রমাপ্রসাদ চন্দ
অবয়ব
রমাপ্রসাদ চন্দ (১৫ আগস্ট ১৮৭৩ - ২৮ মে ১৯৪২) ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি ইতিহাসবিদ এবং পুরাতত্ত্ববিদ। তিনি প্রাচীন ইতিহাস, পুরাতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, সাহিত্য এবং দর্শনে স্থায়ী অবদান রাখেন। তিনি ১৯১০ সালে রাজশাহী অঞ্চলের অপর দুই পুরাকীর্তি ও বিদ্যাৎসাহী ব্যক্তি শরৎ কুমার রায় এবং অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়-এর সাথে একত্রে প্রতিষ্ঠা করেন বরেন্দ্র অনুসন্ধান সমিতি এবং পরবর্তীতে ১৯১৯ সালে বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর।
উক্তি
[সম্পাদনা]- আমাদের শাস্ত্রে বিদ্যার বিভিন্নরকম বিভাগ আছে। যেমন অষ্টাদশ বিদ্যা, চতুৰ্দ্দশ বিদ্যা। আমরা শিক্ষার ক্ষেত্রে এখন সেই বিভাগ মানিয়া চলি না। আমরা মানিয়া চলি, বিদ্যার পাশ্চাত্য বিভাগ। পাশ্চাত্য পণ্ডিত সমাজে বিদ্যা দুইভাগে ভাগ করা হয়। এক ভাগের নাম ভদ্রবিদ্যা, আর এক ভাগের নাম বিজ্ঞান। জড় পদার্থবিদ্যা, উদ্ভিদ-বিদ্যা, প্রাণীবিদ্যা এই ইতর শ্রেণীর অন্তর্গত। কাব্য, ব্যাকরণ প্রভৃতি ভদ্রবিদ্যার অন্তর্গত।
- ইতিহাস, ইতিহাসে বাঙ্গালী, ২০২০, প্রান্তিকা, বাংলাদেশ।
- বাঙ্গালীর ইতিহাসের উপাদান-সঙ্কলনের আশায়,—বরেন্দ্রমণ্ডলে ধারাবাহিক রূপে তথ্যানুসন্ধানের আয়োজন করিবার অভিপ্রায়ে,—দীঘাপতিয়ার রাজকুমার শ্রীযুক্ত শরৎকুমার রায় বাহাদুর এম্-এ, [১৯১০ খৃষ্টাব্দে] একটি “বরেন্দ্র-অনুসন্ধান-সমিতি” গঠিত করিয়া, তথ্যানুসন্ধানে ব্যাপৃত হইয়াছেন। তাঁহার অকাতর অর্থব্যয়, অক্লান্ত অধ্যবসায়, এবং প্রশংসনীয় ইতিহাসানুরাগ, অল্পকালের মধ্যেই, অনুসন্ধান-সমিতিকে সকলের নিকট সুপরিচিত করিয়া তুলিয়াছে।
- গৌড়রাজমালা বইয়ের উপক্রমণিকায়, গৌড়রাজমালা- রমাপ্রসাদ চন্দ, অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় সম্পাদিত, প্রকাশক- বরেন্দ্র অনুসন্ধান সমিতি, প্রকাশস্থান- রাজশাহী, প্রকাশসাল- ১৯১২ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৯ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৴৹-৵৹
রমাপ্রসাদ চন্দ সম্পর্কে উক্তি
[সম্পাদনা]- রমাপ্রসাদ চন্দ প্রণীত ‘গৌড়রাজমালা’ আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত প্রণালীতে লিখিত বাংলার প্রথম ইতিহাস হিসেবে ইতিহাসবিদ স্বীকৃত। কবিগুরুও এই বই পড়ে অভিভূত হন।
- মো. সফিকুল ইসলাম, অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়: বাংলার ইতিহাসচর্চার পথিকৃৎ, দ্য ডেইলি স্টার, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৪।
- প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে রমাপ্রসাদ চন্দ একটি স্মরণীয় নাম। জনৈক সাধারণ স্কুলশিক্ষক হইতে অসাধারণ প্রতিভা ও অধ্যবসায়ের বলে তিনি প্রথম শ্রেণীর ঐতিহাসিক গবেষকের সম্মান লাভে সমর্থ হইয়াছিলেন। এদেশে এইরূপ কৃতিত্বের দৃষ্টান্ত বিরল। বাংলা ১৩১৯ সালে (১৯১২ খ্রীষ্টাব্দে) তাঁহার ‘গৌড়রাজমালা’ প্রকাশিত হইলে বাঙালী ঐতিহাসিক সমাজে আলোড়ন উপস্থিত হইয়াছিল। কারণ নিছক শিলালেখ ও তাম্রশাসনের ভিত্তিতে বাঙলাদেশের প্রাচীন ইতিহাস রচনায় তিনিই পথ প্রদর্শন করিলেন।
- দীনেশচন্দ্র সরকার, গৌড়রাজমালা, উইকিসংকলন।
- ছাত্র অবস্থা হইতেই নানা বিষয়ে জ্ঞানলাভের স্পৃহা ও গ্রন্থাদি পাঠের যে অদম্য আগ্রহ তাঁহার ছিল তাহা কোনো দিনই হ্রাস পায় নাই। সুতরাং বেকার অবস্থায় টুইশনি করার অবসরে তিনি নিয়মিতভাবে ইমপেরিয়াল লাইব্রেরিতে (বর্তমান কালের ন্যাশনাল লাইব্রেরি) গিয়া পড়াশুনা করিতেন। তখনকার দিনে তাঁহার বয়সের যুবক বা ছাত্রেরা এই লাইব্রেরিতে বড় একটা যাইত না।
- রমেশচন্দ্র মজুমদার, রমাপ্রসাদ চন্দ রচিত ইতিহাসে বাঙ্গালী (২০২০) বইয়ের মুখবন্ধ অংশে উল্লেখিত।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]উইকিপিডিয়ায় রমাপ্রসাদ চন্দ সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।
উইকিসংকলনে রমাপ্রসাদ চন্দ রচিত অথবা সম্পর্কিত রচনা রয়েছে।