নরনারায়ণ রায়

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

নরনারায়ণ রায় ছিলেন পিরোজপুরের রায়েরকাঠীর একজন জমিদার এবং একজন বাঙালি সাহিত্যিক। রায়েরকাঠীতে তিনিই প্রথম আধুনিক ধারার সাহিত্য রচনা এবং গ্রন্থ প্রকাশ করেন। তাঁর গ্রন্থাবলির মধ্যে ‘চারু প্রবন্ধ’, ‘কর্ত্তব্যোপদেশ’, ‘গোপঙ্গনাকাব্য’, ‘সুনীতি নাটক’, ‘শ্রীবৎস চরিত’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

উক্তি[সম্পাদনা]

  • কেবল অর্থার্জন-সমর্থ হইলেই; বিদ্বান বলিয়া আদৃত হইলেই বিদ্যাশিক্ষা ফলবতী হইয়াছে বলিয়া শ্লাঘা করা প্রকৃত মূর্খের কৰ্ম। যিনি কৃতবিদ্য হইয়া জগদীশ্বরের প্রতি প্রীতি ও ভক্তিপূর্বক সংসারযাত্রা নির্বাহ করেন; জ্ঞানের রাজ্য, ঈশ্বরের মহিমা ও বিদ্যার আলোক বিস্তৃত করিয়া আপনাকে এবং প্রতিবাসী সকলকে সুখিত করেন, তিনিই প্রকৃত বিদ্বান, তাঁহারই বিদ্যাশিক্ষাজনিতশ্রম সাকল্য সাফল্য।
    • বিদ্বান, চারু প্রবন্ধ (১৮৬২)।
  • যদি মনুষ্যদেহ ধারণ করিয়া পশুপুঞ্জ হইতে শ্রেষ্ঠত্ব লাভের বাসনা থাকে; যদি পরমপিতা, জগদীশ্বরের প্রতি প্রীতি ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করিয়া নশ্বরদেহ ধারণের সার্থকতা সম্পাদনে স্পৃহা থাকে; যদি জ্ঞানের সিংহাসনে সমারুঢ় হইতে অভিলাষ থাকে; এমন কি যদি সর্বপ্রকার ক্লেশের হস্ত হইতে নির্মুক্ত হইয়া আপনাকে সর্বতোভাবে সুখিত করিবার মানস থাকে; তবে বিদ্যাশিক্ষায় মনোনিবেশ করা অগ্রে কর্তব্য, সন্দেহ নাই।
    • বিদ্যা, চারু প্রবন্ধ (১৮৬২)।
  • যেমন কামধেনু সর্বসুখ প্রদানে সমর্থিনী, কল্পতরু সর্বপ্রকার বাঞ্ছিত ফল প্রদানে সমর্থ, বিদ্যাও তাদৃশ সর্বপ্রকার শুভফল প্রদান করিয়া থাকেন। সর্বার্থসাধিকাবিদ্যা যাহাকে আশ্রয় করেন, তিনি নীচকূলসম্ভূত হইলেও সজ্জন সমাজে সমাদৃত হন।
    • বিদ্যা, চারু প্রবন্ধ (১৮৬২)।
  • সত্যতা জীবনকুসুমের সৌরভবিশেষ। যে মানুষ সত্যচ্যুত, তাহার জীবন সৌরভশূন্য।
    • সত্যতা, চারু প্রবন্ধ (১৮৬২)।
  • দৃষ্টিশূন্য নয়ন ও জীবনশূন্য দেহ যেরূপ শোচনীয়, মিত্রশূন্য মানুষও তদপেক্ষা নূন্য শোচনীয় নহে।
    • মিত্র‍তা, চারু প্রবন্ধ (১৮৬২)।