কুমুদরঞ্জন মল্লিক

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

কুমুদরঞ্জন মল্লিক (৩ মার্চ ১৮৮৩ - ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭০) একজন বাঙালি কবি ও শিক্ষাবিদ। পল্লীর মানুষ ও প্রকৃতি তার কাব্যের প্রধান বিষয়। তিনি বাংলার রবীন্দ্রযুগে স্বনামধন্য পল্লীপ্রেমী কবি। কুমুদরঞ্জনের কবিতার উপাদান, উপজীব্য প্রধানতঃ বাংলার মাটি, জল, আকাশ, বাতাস, তরুলতা এবং খাঁটি বাঙালীর ভাবনা, ধারণা ও সংস্কৃতি থেকে আহরণ করা। তার উল্লেখযোগ্য রচনাগুলি হলো উজানী, বনতুলসী, শতদল, একতারা, বনমল্লিকা, নূপুর, রজনীগন্ধা, অজয়, তূণীর, স্বর্ণসন্ধ্যা ইত্যাদি। সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ‘বঙ্কিমচন্দ্র স্বর্ণপদক’ ও ‘জগত্তারিণী স্বর্ণপদক’ পান। ভারত সরকার তাকে ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার দিয়ে সম্মান জানায়।

উক্তি[সম্পাদনা]

  • তরুবরে হয় না ম্মবণ কুসুমটি তার ভুলতে নারি,
    ভূলতে পারি হোলির রাতি ফাগের যে দাগ তুলতে নারি॥
    ভূলি সাগর—তার মুকুতায়,
    গেঁথে রাখি গলার মালায়,
    ছোটর অনুরাগের রাখী আয়াস করেও খুলতে নারি।
    • ছোটর দাবী, কুমূদরঞ্জন মল্লিকের শ্রেষ্ট কবিতা, প্রকাশক- মিত্র ও ঘোষ, প্রকাশস্থান- কলিকাতা, প্রকাশসাল-১৩৫৩ বঙ্গাব্দ, পৃষ্ঠা ২৪৪
  • সব দিয়ে হায় ভালবাসে যারে
    সে সবারি আগে ফাঁকি দেয় তারে,
    যাহারে করিবে নয়নের আলো
    সেই সে নয়ন বাঁধিবে।
    পাষাণে বাঁধিয়া ভাঙা বুক তার
    বল কত বাসা বাঁধিবে।
    • নীড়ভষ্ট, একতারা- শ্রীকুমুদরঞ্জন মল্লিক, দ্বিতীয় সংস্করণ, প্রকাশক- চক্রবর্তী চাটার্জ্জি এণ্ড কোং, প্রকাশস্থান- কলিকাতা, পৃষ্ঠা ২৮
  • হয়তো আমার এ-পথে আর হবে নাকো আসা,
    দু'ধারে যাই রোপণ ক'রে বুকের ভালবাসা।
    ধূলার এ-পথ যাই ভিজায়ে,
    শ্যামল আসন যাই বিছায়ে,
    অমর ক'রে যাই রেখে যাই ক্ষণিক কাঁদাহাসা।
    • হয়তো, কুমূদরঞ্জন মল্লিকের শ্রেষ্ট কবিতা, প্রকাশক-মিত্র ও ঘোষ, প্রকাশস্থল- কলিকাতা, প্রকাশসাল-১৩৫৩ বঙ্গাব্দ, পৃষ্ঠা ২১৬
  • দেখিতেছি পড়ে পুরাতন দিনলিপি—
    আনন্দ চেয়ে বেদনা দীর্ঘজীবী।
    মিলায় না ব্যথা হারায় না ব্যথা
    গতি তার বহুদৃর—
    তা’রা যেন রাগ রাগিনী, তাহাবা সুর।
    • বেদনা, কুমুদরঞ্জন কাব্যসম্ভার- কুমুদরঞ্জন মল্লিক, প্রকাশক- মিত্র ও ঘোষ, প্রকাশস্থল- কলিকাতা, প্রকাশসাল-১৩৬৭ বঙ্গাব্দ, পৃষ্ঠা ২১৯

কুমুদরঞ্জন মল্লিক সম্পর্কে উক্তি[সম্পাদনা]

  • কুমুদরঞ্জনের কবিতা পড়লে বাংলার গ্রামের তুলসীমঞ্চ, সন্ধ্যাপ্রদীপ, মঙ্গলশঙ্খের কথা মনে পড়ে।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬, পৃষ্ঠা ১৪৩, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  • হৃদয়াবেগের দিক হইতে বিচার করিতে হইলে কুমুদরঞ্জন প্রধানতঃ বেদনার বা দরদের কবি।
    • কালিদাস রায়, কুমুদরঞ্জন কাব্যসম্ভার বইয়ের ভূমিকায়, প্রকাশক- মিত্র ও ঘোষ, প্রকাশস্থল- কলিকাতা, প্রকাশসাল-১৩৬৭ বঙ্গাব্দ

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]