বিষয়বস্তুতে চলুন

জিয়াউর রহমান

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে
জিয়াউর রহমান

জিয়াউর রহমান (১৯ জানুয়ারি ১৯৩৬ – ৩০ মে ১৯৮১) ছিলেন বাংলাদেশের অষ্টম রাষ্ট্রপতি, প্রাক্তন সেনাপ্রধান এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সামরিক বাহিনী বাঙালি জনগণের উপর আক্রমণ করার পর তিনি তার পাকিস্তানি অধিনায়ককে বন্দি করে বিদ্রোহ করেন এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। পরে ১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের নামে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা সমর্থনে একটি বিবৃতি পাঠ করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত করে। তবে মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থাকার সময় সংবিধান লঙ্ঘন, শেখ মুজিবের আত্মস্বীকৃত খুনিদের দেশত্যাগে সহায়তা এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নের অভিযোগে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) তার বীর উত্তম খেতাব বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, তার খেতাব বাতিল করা হয়নি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ২১শে এপ্রিল তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে সরিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন। ১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি চার বছর বাংলাদেশ শাসন করার পর ১৯৮১ সালের ৩০শে মে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে চট্টগ্রামে নির্মমভাবে নিহত হন।

উক্তি

[সম্পাদনা]
  • আমি, মেজর জিয়া, বাংলাদেশের মহান নেতা, সর্বাধিনায়ক শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি এবং জানাচ্ছি যে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সরকার ইতোমধ্যেই গঠিত হয়েছে।এছাড়াও ঘোষণা করা হচ্ছে যে, শেখ মুজিবুর রহমানই বাংলাদেশের ৭ কোটি ৫০ লাখ মানুষের নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারই স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশের একমাত্র বৈধ সরকার। এই সরকার আইনসিদ্ধ ও সাংবিধানিকভাবে গঠিত হয়েছে এবং বিশ্ববাসীর স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য। আমি, তাই আমাদের মহান নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে, বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সরকার, বিশেষ করে বৃহৎ শক্তিগুলো এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাই—বাংলাদেশের বৈধ সরকারকে স্বীকৃতি দিন এবং পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর নির্মম গণহত্যা অবিলম্বে বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। আমাদের, সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের, বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে অভিহিত করা নিছক উপহাস ছাড়া কিছুই নয়, এবং এতে কেউ বিভ্রান্ত হবে না। নতুন রাষ্ট্রের মূলনীতিগুলো হবে—প্রথমত: নিরপেক্ষতা, দ্বিতীয়ত: শান্তি, তৃতীয়ত: সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও প্রতি শত্রুতা নয়।
    আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। জয় বাংলা!
    • জিয়াউর রহমান, ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা।[১] [২]
  • যে সব রাজনৈতিক নেতারা জনগনের কল্যানে নিজেদের নিয়োজিত না করে শুধু বিলাস বহুল জীবন যাপন করে তাদের জন্য রাজনীতি করাকে আমি কঠিন করে তুলব।
  • জনগন যদি রাজনৈতিক দল হয়, তা'হলে আমি সেই দলে আছি।
  • টাকা কোনো সমস্যা নয়।

তার সম্পর্কে উক্তি

[সম্পাদনা]
  • সবাইকে মহান স্বাধীনতা দিবসের আন্তরিক শুভেচ্ছা। ফ্যাক্ট: স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বিতর্কের একটি কারণ হচ্ছে আমরা আমাদের ইতিহাসকে যে যার মত করে ব্যবহার করেছি নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য। ফ্যাক্ট: আমাদের স্বাধীনতা এসেছে একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এবং সেই মুক্তিযুদ্ধের আগে ২৩ বছরের একটি স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে যার রাজনৈতিক নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গবন্ধুই ছিলেন মানুষের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতীক। ফ্যাক্ট: ২৫শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হন, কিন্তু গ্রেফতারের পূর্বে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রে সাক্ষর করেননি এবং তাজউদ্দীন আহমদের নিয়ে যাওয়া টেইপ রেকর্ডারে ঘোষণা দিতে রাজি হননি। এর ফলে সাময়িক ভাবে রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি হয় এবং পুরো জাতি দিশেহারা হয়ে পরে। এমতাবস্থায় মেজর জিয়াউর রহমান নিজ উদ্যোগে নিজের নামে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং পরবর্তীতে আরেকবার ঘোষণা সংশোধন করে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে ঘোষণা দেন। মেজর জিয়াউর রহমানের কন্ঠে স্বাধীনতার ঘোষণা সকলকে অনুপ্রাণিত করে। পাশাপাশি এম এ হান্নান সহ কয়েকজন ঘোষণা দেন কিন্তু মেজর জিয়াউর রহমান এর ঘোষণা অনেক বেশি মানুষের কাছে পৌঁছায় আর তিনি সামরিক অফিসার হবার কারণে ভিন্ন তাৎপর্য বহন করে বিশেষ করে বাঙালি সেনা, ই পি আর সেনা এবং পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের জন্য। এরই ধারাবাহিকতায় তাজউদ্দীন আহমদ এবং সৈয়দ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠন হয় ১০ই এপ্রিল ১৯৭১ এবং শপথ নেয় ১৭ই এপ্রিল ১৯৭১। এই সরকারের রাজনৈতিক নেতৃত্বেই সামরিক যুদ্ধ, কূটনীতি, প্রশাসন সহ সকল কার্যকলাপ পরিচালিত হয় এবং দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করি ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১।
  • সোহেল তাজ, ২৬ মার্চ ২০২৫, ফেসবুক পোস্টে [৩]
  • ২৭ মার্চ শনিবার রাত আটটায় রেডিওর নব ঘুরাতে ঘুরাতে এই দেশের বেশ কিছু মানুষ অদ্ভুত একটা ঘোষণা শুনতে পায়। মেজর জিয়া নামের কেউ একজন নিজেকে রাষ্ট্রপ্রধান ঘোষণা দিয়ে বলেন, 'আমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি।' তিনি সর্বাত্মক যুদ্ধের ডাক দেন।" (একাত্তুরের রণাঙ্গন- শামসুল হুদা চৌধুরী, একাত্তুরের দশমাস- রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী, আমার একাত্তুর- আনিসুজ্জামান) দেশের মানুষদের ভেতর দিয়ে তীব্র ভোল্টেজের বিদ্যুতের শক প্রবাহিত হয়। তাদের নেতিয়ে পড়া মেরুদণ্ড একটি ঘোষণায় ঋজু হয়ে যায়। তাদের চোখ ঝলমল করতে থাকে। একজন অচেনা অজানা লোকের কণ্ঠস্বর এতটা উন্মাদনা সৃষ্টি করতে পারে ভাবাই যায় না। পিরোজপুর মহকুমার সাব ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার এই ঘোষণা শুনে আনন্দে ছেলেমানুষের মতো চিৎকার শুরু করতে থাকেন- 'যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। আমরা যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছি। আর ভয় নাই।' তিনি পিরোজপুরের পুলিশদের অস্ত্রভাণ্ডার থেকে দুইশ রাইফেল স্থানীয় জনগণকে দিয়ে দেন। যুদ্ধ শুরুর প্রস্তুতি হিসেবে। পাকিস্তান মিলিটারি তাঁকে হত্যা করে ৫ মে। এই ঘটনার বত্রিশ বছর পরে তাঁর বড় ছেলে 'জোছনা ও জননী' নামের একটা উপন্যাস লেখায় হাত দেয়। কালুরঘাট রেডিওস্টেশন থেকে প্রচারিত মেজর জিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা নিয়ে পরে নানান বিভ্রান্তি তৈরি হয়। তিনি মোট ক'বার ঘোষণা পাঠ করেছেন? বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে বাংলাদেশের একচ্ছত্র নায়ক এবং তার পক্ষেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হচ্ছে। এই বিবৃতি কত তারিখে পড়া হলো, ক'বার পড়া হলো? এই নিয়ে বিভ্রান্তি। জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা পাঠের আগেই স্বয়ং বঙ্গবন্ধুর দেয়া স্বাধীনতা ঘোষণা পাঠের প্রসঙ্গ বইপত্রে পাওয়া যাচ্ছে। যেমন চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব আব্দুল হান্নান দুপুর দু'টায় বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার বাংলা অনুবাদ প্রচার করেন। ২৬ মার্চ সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে স্বাধীনতা ঘোষণার বাংলা অনুবাদ দ্বিতীয়বার পড়া হয়। পাঠ করেন হাটহাজারী কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল জনাব আবুল কাশেম সন্দীপ। (স্বাধীনতার ঘোষণা প্রসঙ্গে মেজর জিয়া নিজে তাঁর ডায়েরিতে বা লিখেছেন তা হলো-'২৭শে মার্চ শহরের চারদিকে তখন বিক্ষিপ্ত লড়াই চলছিল। সন্ধ্যা সাড়ে ছ'টায় রেডিওস্টেশনে এলাম। এক টুকরা কাগজ খুঁজছিলাম। হাতের কাছে একটা এক্সারসাইজ বাড়া পাওয়া গেল। তার একটি পৃষ্ঠায় দ্রুত হাতে স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম ঘোষণার কথা লিখলাম। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্র প্রধানের দায়িত্বভার নিয়েছি, সে কথাও লেখা হলো সেই প্রথম ঘোষণায়... কিছুক্ষণের মধ্যে সে ঘোষণা বেতারে প্রচার করলাম। ২৮ মার্চ সকাল থেকে পনেরো মিনিট পর পর ঘোষণাটি প্রচার করা হলো কালুরঘাট রেডিওস্টেশন থেকে। ৩০ মার্চ দ্বিতীয় ঘোষণাটি প্রচার করা হলো রাজনৈতিক নেতাদের অনুরোধক্রমে।' স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে কোনোরকম বিভ্রান্তি থাকতে পারে না। এই একটি বিদয়ে দল মতের ঊর্ধ্বে আমাদেরকে উঠতেই হবে। 'সত্যেন ধার্যতে পৃথ্বি, সত্যেন তাপতে রবি, সত্যেন বাতি বায়ুষ্প, সর্বং সত্যে প্রতিষ্ঠিতম।' সভ্যই পৃথিবীকে ধারণ করে আছে, সত্যের দ্বারাই সূর্য তাপ বিকিরণ করছে, সত্যের জন্যেই বাতাস বইছে, সত্যেই সবকিছু প্রতিষ্ঠিত।-লেখক)
  • তাঁর চোখ কালো চশমায় ঢাকা। গায়ে ধবধবে সাদা হাফ হাতা গেঞ্জি। বসেছেন ঋজু ভঙ্গিতে। বাঁ হাতের কব্জিতে পরা ঘড়ির বেল্ট সামান্য বড় হয়ে যাওয়ায় হাত নাড়ানোর সময় ঘড়ি উঠানামা করছে। এতে তিনি সামান্য বিরক্ত, তবে বিরক্তি বোঝার উপায় নেই। যে চোখ মানবিক আবেগ প্রকাশ করে, সেই চোখ তিনি বেশিরভাগ সময় কালো চশমায় ঢেকে রাখতে ভালোবাসেন। মানুষটার চারপাশে এক ধরনের রহস্য আছে। তাঁর নাম জিয়াউর রহমান। তিনি তাঁবুর বাইরে কাঠের ফোল্ডিং চেয়ারে বসে আছেন। চারপাশের দৃশ্য অতি মনোরম। যে দিকে চোখ যায় জঙ্গলময় উঁচু পাহাড়। কোনো জনবসতি নেই। জায়গাটা মেঘালয় রাজ্যের ছোট্ট শহর তুরা থেকেও মাইল দশেক দূরে। নাম তেলঢালা। মেজর জিয়া ঘন জঙ্গলের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে চোখ ফেরালেন আকাশের দিকে। আকাশে মেঘের আনাগোনা। এই মেঘে বৃষ্টি হয় না, তবে এই অঞ্চলের বৃষ্টির ঠিক নেই। যে-কোনো মুহূর্তে ঝুমঝুমিয়ে বৃষ্টি নামতে পারে। প্রায় স্বর্গের কাছাকাছি এই অপূর্ব বনভূমিতে জড়ো হয়েছে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রথম, তৃতীয় এবং অষ্টম ব্যাটালিয়ান। তাদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে দুর্ধর্ষ এক পদাতিক ব্রিগেড, নাম 'জেড ফোর্স'। জিয়াউর রহমানের নামের আদ্যক্ষর জেড দিয়ে এই ফোর্সের নামকরণ। জেড ফোর্সের অধিনায়ক মেজর জিয়ার মন খানিকটা খারাপ। কারণ তিনি খবর পেয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানি তাঁর বিষয়ে খানিকটা বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। মেজর জিয়ার নির্দেশে প্রথম ইস্ট বেঙ্গলের কামালপুর বর্ডার আউটপোস্ট আক্রমণ জেনারেল ওসমানীর মতে উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা। কামালপুর আক্রমণ করতে গিয়ে প্রথম ইস্ট বেঙ্গলের তিনজন নিহত হন, ছেষট্টিজন আহত। ডেল্টা কোম্পানির কমান্ডার সালাহউদ্দিন শহিদ হন। ব্রাভো কোম্পানির কমান্ডার হাফিজউদ্দিন গুরুতর আহত হন। দুটো কোম্পানিই কমান্ডারবিহীন হয়ে পড়ে। জেনারেল ওসমানীর মতে, যেহেতু আমাদের লোকবল অস্ত্রবল কম সেহেতু রক্তক্ষয়ী দুর্ধর্ষ পরিকল্পনায় যাওয়া ঠিক না। মেজর জিয়ার মত হচ্ছে, আমি দেশের ভেতর যুদ্ধ করছি। কখন কী করব সেই সিদ্ধান্ত আমি নেব। সেনাবাহিনী প্রধান যিনি থাকেন বাংলাদেশ সরকারের দপ্তরে- তিনি পরিস্থিতি জানেন না। মেজর জিয়া এফ ফোর্সের অধিনায়ক মেজর কে এম শফিউল্লাহ এবং কে ফোর্সের অধিনায়ক মেজর খালেদ মোশাররফের সঙ্গে এক বৈঠকেও খোলাখুলি নিজের এই মত প্রকাশ করেন। তাঁর কথা হলো, গেরিলা ধরনের এই যুদ্ধে আমাদের সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়কের প্রয়োজন নেই। আমাদের দরকার কমান্ড কাউন্সিল। সবচে' বড় কথা সেনাবাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্ত কেউ সেনাবাহিনীর প্রধান হতে পারেন না। মেজর জিয়ার এই মনোভাব জেনারেল ওসমানীর কানে পৌছেছিল। সঙ্গত কারণেই এই মন্তব্য তাঁর ভালো লাগে নি। তাঁবুর ভেতর কিছু সময় কাটিয়ে মেজর জিয়া আবার বের হয়ে আগের জায়গায় বসলেন। এবার তাঁর হাতে দু'লাইনের একটা ইংরেজিতে লেখা চিঠি। চিঠিটি তিনি লিখেছেন পাকিস্তানের মেজর জেনারেল জামশেদকে। এখন তিনি ঢাকায় ৩৬তম ডিভিশনের প্রধান। মেজর জিয়া যখন পাঞ্জাব রেজিমেন্টে ছিলেন, তখন মেজর জেনারেল জামশেদ ছিলেন তাঁর কমান্ডিং অফিসার। চিঠিতে মেজর জিয়া লিখেছেন- Dear General Jamshed, My wife Khaleda is under your custody. If you do not treat her with respect, I would kill you someday. Major Zia এই চিঠি দেয়া হলো মেজর শাফায়েতকে। মেজর শাফায়েত চিঠিটি ঢাকায় পোস্টবক্সের ডাকবাক্সে ফেলার ব্যবস্থা করলেন। মজার ব্যাপার হলো, এই চিঠি মেজর জেনারেল জামশেদের হাতে পৌঁছেছিল।' "সূত্র: রক্তে ভেজা একাত্তুর, মেজর (অবঃ) হাফিজ উদ্দিন আহমদ
  • আমি আমার জীবনে তোমার চেয়ে বেশি সরকার ও নেতাদের দেখেছি। ব্রিটিশ আমল দেখেছি, পাকিস্তান আমল দেখেছি। তুমি আমাকে একটা উদাহরণ দেখাও কোন রাজনৈতিক নেতা দুর্নীতি করে নাই...এখন পর্যন্ত জিয়ার ব্যক্তিগত দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নাই। কোনোরকম স্বজনপ্রীতিও তার মধ্যে নেই। তার আত্মীয়-স্বজনকে চেনে না। তাদের কোনো সুযোগ-সুবিধা দেয় না। একজন সৎ শাসকের তো প্রশংসাই প্রাপ্য।
  • এখন পর্যন্ত যে বা যারা আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন করেছে তাদেরকে এর মূল্য দিতে হয়েছে। যে জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করেছিলো; তাকে জীবন দিয়ে তা পরিশোধ করতে হয়েছে। জামায়াত আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন করেছে, তাদের নেতাকর্মীদের ফাঁসির মাধ্যমে তা পরিশোধ হয়েছে। এরপর আবার আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হয়েছে। পিলখানা, শাপলা গণহত্যা ও দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের মাধ্যমে তা পরিশোধ করতে হয়েছে। আবারও যদি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করা হয়; আপনার-আমার জীবন দিয়ে তার খেসারত দিতে হবে।

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]