আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ (৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৪ - ১৯ মার্চ, ২০০১) বিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশের পঞ্চাশের দশকের একজন মৌলিক কবি। ব্যক্তি জীবনে তিনি ছিলেন একজন উচ্চপদস্থ সরকারি আমলা। ১৯৮২ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকারের কৃষি ও পানি সম্পদ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একুশে পদক লাভ করেছেন।
যারা ভালোবাসে
তারা যুদ্ধে যায়
যারা যুদ্ধে যায়
সকলে ফিরে আসে না
এবং যারা মায়ের কাছে ফিরে আসে
তাদের ঝুলিতে বর্ণমালার নুপুর
ঢেঁকিতে কিশোরী পা
ডুরে শাড়ি ঘাসের ফড়িং।
একজন প্রবীণ বয়াতি
•
তুমি আসলে
সুবাতাস বইবে
তুমি আসলে
জননীর পুত্ররা দীর্ঘ আয়ু হবে
তুমি আসলে
সাবৎসা গাভীগণ মধুময় হবে
তুমি আসলে
নিষ্পত্র বৃক্ষ মুকুলিত হবে
তুমি আসলে
শস্যের দানা পরিপূর্ণ হবে
তুমি আসলে
সাহসী পুরুষেরা ফিরে আসবে।
বৃষ্টি ও সাহসী পুরুষের জন্য প্রার্থনা
•
“মাগো, ওরা বলে সবার কথা কেড়ে নেবে।
তোমার কোলে শুয়ে গল্প শুনতে দেবে না।
বলো, মা, তাই কি হয়?
তাইতো আমার দেরি হচ্ছে।
তোমার জনে কথার ঝুরি নিয়ে তবেই না বাড়ি ফিরবো।
লক্ষী মা, রাগ ক’রো না, মাত্রতো আর ক’টা দিন।”
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে ঝড়ের আর্তনাদ শুনবে।
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে দিগন্তের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে আজন্ম ক্রীতদাস থেকে যাবে।
আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি
•
ভালোবাসা দিলে মা মরে যায়
যুদ্ধ আসে ভালোবেসে
মা’য়ের ছেলেরা চলে যায়,
আমি আমার ভাইয়ের কথা বলছি।
আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি
•
ভালোবাসা দিলে মা মরে যায়
যুদ্ধ আসে ভালোবেসে
মা’য়ের ছেলেরা চলে যায়,
আমি আমার ভাইয়ের কথা বলছি।
আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি
•
যে উদ্গত অংকুরের মত আনন্দিত
সে কবি
যে সত্যের মত স্বপ্নভাবী
সে কবি
যখন মানুষ মানুষকে ভালবাসবে
তখন প্রত্যেকে কবি।