে সে ইতিহাস জানিয়ে গেছে বলে।
  • বুদ্ধির দরকার গতিতে, কিন্তু হৃদয়ের দরকার নৃত্যে। গতির লক্ষ্য—একাগ্র হইয়া লাভ করা, নৃত্যের লক্ষ্য—বিচিত্র হইয়া প্রকাশ করা। ভিড়ের মধ্যে ভিড়িয়া ও চলা যায় কিন্তু ভিড়ের মধ্যে নৃত্য করা যায় না। নৃত্যের চারিদিকে অবকাশ চাই। এই জন্য হৃদয় অবকাশ দাবী করে। বুদ্ধিমান তাহার সেই দাবীটাকে অবাস্তব এবং তুচ্ছ বলিয়া উড়াইয়া দেয়।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আষাঢ়, বিচিত্র প্রবন্ধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩৪২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১১৩
  • বিভিন্ন মাসের সন্ধের আকাশ তোমরা যদি নিয়মিত লক্ষ্য কর তাহলে সে যুগের মানুষের কল্পনায়-আঁকা সবগুলি আকৃতিই তোমাদের দৃষ্টিতে ধরা পড়বে। তারায় তারায় কল্পিত বলে এক একটি তারকামণ্ডল হিসেবে এদের পরিচয় ৷
  • লিটল ম্যাগাজিনের সেনানীদের চেয়ে বেশি কে জানে আর, সমস্ত তাৎপর্যই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জনীয়! লেখা মানে যুদ্ধ, পত্রিকা মানে যুদ্ধক্ষেত্র; এই যুদ্ধে সিসিফাসের মতো অধ্যবসায় আছে শুধু, কেবলই পাথর চুড়োয় তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া নতুনভাবে শুরু করে যাওয়া। একটি সংখ্যার প্রকাশ মানে পরবর্তী সংখ্যার জন্য যুদ্ধাস্ত্রে শান দিতে শুরু করা, কেবলই এক লক্ষ্য থেকে অন্য লক্ষ্যের দিকে ছুটে যাওয়া। এই যাওয়ার নাম জীবনানুশীলন, যার আরেক নাম সংস্কৃতি।
    • তপোধীর ভট্টাচার্য, নিভন্ত এ চুল্লিতে সই একটু আগুন দে, সময় অসময় নিঃসময়- তপোধীর ভট্টাচার্য, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশক- একুশশতক, কলকাতা, প্রকাশসাল-২০১০ খ্রিস্টাব্দ (১৪১৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৬
  • কোন একটা নির্দিষ্ট ঘটনা মানুষকে তাঁর লক্ষ্যে পৌঁছে দেয় না। অনেকগুলো ঘটনা মিলে লক্ষ্যে পৌঁছাতে হয়।
    • সেঁজুতি সাহা, বিজ্ঞানচিন্তা, বিজ্ঞান বিষয়ক মাসিক ম্যাগাজিন, নভেম্বর সংখ্যা (২০২১), পৃষ্ঠা ১২-১৭

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]