খেলা
অবয়ব
খেলাধুলা বা ক্রীড়া হলো এমন একধরনের কাজ যা বিনোদনের জন্য অথবা কখনো কখনো জ্ঞান অর্জনের সরঞ্জাম হিসাবে গণ্য করা হয়। এটা বিনোদনের একটি স্বতন্ত্র মাধ্যম যা শুধু আনন্দ উপভোগের জন্য অথবা পুরস্কারের জন্য করা হয়। খেলাধুলা সাধারণত কাজের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। এসব মূলত ঐতিহ্য, সৌন্দর্যবোধ ও মিত্রতা রক্ষার্থে আয়োজন করা হয়।
উক্তি
[সম্পাদনা]- হােক খেলা, এ খেলায় যোগ দিতে হবে
আনন্দ কল্লোলাকুল নিখিলের সনে!
সব ছেড়ে মৌন হয়ে কোথা বসে র’বে
আপনার অন্তরের অন্ধকার কোণে!- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর - সোনার তরী, খেলা ১৮৯৩ (পৃ. ১৯৩)।
- সেই উচ্ছলিত প্রাণের বেগ আপনার লীলার উপকরণ না পাইলে অধীর হইয়া উঠে। এইজন্যই ছেলেদের বিনা কারণে ছুটাছুটি করিতে হয়, তাহারা যে চেঁচামেচি করে তাহার কোনো অর্থই নাই এবং তাহাদের খেলা দেখিলে বিজ্ঞ ব্যক্তির হাসি আসে এবং কাহারও কাহারও বিরক্তি বোধ হয়। কিন্তু, তাহাদের এই খেলার উৎপাত আমাদের পক্ষে যত বড়ো উপদ্রব হউক, খেলা বন্ধ করিলে উপদ্রব আরও গুরুতর হইয়া উঠে সন্দেহ নাই।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর - পথের সঞ্চয়, খেলা ও কাজ।
- তুমি দেখিবে, নিপুণ-ক্রীড়কের এইরূপই করিয়া থাকে। গোলা তাহাদের নিকট প্রধান জিনিষ নহে; কিরূপে গোল ছুঁড়িতে হইবে, ধরিতে হইবে, তাহার উপরেই খেলার ভালমন্দ নির্ভর করে। এই গোলাখেলায় নিয়মের বাঁধাবাঁধি আছে, চটুলতা, আছে, বুদ্ধি-বিবেচনার প্রয়োজন আছে। ক্রোড় পাতিয়া রাখিলেও আমি হয়তো গোলাটাকে ধরিতে পারিব না, কিন্তু আর একজন, আমার নিক্ষিপ্ত গোলা অক্লেশেই ধরিয়া ফেলিবে। কিন্তু আমি যদি গোলাটাকে ছুঁড়িবার সময়, আকুলব্যাকুল হইয়া পড়ি, তাহা হইলে আমার খেলাটা কিরূপ হইবে? কি করিয়া আমি স্থির থাকিব?—খেলার ক্রম-টি কি করিয়া রক্ষা করিব?
- জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর - এপিক্টেটসের উপদেশ, জীবনের খেলা।
- —ও প্রিয়তমা সেই সন্ধ্যা বেলা—
চাঁদের আলোয় লুকোচুরি খেলা।…
ম'নে পড়ে,
কিছু মনে পড়ে না বুঝি!
স্মৃতির খেয়ালে শুধু মনে হয়
পবিত্র সাধনার প্রতি মামুষের অবহেলা।- বিলেশ্বর গড়াই - মেঘ ঢাকা আলো, নীরব প্রতিবাদ।
- ভোঁদড়গুলি অত্যন্ত আমোদপ্রিয়। স্বাধীন অবস্থায় তাহাদের বাসস্থানের নিকটবর্তী জলার ধারে পরিবারস্থ সকলে মিলিয়া যখন খেলা কবে, তখন তাহাদিগকে দেখিলে বোধহয় যেন পৃথিবীতে তাহাদের চাইতে সুখী জীব আর নাই। আমি বন্য ভোঁদড়ের খেলা কখনো স্বচক্ষে দেখি নাই, কিন্তু যাহারা দেখিয়াছেন তাঁহারা বলেন যে, তাহার চাইতে আমোদজনক দৃশ্য বড় অধিক নাই।
- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী - উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র, ভোঁদড়।
- আগুন লইয়া খেলা বড় বিপজ্জনক। সকলে তাহা পারে না। আমাদিগকে কর্ম্মক্ষেত্রে আনিয়া দেশ-নায়ক গণ ভুল করিয়াছিলেন। সৎকার্য্যের অনুষ্ঠানে একটা পতিব্রতার ভিত্তির প্রয়োজন। আমাদের তাহা ছিল না। আমরা শুদ্ধচিত্ত ও সংযত না হইয়াই একটী গুরুতর কার্য্যে নিযুক্ত হইয়াছিলাম।
- মানদা দেবী - শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত, অগ্নি ক্রীড়া।
- বাল্যকালের ক্রীড়া, কিশোর-বয়সের প্রথম ভালবাসা, কত কথা, কত কৌতুক একে একে জাগরিত হইয়া বালিকায় দলিত করিতে লাগিল। এক একটি কথা মনে হয়, আর হৃদয়ে দুঃখ উথলিয়া উঠে, অবিরল অশ্রুধারায় চক্ষু ও বক্ষঃস্থল ভাসিয়া যায়।
- রমেশচন্দ্র দত্ত - মাধবীকঙ্কণ ১৯৬০ (পৃ. ১৭-১৯)।
- আমি কেবল প্রাচীন হইলাম? আমি এ কথায় বিশ্বাস করিব না। পৃথিবীতে উচ্চ হাসি ত আজিও আছে, কেবল আমার হাসির দিন গেল? পৃথিবীতে উৎসাহ, ক্রীড়া, রঙ্গ, আজিও তেমনি অপর্য্যাপ্ত, কেবল আমারই পক্ষে নাই? জগৎ আলোকময়, কেবল আমারই রাত্রি আসিতেছে? সলমন কোম্পানির দোকানে বজ্রাঘাত হউক, আমি এ চসমা ভাঙ্গিয়া ফেলিব, আমি বুড়া বয়স স্বীকার করিব না।
- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় - কমলাকান্ত ১৮৮৫ (পৃ. ২০২-২১৭)।
- খেলাধুলার শক্তি আছে বিশ্বকে বদলে দেওয়ার। এটিতে অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতা রয়েছে, মানুষকে এমনভাবে একত্রিত করার শক্তি আছে যা অন্য কেউ করতে পারবে না। এটি তরুণদের সাথে তারা বোঝে এমন ভাষায় কথা বলে। খেলাধুলা আশা জাগাতে পারে, যেখানে একসময় শুধুই হতাশা ছিল। এটি জাতিগত বাধা ভেঙ্গে ফেলতে পারে; সরকারের চেয়েও বেশি শক্তিশালী। সব ধরনের বৈষম্যের মুখে হাসি ফোটে। খেলাধুলা হল প্রেমীদের খেলা।
- ১৯৯৫ রাগবি বিশ্বকাপে নেলসন ম্যান্ডেলা, (২৪ জুন ১৯৯৫); দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস এ উদ্ধৃত (১১ জুন, ২০১৩)।
- খেলাধুলা প্রযুক্তিগত বিশ্বের সাথে যুক্ত কারণ খেলাধুলা নিজেই একটি কৌশল। গ্রীস এবং রোমের ক্রীড়াবিদদের মধ্যে বিশাল বৈসাদৃশ্য সুপরিচিত। গ্রীকদের জন্য, খেলাধুলা ছিল শারীরিক ব্যায়াম, মানবদেহের গঠন এবং শক্তি সুরেলাভাবে বিকাশের জন্য একটি নীতি। রোমানদের জন্য, এটি লিজিওনেয়ারের দক্ষতা বাড়ানোর একটি কৌশল ছিল। রোমান ধারণা আজ বিরাজ করছে।
- জ্যাক এলুল, দ্য টেকনোলজিক্যাল সোসাইটি (১৯৬৪), পৃষ্ঠা ৩৮২-৩৮৩।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]উইকিপিডিয়ায় খেলা সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।
উইকিঅভিধানে খেলা শব্দটি খুঁজুন।