সন্দীপ গোস্বামী

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

সন্দীপ গোস্বামী ভারতীয় বাঙালি কবি,লেখক,সমালোচক, সংবাদ বিশ্লেষক

উক্তি[সম্পাদনা]

  • "তুমি আমায় ভালো মানুষ ভাব বলেই আমি ভালো মানুষ । তুমি আমার সৃষ্টিকে উপভোগ করো বলেই আমি সৃষ্টি করি । তুমি আমার কবিতাকে অন্তর থেকে ভালবাস বলেই আমি কবি । তুমি আমার হৃদয়ে আছ বলেই আমার হৃৎস্পন্দন এখনও থেমে যায়নি । তবু আমার মৃত্যু নিশ্চিত, তুমি অমর ।" সন্দীপ গোস্বামী, সন্দীপনী এবং পথ
    • "ধর্ম যখন হিংস্র হয়ে ওঠে, রাজনীতি হারায় বিশ্বাসযোগ্যতা, বিচারের বাণী নীরবে কাঁদে, জনগণের আচরণে উশৃঙ্খলতা! এই মাহেন্দ্রক্ষণে জন্ম নেয় বিপ্লব অর্থাৎ আমূল-পরিবর্তন।" সন্দীপ গোস্বামী, সন্দীপনী এবং পথ

"জীবন রহস্যময়! এই রহস্যময়তার বাইরে থাকে সামাজিক খোলস। সেই খোলস ভেদ করে ঢুকতে পারে শুধুমাত্র কবি চোখ! সেই কবি চোখ প্রকৃতির প্রেরণায় লিখতে থাকে অবিশ্বাস্য কবিতা, গল্প, আখ্যান! কত সহজে ঋদ্ধিমান পাঠকের চৈতন্যে পৌঁছে দেন অজ্ঞাতনামা মানুষদের দর্শন, সংগ্রাম, প্রেম, যন্ত্রণার নির্যাস! প্রান্তিক মানুষদের কেন্দ্রে নিয়ে আসার এই প্রচেষ্টাই উত্তর আধুনিকতা। কোন ধনী নয়,নেতা নয়, সেলিব্রিটি নয়, তাই যুগে যুগে পূজিত হন এই ক্ষণজন্মা দ্বিতীয় ঈশ্বরেরা... বই পড়তে হয়, বই আমাদের অতীতের মহামানবদের সাথে নিবিড় সম্পর্ক সৃষ্টি করে। তাঁদের অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষা খুব সুন্দরভাবে পাঠকের অন্তর জয় করে।" সন্দীপ গোস্বামী, সন্দীপনী এবং পথ

"ক্ষমতা মানুষকে শয়তান বানায়, সাধু নয় । তাই ক্ষমতাবান মানুষদের থেকে শত মাইল দূরে থাকি । ক্ষমতাহীন মানুষেরাই আমার সেলিব্রেটি । আমি তাঁদের ভালোবাসি, অনুসরণ করি । তাঁদের ছোট ছোট আশা, নিরাশা, ভালোবাসা, যন্ত্রণা কান পেতে শুনি । তাঁদের ব্যথা হয়ে উঠতে চায় আমার কথা ।" সন্দীপ গোস্বামী, সন্দীপনী এবং পথ

"আমার জন্মস্থান নবদ্বীপ, প্রেম এবং ভক্তির প্রাণকেন্দ্র । এখানকার আকাশে তাকালে স্পষ্ট দেখতে পাই নক্ষত্র হয়ে জ্বলজ্বল করছেন কবি ভট্টনারায়ন, জয়দেব, কৃত্তিবাস, দ্বিজ চণ্ডীদাস, কৃষ্ণদাস কবিরাজ, ভারতচন্দ্র, রামপ্রসাদ, লালন ফকির, দ্বিজেন্দ্রলাল, বিজয়লাল, সুকুমার ঘোষ প্রমুখ...পথের ধূলায় ছড়িয়ে আছে বাসুদেব সার্বভৌম, অদ্বৈত আচার্য, শ্রীচৈতন্যদেব, শ্রীনিত্যানন্দ, যবন হরিদাস প্রমুখ ভক্তবৃন্দের পদরেণু...বাতাস জুড়ে কীর্তন, পদাবলী, আজানের মর্মভেদী আর্তনাদ, গির্জার অভিজাত ঢং ঢং শব্দ তরঙ্গ আমায় পবিত্র করে তোলে...ভাগীরথী এবং জলঙ্গির ধারায় বয়ে যায় প্রাচীন ইতিহাস, মানবতা, কবিতা...কে যেন আমায় বলে, 'তুমি একা নও, আমরা তোমার সাথে ছিলাম, আছি, চিরকাল থাকব...' আমার একাকিত্ব দূর হয়ে যায় ।" সন্দীপ গোস্বামী, সন্দীপনী এবং পথ

"জন্মদিন সেই বিশেষ দিন, দীর্ঘ মাতৃগর্ভের অন্ধকার, অন্ধত্ব, যন্ত্রণা ত্যাগ করে মুক্তির জগতে আবির্ভূত হওয়া। জন্মদিন সেই বিশেষ দিন, যেদিন নিজেকে বারবার প্রশ্ন করতে হয়, আমি কে? কেন এখানে এলাম? আমার জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য কি? আমাদের জীবনে দুটি দিন স্থির, জন্মদিন এবং মৃত্যুদিন। জীবিত অবস্থায় আমরা শুধু জন্মদিন উদযাপন করতে পারি। তাই এর গুরুত্ব অপরিসীম। বছরের এই একটি দিনে খুলে ফেলতে হয় আমাদের মাল্টিপল মুখোশ। মুখোশের নীচে থাকা নিজের মানুষকে খুঁজে আনতে হয়। সেই মানুষকে এই বিশেষ দিনে যত্ন নিতে হয়, বাঁচিয়ে রাখতে হয়। এই বিশেষ দিনে শিশুদের জড়িয়ে, ওদের আনন্দময় কোলাহলে নিজের অন্তরের শিশুটিকে পুনরুদ্ধার করতে হয়। এই বিশেষ দিনে নিজেকে একবার চিনতে পারলে আর কোন ভয় থাকেনা।" সন্দীপ গোস্বামী, সন্দীপনী এবং পথ

"শিশুবেলা থেকে মানুষে মানুষে কত ধরনের বিভেদ দেখে আসছি! যেমন বাঙাল-ঘটি বিভেদ! একবারও কি ভেবেছি বাঙালের মতো দিলদরিয়া আর ঘটির মতো সংযত কি করে হওয়া যায়! এরপর শুনলাম জাতপাত। একবারও ভেবেছি কিভাবে ব্রাহ্মণের মতো পরের হিত কামনা করতে হয়, কিভাবে ক্ষত্রিয়ের মতো নিজের জীবন দিয়ে দেশ এবং জাতিকে বাঁচাতে হয়, কিভাবে বৈশ্যের মতো বিলাসবহুল প্রাসাদ ছেড়ে দোকানের চার দেওয়ালে বন্দী থেকে দেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হয়, একবারও কি ভেবেছি শুদ্রের মতো অক্লান্ত পরিশ্রম করে কিভাবে মানুষের সেবা করতে হয়! এখন চলছে হিন্দু এবং মুসলমানদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। একবারও ভেবেছি কিভাবে মুসলমানদের মতো ধর্মপ্রাণ হয়ে ওঠতে হয়, কিভাবে হিন্দুদের মতো ধর্মকে সর্বজনীন আনন্দোৎসব করে তুলতে হয়! আবার কেউ কেউ নারী এবং পুরুষদের মধ্যে বিভেদ লাগানোর চেষ্টা করছে। অথচ একবারও নারীর মতো কোমল এবং পুরুষের মতো উদার হতে আমরা শিখিনি!" সন্দীপ গোস্বামী, সন্দীপনী এবং পথ

"একটি নাটক তার নাট্যকর্মীদের কতখানি মনুষ্যত্বের শিক্ষা দিতে পারল, তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হয়ে ওঠে দর্শকাসনে কোনো তরুণ-তরুণীর সমগ্র জীবনধারা বদলে দিতে পারায়। থিয়েটার নিজে সফল হয়ে জয়লাভ করে, তার থেকেও অন্য মানুষদের সফল করে সে ইতিহাস হয়ে যায়। এইখানে থিয়েটারের ঐতিহাসিক অবদান...তাই মঞ্চস্থ হয় নাটকের পর নাটক, এক চরিত্র থেকে অন্য চরিত্র। এই রহস্যময় খেলা চলতে থাকে ভিন্ন ভিন্ন কালে, ভিন্ন ভিন্ন স্থানে, ভিন্ন ভিন্ন পাত্রে, ভিন্ন ভিন্ন রুচিতে, কিন্তু অভিন্ন থেকে যায় শুধু থিয়েটার। এইখানেই থিয়েটারের মাধুর্য।" সন্দীপ গোস্বামী, নদিয়ার নাট্যচর্চা : সেকাল-একাল

"কবিতা কী শুধুই কবির প্রলাপ, বিলাপ, যন্ত্রণা, প্রতিবাদ, ভালোবাসা ! এর বাইরে কী কবিতার থেকে কিছুই পাওয়া যায় না? আমরা যে ইতিহাস পড়ি তা অর্ধসত্য । উল্লেখযোগ্যতার বাইরে ইতিহাস পঙ্গু । ইতিহাস লিখতে চায় না সাধারণ মানুষের বর্ণহীন অবদানের কাহিনী । এইখানেই কবিতার অবদান । কবিতা অতি সাধারণ মানুষদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ছন্দ প্রান্তিক থেকে কেন্দ্রে পৌঁছে দেয় । তাই কবিতাকে বাদ দিয়ে ইতিহাস অসম্পূর্ণ । কবিতাকে বাদ দিয়ে বিজ্ঞানও সম্পূর্ণ নয় । বহুমাত্রিক কবিতার অন্তরে বিজ্ঞানীরা সন্ধান করছেন বিজ্ঞানের অজানা রহস্য । মনোবিজ্ঞানের অনেক থেরাপি কবিতার ছন্দকে আপন করে নিয়েছে । আর কবিতাকে ছাড়া সংগীত কী মনকে দোলা দিতে পারে ! আজও পৃথিবীর আলোকিত অন্ধকারে কবিরা নিষ্ঠার সাথে লিখে চলেছেন মানব সভ্যতার প্রকৃত ইতিহাস । যা প্রেমময় পূর্ণসত্য !" সন্দীপ গোস্বামী, সন্দীপনী এবং পথ

"বয়স যত বাড়ে মানুষ আরও বেশি করে প্রেমিক হয়ে যায়। কখনও নীরবতা, কখনও কোলাহল, কখনও স্মৃতির পাতায় সে খোঁজে হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জনদের, আপনজনদের...আবার কখনও নিজেকে হারিয়ে ফেলে মহা শূন্যতায়, যেখানে সে একা-একা কথা বলে সৃষ্টিকর্তার সাথে। বয়স বাড়লে মানুষকে একাকীত্ব গ্রাস করতে চায়, সেই একাকীত্বকে মানুষ সম্পদ করে নেয়। শুরু হয় তার আধ্যাত্মিক জীবন। সেই অপূর্ব জীবনে তিনি ধীরেধীরে নিজের উৎসস্থলের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। কী অপূর্ব আমাদের জীবনচক্র!" সন্দীপ গোস্বামী, সন্দীপনী এবং পথ

"জীবনে অজস্র মানুষ আসবে এবং চলে যাবে। ব্যক্তিগত স্বার্থে কেউ খুব ঘনিষ্ঠ হবে, আবার কিছু সময় পরে হাওয়া হয়ে যাবে। জীবনের ছাঁকনি অতিক্রম করে অন্তরে প্রবেশ করার যোগ্যতা বা ইচ্ছা বেশিরভাগের নেই। খুচরোর ভিড় দিয়ে আখেরে কিছুই হয়না, একজন গুরুত্বপূর্ণ মানুষের সাথে সম্পর্ক হাজার গুণ দামী। সংখ্যা নয়, উৎকৃষ্ট মানুষের সাথে সম্পর্ক লক্ষ্য হওয়া উচিৎ। যে মানুষ তোমার আনন্দে আনন্দিত হবে, দুঃখে হবে দুঃখিত। পথভ্রষ্ট তোমায় দেখাবে আলোর পথ, যে পথে তুমি পাবে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা এবং শান্তি।" সন্দীপ গোস্বামী, সন্দীপনী এবং পথ

"মানুষ তার স্পেশাল গন্ধ, ইউনিক হাসি আর নিজস্ব অবয়ব নিয়ে বুকের ভিতরে অজান্তেই জায়গা করে নেয়। পুরুষের ক্ষেত্রে নারী, নারীর ক্ষেত্রে পুরুষ হতে হবে, এটা বোকাবোকা থিওরি। এছাড়া কোন চার দেওয়াল, কোন জানালা, বাড়ি, জলাশয়, গাছ, প্রাণীও হতে পারে...আসলে যা আমাদের আশ্রয় দেয়, সেটাই আশ্রয় নেয় আমাদের বুকে! কি অদ্ভুত তাই না!" সন্দীপ গোস্বামী, সন্দীপনী এবং পথ

"মনের মতো ভাবনা অনেক সময় উৎকৃষ্ট ভাবনা নয় । যে ভাবনা মনকে উৎকৃষ্ট করে তোলে, আরও ভাবতে বাধ্য করে । সেই ভাবনাকে উৎকৃষ্ট ভাবনা বলে ।" সন্দীপ গোস্বামী, সন্দীপনী এবং পথ

"খুব ভালো লাগে যখন দেখি বিজ্ঞানীরা ধর্মের কাছে মাথা নত করে। খুব ভালো ভালো লাগে যখন দেখি ধর্ম একজন মানুষকে সৎ, বিবেকবান, মানবিক করে তোলে। খুব ভালো লাগে যখন দেখি একজন অসহায় মানুষ ধর্মের আশ্রয়ে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। বিজ্ঞান অর্থাৎ পূর্ণজ্ঞান, ধর্ম অর্থাৎ যা ধারণ করে। পূর্ণজ্ঞানই তো ধারণ করতে পারে। আমরা যেন মনে রাখি, বিজ্ঞান এবং ধর্মের মিলিত রূপকে আধ্যাত্মিকতা বলা হয়।" সন্দীপ গোস্বামী, সন্দীপনী এবং পথ

"স্নেহ, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা এবং সম্মানের পাশাপাশি আমার জীবনে সমস্ত যন্ত্রণা, অপমান, অনাদর, অবহেলা, প্রতারণা পেয়েছি আশেপাশের ঘনিষ্ঠ মানুষদের কাছ থেকে, যা আমায় বিমর্ষ করে তোলে। বিমর্ষতা খোঁজে নীরবতা, একাকিত্ব। একাকিত্ব আমায় উপহার দেয় কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, দর্শন, সাহিত্য,ভালোবাসা এবং ঈশ্বরের প্রতি তীব্র আকর্ষণ। সেই সাহিত্য ভাসতে ভাসতে পৌঁছে যায় অন্য শহরে, অন্য জেলায়, অন্য রাজ্যে, অন্য দেশে, অন্য ধর্মের, অন্য ভাষার মানুষদের কাছে। আমার যন্ত্রণায় তাঁরা অশ্রুসিক্ত হয়, আমার ভাবনায় অনুপ্রাণিত হয়, আমার ভালোবাসায় তাঁদের একাকিত্ব কেটে যায়, আমার প্রতিবাদে বজ্রকঠিন হয়ে ওঠে তাঁদের আহত হৃদয়...এর পরে শত প্ররোচনায় আমি কি করে তাঁদের পর ভাবতে পারি! যদি ভাবি তবে তা অন্যায়, মহাপাপ। এই অন্যায় এবং মহাপাপ করার জন্য ঈশ্বর আমায় সৃষ্টি করেননি।" সন্দীপ গোস্বামী, আমার কথা তোমার ব্যথা

"দেখার চোখ থাকলে, এই দুনিয়ার সবকিছু সুন্দর। আকাশ সুন্দর পৃথিবীও সুন্দর, সমুদ্র সুন্দর আমাদের ছোটনদীও সুন্দর, কাশ্মীর সুন্দর বঙ্গভূমিও সুন্দর, বাঘ সুন্দর হরিণও সুন্দর, আমেরিকা সুন্দর আফ্রিকাও সুন্দর...তুমি সুন্দর আমিও সুন্দর। একমাত্র ভীষণ কুৎসিত হল মনুষ্যত্বহীন মানুষগুলি!" সন্দীপ গোস্বামী, সন্দীপনী এবং পথ

"সাধারণ দৃষ্টিতে আমরা যে ভক্তির পথ দেখি, তা হল নিয়ম-নিষ্ঠা, এটি ভক্তি মার্গের প্রাথমিক পদক্ষেপ মাত্র । তার জন্য ভক্ত প্রচুর মেলে, কিন্তু শুদ্ধ ভক্ত মেলা ভার । ভক্তি হচ্ছে কর্ম, জ্ঞান ও যোগের দ্বারা মিলিত এক শাশ্বত অনুভূতি । প্রতিটি আলাদা আলাদা পথের একত্র মিলনের সংযোগস্থল । কর্ম, জ্ঞান, যোগ ইত্যাদি আলাদা আলাদা ফুল আর ভক্তি এদের মিলিত ফুলের মালা স্বরূপ । তাই প্রকৃত জ্ঞান, কর্ম, যোগ না থাকলে প্রকৃত ভক্তি সৃষ্টি হয় না । সর্বব্যাপী উৎকর্ষতার মধ্যে দিয়ে একজন মনুষ্য নিজেকে শুদ্ধ ভক্তে পরিণত করতে পারেন ।" সন্দীপ গোস্বামী, শ্রীমদভগবদগীতা : সর্বজনীন সংবিধান

"ভালোকে যে ভালো বলতে পারেনা, জেনে রেখো তার মধ্যে ভালোবাসা নেই । জ্ঞানীকে যে সম্মান দিতে পারেনা, জেনে রেখো তার মধ্যে জ্ঞান নেই । যে ধনী উচ্চস্বরে কথা বলে, জেনে রেখো তার ধন কষ্টার্জিত নয় । উপকার পেয়ে যে কাউকে জানায় না, জেনে রেখো সে বেইমান । ভালো কাজে তুমি যত হাততালি দেবে, তার কয়েকশো গুণ হাততালি তোমার জন্য অপেক্ষা করছে ।" সন্দীপ গোস্বামী, সন্দীপনী এবং পথ

"আমাদের জীবনে একশো শতাংশ অবহেলা, প্রতারণা, বিশ্বাসঘাতকতা,যন্ত্রণার কারণ আমাদের কাছের আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী, নিজের ধর্মের, নিজের জাতের, নিজের শহর বা গ্রামের মানুষ। অথচ অত্যন্ত চতুরতার সাথে অনাত্মীয়, ভিন্ন ধর্ম, ভিন্ন জাতের, ভিন্ন দেশের অচেনা নিরপরাধ মানুষদের শত্রু হিসেবে দেখতে আমাদের শেখানো হয় এবং নেশাগ্রস্তের মতো আমরা তা বিশ্বাসও করি। বিশ্বব্যাপী অদ্ভুত এই বিকৃত দর্শন এই সময়ে রাজত্ব করছে! দুর্ভাগ্য!" সন্দীপ গোস্বামী, সন্দীপনী এবং পথ

  • "ঈশ্বর দুই প্রকার। যিনি এই জগৎ সংসার সৃষ্টি করেছেন তিনি স্বয়ং এবং অন্যজন হলেন মন্দির, মসজিদ, গির্জা ইত্যাদিতে বিরাজমান যিনি মূর্তি, প্রতিমা বা অন্যকোন স্থাপত্য। প্রথম ঈশ্বর সত্য, চিরন্তন, সনাতন আর দ্বিতীয় ঈশ্বর হলেন মানুষের কল্পনা, বিশ্বাস, ভালোবাসা, সাম্প্রদায়িকতার প্রতীক। প্রথম ঈশ্বর থাকেন আমাদের অন্তরে, যাকে অনুভব করতে হয়। আর দ্বিতীয় ঈশ্বর থাকেন আমাদের নয়নের সামনে, মন্ত্রোচ্চারণে, উপাসনায়। এই অবধি কোন সমস্যা ছিলনা, কিন্তু যেদিন থেকে মানুষ নিজেদের তৈরি ঈশ্বরকে অশাস্ত্রীয়ভাবে নিজেদের স্বার্থে, নিজের বিকৃত মানসিকতায় ভাঙতে এবং গড়তে শুরু করল সেইদিন থেকে প্রথম এবং দ্বিতীয় ঈশ্বরের মধ্যে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। সিদ্ধ মানুষের সংখ্যা হ্রাস পেতে থাকল, বৃদ্ধি পেতে থাকল ধর্মহীন ধর্মীয় বাতাবরণে কর্মহীন কামুক মানুষের ভিড়....তাই ভক্ত শূন্য দেবালয়ের ভিড়ে দমবন্ধ হয়ে যায়।" সন্দীপ গোস্বামী, সন্দীপনী এবং পথ

"বাক-স্বাধীনতার অর্থ অন্য মানুষদের কুকথা বলা, গালিগালাজ করা নয় । অন্য ধর্মবিশ্বাস, বিচার, মাতৃভূমিকে তুচ্ছ করাও নয় । বাক-স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ আমৃত্যু অন্যের বাক-স্বাধীনতা রক্ষা করা । একইভাবে ধর্মনিরপেক্ষতার প্রকৃত অর্থ নিজের ধর্মকে ভালোবেসে অন্যের ধর্মকে শ্রদ্ধা করা ।" সন্দীপ গোস্বামী, সন্দীপনী এবং পথ

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]