খালিদ বিন ওয়ালিদ
অবয়ব
হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু (আরবি: خالد بن الوليد; ৫৯২ – ৬৪২) একজন আরব সাহাবা ও সেনাপতি ছিলেন। তিনি সাইফুল্লাহ বা আল্লাহর তলোয়ার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ইসলাম গ্রহণের পূর্বে তিনি মুসলিমদের বিরুদ্ধে উহুদ ও খন্দকের যুদ্ধে অংশ নেন। হুদায়বিয়ার সন্ধির পর তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন এবং এরপর অনুষ্ঠিত মুতার যুদ্ধ, মক্কা বিজয় ও হুনাইনের যুদ্ধে তিনি মুসলিমদের হয়ে অংশগ্রহণ করেন। খলিফা আবু বকর ও উমরের সময়ে তিনি আরব বিদ্রোহী গোত্রগুলোর বিরুদ্ধে রিদ্দার যুদ্ধ এবং বাইজেন্টাইন ও সাসানীয়দের (পারস্য) বিরুদ্ধে বিভিন্ন যুদ্ধে লড়াই করেন। তার উদ্ভাবিত রণকৌশলগুলো পরবর্তীতে দীর্ঘকাল বিভিন্ন যুদ্ধে অনুসৃত হয়।
উক্তি
[সম্পাদনা]- আমি শাহাদাতের ইচ্ছা নিয়ে এত বেশি যুদ্ধে লড়াই করেছি যে আমার শরীরের কোনো অংশ ক্ষতচিহ্নবিহীন নেই যা বর্শা বা তলোয়ারের আঘাতের কারণে হয়নি। এর পরেও আমি এখানে, বিছানায় পড়ে একটি বৃদ্ধ উটের মতো মারা যাচ্ছি। কাপুরুষদের চোখ যাতে কখনো শান্তি না পায়।
- মৃত্যুশয্যায় খালিদ বিন ওয়ালিদ (সূত্র: বিশ্বনবীর সাহাবি - তালিবুল হাশেমী, অনুবাদ: আব্দুল কাদের; কালের কণ্ঠের বিশ্ববিখ্যাত মুসলিম বীর খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা.) প্রতিবেদন থেকে সংগৃহীত)
- মূতার যুদ্ধে আমার হাতে নয়টি তরবারি ভেঙ্গে গিয়েছিল। শেষে আমার হাতে একটি প্রশস্ত ইয়ামানী তলোয়ার ব্যতীত আর কিছুই অবশিষ্ট ছিল না।
- সহিহ বুখারি (হাদিসবিডি.কম থেকে সংগৃহীত)
- ইসলামে প্রবেশ কর ও নিরাপদ থাক। অথবা জিজিয়া দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হও, তোমরা ও তোমাদের জনগণ আমাদের নিরাপত্তা লাভ করবে। অন্যথায় ফলাফল নিয়ে তোমরা নিজেদেরকেই দায়ী করবে, তোমরা জীবনকে যেভাবে আকাঙ্ক্ষা কর আমি মৃত্যুকে সেভাবে আকাঙ্ক্ষা করি।
- অভিযানের পূর্বে পারস্যের সম্রাট তৃতীয় ইয়াযদগারদের কাছে খালিদ বিন ওয়ালিদের চিঠি। (হিস্টরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড, ৪র্থ খণ্ড [বুক ১২: দ্য মোহামেডান অ্যাসেন্ড্যান্সি], পৃষ্ঠা ৪৬৩, জন ক্লার্ক রিডপাথ, এলএল.ডি. ১৯১০।)
খালিদ বিন ওয়ালিদ সম্পর্কে উক্তি
[সম্পাদনা]- نِعْمَ عَبْدُ اللَّهِ خَالِدُ بْنُ الْوَلِيدِ سَيْفٌ مِنْ سُيُوفِ اللَّهِ
- আল্লাহ তা’আলার এ বান্দা খালিদ ইবনুল ওয়ালীদ খুব ভাল ব্যক্তি। ইনি আল্লাহ তা’আলার তরবারিগুলোর মাঝের একখানা তরবারি।
- মুহাম্মাদ (সুনান আত-তিরমিজী; হাদিসবিডি.কম থেকে সংগৃহীত)
- ওলিদের বেটা খালেদ সে বীর যাহার নামের ত্রাসে
পারস্য-রাজ নীল হয়ে উঠে ঢলে পড়ে সাকি-পাশে!
রোম-সম্রাট শারাবের জাম-হাতে থরথর কাঁপে,
ইস্তাম্বুলি বাদশার যত নজ্জুম আয়ু মাপে!
মজলুম যত মোনাজাত করে কেঁদে কয় 'এয় খোদা,
খালেদের বাজু শমশের রেখো সহি-সালামতে সদা!- খালেদ— কাজী নজরুল ইসলাম। "জিঞ্জীর"। নজরুল-রচনাবলী। ৩য় খণ্ড (জন্মশতবর্ষ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ১২১। আইএসবিএন 9840749277।
- তিনি নিজে ঘুমান নি এবং অন্যদের ঘুমাতে দেন নি; তার কাছ থেকে কিছু গোপন করা যেত না।
- খালিদ সত্যিকার সেনাপতি, আল্লাহ আবু বকরের উপর রহমত করুক। তিনি মানুষকে আমার চেয়েও উত্তমরূপে চিনতে পারতেন।
- হাজিরের যুদ্ধের পর উমর ইবনুল খাত্তাব (তারিখুত তাবারি, মুহাম্মদ ইবনে জারির আল-তাবারি)
- সামরিক নেতৃত্বের সব গুণাবলিই তার মধ্যে বিদ্যমান ছিল। অসীম বাহাদুরি, অনুপম সাহসিকতা, উপস্থিত বুদ্ধি, তীক্ষ্ম মেধা, অত্যধিক ক্ষিপ্রতা এবং শত্রুর ওপর অকল্পনীয় আঘাত হানার ব্যাপারে তিনি ছিলেন অদ্বিতীয়।
- আবকারিয়াতু খালিদ — আব্বাস মাহমুদ আল আক্কাদ
(মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ (৪ জানুয়ারি ২০২৩)। "অপরাজিত যোদ্ধা খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা.)"। দেশ রূপান্তর। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০২৪।)
- আবকারিয়াতু খালিদ — আব্বাস মাহমুদ আল আক্কাদ
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]উইকিপিডিয়ায় খালিদ বিন ওয়ালিদ সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।
উইকিমিডিয়া কমন্সে খালিদ বিন ওয়ালিদ সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।