বিষয়বস্তুতে চলুন

হাওয়ার্ড লাটনিক

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে
২০২৪ সালে হাওয়ার্ড লাটনিক

‘’’হাওয়ার্ড উইলিয়াম লাটনিক’’’ (জন্ম জুলাই ১৪, ১৯৬১) একজন আমেরিকান ব্যবসায়ী, যিনি ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। তিনি এর আগে ক্যান্টর ফিটজগারাল্ড কর্পোরেশনের প্রধান ছিলেন, যা ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলায় সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

উদ্ধৃতি

[সম্পাদনা]
  • তো ১১ সেপ্টেম্বরের রাত, আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না কে বেঁচে আছে আর কে নেই। তখন আমরা একটি কনফারেন্স কল করেছিলাম। রাত প্রায় ১০টা। আমার কর্মীরা কল-ইন করেছিল। আমি বলেছিলাম, দেখো, আমাদের দুটি পথ রয়েছে। আমরা ফার্ম বন্ধ করে দিতে পারি এবং আমাদের বন্ধুদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যেতে পারি। মনে রেখো, প্রতিদিন ২০টি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া, টানা ৩৫ দিন ধরে। আর আমাকে বলতে দাও, আমি সত্যিই কাজে যাওয়ার কোনো আগ্রহ অনুভব করছিলাম না। আমি শুধু চাদরের নিচে ঢুকে আমার পরিবারকে জড়িয়ে ধরতে চাইছিলাম। কিন্তু যদি আমরা কাজ করতে যাই, তাহলে সেটা হবে আমাদের বন্ধুদের পরিবারগুলোর দায়িত্ব নেওয়ার জন্য। তো তোমরা কী করতে চাও? ফার্ম বন্ধ করে দেবে? নাকি জীবনে কখনো যতটা কঠোর পরিশ্রম করোনি, তার চেয়েও বেশি কঠোর পরিশ্রম করবে? আর ওই মুহূর্তটাই ছিল যেখানে কোম্পানিটি বেঁচে রইল।
  • সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে একটি ছিল, ব্যবসার জন্য একজন বস দরকার। যদি আমার কোনো নেতা না থাকতো, তাহলে আমি এটা বন্ধ করে দিতাম। আমার একটি বিভাগে ৮৬ জন ছিল, যেখানে মাত্র ৪ জন বেঁচে ছিল। আর মাত্র চারজন দিয়ে তুমি আবার ব্যবসা দাঁড় করাতে পারো না। মূলত, আমরা এক মিলিয়ন ডলার দৈনিক আয় করা একটি দুর্দান্ত কোম্পানি থেকে এক মিলিয়ন ডলার দৈনিক ক্ষতি করা কোম্পানিতে পরিণত হই। কিন্তু ওদের সবারই বন্ধক পরিশোধ করতে হয়, আর খাবার টেবিলে রাখতে হয়। তাই আমি যা করেছিলাম তার একটি অংশ ছিল — আমি অন্য কোম্পানির নেতাদের ফোন করে বলতাম, দেখো, এই লোকটা জন। সে এতগুলো প্রোডাক্ট বিক্রি করে। সে ভীষণ সফল। তুমি তাকে কখনো নিয়োগ দিতে পারতে না। সে কখনোই তোমার কোম্পানিতে আসতো না।
  • আগে আমার মনে হতো ৯/১১-এর আগে আর পরে আমার দুটি জীবন আছে। এবং অনেক সময় মনে হতো, এটা এখনো এতটাই কাঁচা যে যেন ঠিক কালকের মতো। কিন্তু এই বছর, যখন আমি ২০ বছর পেছনে তাকাই, তখন আর এটা কালকের মতো মনে হয় না। আমি এখন এমন ব্যক্তিদের সন্তানদের চাকরি দিই, যারা সেই দিন নিহত হয়েছিল। ৯/১১-এর পর যত সময় কেটেছে, ঠিক তত বছর আমি ৯/১১-এর আগে ক্যান্টর ফিটজজেরাল্ড-এ কাজ করেছিলাম। তাই আমি এখন আগের জীবন থেকে নিজেকে অনেকটাই আলাদা মনে করি।
  • আমি মনে করি, ৯/১১ হামলার ঠিক পরপরই সংবাদে বলা হচ্ছিল — এটা পুঁজিবাদের ওপর হামলা। ওরা এটাকে তাত্ত্বিকভাবে উপস্থাপন করছিল। কিন্তু আমি তখন বুঝেছিলাম, ব্যাপারটা পুরোপুরি ব্যক্তিগত। এটা মানুষের জীবন ছিন্নভিন্ন করে দেওয়ার ব্যাপার।
  • ৯/১১-এর আগে, আমরা সব কিছু নিজেদের মতো করে করতে চাইতাম। আর ৯/১১-এর পর, আমি শুধু সবার সঙ্গে পার্টনার হতে চেয়েছি। আমি অনুভব করেছি, অন্য কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কাজ করা, অন্যদের সঙ্গে মিলে কাজ করা, অন্যদের সঙ্গে অংশীদার হওয়া — এগুলো তোমার নিচে একটা শক্ত ভিত তৈরি করে। আর আমার নিচে সেই বিস্তৃত এবং শক্ত ভিত প্রয়োজন ছিল। তাই এখন আমি অন্যদের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করায়, অংশীদার হতে, বিস্তৃত জোট গঠনে অনেক বেশি মনোযোগী। আর সেটাই ক্যান্টর ফিটজজেরাল্ড যা করছে। এটি বিভিন্ন ধরনের কোম্পানির সঙ্গে খুব সুন্দরভাবে কাজ করছে। আর এটাই আমাদের সফলতার মূল চাবিকাঠি।


  • আমার বাবার ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে। তিনি তাঁর রোগের খবর আমার কাছ থেকে গোপন রেখেছিলেন, কারণ তিনি নিশ্চিত হতে চেয়েছিলেন যে আমি যেন শরতের সেমিস্টারে কলেজ শুরু করতে পারি। তিনি আমাকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে যান, আর এক সপ্তাহ পরে তিনি স্থানীয় হাসপাতালে তাঁর প্রথম কেমোথেরাপির জন্য যান। সেখানকার নার্স ভুল ডোজ দিয়ে বসে, আর সেখানেই তিনি মারা যান। দিনটি ছিল ১২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৯, আর তখন আমার বয়স ছিল ১৮। আমরা সবাই জানি, একজন পিতামাতাকে হারানো বেদনার — কিন্তু দুজনকেই হারানো একেবারেই অন্যরকম, জীবন সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়ে।
  • আমি আমার পুরো ক্যারিয়ার ক্যান্টরে কাটিয়েছি, ৪১ বছর ধরে। আর গত ২৪ বছরে কোম্পানিকে পুনর্গঠন করাটা আমার সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক সাফল্য। ৯/১১-এর পর আমরা মাত্র ১০০০ কর্মী নিয়ে শুরু করেছিলাম। আজ কোম্পানিতে ১৪,০০০-এর বেশি কর্মী আছে।
  • আমি মনে করি, আমেরিকা এখন এমন অবস্থানে আছে যে তারা বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে পারে, বিশ্বকে দেখাতে পারে কীভাবে একটি শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তোলা যায়, কীভাবে নিজের নাগরিকদের যত্ন নেওয়া যায়। আর সেই প্রশাসনের অংশ হওয়া — ঐতিহাসিক ট্রাম্প প্রশাসনের — আমার জীবনের অন্যতম বড় সম্মান। আমি এই প্রশাসনের অংশ হতে, দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি এগিয়ে নিতে, এবং আমাদের জনগণের প্রতি সমর্থন ও নিষ্ঠা বজায় রাখতে আমার ভূমিকা পালন করতে মুখিয়ে আছি।
  • আমার পরিকল্পনা হলো শুধুই আমেরিকার জনগণের সেবা করা। তাই আমি আমার সব ব্যবসায়িক স্বার্থ, সমস্ত সম্পদ বিক্রি করে দেব। আমি সরকারী নৈতিকতা দপ্তরের সঙ্গে একসাথে কাজ করেছি এবং আমরা কীভাবে এটা করবো সে বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছি। আমার নিশ্চিতকরণের ৯০ দিনের মধ্যে আমি সব কিছু থেকে সরে দাঁড়াব। তখন আমার আর কোনো ব্যবসায়িক স্বার্থ থাকবে না, এবং তাই কোনো স্বার্থের দ্বন্দ্বও থাকবে না। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি — আমি জীবনে যথেষ্ট অর্থ উপার্জন করেছি। আমি নিজেকে এবং আমার পরিবারকে দেখাশোনা করতে পারি। এখন আমার সময় এসেছে দেশের জনগণের জন্য কাজ করার।
  • আমি চীনের ব্যাপারে খুবই সন্দেহপ্রবণ দৃষ্টিভঙ্গি রাখি। আমার মনে হয়, ওরা শুধুই নিজেদের কথা ভাবে এবং আমাদের ক্ষতি করতে চায়। তাই আমাদের নিজেদের রক্ষা করতে হবে। আমাদের উদ্ভাবনী শক্তিকে এগিয়ে নিতে হবে এবং ওদের সাহায্য করা বন্ধ করতে হবে।
  • অ্যাপল কে? এটা তো আমেরিকা। আমরা চাই এই উদ্ভাবনাকে ফিরিয়ে আনা হোক, এবং আমাদের দারুণ কোম্পানিগুলো — স্পষ্ট করে বলি, সেরা প্রযুক্তি ও ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো — যেন মার্কিন মাটিতে মার্কিন কর্মীদের নিয়ে উৎপাদন ও উদ্ভাবন করে। চলুন সেটা করি।
  • আমাদের চমৎকার মিত্ররা আমাদের সদ্ভাবের সুযোগ নিয়েছে — জাপানের ইস্পাত, কোরিয়ার হোম অ্যাপ্লায়েন্স — তারা আমাদের সুযোগ নিয়েছে। এখন সময় এসেছে তারা আমাদের সঙ্গে অংশীদার হোক এবং সেই উৎপাদন নিজ দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাক। আমরা আমাদের মিত্রদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবো যেন তারা নিজেদের দেশে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারে। আমি মনে করি, যেভাবে আপনি বিষয়টিকে দেখছেন — একসাথে কাজ করা এবং উৎপাদনকে দেশে ফিরিয়ে আনা — এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, আমাদের কর্মশক্তির জন্যও।
  • আমি জানি না ওরা বিস্মিত হয়েছিল কিনা, কিন্তু শুধু একবার ভেবে দেখুন — ক্যান্টর ফিটজজেরাল্ডের লোকজন কী পরিমাণ যন্ত্রণা সহ্য করেছে — তাদের সব বন্ধু, সহকর্মী, প্রিয়জন যাদের সঙ্গে তারা প্রতিদিন কাজ করত, সবাইকে হারানো। মানসিক অবস্থা তখন ভীষণভাবে বিপর্যস্ত ছিল। আমি মনে করি না ক্যান্টরে কেউ ছিল যে বলতে পারে সে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে যায়নি। এটা ছিল সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি।
  • আমরা কখনোই এমন কোনো কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হব না যার জিহাদ-এর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক আছে। এটা আমাকে ঘৃণিত করে তোলে। টেথার যেকোনো অবৈধ কর্মকাণ্ডে যুক্ত কয়েন বাজেয়াপ্ত করে ফেলবে।
  • আপনি যতই তর্ক করুন না কেন, আলোচনা করুন না কেন, যখন বস বলে দেন — “এটাই আমরা করবো,” তখন প্রশ্ন হলো — আপনি কি বস যা বলেছে সেটা করতে সমস্যা অনুভব করছেন? সবসময় দুটি বিকল্প থাকে: আপনি পদত্যাগ করতে পারেন অথবা পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করতে পারেন।

হাওয়ার্ড লাটনিক সম্পর্কে উক্তি

[সম্পাদনা]
  • “আমি কল্পনা করি, ৯/১১-র সকালে হাওয়ার্ড লুটনিক এই ভাবেই জেগে উঠেছিলেন—উন্নাসিক, তাঁর সামনে ভয়াবহ ঘটনা ঘটছে তা না জেনে, অজানায় যে তাঁর পৃথিবী—এবং আমাদেরও—চিরতরে বদলে যেতে চলেছে। কিন্তু নেতৃত্ব মানে হলো পরিস্থিতির কাছে মাথা নত না করা। আমরা গত সপ্তাহে সচিব ডাফির মধ্যে সেটা দেখেছি। এবং আমরা দেখতে পারি—হাওয়ার্ড লুটনিকের মধ্যেও, যিনি ৯/১১-তে নিজের ভাই এবং ক্যান্টর ফিটজজেরাল্ডের আরও ৬৫৭ কর্মীকে হারিয়েছেন। মি. লুটনিক জানেন, ভুক্তভোগীদের পরিবার কী যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর জীবনের গল্পই বলে দেয় যে, তিনি সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জগুলো সামাল দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। এবং আমাদের এখন তাঁরই প্রয়োজন। আজকের বৈশ্বিক শক্তির প্রতিযোগিতায়, আমাদের—যেমন মি. লুটনিক বলেছেন—‘সামনে থাকতে হবে।’ আমেরিকাকে ‘বিশ্বকে দেখাতে হবে কীভাবে নেতৃত্ব দিতে হয়, কেমন হয় একটি মহান অর্থনীতি।’”
  • “হাওয়ার্ড গত ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ওয়াল স্ট্রিটে এক দুর্দান্ত শক্তি হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি ১৯৮৩ সালে ক্যান্টর ফিটজজেরাল্ডে যোগ দেন এবং দ্রুত পদোন্নতি পেয়ে মাত্র ২৯ বছর বয়সে প্রেসিডেন্ট ও সিইও হন। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর, সন্ত্রাসীরা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলা চালালে প্রতিষ্ঠানটি তার নিউ ইয়র্কের ৯৬০ জন কর্মীর মধ্যে ৬৫৮ জনকে হারায়—যাদের মধ্যে হাওয়ার্ডের ভাই ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুও ছিলেন। তিনি সেই ভয়াবহ সময় থেকে উঠে দাঁড়ান এক অদম্য সংকল্প নিয়ে—প্রতিষ্ঠানটিকে পুনর্গঠনের, নিহতদের সম্মান জানানো এবং তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর সংকল্প। তিনি ছিলেন বিশ্বের জন্য অনুপ্রেরণা—এক অকল্পনীয় ট্র্যাজেডির মুখেও দৃঢ়তার প্রতীক।”

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:Commons category