অঞ্জন দত্ত

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে
২০১২ সালে অঞ্জন দত্ত

অঞ্জন দত্ত একজন ভারতীয় বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী, চলচ্চিত্র অভিনেতা এবং পরিচালক। তিনি ১৯৮১ সালে প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এবং ১৯৯৮ সাল থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন।

উক্তি[সম্পাদনা]

শুনতে কি চাও? (১৯৯৪)[সম্পাদনা]

   

চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি বেলা শুনছো
এখন আর কেউ আটকাতে পারবেনা
সম্বন্ধটা এই বার তুমি ভেস্তে দিতে পারো
মা-কে বলে দাও বিয়ে তুমি করছো না

"২৪৪১১৩৯"
   

আকাশ ভরা সূর্য তারা
আকাশমুখী সারি সারি
কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যাওয়া ঠাসাঠাসি বাক্স বাড়ি
এখান থেকেই চলার শুরু এখান থেকেই হামাগুড়ি
এখানটাতেই আমার বাসা, আমার বাড়ি

"আকাশ ভরা সূর্য তারা"
   

নাম আমার আলীবাবা, বয়স আমার দশ,
আজকে দিনটা বড়, আজকে যীশু দিবস।
চারটে মুরগী ছাড়ালে, একটা টাকার নোট,
ওই কালো ড্রামের ভেতর ওরা করছে যে ছট্ ফট্।

"আলীবাবা"
   

একবার ভেবেছিলাম এই গলাটা, যায় যদি যাক ট্রেনের তলাতে,
কিন্তু ঐ এলুমিনিয়ামের চাঁদ, দেয় নি পালাতে আমায়।
একটু আগে গড়িয়ার শিবু, দম দিতে বলল বম্ শংকরে,
মাথাটা তাই কেমন ঝিম ঝিম করছে, গলাটা শুকিয়ে কাঠ।
“দাদা, একটা মিনি হবে কি ? একটাও লেবু হয়নি বিক্কিরি,
গত কালের পনেরো টাকা থেকে চেকার কে দিতে হবে দশ।”

"বসে আছি ইস্টিশানে"
   

ধর্ম আমার আমি নিজে বেছে নিই নি
পদবীতে ছিল না যে হাত রঞ্জনা
মসজিদে যেতে হয় তাই জোর করে যাই
বছরে দু একবার রঞ্জনা

"রঞ্জনা"
   

তুমি না থাকলে তাজমহলটা বানানোই হতো না
লাঠালাঠি এই কাটাকাটি কিছু থামানোই যেত না
তুমি না থাকলে মোনালিসা কবে হয়ে যেত গম্ভীর
তুমি না থাকলে তোমার চিঠি জমানোই হতো না
তুমি না থাকলে রোমিও কবে
হোমিওপ্যাথির দোকান খুলে জমিয়ে দিতো

"তুমি না থাকলে"

পুরোনো গিটার (১৯৯৫)[সম্পাদনা]

   

চারটে দেয়াল মানেই নয়তো ঘর
নিজের ঘরেও অনেক মানুষ পর
কখন কিসের টানেও মানুষ পায় যে খুঁজে বাঁচার মানে,
ঝাপসা চোখে দেখা এ শহর

"বৃষ্টি"
   

দু’টো মানুষ
একসাথে কত পথ চলা
হাতে হাত রেখে কথা বলা
কেন সব করে অবহেলা
কেন শেষমেষে এসে বিদায়

"দু’টো মানুষ"
   

মাগো মা চললাম আমি করতে নিজের সংসার
মাগো মা ফিরে আসছি না
ইতি তোমার আদরের রমা।

"রমা"
   

সুদিন আসবে বলে ওরা আগুন জ্বালায়
আর হাজার হাজার মানুষ মরে যায়

"তুমি আসবে বলে"

ভালবাসি তোমায় (১৯৯৬)[সম্পাদনা]

   

ফেলে আসা বাজারে
ফেলে আসা দাম
ফেলে আসা তবলা হারমোনিয়াম
ফেলে আসা খাটুনির কত কাল ঘাম
হারিয়ে গেছে কোথায়
ফেলে আসা রাজনীতি
ফেলে আসা ভুল
ফেলে আসা গপ্পের
ফেলে আসা গুল

"ভালোবাসি তোমায়"
   

ববি রায়ের সাথে চলে যেও না, ছেড়ে যেও না
ববি রায়ের কথায় বয়ে যেও না, ফেলে আমায়
জানি টাকা কড়ি আর মারুতি গাড়ির প্রয়োজন আছে,
তবু হাল ছেড়ে দিও না
ববি রায়ের সাথে চলে যেও না- এ অসময়।

"ববি রায়"
   

সোমবারে আসে স্বর্ণালী আর সুমন্ত
মঙ্গলে মিতা আর মন্টু
বুধবারে আসে বৈশাখী আর বিপ্লব
বৃহস্পতিবারে শেলী আর সন্তু
শুক্কুরবারে আসে সীমা আর শান্তনু
শনিবারে সুধা-সুধন্য
রবিবার বিকেলটা সবাই জানে কার
রবিবার আমাদের জন্য

"দাস-কেবিন"
   

আজ যাও তুমি কোথায় চলে রোজ রাত্তিরে মনের ভেতর ঘুমের ঘোরে
তোমার সাজানো শরীরের ভেতরে, মালা তুমি কে, তুমি কে?

"মালা"
   

নামটা শুনেছি পড়িনি আমি, জীবনানন্দ দাশ,
লাশকাটা এই শহরে, আমি জীবন্ত লাশ।
দশটা পাঁচটা মনটা আমার করে শুধু হাঁস ফাঁস।
মাসের প্রথম দিনটার অপেক্ষায়।

"মাসের প্রথম দিন"
   

একটা চান্স, দিয়ে দেখুননা
একটা সুযোগ, দিয়ে দেখুন আমায়
প্রমান করবো, এই আঁকালে
বোম্বাই সব নয়, বেঁচে আছে বাংলা,
বেঁচে আছে রাজা রায়

"রাজা রায়"
   

শেষ বলে কিছু নেই।
শেষ যেখানে, জেনো শুরু সেখানে।

"শেষ বলে কিছু নেই"

কেউ গান গায় (১৯৯৭)[সম্পাদনা]

   

সোনার খোঁজে কেউ কতদুর দেশে যায় আমি কলকাতায়
সোনার স্বপ্ন খুঁজে ফিরি একা একা তোমাদের ধর্মতলায়
রাত্রির নেমে এলে তিনশো বছরের সিমেন্টের জঙ্গলে
ফিরে চলে যাই সেই পাহাড়ি বস্তির কাঞ্চনের কোলে

"কাঞ্চনজংঘা"
   

বড় হয়ে যাচ্ছে, মন
বড় বড় স্বপ্ন সে দেখতে শিখছে এখন
পৃথিবীটা তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকে
মানবে কি করে সে বলুন
আপনার ছোট খাটো শাসন

"মিসেস মুখার্জী"

কলকাতা-১৬ (১৯৯৯)[সম্পাদনা]

   

তাই জানলা আমার মানেনা আজ ধর্মের বিভেদ
জানলা জাতীয়তাবাদের পরোয়া করে না
জানলা আমার পূব না পশ্চিমের দিকে খোলা
জানলা সে তো নিজেই জানে না

"আমার জানলা"
   

একদিন বৃষ্টিতে বিকেলে
আমরা ধরা পড়ে যাব দেখো ঠিক
ধুয়ে যাবে যত আছে অভিমান
ধুয়ে যাবে সিঁদুরের টিপ
আর চটিটাও ছিঁড়ে যাবে তক্ষুনি
তাই পালানো যাবেনা যে কোথাও
রাস্তা যেমন তেমনি
শুধু লোকজন সব উধাও…

"একদিন বৃষ্টিতে বিকেলে"

অন্যান্য[সম্পাদনা]

  • আমি মনে করি না, যে বিয়ের পর প্রেম থেমে যায়। আর এটাকে আমি পরকীয়া হিসাবেও দেখি না। একটা সময় গিয়ে আমার স্ত্রী বন্ধু হয়ে যায়। তার বাইরে গিয়ে যদি কাউকে ভালো লাগে, আকর্ষণীয় লাগে, কথা বলতে ইচ্ছা করে, আমি সেটা করেছি। আমার কাছে বিয়েটাই শেষ শব্দ নয়।
  • অঞ্জন দত্ত মানে সানগ্লাস, অঞ্জন দত্ত মানে মদ, অঞ্জন দত্ত মানে সিগারেট, অঞ্জন দত্ত মানে দার্জিলিং, অঞ্জন দত্ত মানে পার্কস্ট্রিট এই কথাগুলোতে এখন একটু বিরক্তই হই।
  • গান গেয়ে আমার নামডাক হয়েছে। গান গেয়ে মানুষের সবচেয়ে বেশি কাছে এসেছি, ভালোবাসা পেয়েছি। কিন্তু সত্যি কথা হলো, জীবনে যা হতে চেয়েছি, তা হতে পারিনি। সত্যি এ জীবনে আমি ভালো অভিনেতা হতে চেয়েছি। কিন্তু তা হতে পারিনি।


অঞ্জন দত্ত সম্পর্কে উক্তি[সম্পাদনা]

  • অঞ্জন দত্তের গান আমাদের প্রথম যৌবনের সঙ্গী। তাঁর অনেক গানই মনের ভেতর বুদবুদ তোলে। তবে লিখতে বসে এখন কেন জানি না তাঁর ‘আমি বৃষ্টি দেখেছি’ গানটির কথা মনে আসছে বারবার। ‘আমি অনেক ভেঙেচুরে, আবার শুরু করেছি, আবার পাওয়ার আশায় ঘুরে মরেছি। আমি অনেক হেরে গিয়েও হারটা স্বীকার করিনি, শুধু তোমায় হারাব আমি স্বপ্নেও ভাবিনি। আমি বৃষ্টি দেখেছি।’ এ কী গান! মনে হয় অঞ্জন যেন আমার কথাগুলোই গানে গানে বলছেন।


বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]