নিম

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

নিম (বৈজ্ঞানিক নাম: Azadirachta indica) একটি ঔষধি গাছ যার ডাল, পাতা, রস সবই মানুষের দৈনন্দিন জীবনে বহুবিধ কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। নিম একটি বহুবর্ষজীবী ও চিরহরিৎ বৃক্ষ। আকৃতিতে ৪০-৫০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। এর কাণ্ডের ব্যাস ২০-৩০ ইঞ্চি পর্যন্ত হতে পারে। ডালের চারদিকে ১০-১২ ইঞ্চি যৌগিক পত্র জন্মে। পাতা কাস্তের মত বাকানো থাকে এবং পাতার কিনারায় ১০-১৭ টি করে খাঁজযুক্ত অংশ থাকে। পাতা ২.৫-৪ ইঞ্চি লম্বা হয়। নিম কাঁচা গাছে এক ধরনের ফল হয়। আঙুরের মতো দেখতে এই ফলের একটিই বীজ থাকে। জুন-জুলাইতে ফল পাকে এবং কাঁচাফল তেতো স্বাদের হয়। তবে পেকে হলুদ হওয়ার পর মিষ্টি হয়। ভারত এবং বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই নিম গাছ জন্মে। প্রাপ্ত বয়স্ক হতে সময় লাগে ১০ বছর। নিম গাছ সাধারণত উষ্ণ আবহাওয়া প্রধান অঞ্চলে ভালো হয়। যেমন ওমানের বিভিন্ন এলাকায় এই বৃক্ষ দেখা যায়। মাটির পিএইচ ৬.২-৮.৫ এবং বৃষ্টিপাত ১৮-৪৬ ইঞ্চি ও ১২০ ডিগ্রী ফারেনহাইট তাপমাত্রা নিম গাছের জন্য উপযোগী। নিমের পাতা থেকে বর্তমানে প্রসাধনীও তৈরি হচ্ছে। কৃমিনাশক হিসেবে নিমের রস খুবই কার্যকরী। নিমের কাঠ খুবই শক্ত হয়। এই কাঠে কখনো ঘুণ ধরে না। পোকা বাসা বাঁধে না। উইপোকা খেতে পারে না। এই কারণে নিম কাঠের আসবাবপত্রও বর্তমানে তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া প্রাচীনকাল থেকেই বাদ্যযন্ত্র বানানোর জন্য এর কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। এর উৎপাদন ও প্রসারকে উৎসাহ এবং অন্যায়ভাবে নিম গাছ ধ্বংস করাকে নিরুৎসাহিত করছে। নিমের এই গুণাগুণের কথা বিবেচনা করেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‌একে ‘একুশ শতকের বৃক্ষ’ বলে ঘোষণা করেছে। দাঁতের মরি শক্ত করতে সাহায্য করে।

উক্তি[সম্পাদনা]

  • নিম পাতা তেঁতো
    তার চেয়ে তেঁতো তার ডাল পালা।
    রোজ পাখিরা আসে নিম পাতার ছায়ায়
    বসে গান গায়। আবার উড়ে চলে যায়।
    নিম পাতা এতো তেঁতো মুখে রাখা দায়
    অথচ নিম পাতার স্পর্শ আঁকড়ে
    দলে বলে
    পাখিরা কি করে মিষ্টি সুরে গান গায়?
    • কবির শেষ পাতা, নিম মিষ্টি, কবি বিকাশ দাস, পৃষ্ঠা ৫৫[১]
  • নিমের ছায়া ঝিঙের ছায়া তিক্ত ছায়ার পাক,
    যেই খাবে ভাই অঘোর ঘুমে ডাকবে তাহার নাক।
    • সুকুমার রায়, ছায়াবাজি, সুকুমার সমগ্র রচনাবলী, প্রথম খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী ও কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩০
  • বর্তমানকালে নিম সারা বিশ্বে এক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। একটি গাছ গ্রহের সব সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম এমন ধারণা পোষণ করা হচ্ছে। সম্ভবত অন্য কোনও গাছ এত বেশি বৈচিত্র্যপূর্ণ দ্রব্য ও ভেষজগুণ-সমৃদ্ধ উপাদান তৈরি করতে সক্ষম নয়! নিম একটি অতি পরিচিত ও ঐতিহ্যবাহী গাছ যার সমতুল অন্য গাছ এদেশে অতি বিরল।
    • সমাধানে নিম, সুবিমল চন্দ্র দে, পৃষ্ঠা ৯
  • কেউ ছালটা ছাড়িয়ে নিয়ে সিদ্ধ করছে
    পাতাগুলো ছিঁড়ে শিলে পিষছে কেউ!
    কেউবা ভাজছে গরম তেলে।
    খোস দাদ
    হাজা চুলকানিতে লাগাবে।
    চর্মরোগের অব্যর্থ মহৌষধ।
    কচি পাতাগুলো খায়ও অনেকে।
    এমনি কাঁচাই …
    কিম্বা ভেঙে বেগুন-সহযোগে
    যকৃতের পক্ষে ভারি উপকার।
    কচি ডালগুলো ভেঙে চিবোয় কত লোক …
    দাঁত ভালো থাকে।
    কবিরাজরা প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
    বাড়ির পাশে গজালে বিজ্ঞরা খুশি হন।
    • নিমগাছ, বনফুল [২]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]