ইফতার

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

ইফতার (আরবি: إفطار ইফ্‌ত্বার্) হলো রমজান মাসে মুসলিমদের দ্বারা পালিত একটি ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় আচার। এটি সূর্যাস্তের পরে রোজা ভাঙার জন্য একটি খাবার। ইফতার সাধারণত একটি হালকা খাবার দিয়ে শুরু হয়, যেমন খেজুর বা পানি। এর পরে, আরও ভারী খাবার পরিবেশন করা হয়, যেমন ফল, শাকসবজি, সালাদ, ডাল, ভাত, রুটি, এবং মিষ্টি ইত্যাদি।

উক্তি[সম্পাদনা]

  • মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে এবং কষ্ট দিয়ে নিজেদের দান-খয়রাত বরবাদ কর না সে ব্যক্তির মতো যে নিজের ধন-সম্পদ লোক দেখানোর উদ্দেশে ব্যয় করে।
    • (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৬৪)
  • মুমিনের জীবনের লক্ষ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি। আনুগত্যে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন, তাই মুমিনরা ইবাদতে আনন্দ লাভ করেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদারের জন্য দুটি খুশি—একটি ইফতারের সময়, অপরটি আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় (মুসলিম)।’ আল্লাহ তাআলার নির্দেশ, ‘তোমরা সন্ধ্যা (সূর্যাস্ত) পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ করো

হাদিস[সম্পাদনা]

  • রমজানের অতিগুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নাত হলো ইফতার। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আমার বান্দাদের মধ্যে তারা আমার বেশি প্রিয়, যারা দ্রুত ইফতার করে।
    • (তিরমিজি, আলফিয়্যাতুল হাদিস: ৫৬০, পৃষ্ঠা: ১৩১)।
  • নবীজি (সা.) বলেন, ‘যখন রাত সেদিক থেকে ঘনিয়ে আসে ও দিন এদিক থেকে চলে যায় এবং সূর্য ডুবে যায়, তখন রোজাদার ইফতার করবে।
    • (বুখারি, সাওম অধ্যায়, হাদিস: ১৮৩০)।
  • রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সে পর্যন্ত দ্বীন ইসলাম বিজয়ী থাকবে, যে পর্যন্ত মানুষ শিগগির ইফতার করবে। কেননা, ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা বিলম্বে ইফতার করত (মুসনাদে আহমাদ)।’ হজরত সাহল ইবনে সাআদ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যত দিন লোকেরা ওয়াক্ত হওয়ামাত্র ইফতার করবে, তত দিন তারা কল্যাণের ওপর থাকবে
    • (বুখারি, সাওম অধ্যায়, হাদিস: ১৮৩৩)।’
  • রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ রোজা রাখলে খেজুর দিয়ে যেন ইফতার করে, খেজুর না হলে পানি দিয়ে; নিশ্চয় পানি পবিত্র
    • (তিরমিজি ও আবু দাউদ, আলফিয়্যাতুল হাদিস: ৫৬২, পৃষ্ঠা: ১৩১-১৩২)।
  • রোজাদারকে ইফতার করানো অনেক বড় নেক কাজ। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তার জন্য রোজাদারের প্রতিদান সমান প্রতিদান দেওয়া হবে এবং রোজাদারের প্রতিদান থেকেও কোনো প্রতিদান কমানো হবে না।
    • (তিরমিজি, হাদিস : ৮০৭)
  • রোজাদার তোমাদের নিকট ইফতার করবে, তোমাদের খাবার নেককার লোক খাবে এবং ফেরেশতা তোমাদের ওপর রহমতের দোয়া করতে থাকবে।
    • (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৮৪৮)
  • যেকোনো খাবার ইফতারে থাকতে পারে। কোনো সমস্যা নেই। তবে খেজুর দিয়ে ইফতার করা সুন্নত। হজরত আনাস (রা.) বলেন, নবী (সা.) নামাজের পূর্বে তাজা পাকা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। তাজা খেজুর না থাকলে যেকোনো খেজুর দিয়ে, আর তাও যদি না থাকত তা হলে কয়েক ঢোক পানি পান করে নিতেন।
    • (তিরমিজি, হাদিস : ৬৯৬)
  • নবী (সা.) স্বাভাবিক পরিমাণে খাবার খেতেন। তিনি কখনই পেট ভরে পানাহার করতেন না। মিকদাম ইবনে মা‘দিকারিব (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে তিনি বলেছেন, ‘বনি আদমের জন্য তো এতটুকু খাবারই যথেষ্ট যার দ্বারা তার পিঠ সোজা থাকে। যদি এর চেয়ে বেশি খেতে হয়, তা হলে পেটের এক-তৃতীয়াংশ খাবারের জন্য, এক-তৃতীয়াংশ পানির জন্য এবং এক-তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য।
    • (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৮০)

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]