বাঁশ-বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই,
মাগো আমার শোলক্-বলা কাজলা দিদি কই?
পুকুর ধারে লেবুর তলে,
থোকায় থোকায় জোনাক জ্বলে, ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না, একলা জেগে রই,
মাগো আমার কোলের কাছে কাজলা দিদি কই?
কাজলা দিদি
•
বল্ মা দিদি কোথায় গেছে, আসবে আবার কবে?
কাল যে আমার নতুন ঘরে পুতুল বিয়ে হবে!
দিদির মত ফাঁকি দিয়ে
আমিও যদি লুকাই গিয়ে
তুমি তখন একলা ঘরে কেমন ক'রে রবে?
আমিও নাই—দিদিও নাই—কেমন মজা হবে!
‘চোখ গেল ঐই চেঁচিয়ে হ’ল সারা।
আচ্ছা দিদি, কি করবে ভাই তারা —
জন্ম লাগি গিয়েছে যার চোখ !
কাঁদার সুখ যে বারণ তাহার — ছাই!
কাঁদতে গেলে বাঁচত সে যে ভাই,
কতক তবু কমত যে তার শোক!
’চোখ’ গেল– তার ভরসা তবু আছে—
চক্ষুহীনার কী কথা কার কাছে !
অন্ধ বধূ
•
ফুলসজ্জায় লজ্জায় যাইনা’ক,
পুষ্পমালায় নাহিক আমার স্থান;
প্রিয়-উপহারে ভুলেও কি মোরে ডাক ?
বিবাহ-বাসরে থাকি আমি ম্রিয়মাণ।
মোর ঠাঁই শুধু দেবের চরণতলে,
পূজা, শুধু পূজা জীবনের মোর ব্রত;
তিনিও কি মোরে ফিরাবেন আঁখিজলে—
অন্তরযামী, তিনিও তোমারি মতো !