তকদীর
অবয়ব
তকদীর তাকদীর আরবি শব্দ।এর আভিধানিক অর্থ হলো: নিয়তি।তাকদীর হল নির্ধারিত ভাগ্য। এ মহাবিশ্বে যা কিছু ঘটবে আল্লাহ তার পূর্বজ্ঞান ও প্রজ্ঞা অনুযায়ী সেসব কিছু নির্ধারণ করেছেন। এর প্রতি বিশ্বাসকে ইসলামে তাকদীর বলা হয়।
ইসলামে তাকদীরের ওপর বিশ্বাস করা আল্লাহ তা‘আলার রবুবিয়াত বা প্রভুত্বের ওপর বিশ্বাস করার অন্তর্ভুক্ত এবং তা ঈমানের ছয়টি রুকনের অন্যতম একটি রুকন।
উক্তি
[সম্পাদনা]- আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ فَقَدَّرَهُ تَقْدِيرًا ‘‘এবং তিনি প্রত্যেক জিনিস সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তার একটি তাকদীর বা পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়েছেন।
- (সূরা ফুরকান: ২)
- হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, একদা পিয়ারা নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা. আমাদের মাঝে তাশরিফ আনয়ন করলেন, এ অবস্থায় যে আমরা তখন তাকদিরের ব্যাপারে পরস্পরে বাদানুবাদে লিপ্ত ছিলাম। রাসূলুল্লাহ সা. এতে রাগান্বিত হলেন, এমনকি তার জ্যোতির্ময় মুখমন্ডল ক্ষোভে রক্তিমাভ হয়ে উঠল। যেন তার দুই গন্ডদেশে আনারসের রস ছিটিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি রাগণ কণ্ঠে বললেন, তোমরা কি এ ধরনের ঝগড়া করতে আদিষ্ট হয়েছ। না আমি এ জন্য তোমাদের নিকট রাসূল হিসেবে প্রেরিত হয়েছি? তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতগণ এ ব্যাপারে (তাকদির সংক্রান্ত) বাদানুবাদ শুরু করায় চিরতরে ধ্বংস হয়ে গেছে। আমি তোমাদের কষ্টে ফেলছি যে, এ ব্যাপারে (তাকদির নিয়ে) কথা কাটাকাটি করো না।
- (জামে তিরমিজী: খন্ড ২, পৃ. ৪৮০)।
- হযরত আয়েশা রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সা.কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি তাকদিরের ব্যাপারে বেশি কথাবার্তা বলবে তাকে কিয়ামতের দিন সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। আর যে এ ব্যাপারে উচ্চবাচ্য করবে না, সে জিজ্ঞাসিত হবে না।
- (সুনানু ইবনে মাজাহ: পৃ. ০৯)।
- হযরত আলী রা. বলেন, একদা আমরা পিয়ারা নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা.-এর সাথে ছিলাম। তিনি শাহাদু অঙ্গুলি দ্বারা মাটিতে দাগ কাটছিলেন। আকস্মাৎ আকাশের দিকে মস্তক উত্তোলন করে বললেন, তোমাদের প্রত্যেকের জান্নাত বা জাহান্নামের ঠিকানা নির্ধারিত বা লিখিত হয়ে আছে। তখন সাহাবিরা আরজ করলেন, তবে কি আমরা এর ওপর ভরসা করে বসে থাকব? হে আল্লাহর রাসূল। তিনি উত্তর দিলেন, না। বরং তোমরা আমল করতে থাকো। যার জন্য যা সৃষ্টি করা হয়েছে, তার জন্য তাই সহজ করা হয়েছে।
- (জামে তিরমিজি: খন্ড ২, পৃ. ৪৮০-৪৮১)।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]উইকিপিডিয়ায় তকদীর সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।