বাঘ

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

বাঘ (Panthera tigris) বড় বিড়াল জাতের অন্তর্ভুক্ত একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী। সিংহ, চিতাবাঘ ও জাগুয়ারের সঙ্গে প্যানথেরা গণের চারটি বিশালাকার সদস্যের মধ্যে এটি সর্ব বৃহৎ ও শক্তিশালী প্রাণী। এটি ফেলিডি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত সবচেয়ে বড় প্রাণী। বাঘ ভারত ও বাংলাদেশ সহ মোট ৬ টি দেশের জাতীয় পশু। পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার অনেক এলাকায় একে দেখা যায়। 'অ্যানিম্যাল প্ল্যানেট' চ্যানেলের সমীক্ষা অনুযায়ী বাঘ বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রাণী।

বাঘ

উক্তি[সম্পাদনা]

  • এক ছিল মােটা কেঁদো বাঘ,

গায়ে তার কালো কালাে দাগ। বেহারাকে খেতে ঘরে ঢুকে আয়নাটা পড়েছে সমুখে। এক ছুটে পালালো বেহারা, বাঘ দেখে আপন চেহারা। গাঁ গাঁ করে ডেকে ওঠে রাগে, দেহ কেন ভরা কালাে দাগে?

    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ,চিত্রবিচিত্র ,১৯৯১ (পৃ. ৫৬)
  • তখন বাঘের আনন্দ দেখে কে। সে অমনি এসে শিয়ালের বাঁধন খুলে দিল। শিয়ালও আর দেরি না করে, তাকে ভালো মতো খোঁটায় বেঁধে বললে ‘এক কথা মামা। তোমার শালারা এসে তোমার সঙ্গে হাসি-তামাশা করবে। তাতে বা তুমি চটো?
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ,টুনটুনির বই ,১৯৬৪ (পৃ. ৮৫)
  • তা দেখে ঠাকুরমশাই বললেন, ‘আহা, বাঘটি তো বড় লক্ষ্মী! তুমি কি চাও বাপু?’বাঘ হাত জোড় করে বললে, ‘আজ্ঞে, একটি বার যদি এই খাঁচার দরজাটা খুলে দেন! আপনার দুটি পায়ে পড়ি।
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ,টুনটুনির বই ,১৯৬৪ (পৃ. ৫৮)
  • ছাগল কহিল, ভাই বাঘ! তুমি আমায় মাপ কর, আমি নীচে যাইতে পারিব না। আমি বুঝিতে পারিয়াছি, তুমি, আপন আহারের নিমিত্তে, আমায় নীচে যাইতে বলিতেছ, আমার আহারের নিমিত্তে নহে।
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ,কথামালা ,১৮৭৭ (পৃ.৭৯)
  • কাক দুষ্টু ফন্দি এঁটে সেই বাঘকে গিয়ে বললে, ‘বাঘমশাই, আমাদের ব্রাহ্মণঠাকুরের একটি সুন্দর মেয়ে আছে। আপনি এমন সুন্দর বর, আপনার সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে হলে বড় ভালো হয়।’ বাঘ বললে, ‘বিয়ে ঠিক করে দেবে কে? আমি কথা কইতে গেলে তে। তারা ছুটে পালাবে!’
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ,টুনটুনির বই ,১৯৬৪ (পৃ. ৬৩)
  • কদিন, এক নেকড়ে বাঘ খোঁযাড় হইতে একটি মেষশাবক লইয়া যাইতেছিল। পথিমধ্যে এক সিংহের সহিত সাক্ষাৎ হওয়াতে, সিংহ বলপূর্ব্বক ঐ মেষশাবক কাড়িয়া লইল; নেকড়ে, কিয়ৎক্ষণ স্তব্ধ হইয়া রহিল; পরে বলিল, “এ অতি অবিচার; তুমি অন্যায় করিয়া, আমার বস্তু কাড়িয়া লইলে।” সিংহ, শুনিয়া, ঈষৎ হাসিয়া বলিল, “তুমি যেরূপ কথা বলিতেছ, তাহাতে আমার বোধ হইতেছে, তুমি মেষশাবক অন্যায় করিয়া আন নাই; মেষপালক তোমায় উপহার দিয়াছিল।
    • কথামালা (১৯৪৪),সিংহ ও নেকড়ে বাঘ,(পৃ.৯৫)
  • এই সময়ে এক বাঘ সেইখান দিয়া যাইতেছিল। শিয়ালের কথা শুনিয়া সে ভাবিল, ‘আহা, এই শিয়ালটি কি ধামিক! আমি ইহাকে আমার মন্ত্রী করিব।’ এই ভাবিয়া সে শিয়ালকে বলিল, “আমি বুঝতে পারিতেছি তুমি অতি সৎলোক। তুমি আমার মন্ত্রী হও।”
    • উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র,মহাভারতের কথা,বাঘ আর শিয়ালের কথা ,(পৃ.৬৩৯)
  • যোগীন বললে, এই বাঘিনীটির নাম রামপিয়ারী। রামখেলাওন আর রামপিয়ারী দুটোই বছর দুই আগে গয়া জেলার গড়বড়িয়ার জঙ্গলে ধরা পড়ে। এদের দস্তুর মত মন্ত্র পড়িয়ে বিবাহ হয়েছিল, কিন্তু মনের মিল হল না, তাই আলাদা খাঁচায় রাখতে হয়েছে।
    • রাজশেখর বসু ,কৃষ্ণকলি ইত্যাদি গল্প ,১৯৫৩ (পৃ. ২২)
  • অবশেষে এক দিন, সত্য সত্যই, বাঘ আসিয়া তাহার পালের গোরু আক্রমণ করিল। তখন রাখাল, নিতান্ত ব্যাকুল হইয়া, বাঘ আসিয়াছে বলিয়া, উচ্চৈঃ স্বরে মুহুর্মুহুঃ চীৎকার করিতে লাগিল। কিন্তু সে দিবস, এক প্রাণীও তাহার সাহায্যার্থে উপস্থিত হইল না। সকলেই মনে করিল, ধূর্ত্ত রাখাল, পূর্ব্ব পূর্ব্ব বারের মত, বাঘ আসিয়াছে বলিয়া, আমাদের সঙ্গে তামাসা করিতেছে। বাঘ ইচ্ছামত পালের গোরু বধ করিল, এবং অবশেষে, রাখালের প্রাণ সংহার করিয়া, চলিয়া গেল।
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ,কথামালা ,১৮৭৭ (পৃ.২৯)
  • একটা বাঘ রোজ রাত্রে বুড়ীর ঘরের পিছনে এসে বসে থাকত। বুড়ী তা টের পেয়ে, রাত্রে কখনো ঘরের বাইরে আসত না, তার নাতনীকেও আসতে দিত না। কিন্তু নাতনীটি জোলার কাছে তার ঘোড়ার ডিমের কথা একটু শুনতে পেয়েছিল, তার কথা ভালো করে শুনবার জন্যে সে আবার তার কাছে যেতে চাইল। তখন বুড়ী তাকে বললে, ‘না-না, যাস্‌নে! বাঘে-টাগে ধরে নেবে।’
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ,টুনটুনির বই ,১৯৬৪ (পৃ. ৭০)
  • শিয়ালনী বললে, ‘বাঘ যদি আসে তখন কি হবে?’ শিয়াল বললে, তখন তুমি খুব করে ছানাগুলির গায় চিমটি কাটবে। তাতে তারা চেঁচাবে, আর আমি জিগগেস করব—ওরা কাঁদছে কেন? তখন তুমি বলবে—ওরা বাঘ খেতে চায়।’
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ,টুনটুনির বই ,১৯৬৪ (পৃ. ১০৫-১০৯)

বাঘ সম্পর্কে উক্তি[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]