সিলেট
সিলেট উত্তর-পূর্ব বাংলাদেশের একটি প্রধান শহর, একই সাথে এই শহরটি সিলেট বিভাগের বিভাগীয় শহর। এটি সিলেট জেলার অন্তর্গত। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন এলাকাই মূলত সিলেট শহর হিসেবে পরিচিত। সিলেট ২০০৯ সালের মার্চ মাসে একটি মেট্রোপলিটন শহরের মর্যাদা লাভ করে। সুরমা নদীর তীরবর্তী এই শহরটি বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত এ শহরটি দেশের আধ্যাত্মিক রাজধানী হিসেবে খ্যাত। সিলেট অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে সমৃদ্ধ জেলা হিসেবে পরিচিত। শিল্প, প্রাকৃতিক সম্পদ ও অর্থনৈতিক ভাবে সিলেট দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম ধনী জেলা। জৈন্তিয়া পাহাড়ের অপরূপ দৃশ্য, জাফলং এর মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য, ভোলাগঞ্জের সারি সারি পাথরের স্তূপ, বিছনাকান্দির স্বচ্ছ জলরাশি পর্যটকদের টেনে আনে বার বার। এ শহরের বিশাল সংখ্যক লোক পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসবাস করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণ করে দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে। সিলেটের পাথর, বালুর গুণগতমান দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। এখানকার প্রাকৃতিক গ্যাস সারা দেশের সিংহভাগ চাহিদা পূরণ করে থাকে।
উক্তি
[সম্পাদনা]- মমতাহীন কালস্রোতে
বাঙলার রাষ্ট্রসীমা হতে
নির্বাসিতা তুমি
সুন্দরী শ্রীভূমি।- বাংলাভাষী সিলেট জেলা ১৮৭৪ সালে আসাম প্রদেশের অর্ন্তভুক্ত হয়- তাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দুঃখ করে এটি লিখেছিলেন।[১]
- উদ্যমী সৈন্যরা, যারা ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ শতাব্দীতে বাংলার ভীরু জাতির মধ্যে ইসলামের ঈমান ছড়িয়ে দিয়েছিল, তরবারির জোরে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করেছিল এবং পূর্ব সীমান্তের ঘন অরণ্যে প্রবেশ করে সিলেটের গ্রামগুলোয় অর্ধচন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। ঐতিহ্য আজও এই উৎসাহীদের মধ্যে সবচেয়ে সফল তিনজন হিসেবে আদম শহীদ, শাহ হালাল মুজাররাদ এবং করমফার্মা সাহেবের নাম সংরক্ষণ করেছে।
- বারবোসা, দুয়ার্তে, দ্য বুক অফ দুয়ার্তে বারবোসা, খণ্ড ২, হাকলিয়ুত সোসাইটি, লন্ডন, ১৯১৮-২১। উদ্ধৃতি: লাল, কে. এস. (১৯৯০)। ইন্ডিয়ান মুসলিমস: হু আর দে।
- হিন্দুস্থানে, বিশেষ করে বাংলার উপর নির্ভরশীল সিলেট প্রদেশের অঞ্চলের লোকেদের তাদের কিছু ছেলেকে নপুংসক বানিয়ে রাজস্বের পরিবর্তে গভর্নরের কাছে দেওয়ার রীতি ছিল (মাল-ওয়াজিবি)। … সনদকৃত এই প্রথা অন্যান্য প্রদেশে গৃহীত হয় এবং প্রতি বছর কিছু শিশু এইভাবে নষ্ট হয়ে যায় এবং বংশবৃদ্ধি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। এই অভ্যাস সাধারণ হয়ে উঠে।
- জাহাঙ্গীর, তুজুক, প্রথম, ১৫০-৫১। উদ্ধৃত: লাল, কে. এস. (১৯৯৪)ম মুসলিম স্লেভ সিস্টেম ইন মেডিভাল ইন্ডিয়া। নিউ দিল্লি: আদিত্য প্রকাশন। অধ্যায় ৯।
- নিরীহ হিন্দুদের উপর, বিশেষ করে সিলেট জেলার হাবিবগড়ের তফসিলি জাতিদের উপর পুলিশ ও সামরিক বাহিনী যে নৃশংসতা চালিয়েছে তা বর্ণনার দাবি রাখে। নিরীহ নর-নারীকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়, কিছু নারীকে লাঞ্ছিত করা হয়, তাদের বাড়িঘর লুট করা হয় এবং পুলিশ ও স্থানীয় মুসলমানরা সম্পত্তি লুট করে। এলাকায় সামরিক প্রহরীদের বসানো হয়েছে। সামরিক বাহিনী শুধুমাত্র হিন্দুদের ঘর থেকে জোরপূর্বক জিনিসপত্র কেড়ে নেওয়া এবং এই লোকদের উপর অত্যাচার করেনি, বরং হিন্দুদেরকে তাদের রাতে ক্যাম্পে পাঠাতে বাধ্য করেছিল সেনাবাহিনীর নারী-পিপাসুদের দৈহিক ইচ্ছা চরিতার্থ করার জন্য। এই সত্যটিও আমি আপনার নজরে এনেছি। আপনি আমাকে এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদনের আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কোন প্রতিবেদন আসেনি।
- পাকিস্তান সরকারের আইন ও শ্রম মন্ত্রী যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলের পদত্যাগপত্র থেকে উদ্ধৃত, ৮ অক্টোবর, ১৯৫০। [২] [৩]