হের্টা মুলার
অবয়ব

হের্টা মুলার (জন্ম ১৭ আগস্ট, ১৯৫৩) হলেন একজন রোমানিয়া-জন্মগ্রহণকারী জার্মান ঔপন্যাসিক, কবি, প্রবন্ধকার এবং ২০০৯ সালের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী। তিনি রোমানিয়ার টিমিশ কাউন্টির নিটচিডর্ফে জন্মগ্রহণ করেন এবং তাঁর মাতৃভাষা হলো জার্মান। ১৯৯০-এর দশকের শুরু থেকে তিনি আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত, এবং তাঁর রচনাসমূহ ২০টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
উক্তিসমূহ
[সম্পাদনা]দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট (১৯৯৭)
[সম্পাদনা]- তুমি হাঁটার জন্য বেরিয়ে পড়ো, আর পৃথিবী তোমার জন্য খুলে যায়। আর পা ঠিকভাবে মেলানোর আগেই সেটা আবার বন্ধ হয়ে যায়। এখান থেকে ওখান পর্যন্ত শুধু বাতির ভোঁ ভোঁ আওয়াজ। আর এটাকেই তারা জীবন বলা বলে। এর জন্য জুতো পরারও মূল্য নেই।
- মাইকেল হালসে ও ফিলিপ বেহম-এর অনুবাদ, পিকাডর, ২০০২, পৃষ্ঠা-৮০
- প্রকৃত রহস্য হলো কেন ভালোবাসা শুরুতে বিড়ালের নখরের মতো তীক্ষ্ণ হয়, আর সময়ের সাথে সাথে আধা-খাওয়া ইঁদুরের মতো নিস্তেজ হয়ে যায়।
- মাইকেল হালসে ও ফিলিপ বেহম-এর অনুবাদ, পিকাডর, ২০০২, পৃষ্ঠা-৮১
- ':বিশ্ব, বিশ্ব, বোন বিশ্ব,
- কবে তোমায় আমি ক্লান্ত বলবো।
- যখন আমার রুটি শুকনো হয়ে যাবে,
- যখন আমার হাত আমার গ্লাস ভুলে যাবে,
- যখন কফিনের ঢাকনা আমার ওপর পড়বে,
- হয়তো তখন তোমায় আমি ক্লান্ত বলবো।
- ...
- যারা জন্ম নেয় তারা হতাশ হয়,
- আর যারা মারা যায় তারা পচে যায়।
- মাইকেল হালসে ও ফিলিপ বেহম-এর অনুবাদ, পিকাডর, ২০০২, পৃ. ৯২
দ্য হাঙ্গার অ্যাঞ্জেল (২০১২)
[সম্পাদনা]- জানুয়ারি ১৯৪৫-এ যুদ্ধ তখনও চলছিল। আমাকে গভীর শীতের মধ্যে কোথায় যেন রাশিয়ায় পাঠানো হচ্ছিল দেখে সবাই এমন কিছু দিতে চাইছিল যা কাজে লাগতে পারে, যদিও তারা জানত এতে কোনো সাহায্য হবে না। কারণ তখন পৃথিবীতে কোনো কিছুই সাহায্য করতে পারত না।
- পৃষ্ঠা-১
- আমি কেবল এমন এক জায়গায় যেতে চেয়েছিলাম যেখানে কেউ আমাকে চিনত না।
- পৃষ্ঠা-২
- আমি নিজেকে এত গভীরভাবে ও দীর্ঘদিন ধরে নীরবতায় মুড়ে ফেলেছি যে এখন আর শব্দ দিয়ে নিজেকে খুলে ফেলতে পারি না। যখন কথা বলি, তখন শুধু একটু ভিন্নভাবে নিজেকে মুড়ে ফেলি।
- পৃষ্ঠা-৩
- আমি ছিলাম নিজের চোর; শব্দগুলো হঠাৎই আসত এবং আমাকে ধরে ফেলত।
- পৃষ্ঠা-৪
- পৃথিবী কোনো ছদ্মবেশী নৃত্য নয়।
- পৃষ্ঠা-৫
- অনেকেই ভাবে স্যুটকেস গোছানো প্র্যাকটিসের মাধ্যমে শেখা যায়, যেমন গান গাওয়া বা প্রার্থনা করা শেখা যায়।
- পৃষ্ঠা-৬
- যদি তোমার কাছে সঠিক জিনিস না থাকে, তবে তুমি যা আছে তা দিয়ে কাজ চালাও। ভুল জিনিসই তখন প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়ায়। এরপর প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোই সঠিক হয়ে যায়, কারণ এটাই তখন তোমার কাছে থাকে।
- পৃষ্ঠা-
- উপন্যাস নয়, কারণ এগুলো তুমি একবার পড়ো তারপর আর পড়ো না।
- পৃষ্ঠা-৭
- সদ্য পড়া তুষারপাতে হাত দেওয়া যায় না, যেন কিছু না ঘটেছে এমন করে সাজানো যায় না। মাটি, বালি বা ঘাস চেষ্টায় ঠিক করা যায়, জল নিজের মতো সব গিলে নিয়ে আবার একত্রিত হয়। বাতাস সবসময় নিজের জায়গায় থাকে কারণ তা দেখা যায় না। তুষার ছাড়া সবই নীরব থাকতে পারত।
- পৃষ্ঠা-১১
- ওট্রাচ (orach) খাওয়ার সময় শেষ হয়েছে। কিন্তু ক্ষুধা শেষ হয়নি, যা আমাদের চেয়ে সবসময় বড়।
- পৃষ্ঠা-১৭
- তুমি কীভাবে পৃথিবীর মুখোমুখি হবে যদি নিজের সম্পর্কে বলার মতো একমাত্র কথা থাকে: "আমি ক্ষুধার্ত"? যদি এর বাইরে আর কিছু মনে না আসে?
- পৃষ্ঠা-১৭–১৮
- হয়তো আমাদের এতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল যাতে সময় চলা বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের হাড় লোহার মতো ভারী হয়ে গিয়েছিল। যখন শরীরের মাংস শুকিয়ে যায়, তখন হাড়ই বোঝা হয়ে ওঠে, আর মাটি তোমাকে টেনে নেয়।
- পৃষ্ঠা-২০
- আমি জানি না আমি ঘুমাতে পারছি না কারণ আমি জিনিসপত্র মনে করতে চাইছি, নাকি আমি মনে করতে চাইছি কারণ আমি ঘুমাতে পারছি না।
- পৃষ্ঠা-২৬
- কোথাও যাওয়া সবসময় আনন্দের ব্যাপার ছিল। প্রথমত: যতক্ষণ তুমি চলছো, ততক্ষণ তুমি পৌঁছাওনি। আর যতক্ষণ পৌঁছাওনি, ততক্ষণ তোমাকে কাজ করতে হবে না। ট্রাকে চড়ে যাওয়া মানে ছিল বিশ্রাম পাওয়া। দ্বিতীয়ত: যেখানে পৌঁছাবে, সে জায়গা তোমাকে নিয়ে মাথা ঘামাবে না। গাছ তোমাকে বকবে বা মারবে না। গাছের নিচে যদি কিছু হয়, সেটাও গাছের দোষ নয়।
- পৃষ্ঠা-৫০
- (কাসচাউ) সেখানে পাহাড়গুলো আমাদের মাথার ওপর দিয়ে তাকিয়ে থাকে যতক্ষণ না আমরা মরি।
- পৃষ্ঠা-৫৫
- তুমি যেকোনো কিছু ভাবতে পারো, কিন্তু নিশ্চিত হতে পারো না।
- পৃষ্ঠা-৬১
- এমন একটি অঘোষিত নিয়ম আছে যে যখন কাঁদার মতো অনেক কারণ থাকে, তখন কখনও কাঁদা উচিত নয়।
- পৃষ্ঠা-৬৮
- ক্ষুধা প্রায় সমস্ত শিল্পভাবনাকে গ্রাস করে ফেলে।
- পৃষ্ঠা-৭৪
- ক্ষুধা কোনো বাংকার বা খাটের কাঠামো নয়, নয় মাপার মতো কোনো বস্তু। ক্ষুধা কোনো বস্তু নয়।
- পৃষ্ঠা-৮১
- আধপেটা মানুষ আসলে পুরুষ বা নারী নয়, বরং বস্তুর মতো নিরপেক্ষ।
- পৃষ্ঠা-১৪৯
- বিরক্তি হলো ভয়ের ধৈর্য। ভয় অতিরঞ্জন করতে চায় না।
- পৃষ্ঠা-১৯৮
- ক্যাম্পের ভেতরে "আমরা" শব্দটি একবচন।
- পৃষ্ঠা-২৫১
- অপরিচিত হওয়া কঠিন, কিন্তু যখন তুমি এত কাছাকাছি থেকেও অপরিচিত বোধ করো, সেটা অসহনীয়।
- পৃষ্ঠা-২৬১
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]
উইকিপিডিয়ায় হের্টা মুলার সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।