বিষয়বস্তুতে চলুন

হুসাইন আহমদ মাদানি

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

হুসাইন আহমদ মাদানি (উর্দু: حسین احمد مدنی‎‎; ৬ অক্টোবর ১৮৭৯ — ৫ ডিসেম্বর ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দ; ১৯ শাওয়াল ১২৯৬ — ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৩৭৭ হিজরি) ছিলেন উনবিংশ-বিংশ শতাব্দীর ভারতের অন্যতম জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদ, দার্শনিক, সুফি, লেখক ও ইসলামি পণ্ডিত। তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, খিলাফত আন্দোলন এবং ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রভাবশালী নেতা ছিলেন।১৯২০ সালে কংগ্রেস-খিলাফত জোট তৈরিতে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। ভারতীয় উলামা ও কংগ্রেসের যৌথ আন্দোলনের পথটি তিনি তৈরী করে দিয়েছিলেন ১৯২০ – ১৯৩০ সাল জুড়ে তার বক্তৃতা ও পুস্তক প্রকাশের মাধ্যমে। তিনি ভারত ভাগ, দ্বিজাতি তত্ত্বের বিপক্ষে ছিলেন এবং সংযুক্ত ভারতের অভ্যন্তরে সম্মিলিত জাতীয়তাবাদের পক্ষে ছিলেন।রাষ্ট্র গঠনের জন্য আঞ্চলিক ও ধর্মীয় পরিচয়ের ভূমিকা নিয়ে বিতর্কে পাকিস্তান আন্দোলনের বিরোধিতা করেন।তিনি জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের সভাপতি এবং দারুল উলুম দেওবন্দের সদরুল মুদাররিস ছিলেন। তার সময়কালে দারুল উলুম দেওবন্দের শিক্ষাক্রম আফ্রিকা পর্যন্ত বিস্তার লাভ করে। তিনি দেওবন্দ আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব হিসেবেও সমাদৃত। ইসলামি শাস্ত্রে তার পাণ্ডিত্য ও অবদানের জন্য তাকে শায়খুল ইসলাম উপাধি দ্বারা সম্বোধন করা হয়। শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের জন্য ১৯৫৪ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মভূষণ পদকে ভূষিত করে।ভারতের এই তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননায় যাদেরকে প্রথম ভূষিত করা হয়েছিল তিনি তাদের অন্যতম। ২০১২ সালের ২৯ আগস্ট ভারতীয় ডাক বিভাগ তার সম্মানে একটি স্মারক ডাকটিকিট বের করেছে।

উক্তি

[সম্পাদনা]
  • "ধর্ম এবং ধর্মের লোকদের ভালবাসা একটি মহান জিনিস। তবে, নিজের দোষের মূল্যায়ন না করে অন্যের দোষের দিকে মনোনিবেশ করা ভুল।"
    • হুসাইন আহমদ মাদানী, মালফুজাত হযরত মাদানী, পৃ. ৭৬(দিল্লি: দার আল-ইশাআত, জুলাই ১৯৯৮ সংস্করণ) মাওলানা আবুল হাসান বারাহ বাঙ্কভী দ্বারা
  • ‘‘যৌবনের বরকতময় বয়স অত্যন্ত মূল্যবান; এটিকে আল্লাহর স্মরণের মনোরম রঙে সজ্জিত করুন।’’
    • হুসাইন আহমদ মাদানী মালফুজাত হযরত মাদানী, পৃ. ৮৩ (দিল্লি: দার আল-ইশাআত, জুলাই ১৯৯৮ সংস্করণ) মাওলানা আবুল হাসান বারাহ বাঙ্কুই দ্বারা
  • অমুসলিম... ইসলামের 'তাবলীগ'-এর কর্মক্ষেত্র এবং এই দুর্দান্ত কার্যকলাপের কাঁচামাল। আজ হিন্দুদের প্রতি বিদ্বেষ প্রচার করে এই ক্ষেত্রটি বন্ধ করে এই উপাদান নষ্ট করা হচ্ছে।
    • ইকবাল নারাইন, ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতা, পৃ. ১৩৩. (এছাড়াও এলস্ট, কে. (২০১০) তে। জাফরান স্বস্তিকা: "হিন্দু ফ্যাসিবাদের ধারণা"। পৃ.৭৪০

হুসাইন আহমদ মাদানি সম্পর্কে উক্তি

[সম্পাদনা]
  • ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে হুসাইন আহমদ মাদানীর ঐতিহাসিক অবদানকে স্মরণ করে ভারতের তৎকালিক রাষ্ট্রপতি ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ শাস্ত্রী তাকে ‘পদ্মভূষণ’ খেতান প্রদান করেন।খোদাভীরু,দেশপ্রেমিক আকাবিরগণের প্রতিনিধি মাদানী বিনয়ের সাথে এই(পদ্মভূষণ) খেতাব ফিরিয়ে দেন এবং একটি ঐতিহাসিক চিঠি লেখেন যা ইতিহাসের অনন্য দলিল হয়ে রয়েছে।
    • (আল জমিয়ত পত্রিকা,শায়খুল ইসলাম সংখ্যা,পৃ-৩২)
  • আমার পিতা ইয়াহইয়া কান্ধলবি আর হযরত মাদানীর মতো তাহাজ্জুদে আল্লাহর ভয়ে এতো বেশি হাউমাউ করে কাউকে কাঁদতে দেখিনি। মনে হতো কোন শিশুকে পেটানো হচ্ছে আর সে মা মা বলে কাঁদছে।
    • যাকারিয়া কান্ধলবি(মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন, প্রিয় লেখক প্রিয় বই,পৃ-১৫)
  • আমৃত্যু তিনি দেওবন্দে সহীহ বুখারী ও জামে তিরমিজীর দরস প্রদান করেছেন। তার কাছে নিয়মিত দরসের মাধ্যমে ৪৪৭৩ জন আলেম হাদীসের সনদ অর্জন করেন।
    • (কারী মুহাম্মদ তায়্যিব,তারীখে দারুল উলুম দেওবন্দ, খণ্ড-২,পৃ-২০৯)
  • “ধর্মীয় ব্যাপারে মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানির দৃষ্টি ছিল অত্যন্ত গভীর ও উদার। উপমহাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ইতিহাস এবং মুসলিম দেশগুলির সঙ্গে পাশ্চাত্য শক্তিগুলির আন্তর্জাতিক অবস্থা সম্পর্কে তার গভীর জ্ঞান ছিল। তাঁর মত একান্ত ধর্মপ্রাণ একজন মাওলানার পক্ষে এটা কি করে সম্ভব হয়েছিল, সে কথা ভাবতে গেলে বিস্ময়ের অন্ত থাকে না। মাওলানা মাদানি সমাজ ও রাষ্ট্রের সমস্যাগুলি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতেন। উপমহাদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে তাঁর যে সমস্ত রচনা আছে, তা থেকে এর যথেষ্ট পরিচয় পাওয়া যায়।”
    • সত্যেন সেন। []

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]
  1. সেন, সত্যেন (ফেব্রুয়ারি ১৯৮৬)। (হুসাইন আহমদ মাদানি)ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলমানদের ভূমিকা (১ম সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: জাতীয় সাহিত্য প্রকাশ। পৃষ্ঠা ১৯৭—২১০। আইএসবিএন 984-70000-0256-0এএসআইএন B07NNTKH8L। ৩০ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১