আসাদুজ্জামান নূর

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে
পরামর্শ দেওয়ার যোগ্যতা আমার নাই। আমি জীবনে এমন কিছুই করিনি যে পরামর্শ দিতে পারি। তবে আমার ছেলে-মেয়েদের যে কথাটা বলি, সেটাই সবাইকে বলি- জীবনে যা-ই করতে চাও হৃদয় দিয়ে কর, পরিশ্রম কর।

আসাদুজ্জামান নূর (জন্ম ৩১ অক্টোবর ১৯৪৬) হলেন একজন বাংলাদেশী অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ। তিনি শেখ হাসিনার তৃতীয় মন্ত্রিসভায় বাংলাদেশের সংস্কৃতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০০১ সাল থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সংস্কৃতিতে অবদান রাখার জন্য ২০১৮ সালে তিনি স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ এর সভাপতির দ্বায়িত্ব পালন করছেন।

উক্তি[সম্পাদনা]

  • শিল্পীর ক্ষুধা কখনো মেটে না। বার বার ওই জায়গায় ফিরতে ইচ্ছে করে। শিল্পীর ক্ষুধা থেকেই যায়। থাকাটাই স্বাভাবিক। একটি নাটকে বা সিনেমায় যত ভালো অভিনয় করা হোক না কেন, পরের কাজটির জন্য আকাঙ্ক্ষা আরও বেড়ে যায়। ফলে শিল্পীর ক্ষুধা কখনো মেটে না।
  • মঞ্চে অভিনয় করার আলাদা একটা আনন্দ আছে। সরাসরি দর্শকদের ভালোবাসা পাওয়া যায়। দর্শকরা কতটুকু গ্রহণ করলেন, তা সরাসরি দেখা সম্ভব। বার বার আমি মঞ্চেই ফিরতে চেয়েছি।
  • পরামর্শ দেওয়ার যোগ্যতা আমার নাই। আমি জীবনে এমন কিছুই করিনি যে পরামর্শ দিতে পারি। তবে আমার ছেলে-মেয়েদের যে কথাটা বলি, সেটাই সবাইকে বলি- জীবনে যা-ই করতে চাও হৃদয় দিয়ে কর, পরিশ্রম কর।
  • আমি হতবাক। কারণ, আমাদের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর মধ্যে, আমার ধারণা, গোটা তিন চারেক টেলিভিশন মোটামুটি লাভজনক অবস্থায় আছে। তিন-চারটা না হলেও পাঁচ-ছয়টা হবে। এর বেশি কোনো অবস্থাতেই না। বাকি সবগুলো লসের ভেতর আছে। তাহলে যারা মালিক, দীর্ঘদিন ধরে এই টেলিভিশনগুলো চালাচ্ছেন, প্রতি মাসে ভর্তুকি দিয়ে, এটা কেন করছেন আমি জানি না। তাহলে আমরা ধরে নিতে পারি যে অন্য কোথাও নিশ্চয় লাভ হচ্ছে। যেটা আমরা সাধারণ মানুষ জানি না। হয়তো কারো আত্মশ্লাঘার ব্যাপার আছে— আমি একটা টেলিভিশন চ্যানেলের মালিক। আমি যেটাকে বলি ইগো মাসাজ। ইগো মাসাজ না হলে অন্য কোথাও কোনো লাভ হচ্ছে। নয়তো আমি বুঝতে পারি না কোনো ব্যবসায়ী কেন একটি ব্যবসা দিনের পর দিন লস দিয়ে চালাবেন। অন্য কোনো ব্যবসার ক্ষেত্রে কি এটা হতো?
  • আমাদের পরিচয় হওয়া উচিত আমরা বাঙালি। এই বাঙালির মধ্যে রয়েছে হিন্দু, মুসলমান, খ্রিষ্টান থেকে শুরু করে সব ধর্মের মানুষ। ধর্মের ভিত্তিতে বা ভাষার ভিত্তিতে কোনো দেশের পরিচিতি হতে পারে না। তা-ই যদি হতো, তাহলে সৌদি আরব থেকে শুরু করে অধিকাংশ মুসলিম দেশের ভাষা হতো আরবি, ধর্ম ইসলাম; কিন্তু ওই সব দেশের মানুষ নিজেদের সৌদি, মিসরীয়, পাকিস্তানি পরিচয় দিতে পছন্দ করেন। তাঁরা মাথা উঁচু করে নিজের দেশের পরিচয় দেন। এটা আসলে সঠিক পরিচয়। এই আত্মমর্যাদা নিয়েই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এখানে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
  • জীবন তো নানাক্ষেত্রে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গেল। একদিকে ব্যবসা, একদিকে সাংস্কৃতিক অঙ্গন, আরেকদিকে রাজনীতি। নানামুখী ব্যস্ততা। তারপরও সময় করে প্রতিটি কাজ করার চেষ্টাটা ছিল। তবে, আমার মধ্যে থিয়েটারে ফেরার ইচ্ছেটা প্রবল। নানা কাজের ভিড়েও। জীবন নানা ক্ষেত্রে ছড়ানোর পরও মঞ্চের প্রতি টানটা অনেক বেশি।
  • প্রতিদিন আমাকে পতাকা উত্তোলন করতে হবে। আমাকে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে হবে। আমাকে জাতীয় সঙ্গীতের পাশাপাশি একটি দেশাত্মবোধক গান জানতে হবে। আমাকে জানতে হবে রবীন্দ্রনাথকে, নজরুলকে, শামসুর রাহমানকে, জীবনানন্দ দাসকে। শুধু সংস্কৃতি কেন, বঙ্গবন্ধুকে আমাকে জানতে হবে না? যারা স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছে তাদের কথা জানতে হবে না? আমাদের দেশের বড় বড় যারা পেইন্টার তাদের সম্পর্কে জানতে হবে না? যারা শিক্ষাবিদ, যারা বিজ্ঞানী, যারা খেলোয়াড়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা অবদান রেখেছে এদের সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। এই জানার ভেতর দিয়েই কিন্তু সে নিজেকে তৈরি করবে। সে নিজেই এক সময় ঠিক করবে যে, আমি একজন বড় লেখক হতে চাই। আমি একজন বড় শিক্ষাবিদ হতে চাই। আমি একজন বড় অর্থনীতিবিদ হতে চাই। আমি একজন বড় খেলোয়াড় হতে চাই। বড় শিল্পী হতে চাই। এই যে গড়ে তোলার কাজটা,এটা সবচে' বেশি জরুরি।

তার সম্পর্কে উক্তি[সম্পাদনা]

  • নূর ভাইয়ের অভিনয়ে সহজাত একটা ব্যাপার আছে, খুব আপাতসহজ, যেটা মানুষ পছন্দ করে। তাঁর অভিনয়ের এই সহজাত ধারাটা সবাই পছন্দ করতেন।
  • অভিনয়ে তিনি যে অনন্য, এসব দেখলে বোঝা যায়। এটাই তাঁর বৈশিষ্ট্য। এমন নয় যে পর্দায় তাঁকে দেখলে আসাদুজ্জামান নূরই মনে হয়, তাঁকে আসলে বাকের ভাই, ছোট মির্জাই মনে হয়। প্রতিটি চরিত্রেই যাঁকে উপযুক্ত মনে হয়, তিনি একজন শক্তিশালী অভিনেতা।
  • অভিনয়শিল্পী আসাদুজ্জামান নূর যেমন সিরিয়াস, মানুষ আসাদুজ্জামান নূর তেমনই আন্তরিক। তিনি যেটা অর্জন করতে চান, লক্ষ্য ঠিক রেখে সেটিই অর্জন করতেন। রাজনীতি করবেন মনস্থির করার পর রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িয়েছেন। রাতারাতি নেতা হয়ে যাবেন, ব্যাপারটা মোটেও এমন ছিল না। দীর্ঘ সময় ধরে এলাকায় গিয়ে মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছেন।
  • আমার নার্ভাসনেস তিনি বুঝতে পেরেছিলেন। তারপর আমাকে এতটাই সহজ করে নিলেন যে আমি মন দিয়েই অভিনয়টা করতে পেরেছি। আমি ভাবতেও পারিনি যে তার কাছ থেকে এতটা সহযোগিতা পাব। তিনি কোআর্টিস্টদের সঙ্গে শতভাগ ফ্রেন্ডলি হয়ে মিশেছেন।

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]