শক্তি চট্টোপাধ্যায়

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

শক্তি চট্টোপাধ্যায় (২৫ নভেম্বর ১৯৩৩ – ২৩ মার্চ ১৯৯৫) ছিলেন ভারতীয় বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, লেখক ও অনুবাদক।

উক্তি[সম্পাদনা]

প্রভু, নষ্ট হয়ে যাই (১৯৭২)[সম্পাদনা]

   

মানুষের আর কোনো বিশিষ্ট কর্তব্য নেই
নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা ব্যতীত বা
পরোক্ষে মরণ!

প্রভু, নষ্ট হয়ে যাই (১৯৭২)
   

মানুষের সঙ্গে আর মেলামেশা সঙ্গতও নয়—
মনে হয়, এর চেয়ে কুকুরের শ্লেষ্মাও মধুর

প্রভু, নষ্ট হয়ে যাই (১৯৭২)

অন্যান্য[সম্পাদনা]

   

ধর্মে আছো জিরাফেও আছো

ধর্মে আছো জিরাফেও আছো (১৯৬৫)
   

বেশ কিছুদিন সময় ছিলো–সুদুঃসময় ভাঙতে
গড়তে কিছু, গড়নপেটন–তার নামই তো কান্তি?
এ সেই নিশ্চেতনের দেশের শুরু না সংক্রান্তি–
তোমার হাত যে ধরেইছিলাম তাই পারি নি জানতে।

"তোমার হাত যে ধরেইছিলাম", সোনার মাছি খুন করেছি (১৯৬৭)
   

কিছু কাঠকুটো আমি উঠোনে রেখেছি
কাচের বয়ামে আছে পুরাতন ঘৃত
তাহলে তো মূর্ছা নয়, মানুষটি মৃত।

"মানুষটি মৃত", আমাকে দাও কোল (১৯৮০)
   

একটি চেনা পাথর পড়ে আছে
পরনে তার অসংখ্য মৌমাছি
ভিতরে মৌ–কী জানি কার কাছে
ভালোবাসার অমল মালাগাছি?

"চেনা পাথরের জন্যে", অঙ্গুরী তোর হিরণ্যজল (১৯৮০)
   

যেতে পারি
যে-কোন দিকেই আমি চলে যেতে পারি
কিন্তু, কেন যাবো?

"যেতে পারি, কিন্তু কেন যাবো?", যেতে পারি কিন্তু কেন যাবো (১৯৮২)
   

জন্মদিনে কিছু ফুল পাওয়া গিয়েছিলো।
অসম্ভব খুশি হাসি গানের ভিতরে
একটি বিড়াল একা বাহান্নটি থাবা গুনে গুনে
উঠে গেলো সিঁড়ির উপরে

"জন্মদিনে", ও চিরপ্রণম্য অগ্নি (১৯৮৫)
   

ভালোবাসা নিয়ে কিছু বিবাদ করেছো,
কাতর পাথর মিছু বিবাদ করেছো!

"বিবাদ", বিষের মধ্যে সমস্ত শোক (১৯৮৭)
   

একপ্রান্তে জনপদ অন্যপ্রান্ত জনশূণ্য
দুদিকেই কূল, দুদিকেই এপার-ওপার, আসা-যাওয়া, টানাপোরেন –
দুটো জন্মই লাগে
মনে মনে দুটো জন্মই লাগে

"মনে মনে বহুদূর চলে গেছি"
   

আধেকলীন হৃদয়ে দূরগামী
ব্যথার মাঝে ঘুমিয় পড়ি আমি
সহসা শুনি রাতের কড়ানাড়া
অবনী বাড়ি আছ?’

"অবনী বাড়ি আছো"
   

সকল প্রতাপ হল প্রায় অবসিত…
জ্বালাহীন হৃদয়ের একান্ত নিভৃতে
কিছু মায়া রয়ে গেলো দিনান্তের,
শুধু এই –
কোনোভাবে বেঁচে থেকে প্রণাম জানানো
পৃথিবীকে।

"কিছু মায়া রয়ে গেলো"
   

এক অসুখে দুজন অন্ধ!
আজ বাতাসের সঙ্গে ওঠে, সমুদ্র, তোর আমিষ গন্ধ।

"এক অসুখে দুজন অন্ধ"
   

ছেলেটা খুব ভুল করেছে শক্ত পাথর ভেঙে
মানুষ ছিলো নরম, কেটে, ছড়িয়ে দিলে পারতো।
পথের হদিস পথই জানে, মনের কথা মত্ত...
মানুষ বড় শস্তা, কেটে, ছড়িয়ে দিলে পারতো!

   

ছড়া এক্কে ছড়া, ছড়া দুগুণে দুই
ছড়ার বুকের মদ্দিখানে পান্‌সি পেতে শুই।
ধানের ছড়া গানের ছড়া ছড়ার শতেক ভাই
ছড়ার রাজা রবিন ঠাকুর, আর রাজা মিঠাই।

"ছড়ার আমি ছড়ার তুমি", মিষ্টি কথায়, বিষ্টিতে নয় (১৯৮৫)
   

পা থেকে মাথা পর্যন্ত টলমল করে, দেয়ালে দেয়াল, কার্নিশে কার্নিশ,
ফুটপাত বদল হয় মধ্যরাতে
বাড়ি ফেরার সময়, বাড়ির ভিতর বাড়ি, পায়ের ভিতর পা,
বুকের ভিতর বুক
আর কিছু নয়— (আরো অনেক কিছু?) — তারও আগে
পা থেকে মাথা পর্যন্ত টলমল করে, দেয়ালে দেয়াল, কার্নিশে কার্নিশ
ফুটপাত বদল হয় মধ্যরাতে
বাড়ি ফেরার সময়, বাড়ির ভিতর বাড়ি, পায়ের ভিতর পা, বুকের ভিতরে বুক
আর কিছু নয়।

"সে বড়ো সুখের সময় নয়, সে বড়ো আনন্দের সময় নয়"
   

আজকে তোমার ভিতর-বাইরে বিষম যুদ্ধ পুবের হাওয়া।

   

রূপোলি মাছ পাথর ঝরাতে ঝরাতে চলে গেলে
একবার তুমি ভালবাসতে চেষ্টা করো

  • এত কবি কেন?
    • আনন্দবাজার পত্রিকা, ২ অগাস্ট ১৯৮৭


বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]