শম্ভু মিত্র

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

শম্ভু মিত্র (২২ আগস্ট ১৯১৫ – ১৯ মে ১৯৯৭) বাংলা তথা ভারতীয় নাট্যজগতের এক কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব, স্বনামধন্য আবৃত্তিশিল্পী ও চলচ্চিত্র অভিনেতা ছিলেন। ১৯৩৯ সালে বাণিজ্যিক নাট্যমঞ্চে যোগ দেন। পরে ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সদস্য হন। ১৯৪৮ সালে মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে গড়ে তোলেন নাট্যসংস্থা বহুরূপী। ১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বহুরূপীর প্রযোজনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সফোক্লিস, হেনরিক ইবসেন, তুলসী লাহিড়ী এবং অন্যান্য বিশিষ্ট নাট্যকারের রচনা তাঁর পরিচালনায় মঞ্চস্থ হয়। শম্ভু মিত্রের স্ত্রী তৃপ্তি মিত্র ও কন্যা শাঁওলী মিত্রও স্বনামধন্য মঞ্চাভিনেত্রী। শাঁওলি মিত্রের নাট্যসংস্থা পঞ্চম বৈদিকের সঙ্গে আমৃত্যু যুক্ত ছিলেন শম্ভু মিত্র। তাঁর পরিচালনায় উল্লেখযোগ্য নাটকগুলি হল নবান্ন, দশচক্র, রক্তকরবী, রাজা অয়দিপাউস ইত্যাদি। তাঁর রচিত নাটকের মধ্যে চাঁদ বণিকের পালা সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য। ১৯৭৬ সালে নাটক ও সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য তাঁকে ম্যাগসেসে পুরস্কার ও ভারত সরকারের পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত করা হয়।

উক্তি[সম্পাদনা]

  • “আমি সামান্য মানুষ, জীবনে অনেক জিনিষ এড়িয়ে চলেছি। তাই মরবার পরেও আমার দেহটা যেন তেমনি নীরবে, একটু ভদ্রতার সঙ্গে, সামান্য বেশে, বেশ একটু নির্লিপ্তির সঙ্গে পুড়ে যেতে পারে।”  — শম্ভু মিত্র, [১]


  • “স্বপ্ন তো দেখতেই হবে। স্বপ্নগুলো সব কাচের মতো ভেঙে গুঁড়িয়ে গেছে। আবার সেগুলো তো জড়ো করতে হবে।”  — শম্ভু মিত্র, [২]


  • “এতো প্রচণ্ড জীবনীশক্তি একটা মানুষের থাকে কি করে? তিনিই আমাদের প্রথম নির্দেশক। আমার অনুমান সমগ্র ভারতবর্ষের প্রথম নির্দেশক যিনি মঞ্চের ছবি কল্পনা করেছেন। যিনি আলো, দৃশ্যপট, অভিনয় দিয়ে থিয়েটরের একটা সামগ্রিক রূপ প্রথম এই দেশে এনেছিলেন।”  — শম্ভু মিত্র, [৩]


  • “একটা কেন্নো অন্ধের মতো কেবলই বাঁচবার চেষ্টা করছে, আর কেউ কাঠি দিয়ে তাকে নর্দমার মধ্যে ফেলে দিতে চাইছে। আবার সে শক্তি সংগ্রহ করে ওপরে উঠে আসছে। আবার কেউ তাকে ফেলে দিচ্ছে। এই রকম করেই তো বাঁচা।”  — শম্ভু মিত্র, [৪]

শম্ভু মিত্র সম্পর্কে উক্তি[সম্পাদনা]

  • “মুখস্থ করার নেশা এবং ক্ষমতা এতটাই ছিল যে, ‘সঞ্চয়িতা’ কিংবা তারও পূর্বে প্রকাশিত ‘চয়নিকা’, গোটাটাই মুখস্থ হয়ে গিয়েছিল। কোন পৃষ্ঠায় কোন কবিতা আছে তা পর্যন্ত বলে দিতে অসুবিধা ছিল না। যেন এর চেয়ে সহজ কাজ আর নেই পৃথিবীতে”  — শাওলি মিত্র [৫]


  • “গণনাট্য আন্দোলন থেকে এলেই যে হল না, নাট্য প্রযোজনা বা অভিনয়ের ক্ষেত্রে পেশাদারি সূক্ষ্মতারও বিরাট প্রয়োজন আছে, এই সত্যটি তিনি-ই সকলের চোখের সামনে তুলে ধরলেন।”  — উৎপল দত্ত, [৬]


  • “এইভাবেই নবনাট্য আন্দোলন শম্ভু মিত্র ও বহুরূপীর হাত ধরে এগিয়ে গিয়েছিল অনেকখানি। সেই আন্দোলনকেই আজ আমরা গ্রুপ থিয়েটার আন্দোলন বলে জানি।”  — বিভাস চক্রবর্তী, [৭]


  • “আমার মনে হত শম্ভু মিত্র ভীষণ অভিমানী, নরম মনের এক জন শিল্পী-মানুষ। প্রকৃত শিক্ষক। বিশ্বাস করতেন, ভাল কাজ করার জন্য আগে এক জন ভাল মানুষ হওয়া দরকার। এই শিক্ষাই আমি পেয়েছিলাম বহুরূপীতে এসে।”  — চৈতি ঘোষাল, [৮]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]