হায়াৎ মামুদ

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

হায়াৎ মামুদ (জন্ম: ২ জুলাই ১৯৩৯) বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান লেখক। তিনি একজন আধুনিক কবি, প্রবন্ধকার , অনুবাদক ও অধ্যাপক। মৃত্যুচিন্তা রবীন্দ্রনাথ ও অন্যান্য জটিলতা তার বিখ্যাত গ্রন্থ যা ১৯৬০-এর দশকে প্রকাশিত হয়ে সাড়া জাগিয়েছিল। তিনি শিশুদের জন্য অনেক গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার অনূদিত মাক্সিম গোর্কি বিরচিত চড়ুইছানা সকলমহলে উচ্চ প্রশংসা লাভ করে।

উক্তি[সম্পাদনা]

  • এ জীবনে ভালোবাসা ব্যতীত আর আছে কী? এ ভালোবাসা নিয়েই নিয়ে যেন চলে যেতে পারি।
    • নিজের ৭৮তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এক বক্তব্যে, উদ্ধৃত: বিডিনিউজ২৪
  • আমাদের সমাজের চলন এমন হয়েছে যে পৃথিবীর ভালো কিছু সবই যেন বাংলাদেশের বাইরে। বাংলাদেশ খুব খারাপ জায়গা; ফলে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যেতে পারলেই সবাই যেন প্রাণে বাঁচে। তারপর গিয়ে যখন চাকরবাকরের অবস্থা হয়, তখন টের পায় নিজের দেশটা কেমন। নিজের দেশ যেমনই হোক, ওটা স্বর্গ। যাওয়ার আগে টের পায় না। আরেকটা বিষয় আমাকে বেশ কষ্ট দেয়। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা, এই মাতৃভাষাই আজকালকার ছেলেমেয়েরা ভালো করে শিখছে না। তার অন্যতম কারণ, আমাদের শিক্ষায়তনগুলোতে, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা পড়ানোর ভালো শিক্ষক এখন নেই।
    • নিজের ৮০তম জন্মদিনে প্রদত্ত বিশেষ সাক্ষাৎকারে, উদ্ধৃত: প্রথম আলো
  • আমাদের মূল সমস্যা হচ্ছে অর্থলালসা। টাকা পেলেই সবকিছু পেয়ে যাব—এই মানসিকতা। এর জন্যই পরীক্ষায় শুধু ভালো ফল করার জন্যই ঊর্ধ্বশ্বাসে ছোটা। এর জন্যই নানা অন্যায়, অপরাধ, দুর্নীতি। অর্থলালসার জন্যই রাষ্ট্রের কোনো প্রতিষ্ঠান ঠিকমতো কাজ করছে না; সমাজটা কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে; মানুষ নিষ্ঠুর হয়ে যাচ্ছে। অর্থলালসার জন্যই আমাদের সমাজ থেকে পরার্থপরতা চলে গেছে। অপরের জন্য কিছু করব, এটা কেউ ভাবে না। কেউ ভাবলে বলা হবে, বোকা লোক। গরিব দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি তো এটাই যে আমার পাশে আরও ১০ জন আছে।
    • নিজের ৮০তম জন্মদিনে প্রদত্ত বিশেষ সাক্ষাৎকারে, উদ্ধৃত: প্রথম আলো
  • প্রতিটি ঘটনাই নিজস্ব চরিত্র নিয়ে আছে। সকলই স্বতন্ত্র। তাই ঢালাও মন্তব্য করা যাবে না।
  • আমার দীর্ঘ কর্মজীবনের পথে যারা আমাকে ভীষণভাবে ভালোবাসেন, তারা আমাকে এ স্বীকৃতি দিল। এ বড় আনন্দের।
    • রবীন্দ্র পুরস্কার পাওয়ার পর প্রদত্ত বক্তব্যে, উদ্ধৃত: বিডিনিউজ২৪
  • ছোটবেলায় লেখা চিঠিপত্রে কেউ ইংরেজি তারিখ ব্যবহার করতেন না। যারা ডায়রি রাখতেন, তারাও বাংলা সন-তারিখ ব্যবহার করতেন। ইংরেজির চল তেমন ছিল না এবং এই নিয়ে কোন কমপ্লেক্সও ছিল না। এখন যেমন, ইংরেজি বলতে পারি না, কিন্তু বাংলার ভেতর কয়েকটি ইংজেরি শব্দ ঢুকিয়ে দিতে পারলে মনে হয় বেশ একটা ব্যাপার করা গেলো। নিরুষ্কুশ বাঙালির ব্যাপারটি তখন বিদ্যমান ছিল। ইংরেজি জানি না বলে কোন কমপ্লেক্স ছিল না, লজ্জা বা এই নিয়ে কোন অস্বস্তি বোধ ছিল না। সে কারণে বাংলা সনতারিখ ব্যাপকভাবে চল ছিল।

তার সম্পর্কে উক্তি[সম্পাদনা]

  • ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর এদেশে যে কয়জন লেখক এ অন্যায় অত্যাচার অবিচারের বিরুদ্ধে শক্ত হাতে কলম ধরেছিলেন তাদের মধ্যে হায়াৎ মামুদ অন্যতম। যে কোনো অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে তিনি আজীবন প্রতিবাদী। তিনি অসাম্প্রদায়িক, কল্যাণকামী ও মুক্তমনা একজন মানুষ।
  • হায়াৎ মামুদ খুব গভীরতার সঙ্গে অনুবাদ কাজটি করেছিল। মনে পড়ে, এরশাদের শাসনামলে কারফিউ ভেঙ্গে সে আমার বাসায় এসেছিল। রাতভর জাগিয়ে রেখেছিল কাজে আর আড্ডায়।
  • তার গদ্য লেখার ক্ষমতা অসাধারণ, চিন্তা, পরিশীলতা আর প্রকাশ ভঙ্গীর এক অপূর্ব সংযোগ তিনিই ঘটাতে পারেন। তার কবিতায় রয়েছে মিষ্টি সৌন্দর্য, আবেগ ও যুক্তি। সমালোচনা সাহিত্যেও তিনি চিন্তাশীলতার পরিচয় দিয়েছেন।

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]