সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
অবয়ব
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান (জন্ম: ১৫ জানুয়ারি ১৯৬৮) একজন বাংলাদেশী আইনজীবী, পরিবেশবিদ। তিনি মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা। তিনি বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী। ২০০৯ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের "পরিবেশ পুরস্কার" এবং প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে গোল্ডম্যান পরিবেশ পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০০৯ সালে তিনি টাইম সাময়িকীর "হিরোজ অব এনভায়রনমেন্ট" খেতাব লাভ করেন। ২০১২ সালে তিনি ফিলিপাইনভিত্তিক রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কারে ভূষিত হন।
উক্তি
[সম্পাদনা]- যদি কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় গিয়ে 'শাসক' না হয়ে জনগণের ম্যান্ডেট বাস্তবায়ন করে তখন আমরা তাদের কাছে কোনো দাবি দিতে পারবো। সংস্কার প্রস্তাব করতে পারবো। রাজনৈতিক অঙ্গিকার থাকতে হবে। ক্ষমতায় যারাই থাকবে তারা যাতে মনে করে জনগণই ক্ষমতায় আছে। নইলে সরকার তাদের উন্নয়নের এজেন্ডা দিয়ে এগিয়ে আসবে, উন্নয়নের নামে প্রকৃতি বিনাশ করবে।
- ভয়েস অফ আমেরিকায় সাক্ষাৎকার। ১৪ মার্চ ২০২২।
- আমাদের দেশটিকে যেহেতু আমরা নদীমাতৃক বলে থাকি, তাই এই নদীকে রক্ষা করতে হবে। আমি কাজ করি এই বিষয়গুলো নিয়ে... মাটি রক্ষা, পানি রক্ষা ও বাতাস রক্ষা। ... যদি কারও জীবনে এই তিনটি (মাটি, পানি, বাতাস) জিনিস নষ্ট হয়ে যায়, আর বাকি সবকিছু যদি থাকেও তাহলে কোনো লাভ নেই। এই তিনটি জিনিস ঠিক রেখে যদি উন্নয়নটা সরকারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী একটু ধীরগতিতেও হয়, আমি মনে করি, তাতে কোনো ক্ষতি নে।।
- ভয়েস অফ আমেরিকায় সাক্ষাৎকার। ১৪ মার্চ ২০২২।
- পরিবেশের ওপর যখন কোনো হুমকি এসে পড়ে তখন তার প্রথম অভিঘাত এসে পড়ে নারীর ওপর। প্রাথমিক খাদ্য যোগানদাতা, পানি যোগানদাতা, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে নারী। তাই পরিবেশের ওপর কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া হলে তার প্রথম প্রভাব নারীর ওপরই পড়ে। সেটা খাদ্য, পানীয়, স্বাস্থ্য যা-ই হোক না কেন- নারীর ওপরই প্রথম প্রভাব পড়ে।
- ভয়েস অফ আমেরিকায় সাক্ষাৎকার। ১৪ মার্চ ২০২২।
- একজন মাকে তার সন্তানের আসল ভালো বুঝতে হবে। বড় বড় দালান, বিলাসবহুল গাড়ি, কাড়ি কাড়ি টাকা, দামী খাবার এসব তার আসল ভালো নয়। তার আসল ভালো হলো- তার শিক্ষা এবং তার পরিবেশ প্রকৃতি ঠিক রাখা। তাকে যদি ভেজাল খাবার খেতে হয়, দূষিত বায়ু গ্রহণ করতে হয়, দূষিত পানি পান করতে হয় তাহলে সে এইসব অর্থ দিয়ে করবে কী? তাই একজন মা যদি এইসব বিবেচনায় এনে করণীয় ঠিক করে তাহলে আমাদের পরিবেশের বিষয়টিও ঠিক থাকবে।
- ভয়েস অফ আমেরিকায় সাক্ষাৎকার। ১৪ মার্চ ২০২২।
- এমন নির্মম হত্যাযজ্ঞের ও বলপ্রয়োগের নিন্দা, ধিক্কার বা প্রতিবাদের উপযুক্ত ভাষা আমাদের জানা নেই। এই বিপুল প্রাণহানির দায় প্রধানত সরকারের। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর যে মাত্রায় বলপ্রয়োগ ও সন্ত্রাসী কায়দায় আক্রমণ করা হয়েছে, তা দেশের জনগণ ও বিশ্ববিবেককে স্তম্ভিত, ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত করেছে।
- ২০২৪ এর গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে এক সংবাদ সম্মেলনে। ভয় দেখানোর সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে সরকারকে | প্রথম আলো। ৩০ জুলাই ২০২৪।
- সরকার একটা প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু যে ক্ষত জাতির হৃদয়ে হয়েছে সেটা গভীর। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে যে ঘটনা, তা পুরো সমাজকেই প্রভাবিত করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়ে জনগণকে স্বস্তির জায়গায় আনা যাবে না। ... এবার বিচার না পেলে বাংলাদেশ থেকে বিচার শব্দটা একেবারে উঠে যাবে। এবার যার যার অবস্থান থেকে বিচারের দাবি জানিয়ে যেতে হবে। স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায়, আন্তর্জাতিক মহলকে যুক্ত করে, জাতিসংঘের সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত করে বিচার না হওয়া পর্যন্ত চুপ হয়ে যাওয়ার বা শান্ত হওয়ার সুযোগ নেই।
- আন্দোলন চলাকালে। এবার বিচার না পেলে বাংলাদেশ থেকে বিচার শব্দটা উঠে যাবে: দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস। ০১ আগস্ট ২০২৪।
- আমরা শুধু মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চাই না, চিন্তার স্বাধীনতাও চাই। সবচেয়ে বড় স্বাধীনতা হলো আমি ন্যায়বিচার পাব—এমন একটি সমাজ চাই যেখানে সময়মতো বিচার নিশ্চিত হবে। আমাদের সামনে যে সুযোগ এসেছে, তা পুরোপুরি কাজে লাগাতে হবে। ... একটি ফ্যাসিস্ট রেজিম একা একা ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠে না। বিচার বিভাগ, প্রশাসন, পুলিশ এবং গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকেও তারা দলে টানে। বুদ্ধিজীবীদের সহায়তা নিয়ে একটি ফ্যাসিস্ট শাসন কাঠামো গড়ে ওঠে। তাই সমাজের প্রতিটি স্তরে ফ্যাসিবাদের প্রভাব বিদ্যমান। এই প্রভাব রাতারাতি সরিয়ে ফেলা সম্ভব নয়।
- বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে ‘দুঃসময়ের কণ্ঠস্বর: তাদের স্বপ্ন ও বাস্তবতা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে। আদর্শ রাষ্ট্র গঠনে সময়ের প্রয়োজন | ভোরের কাগজ। ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪।
- নীরব থাকার সময় শেষ হয়ে গেছে। সরকারি পর্যায়ে যদি কোনো ক্ষেত্রে নীরবতা বা নিষ্ক্রিয়তা থাকে, সেখানেও নীরব থাকার দিন শেষ। উজানের দেশ ভারতের সঙ্গে আমাদের ৫৪ অভিন্ন নদী আছে, যে নদী নিয়ে আমাদের এখনও কোনো চুক্তি হয়নি। বাকি ৮টি নদীর সঙ্গে চুক্তি আছে। তারপরও প্রতি বছরই বন্যায় আমাদের দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
- ভারতের সঙ্গে অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন ইস্যুতে। সমকাল। ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪।
- শুধু মানবাধিকার নিয়ে কথা বললেই হবে না, বন্যপ্রাণীর অধিকার নিয়েও সচেতন হতে হবে। পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী সম্পর্কে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে।
- সময় সংবাদ। ৪ নভেম্বর ২০২৪।
- ১২ বছর ধরে আমার গাড়িতে আমি হর্ন বাজাই না। একেবারে বগুড়া থেকে ঢাকায় এসেছি হর্ন না বাজিয়ে। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছি হর্ন না বাজিয়ে। এটা সম্ভব। হর্ন বাজাইনি বলে মিটিংয়ে দেরি হয়েছে, এমন কখনও হয়নি।
- ঢাকা ট্রিবিউন। ৪ নভেম্বর ২০২৪।
- বনবিভাগের প্রাথমিক দায়িত্ব পয়সা বিতরণ করা না। তাদের প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে প্রাকৃতিক বনকে রক্ষা করা। প্রাকৃতিক বনায়নে আর কোনো সামাজিক বনায়ন হবে না।
- দৈনিক ইনকিলাব। ৬ নভেম্বর ২০২৪।
- জলবায়ু পরিবর্তন হলে বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশ চলে যাবে সমুদ্রের নিচে৷ বাংলাদেশের সমুদ্রপৃষ্ঠের থেকে এক মিটারের মধ্যে যেসব এলাকা আছে, তা ডুবে যাবে। উপকূলীয় জেলাগুলো টিকবে কিনা, তা একটা বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন।
- জাতীয় নাগরিক কমিটি আয়োজিত 'নতুন বাংলাদেশে পরিবেশ, জলবায়ু ও রাজনীতি' বিষয়ে সেমিনারে। ঢাকা মেইল। ৭ নভেম্বর ২০২৪।
- ৪৫ ভাগ প্রবাল সেন্টমার্টিন থেকে ক্ষয় হয়ে গেছে। প্রবাল আবার ফিরিয়ে আনা সম্ভব যদি আমরা সেখানকার কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করি। পুরো প্রবাল ক্ষয় হলে সেন্টমার্টিন ডুবে যাবে। তখন স্থানীয়রা কী করবে?
- জাতীয় নাগরিক কমিটি আয়োজিত 'নতুন বাংলাদেশে পরিবেশ, জলবায়ু ও রাজনীতি' বিষয়ে সেমিনারে। সেন্ট মার্টিন ডুবে গেলে স্থানীয়রা কী করবে: বিডিনিউজ ২৪। ৭ নভেম্বর ২০২৪।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]উইকিপিডিয়ায় সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।
বিষয়শ্রেণীসমূহ:
- জীবিত ব্যক্তি
- ১৯৬৮-এ জন্ম
- বাংলাদেশী নারী আইনজীবী
- বাংলাদেশী পরিবেশবাদী
- বাংলাদেশী লেখিকা
- ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার বিজয়ী
- আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কার প্রাপক
- গোল্ডম্যান পরিবেশ পুরস্কার প্রাপক
- হবিগঞ্জ জেলার ব্যক্তি
- ঢাকার ব্যক্তি