সওয়াব

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

সওয়াব (আরবি: ثواب) একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ "পুরস্কার"। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, সওয়াব বলতে ভাল কাজ এবং আল্লাহ্‌র প্রতি ভক্তির প্রতিদান স্বরূপ আধ্যাত্মিক পুরস্কারকে বোঝায়।

উক্তি[সম্পাদনা]

  • সওয়াব’ একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ হলো প্রতিদান। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি দুনিয়ার প্রতিদান চাইবে, আমি তাকে তার অংশ দিয়ে দেব। আর যে ব্যক্তি পরকালের প্রতিদান চাইবে, আমি তাকে তার অংশ দিয়ে দেব। আর যারা কৃতজ্ঞ, আমি শিগগিরই তাদেরকে তাদের পুরস্কার দিয়ে দেব।
    • (সূরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৪৫)
  • নিয়ত ছাড়া কোনো কাজে সওয়াব মেলে না। কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, ‘তাদের কেবল এই আদেশই করা হয়েছিল যে তারা আল্লাহর ইবাদত করবে, খালেস ও একনিষ্ঠভাবে তাঁরই আনুগত্য করবে এবং নামাজ কায়েম করবে ও জাকাত দেবে। আর এটাই সরল-সঠিক দ্বীন।
    • (সূরা : বায়্যিনাহ, আয়াত : ৫)
  • নামাজ, রোজা, হজ, সদকা, কোরআন তিলাওয়াত, জিকির ইত্যাদি আদায় করে অন্যকে সওয়াব পাঠানো যায়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘নিজের ও সব মুমিন-মুমিনার জন্য ক্ষমা চাও।
    • (সূরা : মুহাম্মদ, আয়াত : ১৯)

হাদিস[সম্পাদনা]

  • রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি শয়নকালে রাত্রিবেলায় তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার নিয়ত করে শুয়েছে, কিন্তু অতিরিক্ত ঘুমের চাপে ভোর হয়ে গেছে, সে তার নিয়ত অনুযায়ী সওয়াব পাবে। তার ঘুমই আল্লাহর পক্ষ থেকে সওয়াব হিসেবে গণ্য হবে।
    • (নাসাই শরিফ : ৩/২৫৮)
  • কাফির ব্যক্তি কি সওয়াবের অধিকারী হবে? পরকালে কোনো ভালো কাজের প্রতিদান পাওয়ার জন্য ইমান আনয়ন করা পূর্বশর্ত। ইমান ছাড়া যত ভালো কাজই করুক না কেন, আল্লাহ তাআলার কাছে তা অগ্রাহ্য হবে। ইমান না এনে পরকালে প্রতিদান পাওয়ার আশা করা অনর্থক। তবে কাফিরদের ভালো কাজের প্রতিদান দুনিয়ায় দিয়ে দেওয়া হয়। এর প্রতিদান কোনো না কোনোভাবে তারা দুনিয়ায় পেয়ে যাবে।
    • (শরহে মুসলিম: ১৭/১৫০, ফাতাওয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত: ১/১৬৬)
  • রাসুল (সা.) হজরত ওমর ইবনুল আস (রা.)-কে তাঁর পিতার সম্পর্কে বলেন, ‘যদি তিনি মুসলমান হতেন, আর তুমি তাঁর পক্ষ থেকে গোলাম আজাদ করতে, সদকা প্রদান করতে ও হজ আদায় করতে, তাহলে তিনি সে সওয়াব পেতেন। কিন্তু তিনি মুসলমান না হয়ে মারা যাওয়ার কারণে এসব করলে তাঁর কোনো উপকার হবে না।
    • (আবু দাউদ, হাদিস : ২৮৮৩)
  • রাসুল (সা.) দুটি সাদা-কালো রঙের বকরি কোরবানি করেছিলেন। একটি নিজের পক্ষ থেকে অন্য উম্মতের সওয়াবের উদ্দেশ্যে।
    • (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ : ৪/২২)
  • হজরত আমর ইবনুল আস (রা.)-কে লক্ষ্য করে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলমানের পক্ষ থেকে তুমি গোলাম আজাদ করলে, সদকা করলে ও হজ করলে সে তার সওয়াব পাবে। হাদিস উল্লিখিত আয়াত ও হাদিস থেকে বোঝা যায় যে নিজে আমল করেও অন্যকে সওয়াব পৌঁছানো যায়।
    • (আবু দাউদ, হাদিস : ২৮৮৩)
  • আল্লাহ তাআলা এতই মেহেরবান যে তিনি কোনো কারণে আমাদের ওপর আপতিত বিপদাপদের বিনিময়েও সওয়াব দিয়ে থাকেন। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘মুসলিম ব্যক্তির ওপর যেসব বিপদাপদ আসে, এর মাধ্যমে আল্লাহ তার পাপ মাফ করে দেন। এমনকি শরীরে কাঁটা ফুটলেও এর কারণে পাপ মোচন হয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৬৪০) মুসতাদরাকে হাকেমের একটি বর্ণনায় আছে, ‘তার জন্য একটি নেকি লেখা হবে এবং তার মর্যাদা এক ধাপ বৃদ্ধি করা হবে।’ (হাদিস : ১২৮৪)
  • মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘মুসলিম ব্যক্তির ওপর যে কষ্ট-ক্লেশ, রোগ-ব্যাধি, উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানি আসে, এমনকি যে কাঁটা তার দেহে বিদ্ধ হয়, এসবের মাধ্যমে আল্লাহ তার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেন।
    • (বুখারি, হাদিস : ৫৬৪১)

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]