সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ
অবয়ব
সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ (১৪ অক্টোবর ১৯৩০ – ৪ঠা সেপ্টেম্বর ২০১২) ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি লেখক। ১৯৯৪ সালে তিনি তাঁর অলীক মানুষ উপন্যাসের জন্য সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন, যা তাঁর সবচেয়ে প্রশংসিত কাজ হিসেবেও বিবেচিত হয়। ২০০৫ সালে চলচ্চিত্র পরিচালক অঞ্জন দাস তাঁর রাণীঘাটের বৃত্তান্ত ছোটগল্প অবলম্বনে ফালতু ছবিটি নির্মাণ করেন। তিনি প্রায় ১৫০টি উপন্যাস এবং ৩০০টি ছোটগল্প রচনা করেছেন।
উক্তি
[সম্পাদনা]- খাঁটি দোস্ত কখনও দুষমন হয় না। তাহলে দুনিয়াটা এ্যাদ্দিন উল্টে যেত।
- 'নিষিদ্ধ প্রান্তর' উপন্যাস
- কী বিশাল স্বাধীনতা আমার সামনে। মাঠের মধ্যে একা নিজেকে সম্রাট মনে হচ্ছে। এই প্রাকৃতিক স্বাধীনতা আমাকে আকৃষ্ট করে সবচেয়ে বেশি। মানুষের মধ্যে আমি সেটাই দেখতে চাই। সাম্যবাদের সঙ্গে মার্কসিজমের এই স্বাধীনতাবোধের কোনও পার্থক্য নেই। মার্কসও ঠিক এই স্বাধীনতাই চেয়েছিল।
- সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ সংখ্যা (২০১৩), ঐক্য, সম্পাদক: গৌরিশঙ্কর সরকার, পশ্চিম মেদিনীপুর।
- বড় আদিম সেই জগৎ। প্রাণী ও উদ্ভিদ, পোকামাকড় ও মাটির ফাটল উইঢিবি, শ্যাওলা, ছত্রাক, পাখির গু, সাপের খোলসে ভরা সেই আদিম স্যাঁতসেঁতে মাটির সঙ্গে মোটামুটি চেনাজানা হয়ে যায়। অন্য একটি বোধ নিয়ে ফিরে আসি। বলতে শুরু করি, সে এক পৃথিবী আছে, দুর্গম রহস্যময় যেখানে রক্ত ও অশ্রুর কোনো পৃথক মূল্য নেই। সেখানেই আছে খাঁটি স্বাধীনতা।
- সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ (২০১৩), আত্মকথা, সম্পাদক: নাজিবুল ইসলাম মণ্ডল, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা।
- ইসলাম ধর্মে যদিও বা জাতিবর্ণভেদ নেই, সব মুসলমানই মানুষ হিসেবে সমান; বাদশাহের পাশের আসনে পথের ভিখিরিও বসার অধিকার পায়-অনুশাসনের সঙ্গে প্রথার কিন্তু ফারাক আছে অসামান্য। কালগুনে সব ধর্মের মতো ইসলামের একদা হাজার বছর পরে প্রথাকে খুব বড় করে দেখা হচ্ছিল। ফলে অভিজাত, নিম্নজাত মানুষেরা চিহ্নিত হতে থাকল পৃথক পৃথক চিহ্নে।
- সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ (২০০২), ‘মৃত্যুর ঘোড়া’, গল্পসমগ্র (৫ম খণ্ড), করুণা প্রকাশনী, কলকাতা, পৃ. ৬৮
- এলাকার মানুষের মধ্যে যে আদিম স্বাধীনতাবোধের আবেগ ছিল, তা ইচ্ছা করেই মন ভরে পেতে নিয়েছিলাম। প্রকৃতিসঞ্জাত এই স্বাধীনতার স্বাদ মানুষকে প্রেমিক করে, দার্শনিক করে আর যোদ্ধাবেশধারী হত্যাকারীও করে। মানুষ তখন রাষ্ট্র ও অন্যের প্রভুত্ব অস্বীকার করে।...প্রকৃতির সন্তান বলে তার কাছে শ্লীলতা, অশ্লীলতা নেই। শুধু আছে জীবন-মুক্ত উদ্দাম জীবন। এই জীবনকে আমি দেখেছি। ভালোবেসেছি। তাদের কথাই লিখতে চেয়েছি। সভ্য শিক্ষিত মানুষের মধ্যেও আরোপ করে দেখতে চেয়েছি কেমন মানায়। হয়তো নিজের অজান্তেই তাই আমার সব উপন্যাসে এত স্বাধীনতা, হত্যাকাণ্ড ও মৃত্যু, অকপট কামনার ঝাঁঝালো প্রয়োগ।
- সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ সংখ্যা (২০১৩), ঐক্য, সম্পাদক: গৌরিশঙ্কর সরকার, পশ্চিম মেদিনীপুর, পৃ. ৩১
- কী হবে কেঁদে! হিজলদ্যাশের ঘর, কাঁদতে বসলে গলে ধুয়ে ক্ষয় হয়ে যায়। এটা হিজলের অলিখিত বিধান। পুরুষতা এখানে মাটির মালিক। রক্ত আর মৃত্যু তার খাজনা।
- সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ (২০০১), ‘হিজলকন্যা’, সৃষ্টি প্রকাশন, কলকাতা, পৃ. ১০
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]উইকিপিডিয়ায় সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।