বাল্যবিবাহ
অবয়ব
বাল্যবিবাহ হলো অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির আনুষ্ঠানিক অথবা অনানুষ্ঠানিক বিবাহ। আইন অনুযায়ী বিয়ের বয়স ১৮ বৎসর, তারপরও কিছু কিছু দেশের নিজস্ব প্রথাকেই আইনের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। বাল্যবিবাহে মেয়ে এবং ছেলে উভয়ের উপরই প্রভাব পড়ে। তবে মেয়েরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বিশেষত নিম্ন আর্থসামাজিক পরিস্থিতির কারণে। বেশিরভাগ বাল্যবিবাহে দুজনের মধ্যে শুধু একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকে। বিশেষত মেয়েরাই বাল্যবিবাহের শিকার বেশি হয়। বাল্যবিবাহের কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে দরিদ্রতা, যৌতুক, সামাজিক প্রথা, বাল্যবিবাহ সমর্থনকারী আইন, ধর্মীয় ও সামাজিক চাপ, অঞ্চলভিত্তিক রীতি, অবিবাহিত থাকার শঙ্কা, নিরক্ষরতা এবং মেয়েদের উপার্জনে অক্ষম ভাবা।
উক্তি
[সম্পাদনা]- লোকমত এমনভাবে গঠন করা দরকার, যাহাতে বাল্যবিবাহ অসম্ভব হইয়া উঠে।
- মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী; মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী, "উপসংহার", দুর্নীতির পথে, বিনয়কৃষ্ণ সেন অনূদিত, কলকাতা, ১৯৩০।
- এই বাল্য-বিবাহ যে অতি অনিষ্টের মুল তাহা কাহার না বিদিত আছে, এবং এই বাল্য-বিবাহই আমাদিগের হীনাবস্থার এক প্রধান কারণ হইয়াছে, এই বাল্য বিবাহই আমাদিগের দুর্ভাগ্যের সোপান স্বরূপ!
- কৈলাসবাসিনী দেবী, "বাল্যবিবাহ", হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা, কলকাতা, ১৮৬৩।
- আমাদিগের দেশে যদি এই বাল্য-বিবাহ প্রচলিত না থাকিত, তাহা হইলে আমাদিগের এদেশ কত সুখজনক হইত তাহা বলা যায় না।
- কৈলাসবাসিনী দেবী, "বাল্যবিবাহ", হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা, কলকাতা, ১৮৬৩।
- এই বাল্য বিবাহ নিবারণ না করিলে কোনো প্রকারেই আমাদিগের দেশে সুখোন্নতি হইবার আর উপায়ান্তর নাই, এবং এই বাল্য-বিবাহের অভাব না হইলে কখনই দম্পতীর সন্তান হইবারও সম্ভবনা নাই, এই বাল্য বিবাহ সত্ত আমাদিগের দেশ হইতে বিদ্যাহীনতা যে বিষম দোষ তাহারও নিবারণ হইবে না, এবং এই বাল্য বিবাহের অভাব না হইলে বালিকাগণের অসহ্য বৈধব্য যন্ত্রণা হইতে মুক্ত হইবারও আর দ্বিতীয় উপায় নাই, এবং এই বাল্য বিবাহই বঙ্গদেশীয়গণের দুর্বলতার এক প্রধান কারণ স্বরূপ হইয়াছে।
- কৈলাসবাসিনী দেবী, "বাল্যবিবাহ", হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা, কলকাতা, ১৮৬৩।
- আমি মনে করি, বাল্যবিবাহের মতো সংবেদনশীল সামাজিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শক্তিশালী ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক অঙ্গীকার।
- শেখ হাসিনা, লন্ডনের ওয়ালওয়র্থ একাডেমিতে অনুষ্ঠিত গার্ল সামিটে দেয়া ভাষণ। উক্তিটি উল্লেখ করেছে বিডিনিউজ, "বাল্যবিয়ে রোধে দরকার রাজনৈতিক অঙ্গীকার" (২২ জুলাই ২০১৪)।
- মেয়েদের যদি শিক্ষা ও কাজের সুযোগ দেওয়া হয়, তবে বাল্যবিবাহ কমানো সম্ভব। এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে হবে যাতে অভিভাবকেরা মনে করেন, বিয়ে একটি মেয়ের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হতে পারে না।
- শেখ হাসিনা, বিবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উক্তিটি করেছেন যার উল্লেখ করেছে প্রথম আলো, মেয়েদের শিক্ষা ও কাজ দিলে বাল্য বিবাহ কমবে (১ জুলাই ২০১৫)।
- আয়াতুল্লাহ খোমেনি ১০ বছর বয়সী একটি মেয়েকে বিয়ে করেছিল যখন তার নিজের বয়স ছিল ২৮ বছর। মেয়েটি ১১ বছর বয়সে গর্ভবতী হয় এবং পরে তার গর্ভপাত হয়। কোনো মেয়ের প্রথম ঋতুস্রাবের পূর্বেই তাকে বিয়ে করাকে খোমেনি স্বর্গীয় আশির্বাদ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
- আমির তাহেরি, দ্য স্পিরিট অব আল্লাহ: খোমেনি অ্যান্ড দ্য ইসলামিক রিভোলুশোন (হুচিনসন, ১৯৮৫), উল্লেখিত হয়েছে: রবার্ট স্পেনসার রচিত দ্য কমপ্লিট ইনফেডাল'স গাইড টু ইরান।
- উরওয়াহ (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন নবী মুহম্মদ আয়িশাহকে বিয়ে করেন তখন তাঁর (আরিশাহর) বয়স ছিল ছয় বছর এবং যখন বাসর করেন তখন তাঁর বয়স ছিল নয় বছর এবং নয় বছর তিনি মুহম্মদের সঙ্গে জীবন কাটান।
- সহীহ বুখারী, হাদিস নং ৫১৫৮।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]উইকিপিডিয়ায় বাল্যবিবাহ সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।
উইকিঅভিধানে বাল্যবিবাহ শব্দটি খুঁজুন।