বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
অবয়ব
(বিভূতি ভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে পুনর্নির্দেশিত)
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় (১২ই সেপ্টেম্বর, ১৮৯৪ - ১লা নভেম্বর, ১৯৫০) ছিলেন ভারতীয় বাঙালি কথাসাহিত্যিক। উপন্যাস ও ছোটগল্প রচয়িতা হিসাবে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। পথের পাঁচালী ও অপরাজিত, আরণ্যক, চাঁদের পাহাড়,আদর্শ হিন্দু হোটেল, ইছামতী, অশনি সংকেত প্রভৃতি উপন্যাস বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
উক্তি
[সম্পাদনা]- কোথাও সূর্য্যের আলো নেই, সব সময়ই যেন গোধূলি। আর সবটা ঘিরে বিরাজ করচে এক অপার্থিব ধরণের নিস্তব্ধতা - বাতাস বইচে তারও শব্দ নেই, পাখীর কুজন নেই সে বনে - মানুষের গলার সুর নেই, কোনো জানোয়ারের ডাক নেই।
- চাঁদের পাহাড় - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সপ্তম পরিচ্ছেদ, প্রকাশক- এম. সি. সরকার এন্ড সন্স লিমিটেড, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৯০
- রক্তমাংসের মানুষের পক্ষে এ উত্তাপে পথহাঁটা চলে না। যদি সে কোনরকমে এই ভয়ানক মরুভূমির হাত এড়াতে পারতো, তবে হয়তো জীবন্ত অবস্থায় মানুষের আবাসে পৌঁছুতেও পারতো। সে ভয় করে শুধু এই মরুভূমি, সে জানে কালাহারী মরু বড় বড় সিংহের বিচরণভূমি।
- চাঁদের পাহাড় - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ, প্রকাশক- এম. সি. সরকার এন্ড সন্স লিমিটেড, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৫৬
- পথঘাটে তখনও কাদা, মাঠে মাঠে জল জমে আছে। বিকেলবেলা ফিঙে পাখী বসে আছে বাবলা গাছের ফুলে-ভর্তি ডালে।
- ইছামতী, ইছামতী - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রকাশক- মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩
- এ পর্ব্বতও মরুভূমির সামিল, খাদ্য এখানে মেলে না, জলও না। সে মরা শকুনিটা নিয়ে এসে আগুন জ্বেলে ঝলসাতে বসলো। এর আগে মরুভূমির মধ্যেও সে শকুনির মাংস খেয়েচে। এরাই এখন প্রাণ ধারণের একমাত্র উপায়, আজ ও খাচ্চে ওদের, কাল ওরা খাবে ওকে।
- চাঁদের পাহাড় - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ, প্রকাশক- এম. সি. সরকার এন্ড সন্স লিমিটেড, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৬৪
- আমি এই পৃথিবীর প্রেমের মাঝে আছি, এই পৃথিবীর প্রেমের মাঝে। - অপরাজিতা
- আমি আজো আনন্দের মাঝে রাত্রির সুরের দিকে চাঁদের দিকে যাই। - অপরাজিতা
- প্রকৃতির সুন্দরি, তুমি যেন নিজের সুন্দরি। - অরণ্যের দিনরাত্রি
- এই সোনার বাংলার খুনি, আমি তোরে ভালোবাসি। - অরণ্যের দিনরাত্রি
- আমি এই জীবনের সুন্দরি, এই জীবনের। - অরণ্যের দিনরাত্রি
- নির্জনতা আত্মার উন্নতির একটি প্রধান উপায়।
- অচেনার আনন্দকে পাইতে হইলে পৃথিবী ঘুরিয়া বেড়াইতে হইবে, তাহার মানে নাই। আমি যেখানে আর কখনো যাই নাই, আজ নতুন পা দিলাম, যে নদীর জলে নতুন স্নান করিলাম, যে গ্রামের হাওয়ায় শরীর জুড়াইল, আমার আগে সেখানে কেহ আসিয়াছিল কিনা, তাহাতে আমার কি আসে যায়? আমার অনুভুতিতে তাহা যে অনাবিষ্কৃত দেশ। আমি আজ সর্বপ্রথম মন, বুদ্ধি, হৃদয় দিয়া উহার নবীনতাকে আস্বাদ করিলাম যে!
- মানুষ কি চায় — উন্নতি, না আনন্দ? উন্নতি করিয়া কি হইবে যদি তাহাতে আনন্দ না থাকে? আমি এমন কত লোকের কথা জানি, যাহারা জীবনে উন্নতি করিয়াছে বটে, কিন্তু আনন্দকে হারাইয়াছে।
- মুড়িঘাটা কি বাজিতপুরের ঘাট থেকে নৌকো করে চলে যেও চাঁদুড়িয়ার ঘাট পর্যন্ত- দেখতে পাবে দুধারে পলতে মাদার গাছের লাল ফুল, জলজ বন্যেবুড়োর ঝোপ, টোপাপানার দাম, বুনো তিৎপল্পা লতার হল্দে ফুলের শোভা, কোথাও উঁচু পাড়ে প্রাচীন বট-অশ্বত্থের ছায়াভরা উলুটি-বাচড়া-বৈঁচি ঝোপ, বাঁশঝাড়, গাঙশালিখের গর্ত, সুকুমার লতাবিতান। গাঙের পাড়ে লোকের বসতি কম, শুধুই দূর্বাঘাসের সবুজ চরভূমি, শুধুই চখা বালির ঘাট, বন-কুসুমে ভর্তি ঝোপ, বিহঙ্গ-কাকলী-মুখর বনান্তস্থলী। গ্রামের ঘাটে কোথাও দু’দশখানা ডিঙি নৌকো বাঁধা রয়েছে। ক্কচিৎ উঁচু শিমুল গাছের আঁকাবাঁকা শুকনো ডালে শকুনি বসে আছে সমাধিস্থ অবস্থায়- ঠিক যেন চীনা চিত্রকরের অঙ্কিত ছবি।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]উইকিপিডিয়ায় বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।
উইকিসংকলনে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত অথবা সম্পর্কিত রচনা রয়েছে।
উইকিমিডিয়া কমন্সে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।