জোয়ার-ভাটা

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে
ধরি ধরি বাতাসটি, দেয়
জলের গায়ে কাঁটা।
আকাশেতে আলাে আঁধার
খেলে জোয়ার ভাটা।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

জোয়ার-ভাটা হলো পৃথিবীর বাইরের মহাকর্ষীয় শক্তির (বিশেষ করে চাঁদের) প্রভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের জল নিয়মিত বিরতিতে ফুলে ওঠা ও নেমে যাওয়ার ঘটনা। সমুদ্রপৃষ্ঠের জল নিয়মিত বিরতিতে ফুলে উঠলে তাকে জোয়ার বলে। আর নেমে যাওয়ার ঘটনা হলো ভাটা বলে। এই দুইয়ের একত্রে জোয়ার-ভাটা বলা হয়।

উক্তি[সম্পাদনা]

  • যথা নিয়মে প্রতি দিন সমুদ্রের জলের যে হ্রাস বৃদ্ধি হয় তাহাকে জোয়ার ভাটা বলে; অর্থাৎ সমুদ্রের জল যে সহসা স্ফীত হইয়া উঠে তাহাকে জোয়ার কহে; আর ঐ জল পুনরায় যে ক্রমে ক্রমে অম্প হইতে থাকে তাহাকে ভাটা কহে। সূর্য্য ও চন্দ্রের আকর্ষণে এই অদ্ভূত ঘটনা হয়।
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, জল—সমুদ্র—নদী, বোধোদয়- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দ (১২৫৯ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭২
  • ধরি ধরি বাতাসটি, দেয়
    জলের গায়ে কাঁটা।
    আকাশেতে আলাে আঁধার
    খেলে জোয়ার ভাটা।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পত্র, কড়ি ও কোমল-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- পীপ্‌ল্‌স লাইব্রেরি, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দ (১২৯৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১২৭
  • মানবের ভাগ্যটা যেন নদীর মত জোয়ার ভাঁটার নিয়মের অধীন।
    • হরিসাধন মুখোপাধ্যায়, দেওয়ানা, ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ, দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়, প্রকাশক- গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় এণ্ড সন্স, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দ (১৩২৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৪২
  • সৌভাগ্য কখন নহে স্থির এক স্থানে,
    ভ্রমিতেছে নিরন্তর এখানে সেখানে।
    জোয়ার ভাটার মত আসে চ’লে যায়,
    একস্থলে চিরকাল কে দেখিতে পায়।
    • নারায়ণচন্দ্র বিদ্যারত্ন, দশাপরিবর্ত্তন, নীতিকণা - নারায়ণচন্দ্র বিদ্যারত্ন, প্রকাশক- কলিকাতা লাইব্রেরি, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩০৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৭
  • যে-সব জিনিস সংসারের জোয়ারে ভাঁটায় ভেসে আসে ভেসে চলে যায় তাদেরই তাড়াতাড়ি দুই মুঠো দিয়ে চেপে ধরাকেই সে পরিত্রাণ বলে মনে করে।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রসের ধর্ম, শান্তিনিকেতন-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিতীয় খণ্ড, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫৩
  • নগরের বিশেষ শোভা এই যে, অন্য নগরে যে স্থানে রাস্তা পথ থাকে, এ নগরের সে স্থানে সমুদ্রজল জোয়ার ভাটা খেলিতেছে। বস্তুতঃ এই নগর সমুদ্রের উপর নির্ম্মিত, অট্টালিকা সকল সমুদ্র হইতে উথিত ও এক বাটী হইতে অন্য বাটীতে যাইতে হইলে নৌকাদ্বারা যাইতে হয়।
    • রমেশচন্দ্র দত্ত, ইয়ুরোপে তিন বৎসর, সপ্তম অধ্যায়, প্রকাশক- গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় এণ্ড সন্স, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দ (১২৯০ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৯৬
  • অনেকে বলেন, বাঙ্গালার সবিরাম জ্বরের উপর চন্দ্রের বা জোয়ার ভাটার আশ্চর্য্য প্রভাব দৃষ্ট হয়।
    • বিনয়কৃষ্ণ দেব, কলিকাতার ইতিহাস, চতুর্থ অধ্যায়, অনুবাদক- সুবলচন্দ্র মিত্র, প্রকাশক- বঙ্গবাসী-ইলেক্‌ট্রো-মেসিন-প্রেস, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫৬
  • বৃহৎ অ্যাস্টারয়েড নিকটে আসায় মঙ্গল গ্রহ আর চন্দ্রের কক্ষ একটু বেঁকে গেছে, আমাদের জোয়ার ভাটায় সময়ও কিছু বদলেছে।
    • রাজশেখর বসু, গগন চটি, আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প-রাজশেখর বসু, প্রকাশক- এম. সি. সরকার এন্ড সন্স লিমিটেড, প্রকাশসাল- ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৯১
  • রাজপুত্র দেখিলেন জোয়ার ভাঁটার মাঝখানে সমস্ত দেশটা থম্ থম্ করিতেছে—কথা নাই কেবল মুখ চাওয়াচাওয়ি, কেবল এক পা এগোনো দুই পা পিছোনো, কেবল আপনার মনের বাসনা স্ত‍ুপাকার করিয়া বালির ঘর গড়া এবং বালির ঘর ভাঙ্গা।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, একটা আষাঢ়ে গল্প, বিচিত্র গল্প-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিতীয় খণ্ড, প্রকাশসাল- ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩০১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১০৪

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]