কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক, কে বলে তা বহু দূর,
মানুষের মাঝে স্বর্গ-নরক, মানুষেতে সুরা-সুর।
রিপুর তাড়নে যখনই মোদের বিবেক পায় গো লয়,
আত্মগ্লানির নরক অনলে তখনি পুড়িতে হয়।
প্রীতি-প্রেমের পুণ্য বাঁধনে যবে মিলি পরস্পরে,
স্বর্গ আসিয়া দাঁড়ায় তখন আমাদেরই কুঁড়ে ঘরে।
স্বর্গ ও নরক
•
শত শত ক্রোশ করিয়া ভ্রমণ জ্ঞানীর অন্বেষণে,
সহসা একদা পেল সে প্রবীণ কোনো এক মহাজনে।
শুধাল, ”হে জ্ঞানী! আকাশের চেয়ে উচ্চতা বেশি কার?”
জ্ঞানী বলে, ”বাছা, সত্যের চেয়ে উঁচু নাহি কিছু আর।”
তুলনায় সমালোচনা
•
আর্দ্র মহীতলে হেথা চির নিদ্রাগত
ব্যথাতুর দীন কবি, অফুরন্ত সাধ
ভুলে যাও একটি তার জনমের মতো
হয়তো সে করিয়াছে শত অপরাধ
পান্থপদ রেণুপুত এ শেষ ভবন
হতে পারে তার ভাগ্যে সুখের নন্দন।
এপিটাফ
•
পেটের ক্ষিদে মেটে না যার
এই রাতে ঠাঁই কোথা তার?
বাঁচতে হলে লাঙ্গল ধর রে
আবার এসে গাঁয়।
গাঁয়ের ডাক
•
প্রতিবেশীগণ প্রবীর খৃস্টে কহিল মিনতি করি,
তোমার লাগিয়া দিতে চাই প্রভু, সাধন-সৌধ গড়ি।
খৃস্ট কহেন, গড়ে দাও তবে স্রোতের উপরে ঘর
লোকে বলে, উহা হয় কি কখনো? অসম্ভব ঘোরতর।
মিষ্ট মধুর হাসিয়া প্রেমিক কহিল, বন্ধুগণ
সংসার সুখ-বাসনা পুষিয়া অন্তরে কোন জন
ভজনা করিলে, সে ভজন হয় ব্যর্থ, বিফল তার;
তরুতল মোর সবচেয়ে ভালো, নাহি চাই ঘরদ্বার।
সাধন-সৌধ
•
জিব্রাইল জিজ্ঞাসিল নূহ পয়গাম্বরে
‘বলো, বলো বর্ষীয়ান, দয়া করে মোরে
এত বর্ষ আয়ু তব হলো বসুধার
কেমন দেখিলে তুমি বলো না ইহার?’
নূহ বলে, ‘মহাত্মন, কী বলিব আর
দেখিলাম, এক গৃহ, তার দুটি দ্বার,
এক দ্বার দিয়া জীব প্রবেশ করিয়া
অন্য দ্বারপথে সবে যেতেছে চলিয়া।’