সৈয়দ শামসুল হক
সৈয়দ শামসুল হক (২৭ ডিসেম্বর ১৯৩৫ - ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬) বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে সক্রিয় একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী সাহিত্যিক। কবিতা, উপন্যাস, নাটক, ছোটগল্প, অনুবাদ তথা সাহিত্যের সকল শাখায় সাবলীল পদচারণার জন্য তাকে 'সব্যসাচী লেখক' বলা হয়। তার লেখকজীবন প্রায় ৬২ বছর ব্যাপী বিস্তৃত। সৈয়দ শামসুল হক মাত্র ৩১ বছর বয়সে ১৯৬৬ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেছিলেন।
উক্তি
[সম্পাদনা]“বাক্যটি আজ পর্যন্ত ভুলতে পারে নি বাবর। যে লিখেছে জগৎ সে চিনে। যে লিখেছে সে নিজে প্রতারিত। পৃথিবী সম্পর্কে তার একটিমাত্র মন্তব্য বাথরুমের দেয়ালে সে উৎকীর্ণ করে রেখেছে- খেলারাম খেলে যা।
কতদিন বাবর কানে স্পষ্ট শুনতে পেয়েছে কথাটা।”
- খেলারাম খেলে যা বই থেকে
“মানুষ এমন ভাবে বদলায়া যায়, ক্যান যায়?
পুন্নিমার চান হয় অমাবস্যা কিভাবে আবার? সাধের পিনিস ক্যান রঙচটা রদ্দুরে শুকায়? সিন্দুরমতির মেলা হয় ক্যান বিরান পাথার? মানুষ এমন তয়, একবার পাইবার পর নিতান্ত মাটির মনে হয় তার সোনার মোহর।”
- পরানের গহীন ভিতর বই থেকে
“কবিতার জন্যে সত্যিই যদি কারো টান থাকে তো, কবিতা সে কেবল পড়তেই চাইবে না, কবিতার ভেতরে সে নিঃশ্বাস নিতে চাইবে। কবিতা যাকে স্পর্শ করে সে আসলে জীবনেরই স্পর্শ পায়। কবিতায় যে বাঁচে, জীবনেও সে বাঁচে। দুঃখময় কবিতাও আমাদের গভীর অর্থে সুখী করে।”
- মার্জিনে মন্তব্য( বই থেকে )
“আমি তো দেখিনি চাঁদ কুয়াশায় অবিশ্বাস্য ফানুসের মতো,
ছিঁড়েও আনিনি কোনো লোকশ্রুত দর্শনের ফল, অথবা যাইনি কারো ঘুমের সংসারে অনন্তর ঘুম যাবো বলে— অধিকন্তু পিতৃপুরুষের অলৌকিক সমর্পণে রাখিনি বিশ্বাস, আমি কি বিবিক্ত শব জীবিতের মন্দ্র কোলাহলে?”
- শ্রেষ্ঠ কবিতা ( বই থেকে )
“কিছু নেই বিস্ময়ের, গ্রন্থ যদি কাটে শুধু কীটে।”
- শ্রেষ্ঠ কবিতা ( বই থেকে )
“কেউ কারো মতো হয় না। আমরা নিজের মতো
কাউকে অনবরত খুঁজি বলেই অপ্রমেয় দুঃখের সমুদ্র চতুর্দিকে ফোঁপায় আর আমরা সারাদিন সারারাত নারকোল পাতায় কান্নার বাতাস বাজিয়ে দ্বীপের মতো জেগে থাকি।”
- শ্রেষ্ঠ কবিতা( বই থেকে )
“একদা দালান ভাঙে, দেহ ভাঙে, রাষ্ট্র ভাঙে,
বিষদাঁত— তাও ভেঙে যায়— মানুষ, যে মানুষ এতটা আপনার কাছে বাসা নিয়েছিল সেই মানুষের কাছে আপনার মুখের ছবিটি একদিন নিঃশব্দে মিলায়।”
- শ্রেষ্ঠ কবিতা( বই থেকে )
“তবুও ভালোবেসে ভীষণ সুখ আছে, পতনে আছে তবু সিদ্ধি,
তবুও ক্ষত নেই পায়ের গোড়ালিতে তোমার কাঁটাবনে হাঁটলেও ; তোমারই কীর্তি এ, তুমিই দিতে পারো দু'হাতে বিপরীত অর্জন— বিষাদ ও পূর্ণিমা, তুষার ও পলিমাটি, নশ্বরতা আর নির্বাণ।”
- শ্রেষ্ঠ কবিতা( বই থেকে )