পাগড়ি
অবয়ব
পাগড়ি বা উষ্ণীশ হলো কাপড়ের এক ধরনের মস্তকাবরণ। এটি একটি লম্বা বিশেষ কাপড় দিয়ে মাথায় পেঁচিয়ে বাঁধা হয়। জাতি ও সংস্কৃতিভেদে অনেক ধরনের বৈচিত্র্যময় পাগড়ি দেখা যায়। এটি বিভিন্ন সংস্কৃতির লোকেরা প্রথাগত মস্তকাবরণ হিসাবে পরিধান করে থাকে।
উক্তি
[সম্পাদনা]- গাড়োয়ানটা পাগড়ি মাথায় পড়ছে ঢুলে,
আপন মনে চলছে গরু ল্যাজুড় তুলে।- সুনির্মল বসু, গরুর গাড়ির গান, সুনির্মল বসুর শ্রেষ্ঠ কবিতা- সুনির্মল বসু, প্রকাশক- মিত্র ও ঘোষ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৪
- গজপতি একটি দ্রব্য লইয়া দেখাইলেন। বিমলা দেখিয়া বলিলেন,“এ সিপাহীর পাগড়ী।” বিমলা পুনর্ব্বার চিন্তায় মগ্ন হইলেন, আপনাআপনি কহিতে লাগিলেন, “যারই ঘােড়া, তারই পাগ্ড়ী? না, এ ত পদাতিকের পাগড়ি!”
- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, দুর্গেশনন্দিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশক- গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় এণ্ড সন্স, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৬৯
- একটু বেশি রাত না হতে হতে
মা আমারে ঘুম পাড়াতে চায়,
জানলা দিয়ে দেখি চেয়ে পথে
পাগড়ি প'রে পাহারওলা যায়।- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিচিত্র সাধ, শিশু- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ (১৪২৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৪০
- দিল্লি লাহোরে যাক, যাক-না আগ্রা,
মাথায় পাগড়ি দেবো, পায়েতে নাগ্রা।
কিম্বা সে যদি আজ বিলাতেই ছোটে
ইংরেজ হবে সবে বুট-হ্যাট-কোটে।- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, একদিন রাতে আমি স্বপ্ন দেখিনু, সঞ্চয়িতা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭৬০
- একদিন আমরা চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখি, ওরাংবাবু দোলনা বেঁধে দোল খাচ্ছেন। কোখেকে কি করে, কার একটা পাগড়ি তিনি আদায় করেছেন, আর সেইটাকে ছাতের গরাদের উপর থেকে ঝুলিয়ে অপূর্ব দোলনা তৈরি হয়েছে। তিনি দুহাতে তার দুই মাথা ধরে মনের আনন্দে দুলছেন।
- সুকুমার রায়, আলিপুরের বাগানে, সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী ও কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৫৯
- কাহারগুলাে পাগড়ি বাঁধে, বাঁদি পরে ঘাঘরা,
জমাদারের মামা পরে শুঁড়তোলা তার নাগরা।- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, খেঁদুবাবুর এঁধো পুকুর, মাছ উঠেছে ভেসে, ছড়া-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩৯৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৪
- কানাই আজ দুই থান মার্কিন দিয়া পাগড়ি বাঁধিল। পোশাকটাও দস্তুর মতন করিল। মনে মনে কিন্তু তাহার মতলব এই যে, যুদ্ধে যাইবার ভান করিয়া একবার ঘোড়ার পিঠে চড়িতে পারিলেই পলায়নের সুবিধা হয়।
- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, সাতমার পালোয়ান, উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, প্রকাশক- বসাক বুক স্টোর প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল-১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৪০৮
- বর নয়কো, লাল-পাগড়ী পুলিশ আসছে নেমে!
বিয়ে বাড়ির লোকগুলো সব হঠাৎ উঠলো ঘেমে,
ব’ললে পুলিশ ও এই কি কত, ক্ষুদ্র আয়োজন?
পঞ্চাশ জন কোথায়? এযে দেখছি হাজার জন!- সুকান্ত ভট্টাচার্য, বিয়ে বাড়ীর মজা, মিঠেকড়া- সুকান্ত ভট্টাচার্য, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশক- সারস্বত লাইব্রেরী, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫৮ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৩
- গোয়ালিয়ার আসলে হিন্দুনগর; কিন্তু এখানকার লোকের পাগ্ড়ীগুলা মুসলমানীধরণের। তবে একরকম বিশেষধরণের পাগ্ড়ী আছে—যাহা খুব আঁটসাঁট করিয়া জড়াইয়া বাঁধা; বর্ণভেদ অনুসারে এই সকল পাগ্ড়ী অসংখ্যরকমের। কোনটার শাঁখের মত গড়ন, কোনটার বা একাদশ-লুইরাজার আমলের টুপির মত গড়ন। আবার একরকম পাগ্ড়ী আছে—যাহার লম্বা দুই পাশ উর্দ্ধে উত্তোলিত ও দুইদিকে সিং-বাহিরকরা। এই পাগ্ড়ীগুলা,—লালরঙের কিংবা পীচফল-রঙের, কিংবা ফিঁকা-সবুজ-রঙের রেশমী কাপড়ের।
- পিয়ের-লোটি, জালিকাটা বেলে-পাথরের নগর, ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ, পিয়ের-লোটির ফরাসী থেকে অনুবাদ, অনুবাদক- জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান পাবলিশিং হাউস, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৬৮
- ছেলেগুলো গাছের উপর চড়িরা বসিয়াছে। একটা ছেলে গাছের ডাল হইতে আস্তে আস্তে হাত বাড়াইয়া একজন মোটা মানুষের মাথা হইতে পাগড়ি তুলিয়া আর-একজনের মাথায় পরাইয়া দিয়াছে। যাহার পাগড়ি সে ব্যক্তি চটিয়া ছেলেটাকে গ্রেফতার করিবার জন্য নিষ্ফল প্রয়াস পাইতেছে, অবশেষে নিরাশ হইয়া সজোরে গাছের ডাল নাড়া দিতেছে, ছোঁড়াটা মুখভঙ্গি করিয়া ডালের উপর বাঁদরের মতো নাচিতেছে।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মুকুট, গল্পগুচ্ছ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, চতুর্থ খণ্ড, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩৯৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৯৮৪-৯৮৫
- আমি নগরে আসিয়া আপনারা এই কারাগারে আছেন শুনিয়া এখানে কিছু ধুতুরা মিশান সিদ্ধি লইয়া আসিয়াছিলাম। যে খাঁ সাহেব পাহারায় ছিলেন, তিনি তাহা সেবন করিয়া ভূমিশয্যায় নিদ্রিত আছেন। এই জামাজোড়া পাগড়ি বর্শা যাহা আমি পরিয়া আছি, সে তাঁহারই।
- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, আনন্দমঠ, চতুর্দ্দশ পরিচ্ছেদ, দ্বিতীয় সংস্করণ, প্রকাশসাল- ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দ (১২৯০ বঙ্গাব্দ),পৃষ্ঠা ৫৪
- কোচ্বাক্সে কোচ্মান বসত মাথায় পাগড়ি হেলিয়ে, দুই দুই সইস থাকত পিছনে, কোমরে চামর বাঁধা, হেঁইয়ো শব্দে চমক লাগিয়ে দিত পায়ে-চলতি মানুষকে।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ছেলেবেলা- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ২০১৭ খ্রিস্টাব্দ (১৪২৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৯
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]উইকিপিডিয়ায় পাগড়ি সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।
উইকিঅভিধানে পাগড়ি শব্দটি খুঁজুন।
উইকিমিডিয়া কমন্সে পাগড়ি সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।