সাহাবা

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

সাহাবা ইসলাম ধর্মে আরবি শব্দ সাহাবি (সহচর) দ্বারা নবি মুহাম্মদের সাথী বা সহচরদের নির্দেশ করে। এর বহুবচন: সাহাবা।

সংজ্ঞা[সম্পাদনা]

‘সাহাবি’ শব্দটি আরবি ভাষার ‘সুহবত’ শব্দের একটি রূপ। একবচনে 'সাহাবি' (صحابي) এবং বহুবচনে ‘সাহাবাতুন’ (صحابة) ও 'আসহাব' (اصحاب) ব্যবহৃত হয়। আভিধানিক অর্থ সঙ্গী, সাথী, বন্ধু, অনুসারী, সহচর, এক সাথে জীবন যাপনকারী অথবা সাহচর্যে অবস্থানকারী। ইসলামি পরিভাষায় ‘সাহাবা’ শব্দটি দ্বারা মুহাম্মদের (সা.) সঙ্গী-সাথীদের বুঝায়। ‘সাহেব’ শব্দটির বহুবচনের আরও কয়েকটি রূপ আছে - তবে মুহাম্মদের (সা.) সঙ্গী-সাথীদের বুঝানোর জন্য ‘সাহেব’-এর বহুবচনে ‘সাহাবা’ ছাড়া ‘আসহাব’ ও ‘সাহব’ও ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

ইবনে হাজার ‘আল–ইসাবা ফী তাময়ীযিস সাহাবা’ গ্রন্থে সাহাবীর সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন: "সাহাবি সেই ব্যক্তি যিনি মুহাম্মদের প্রতি ইমান সহকারে তার সাক্ষাৎ লাভ করেছেন এবং ইসলামের ওপরই মৃত্যুবরণ করেছেন।"

সাহাবির উল্লেখিত সংজ্ঞাটি ইমাম বুখারি, ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বলসহ অধিকাংশ পণ্ডিতের নিকট সর্বাধিক সঠিক বলে বিবেচিত, অবশ্য সাহাবির সংজ্ঞার ক্ষেত্রে আরও কয়েকটি অপ্রসিদ্ধ মতামতও আছে। যেমন, কেউ কেউ সাক্ষাতের (আল-লিকা) স্থলে চোখে দেখার (রু’ইয়াত) শর্ত আরোপ করেছেন, কিন্তু তাতে এমন সব ব্যক্তি বাদ পড়ে যাবেন যারা মুমিন হওয়া সত্ত্বেও অন্ধত্বের কারণে মুহাম্মদকে চোখে দেখার সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন যেমন: আবদুল্লাহ ইবন উম্মে মাকতুম। অথচ তিনি অতি মর্যাদাবান সাহাবি ছিলেন।

উক্তি[সম্পাদনা]

  • মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল; তার সহচরগণ, কাফিরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল। আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় তুমি তাদেরকে রুকু ও সিজদায় অবনত দেখবে। তাদের মুখমণ্ডলে সিজদার চিহ্ন থাকবে, তাওরাতে তাদের বর্ণনা এরূপই এবং ইন্‌জিলেও।
    • (সূরা আল–ফাতহ: ২৯)
  • মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথম অগ্রগামী এবং যারা নিষ্ঠার সাথে তাদের অনুসরণ করে, আল্লাহ তাদের প্রতি প্রসন্ন এবং তারাও তাতে সন্তুষ্ট এবং তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত করেছেন জান্নাত, যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত, যেখোনে তারা চিরস্থায়ী হবে। এটা মহা কামিয়াবী।
    • (সূরা আত–তাওবা: ১০০)
  • এ সম্পদ অভাবগ্রস্ত মুহাজিরদের জন্য যারা নিজেদের ঘরবাড়ী ও সম্পত্তি হতে উৎখাত হয়েছে। তারা আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনা করে এবং আল্লাহ ও তার রাসূলের সাহায্য করে। তারাই তো সত্যাশ্রয়ী। মুহাজিরদের আগমনের পূর্বে যারা এই নগরীতে (মদীনা) বসবাস করেছে ও ঈমান এনেছে তারা মুহাজিরদের ভালোবাসে এবং মুহাজিরদের যা দেওয়া হয়েছে তার জন্য তারা অন্তরে আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে না, আর তারা তাদেরকে নিজেদের ওপর প্রাধান্য দেয় নিজেরা অভাবগ্রস্ত হলেও।
    • সূরা আল–হাশর, ৮–৯
  • এমনিভাবে সূরা আল ফাত্‌হ-১৮, সূরা আল ওয়াকিয়া-১০, এবং সূরা আল আনফালের ৬৪ সংখ্যক আয়াতসহ বিভিন্ন আয়াতে কোথাও প্রত্যক্ষ আবার কোথাও পরোক্ষভাবে সাহাবায়ে কিরামের প্রশংসা এসেছে। অনুরূপভাবে মুহাম্মদ নিজেও তার সাহাবীদের শানে বক্তব্য রেখেছেন। তাদের সম্মান, মর্যাদা ও স্থান নির্ধারণ করে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। যেমন আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ থেকে বর্ণিত।

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]