তিমি
অবয়ব
তিমি সিটাসিয়া বর্গভুক্ত জলজ স্তন্যপায়ী যারা না ডলফিন (অর্থাৎ এরা ডেলফিনিডে বা প্লটানিস্টয়িডে কোনটিরই সদস্য নয়) না শুশুক। যদিও তিমিকে প্রায়ই তিমি মাছ বলা হয়, এরা কিন্তু মোটেও মাছ নয়, বরং মানুষের মতই স্তন্যপায়ী প্রাণী।তিমিকে আরেকটি কারণেও মাছ বলা যায় না। সেটি হল, মাছেদের শ্বাস নেওয়ার জন্য ফুলকা থাকে, কিন্তু তিমির শ্বাস নেওয়ার জন্য থাকে ফুসফুস।
উক্তি
[সম্পাদনা]- মেরুর নিকটে যে-সকল সাগর আছে, তাহাতে বিস্তর তিমি থাকে। তিমির তেলে বাতি জ্বলে, কাজেই সেটা ভারি দরকারি জিনিস। এই তেলের ব্যবসায়ে বৎসরে প্রায় এক কোটি টাকা লাভ হয়, সেই টাকার লোভে ঢের লোক জাহাজে করিয়া তিমি শিকার করিতে যায়।
- উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র,বিবিধ প্রবন্ধ,তিমি শিকার পৃষ্ঠা ৮৬৯
- গোরু ঘোড়া শুকর কিছুতেই যাহাদের আপত্তি নাই তাহার যে তিমি খাইতে বেশি দিন আপত্তি করিবে, এরূপ বোধ হয় না। যাঁহারা ইহার মধ্যেই ও জিনিসটা খাইতে অভ্যাস করিয়াছেন, তাহার বলেন—চমৎকার মাংস। ইউরোপের বাজারে ইহাকে গো-মাংস বলিয়া চালাইলেও কেহ কোনো তফাত বুঝিবে কিনা সন্দেহ।
- সুকুমার রায় ,সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী ,পুণ্যলতা চক্রবর্তী, কল্যাণী কার্লেকর সম্পাদিত ,১৯৬০ (পৃ. ৩৪৬)
- তিমিকে যে গিলে, সে তিমিঙ্গিল। আমাদের দেশের পুরাতন পণ্ডিতেরা বলিয়াছেন, যে “তিমি মাছ একশত যোজন (৮০০ মাইল) লম্বা; তিমিঙ্গিল সেই তিমিকে গিলে। তিমিঙ্গি লকে গিলে এমন মাছও আছে, তাহাকে বলে রাঘব।
- উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র,বিবিধ প্রবন্ধ,তিমিঙ্গিল পৃষ্ঠা ৮৬১
- জানোয়ারের মধ্যে তিমি মাছ নাকি সবচেয়ে বেশি দিন বাঁচে। অনেকের মতে তিমি মাছ হাজার বৎসর বাঁচে—কিন্তু কথাটা কতদূর সত্য বলা যায় না। হাতি সাধারণত একশো বৎসর বেশ বাঁচতে পারে। গ্রীক রাজা আলেক্জাণ্ডার যখন এসেছিলেন তখন তিনি একটা হাতি এখান থেকে নিয়ে যান। সেটা নাকি সাড়ে তিনশো বৎসর বেঁচেছিল। কচ্ছপ আর কুমির খুব অনেক দিন বাঁচে, তার অনেক প্রমাণ আছে। আমেরিকার এক চিড়িয়াখানায় এক পোষা কুমির আছে তার বয়স দু-তিনশো বৎসরের কম নয়। সে এখনো বেশ মজবুত আছে।
- উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র,বিবিধ প্রবন্ধ,জানোয়ারের বয়স পৃষ্ঠা ৮৭১-৮৭২
- নিউজিল্যাণ্ডের উপকূলের কাছে এক জায়গায় ছোটোখাটো—অর্থাৎ মোটে বারো হাত লম্বা একটি তিমি আছে, তাহার বাড়ির কাছ দিয়া যত জাহাজ চলাফিরা করে সকলের সঙ্গেই সে আত্মীয়তা করিতে আসে। এইরকম সে কত বছর করিয়া আসিতেছে, কেন করে তাহা কেহ জানে না। জাহাজ হইতে যে-সকল খাবার জিনিস জলে ফেলা হয় তাহার কোনোটাই তাহার খাদ্য নয়-জাহাজের লোকেদের দ্বারা তাহার কোনোরকম উপকার হওয়াও সম্ভব নয়—অথচ সে প্রত্যেক জাহাজের সঙ্গে একবার খানিক দেখা না করিয়া ছাড়ে না।
- সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড),জীবজন্তর কথা,তিমির খেয়াল,পৃষ্ঠা ৩২০
- সাধারণ প্রয়ােগে রুই পুঁটি চিংড়ি তিমি সবই ‘মৎস্য’। কিন্তু পণ্ডিতরা যদি যুক্তি ক'রে স্থির করেন যে ‘মৎস্য’ বললে কেবল বােঝাবে-কান্কো-যুক্ত হাত-পা-বিহীন মেরুদণ্ডী অণ্ডজ (এবং আরও কয়েকটি লক্ষণ যুক্ত) প্রাণী, তবে ‘মৎস্য’ নাম পারিভাষিক হবে এবং চিংড়ি তিমিকে বৈজ্ঞানিক প্রসঙ্গে মৎস্য বলা চলবে না।
- রাজশেখর বসু ,লঘুগুরু প্রবন্ধাবলী ,১৯৩৯ (পৃ. ৯১)
- তাহাতে আর ভুল কি? দুটা একটা তিমি যে বঙ্গোপসাগরে না দেখা যায় এমন নহে; তাহার প্রমাণ তো জাদুঘরে গেলেই দেখা যায়। কিন্তু আমি এখানে পুঁথি খুলিয়া গল্প ফাঁদিতে বসি নাই, যাহা দেখিয়াছি, তাহাই বলিতে যাইতেছি, সুতরাং ‘সমুদ্রের সাপ’ (Sea Serpent) তিমি প্রভৃতির কথা বলার অবসর আমার হইবে না।
- উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র,বিবিধ প্রবন্ধ,পুরী ,পৃষ্ঠা ৯৯৫
- একদা একজন আমার রোপিত বৃক্ষের ফুল সকলের আকার যেন তিমি মৎস্যের ন্যায় হয়, ইহা বলিয়া বীজ রোপণ করিল, আর একজন মৎস্য নারীর আকারকে শ্রেষ্ঠ বোধ করিয়া তাহাই মনে করিয়া আপনার বীজ গুলীন রোপণ করিল, সর্ব্ব কনিষ্ঠা রাজতনয়া আপনার ক্ষেত্র মধ্যে সূর্য্যমণ্ডলের ন্যায় একটা গোলাকার করিয়া তাহাতে রক্ত বর্ণ ফুল ফুটে এমত বীজ রোপণ করিল, কারণ সমুদ্রের ভিতরে থাকিয়া সে সূর্য্যকে রক্ত বর্ণ দেখিয়া ছিল।
- হান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন ,মরমেত,পৃষ্ঠা ৯৯৫
- বিল একটু হিসেব ক’রে বললে— মিনিটে দশ হাজার, ঘণ্টায় ছ লাখ। কিন্তু চিন্তা করবেন না, আমার মাসী মারা গেলে আয় আর একটু বাড়বে। তাঁর পঁচিশটা বড় বড় পুকুর আছে, নোনা জলে ভরতি, তাতে তিমি মাছ কিলবিল করছে।
- কজ্জলী,স্বয়ংবরা ,পৃষ্ঠা ১৩৪
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]উইকিপিডিয়ায় তিমি সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।
উইকিঅভিধানে তিমি শব্দটি খুঁজুন।