গাধা

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে
উষ্ট্রের কনিষ্ঠ ভাই ছাগলের দাদা তুমি গাধা,
অশ্বের কনিষ্ঠ জ্ঞাতি কে তোমার বুঝিবে মর্যাদা?
কালিদাস রায়

গাধা বা গর্দভ ঘোড়া পরিবারের একটি অযুগ্ম-খুর-যুক্ত চতুষ্পদ প্রাণী। এই প্রাণীটি কালক্রমে গৃহপালিত পশুতে পরিণত হয়েছে।

উক্তি[সম্পাদনা]

  • রাত্রি প্রায় শেষ হইয়াছে—কলুরা ঘানি জুড়ে দিয়েছে—বল্‌দেরা গোরু লইয়া চলিয়াছে—ধোবার গাধা থপাস২ করিয়া যাইতেছে—মাছের ও তরকারির বাজরা হু২ করিয়া আসিতেছে—ব্রাহ্মণ পণ্ডিতেরা কোশা লইয়া স্নান করিতে চলিয়াছেন—মেয়েরা ঘাটে সারি২ হইয়া পরস্পর মনের কথাবার্ত্তা কহিতেছে।
    • প্যারীচাঁদ মিত্র, আলালের ঘরের দুলাল - প্যারীচাঁদ মিত্র, দ্বিতীয় সংস্করণ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দ (১২৭৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৯
  • অদ্ভুত কারবার!
    দাদা যায় গাধা চ’ড়ে
    ‘ডায়মন হারবার।’
    তিন মণ দেহ তার
    লাগে ভারি ভারভার।
    গাধা ব্যাটা বাধা পেয়ে
    ঠ্যাং ছোঁড়ে বারবার।
    • সুনির্মল বসু, অদ্ভুত কারবার, সুনির্মল বসুর শ্রেষ্ঠ কবিতা- সুনির্মল বসু, প্রকাশক- মিত্র ও ঘোষ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৪১
  • আলি শাকাল কাঠুরেকে বলল, “তোমার গাধার পিঠে যত কাঠ আছে সব আমাকে দাও; তোমাকে এক টাকা দেব।” কাঠুরে তাতেই রাজি হয়ে গাধার পিঠের কাঠ নামিয়ে দিল। তখন নাপিত বলল, “সব কাঠ তো দাও নি; গাধার পিঠের ‘গদি’'টা কাঠের তৈরি; ওটাও দিতে হবে।”
    • সুকুমার রায়, বুদ্ধিমানের সাজা, সুকুমার সমগ্র রচনাবলী- প্রথম খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী, কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ),পৃষ্ঠা ১০৩
  • উষ্ট্রের কনিষ্ঠ ভাই ছাগলের দাদা তুমি গাধা,
    অশ্বের কনিষ্ঠ জ্ঞাতি কে তোমার বুঝিবে মর্যাদা?
    • কালিদাস রায়, গাধা, কবিশেখর কালিদাস রায়ের শ্রেষ্ঠ কবিতা, প্রকাশক- ওরিয়েন্ট বুক কোম্পানি, কলিকাতা, প্রকাশকাল- ১৫ই আগস্ট, ১৯৬০, পৃষ্ঠা ২৭০
  • যেখানে সেখানে দিবসে দুপরে
    নিদ্রাটি আছে সাধা।
    মহা কলরবে গালি দেই যবে
    পাজি হতভাগা গাধা,
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পুরাতন ভৃত্য, চিত্রা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- আদি ব্রাহ্মসমাজ যন্ত্র, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩০২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫৯-৬০
  • রাস্তায় বেরিয়ে যাকে দেখে সকলকেই বুদ্ধু ‘সেলাম’ করে। ছেলে বুড়ো মানুষ গরু কাউকে বাদ দেয় না। এক গাধাওয়ালা তার গাধা নিয়ে চলেছে—চাকরটা তাকে সেলাম করল আর গাধাগুলোকেও খুব খাতির করে বলল “সেলাম”। তা শুনে গাধাওয়ালা খুব হাসতে লাগল, আর বলল, ‘দূর আহাম্মক ওদের বুঝি সেলাম বলতে হয়;ওদের “হেই হেই” ক’রে চালাতে হয়।’
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, বুদ্ধিমান চাকর, গল্পমালা, উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, প্রকাশক- বসাক বুক স্টোর প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল-১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৪৪৫
  • ষাঁড় আর গাধা দুজনে একমত হয়ে ছাগলকে সমিতির সম্পাদক করল। কিন্তু গোল বাধল সভাপতি হওয়া নিয়ে। ষাঁড় আর গাধা দুজনেই সভাপতি হতে চায়। বেজায় ঝগড়া শুরু হয়ে গেল।
    • সুকান্ত ভট্টাচার্য, ষাঁড়-গাধা-ছাগলের কথা, সুকান্ত সমগ্র- সুকান্ত ভট্টাচার্য, প্রকাশক- সারস্বত লাইব্রেরী, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৬০
  • চলল গাধা খোদ মনিবের ড্রইংরুমের পানে।
    মনিবসাহেব ঝিমুচ্ছিলেন চেয়ারখানি জুড়ে,
    গাধার গলার শব্দে হঠাৎ তন্দ্রা গেল উড়ে।
    চমকে উঠে গাধার নাচন যেমনি দেখেন চেয়ে,
    হাসির চোটে সাহেব বুঝি মরেন বিষম খেয়ে!
    ভাবল গাধা—এই তো মনিব জল হয়েছেন হেসে
    এইবারে যাই আদর নিতে কোলের কাছে ঘেঁষে।
    • সুকুমার রায়, সাধে কি বলে গাধা, সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী ও কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৪৬
  • কাপড় কাচা শেখা হয়ে গেলে পর সে যখন চলে আস্‌বে তখন ধােপা তাকে একটা গাধা দিয়ে বল্‌ল, “এই গাধাটা নাও, তােমার অনেক কাজে আস্‌বে। তােমার যখনি টাকার দরকার হবে, গাধাকে বল্‌বে ‘থু-থু!’ অমনি দেখ্‌বে গাধার মুখ দিয়ে মােহর পড়্‌বে।’ গাধা পেয়ে দরজীর ছেলের খুবই সুবিধা হল। টাকার দরকার হলেই সে বলে “গাধা! থু-থু!” আর অমনি গাধা মেলাই মােহর বার করে দেয়। তখন সে ভাব্‌ল, “এইবার বাবার কাছে ফিরে যাই।”
    • সুখলতা রাও, দরজী আর তার ছাগল, গল্পের বই - সুখলতা রাও, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশক-ইউ, রায় এণ্ড সন্স্, প্রকাশসাল- ১৯১২ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৯ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১১৬
  • গাধা বিষয়ক প্রবাদে বিশেষভাবে গাধার নির্বুদ্ধিতাকেই প্রকটিত করা হয়েছে। এছাড়া গাধা যে ভারবাহী পশু, সে বিষয়েও আলোকপাত করা হয়েছে।
    (ক) আধা কইলে গাধাও বোঝে, সব কইলে কেনা বোঝে।
    (খ) গাধা পিটিয়ে ঘোড়া।
    (গ) গাধা সকল বইতে পারে, ভাতের কাঠি বইতে নারে।
    (ঘ) ঘোড়ার পেট, গাধার পিঠ, খালি থাকে কদাচিৎ।
    • বরুণকুমার চক্রবর্তী, বাংলা লোক-সাহিত্যে জীবজন্তু, লোক-সংস্কৃতি ঃ নানা প্রসঙ্গ- বরুণকুমার চক্রবর্তী, প্রকাশক- বুক ট্রাস্ট, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৩৮৭ বঙ্গাব্দ, পৃষ্ঠা ১৩৪

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]