ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
পরিভ্রমণে চলুন
অনুসন্ধানে চলুন

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ – ২৯ জুলাই ১৮৯১;১২ আশ্বিন ১২২৭ – ১৩ শ্রাবণ ১২৯৭ বঙ্গাব্দ) উনবিংশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার। বিধবা বিবাহ ও স্ত্রীশিক্ষার প্রচলন, বহুবিবাহ ও বাল্যবিবাহের মতো সামাজিক অভিশাপ দূরীকরণে তার অক্লান্ত সংগ্রাম আজও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়।
উক্তি[সম্পাদনা]
- স্নেহ অতি বিষম বস্তু।
- স্নেহের স্বভাবই এই, অকারণে অনিষ্ট আশঙ্কা করে।
- যে ব্যক্তি শ্রম করে সে কখন কষ্ট পায় না, প্রত্যুত স্বচ্ছন্দে কাল যাপন করে।
- বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ)- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, সম্পাদনা- সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, সজনীকান্ত দাস, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দ (১৩৪৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫৮৮
- পরিশ্রম না করিলে স্বাস্থ্যরক্ষা ও সুখলাভ হয় না; কিন্তু সাতিশয় পরিশ্রম করাও অবিধেয়; যেহেতু তদ্দ্বারা শরীর অত্যন্ত দুর্ব্বল হইয়া যায় ও রোগ জন্মে। প্রতিদিন দশ ঘণ্টা পরিশ্রম করিলে স্বাস্থ্য ভঙ্গের সম্ভাবনা নাই!
- বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ)- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, সম্পাদনা- সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, সজনীকান্ত দাস, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দ (১৩৪৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫৮৮
এই অনুচ্ছেদটিতে কোনো উৎস উদ্ধৃত করা হয়নি। |
- যে ব্যক্তি যে দেশে জন্মগ্রহণ করেন, সে দেশের হিতসাধনে সাধ্যানুসারে সচেষ্ট ও যত্নবান হওয়া তাহার পরম ধর্ম ও তাহার জীবনের সর্বপ্রধান কর্ম।
- বিদ্যা হলো সব থেকে বড় সম্পদ, বিদ্যা শুধু আমাদের নিজেদের উপকার করে না বরং প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে গোটা সমাজের কল্যাণ সাধন করে।
- দুঃখ ছাড়া জীবন নাবিক ছাড়া নৌকার মতন।
- যাহার যে অবস্থা, সে যদি তাহাতেই সন্তুষ্ট থাকে, তাহা হইলে তাহাকে কাহারও নিকট অপদস্থ ও অপমানিত হইতে হয় না।
- অন্যে যখন আমাদের প্রশংসা করে, তৎকালে বিনীত হওয়া কর্তব্য।
- মনের ঐক্যই প্রণয়ের মূল। সেই ঐক্য বয়স, অবস্থা, রূপ, গুণ, চরিত্র, বাহ্য-ভাব ও আন্তরিক-ভাব ইত্যাদি নানা কারণের উপর নির্ভর করে। অন্যদেশীয় বালদম্পতিরা। পরস্পরের আশায় জানিতে পারিল না, অভিপ্রায়ে অবগাহন করিতে অবকাশ পাইল না।
- এদেশের উদ্ধার হইতে বহু বিলম্ব আছে। পুরাতন প্রকৃতি ও প্রবৃত্তি বিশিষ্ট মানুষের চাষ উঠাইয়া দিয়া সাতপুরু মাটি তুলিয়া নতুন মানুষের চাষ করিতে পারিলে তবে এদেশের ভাল হয়।
- যদি কেহ আপনি আপনার প্রশংসা করে, কিংবা আপনার কথা অধিক করিয়া বলে, অথবা কোন রূপে ইহা ব্যক্ত করে যে, সে আপনি আপনাকে বড় জ্ঞান করে, তাহা হইলে, সে নিঃসন্দেহে উপহাসাস্পদ হয়।
- সেই সাহিত্যকে আমরা সঠিক সাহিত্য বলবো যা মানুষের মধ্যে শুভবোধ জাগ্রত করবে।
- চোখের সামনে মানুষ অনাহারে মরবে; ব্যাধি, জরা, মহামারীতে উজাড় হয়ে যাবে। আর দেশের মানুষ চোখ বুজে ‘ভগবান’ ‘ভগবান’ করবে-এমন ভগবৎ প্রেম আমার নেই: আমার ভগবান আছে মাটির পৃথিবীতে; স্বর্গ চাই না, মোক্ষ চাই না, বারে বারে ফিরে আসি যেন এই মর্ত্য বাংলায়।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে নিয়ে উক্তি[সম্পাদনা]
- বিদ্যাসাগরের চরিত্রে যাহা সর্ব প্রধান গুণ, যে গুণে তিনি পল্লীআচারের ক্ষুদ্রতা, বাঙালিজীবনের জড়ত্ব সবলে ভেদ করিয়া একমাত্র নিজের গতিবেগপ্রাবল্যে কঠিন প্রতিকূলতার বক্ষ বিদীর্ণ করিয়া— হিন্দুত্বের দিকে নহে, সাম্প্রদায়িকতার দিকে নহে— করুণার অশ্রুজলপূর্ণ উন্মুক্ত অপার মনুষ্যত্বের অভিমুখে আপনার দৃঢ়নিষ্ঠ একাগ্র একক জীবনকে প্রবাহিত করিয়া লইয়া গিয়াছিলেন।
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। (বিদ্যাসাগরচরিত)
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের চরিত্রে প্রধান গৌরব তাহার অজেয় পৌরুষ, তাঁহার অক্ষয় মনুষ্যত্ব, এবং যতই তাহা অনুভব করিব ততই আমাদের শিক্ষা সম্পূর্ণ ও বিধাতার উদ্দেশ্য সফল হইবে, এবং বিদ্যাসাগরের চরিত্র বাঙালির জাতীয়জীবনে চিরদিনের জন্য প্রতিষ্ঠিত হইয়া থাকিবে।
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। (চারিত্রপূজা - বিদ্যাসাগর-চরিত)
- বিদ্যার সাগর তুমি বিখ্যাত ভারতে।
করুণার সিন্ধু তুমি, সেই জানে মনে,
দীন যে, দীনের বন্ধু! —উজ্জল জগতে
হেমাদ্রির হেম-কান্তি অম্লান কিরণে।- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সম্পর্কে মাইকেল মধুসূদন দত্ত। (চতুর্দ্দশপদী-কবিতাবলি/ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর)
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

উইকিপিডিয়ায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।

উইকিমিডিয়া কমন্সে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।