তওবা

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

তওবা (আরবি: توبة) একটি আরবি শব্দ যার অর্থ অনুশোচনা করা, মহান আল্লাহতালার কাছে ফিরে আসা বা প্রত্যাবর্তন করা। কোরআন এবং হাদীসে শব্দটি আল্লাহর নিষেধকৃত বিষয়সমূহ ত্যাগ করা ও তার আদেশকৃত বিষয়সমূহর দিকে ফিরে আসা বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে। ইসলামী ধর্মতত্ত্বে শব্দটি নিজের কৃত পাপের জন্য অনুতপ্ত হওয়া, তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা, এবং তা পরিত্যাগের দৃঢ় সংকল্পকে বোঝায়।

যেহেতু কোরআনে এবং হাদীসে কৃত পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার বিষয়টি বারংবার উল্লেখ ও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে, সে কারণে ইসলামী ধর্তমত্ত্বে তওবার গুরুত্ব অনেক। তওবা ব্যাতিরেকে কবিরা গুনাহ মাফ হয় না। যে তওবার পর পাপকর্মের পুনরাবৃত্তি হয় না, তাকে বলে তওবাতুন নাসুহা বা খাঁটি তওবা।

উক্তি[সম্পাদনা]

  • আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘তোমরা প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য গুনাহ ছেড়ে দাও। নিশ্চয়ই যারা গুনাহ করে, অচিরেই তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের বদলা দেয়া হবে।
    • (সূরা আনআম, আয়াত: ১২০)
  • তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি ইরশাদ করেন, ‘আর আমি অবশ্যই ক্ষমাকারী তার জন্য, যে তাওবা করে, ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং হেদায়েত প্রাপ্ত হয়।
    • (সূরা ত্বাহা, আয়াত : ৮২)
  • আল্লাহ তাআলা মুমিন বান্দাদের তাওবার নির্দেশ দিয়েছেন, ‘হে ঈমানদারগণ তোমরা আল্লাহর নিকট তাওবা করো, খাঁটি তাওবা।
    • (সূরা তাহরিম, আয়াত: ০৮)
  • আল্লাহ যাদের ভালোবাসেন, তাওবাকারী তাদের অন্যতম। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন।
    • (সূরা বাকারা, আয়াত: ২২২)
  • মানুষমাত্রই পরিচ্ছন্ন ও সুখী জীবনের প্রত্যাশী। ঝামেলাহীন সম্মান-মর্যাদায় বেঁচে থাকতে চায় প্রতিটি ব্যক্তি। কিন্তু এ প্রত্যাশা পূরণে সবচেয়ে বড় বাধা আমাদের গুনাহ। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আর যে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ থাকবে, নিশ্চয়ই তার জীবন হবে সংকুচিত।
    • (সূরা ত্বাহা, আয়াত: ১২৪)
  • আল্লাহ আমাদের নির্দেশ করেছেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা সকলে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করো, তওবা করো, যেনো তোমরা সফলকাম হতে পারো, সার্থক হতে পারো।
    • (সূরা আল-নুর, আয়াত: ৩১)

হাদিস[সম্পাদনা]

  • হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ মরুভূমিতে হারিয়ে যাওয়া উট খুঁজে পেয়ে যতটা খুশি হও, আল্লাহ তাআলা তার বান্দার তাওবাতে এরচেয়েও বেশি খুশি হন।
    • (বুখারি, হাদিস নং: ৬৭০৯)
  • রাসুল (সা.) সে কথাই বলেছেন, ‘যে গুনাহ ছেড়ে তাওবা করলো, সে গুনাহহীন মানুষের মতোই।
    • (ইবনু মাজাহ, হাদিস নং: ৪২৫০)
  • রাসুল (সা.) বলেন, ‘সেই সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ, মানুষ যদি পাপ না করতো তবে আল্লাহ তাআলা মানবজাতিকে উঠিয়ে নিয়ে এমন এক সম্প্রদায়ের অবতারণা করতেন, যারা পাপ করত এবং পরে (নিজের ভুল বুঝতে পেরে) আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতো এবং আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দিতেন।
    • (মুসলিম, হাদিস নং: ৬৭১০)
  • রাসুল (সা.) সেদিকে সতর্ক করে বলেন, ‘একজন ঈমানদার ব্যক্তির নিকট তার পাপ হলো একটি পাহাড়ের মতো, যার নিচে সে বসে রয়েছে এবং সে আশঙ্কা করে যে, সেটি তার উপর পতিত হতে পারে। অন্যদিকে একজন দুষ্ট মানুষ তার পাপকে উড়ন্ত মাছির মতো মনে করে এবং সেটা অবজ্ঞা করে।
    • (বুখারি, হাদিস নং: ৬৩০৮)
  • হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ—আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে নিরাশ হয়ো না; নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
    • (সূরা যুমার, আয়াত: ৫৩)

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]