বিষয়বস্তুতে চলুন

হ্রদ

উইকিউক্তি, মুক্ত উক্তি-উদ্ধৃতির সংকলন থেকে

হ্রদ হল একটি প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট, অপেক্ষাকৃত বড় জলের অংশ যা শুষ্ক ভূমি দ্বারা বেষ্টিত একটি অববাহিকায় স্থানান্তরিত হয়। একটি হ্রদের সাধারণত আন্তঃপ্রবাহ বা বহিঃপ্রবাহের প্রবাহের তুলনায় একটি ধীর গতিশীল প্রবাহ থাকে যা এটিকে ভরানো বা নিষ্কাশনের জন্য কাজ করে।

হ্রদ

উক্তি

[সম্পাদনা]
  • আবার আরাবলীর উচ্চ শিখর উল্লঙ্ঘন করিলেন, আবার পর্বতীয় নদী ও প্রস্রবণের বেগ ও মহিমা সন্দর্শন করিলেন, আবার শান্ত নিস্তব্ধ পর্বত হ্রদের শোভা দেখিয়া নরেন্দ্রের হৃদয়ে অতুল আনন্দোদয় হইল। কিছুদিন এইরূপে ভ্রমণ করিয়া নরেন্দ্রনাথ ও যোধপুরের দূতগণ উদয়পুরে উপস্থিত হইলেন।
    • রমেশচন্দ্র দত্ত ,মাধবীকঙ্কণ ,১৯৬০ (পৃ. ৫৮)
  • স্থল ভাগ অপেক্ষা জল তাগ অধিক, অর্থাৎ স্থল এবং জল বিভাগ করিতে হইলে অনুমান দুই ভাগ জল আর স্থল এক ভাগ হইবে। পণ্ডিতেরা জলাশয় সকলের বিশেষ নাম করণ করিয়াছেন, যেমন মহাসাগর, সাগর, উপসাগর, ক্ষুদ্র উপসাগর, অখাত, হ্রদ, মোহানা, নদী, বহুমুখী, উপনদী, শাখানদী, কীলকস্থান, কোল, খাল।
    • অজ্ঞাত ,ভূগোল সার ,১৮৫৩
  • আমরা তাহার সৌন্দর্য্যের ভূয়সী প্রশংসা করিতে করিতে ধীরে ধীরে উজানে যাইতে লাগিলাম। ক্রমে রাইন নদ শৃঙ্খলবদ্ধ সুন্দর হ্রদ-সমুহের ন্যায় বোধ হইতে লাগিল, উভয় পার্শ্বে দ্রাক্ষালতামণ্ডিত দুর্গ-শোভিত পর্ব্বতশ্রেণী শোভা পাইতেছে। সন্ধ্যার সময় বাডন-বাডন নগরে আসিলাম। এই স্থানটি অতি পরিপাটী, উদ্ভিদ্-শোভিত, শৈলবেষ্টিত এবং পর্ষটকদিগের পরম রমণীয়। এখানে কি প্রাতঃ, কি মধ্যাহ্ন, কি রাত্রি, সকল সময়েই প্রকাশ্যরূপে জুয়া খেলা হইয়া থাকে।
    • রমেশচন্দ্র দত্ত ,ইয়ুরোপে তিন বৎসর ,১৮৮৩ (পৃ. ৯০)
  • লিমারিক হইতে আমরা কিলানির প্রকাণ্ড হ্রদ দেখিতে গেলাম। এই হ্রদ আয়ার্লণ্ডের ভূষণ স্বরূপ এবং স্কটলণ্ডের পরম সুন্দর হ্রদের তুল্য। কিয়ৎকাল শকটে ভ্রমণ করিয়া একটা অতি অরণ্যময় উপত্যকার ভিতর দিয়া অশ্বারোহণে ভ্রমণ করিলাম।
    • রমেশচন্দ্র দত্ত ,ইয়ুরোপে তিন বৎসর ,১৮৮৩ (পৃ. ৬৯)
  • নেপালের একটী উন্নত শিখর। গোঁসাইথান নেপালীদের এক প্রধান তীর্থ। গোঁসাইথানের চিরতুষারাবৃত শিখরের নিম্নেই স্তরে স্তরে দ্বাবিংশতিটী তুষার বারিপূর্ণ হ্রদ আছে। এই সকল হ্রদের নিম্নে জিবজিবিয়া পর্ব্বতমালা প্রকার স্বরূপ হইয়া দণ্ডায়মান আছে। এই জিবজিবিয়া দক্ষিনমুখী হইয়া অবশেষে কাঠমণ্ডু উপত্যকার উত্তরে ১৫০০০ ফিট উন্নত মস্তক উত্তোলন করিয়া দণ্ডায়মান রহিয়াছে। গোঁসাইথানের বৃহত্তম হ্রদই নীলকণ্ঠকুণ্ড নামে প্রসিদ্ধ।
   

হইল বিষম রণ, তুলনা না মিলে;
ভীম দুর্য্যোধনে,
ঘোর গদা-রণে,
হ্রদ দ্বৈপায়নে,
তীরস্থ সে রণ-ছায়া পড়িল সলিলে;
ডরাইয়া জল-জীবী জল-জন্তুচয়ে,
সভয়ে মনেতে ভাবিল,
প্রলয়ে বুঝি এ বীরেন্দ্র-দ্বয় এ সৃষ্টি নাশিল!

মাইকেল মধুসূদন দত্ত ,বিবিধ কাব্য ,ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, সজনীকান্ত দাস সম্পাদিত ,১৯৪০ (পৃ.৩৭)
  • রাজপ্রাসাদের চতুর্দ্দিকস্থ সেই সুন্দর হ্রদের নিকটে বহুক্ষণ ভ্রমণ ও তদনন্তর আহারাদি করিয়া আমরা তথা হইতে ষ্টরলিং নগরাভিমুখে যাত্রা করিলাম। আমরা যেখানে যে রূপেই কেন ভ্রমণ করি না, লিনলিথ্‌গো গ্রামের নিস্তব্ধতা, তত্রত্য গণ্ডগিরি, তৃণাচ্ছাদিত ক্ষেত্র, ভগ্নাবশিষ্ট রাজপ্রাসাদ, সুন্দর গির্জা ঘর কখনই বিস্মৃত হইতে পারিব না।
    • রমেশচন্দ্র দত্ত ,ইয়ুরোপে তিন বৎসর ,১৮৮৩ (পৃ. ৩৯)
   

কি ব্যথা তোমার ওহে সৈনিক,
কেন ভ্রম একা ম্রিয়মাণ!
শুকায় শেহালা হ্রদে হ্রদে, পাখী
গাহে না গান।

অজ্ঞাত,তীর্থ-সলিল ,সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত অনূদিত ,১৯০৮ (পৃ. ৯১)
   

হ্রদে তৃষ্ণার জল পাবে কত কাল?
সম্মুখে টানে সমুদ্র উত্তাল:
তুমি কোন্ দলে? জিজ্ঞাসা উদ্দাম:
‘গুণ্ডা’র দলে আজো লেখাও নি নাম?

সুকান্ত ভট্টাচার্য,সুকান্ত সমগ্র ,১৯৫৭ (পৃ. ৭১)
  • ঋত্বিক্গণ আহুতি প্রদান করিতে আরম্ভ করিলে, সর্ব্বপ্রাণিভয়ঙ্কর সর্প সকল হুতাশনে নিপতিত হইতে লাগিল। সর্পগণের বসা ও মেদঃ দ্বারা বহুসংখ্যক হ্রদ হইয়া গেল। তাহাদিগের অনবরত দাহ দ্বারা উৎকট গন্ধ নির্গত হইতে লাগিল। অগ্নিপতিত ও আকাশতি সর্পগণের চীৎকার ও কোলাহল অবিশ্রান্তু শ্রত হইতে লাগিল।
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ,মহাভারত (উপক্রমণিকাভাগ) ,১৮৯৩ (পৃ. ২০৮)
  • এক স্থানে কতকগুলি শশক বাস করিত। ক্ষীণজীবী শশকগণ শত্রুগণের উৎপীড়নে এত জ্বালাতন হইয়াছিল যে, এক দিন, তাহারা একত্র হইয়া, পরামর্শ করিয়া, স্থির করিল, আমাদের প্রাণ রক্ষার কোনও উপায় নাই; অতএব প্রাণ ত্যাগ করাই শ্রেয়ঃ। এই প্রতিজ্ঞা করিয়া, নিকটবর্ত্তী হ্রদে ঝাঁপ দিয়া, প্রাণ ত্যাগ করিবার মানসে, সকলে মিলিয়া তথায় উপস্থিত হইল।
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ,কথামালা ,১৮৭৭ (পৃ. ৪১)
  • মাটির সাতশত ফিট নীচে একটা লোনা হ্রদ আছে, এমন লোনা জল বোধ হয় আর কোথাও নাই। অন্ধকার গুহা, তার মধ্যে ঠাণ্ডা কালো জল কোথাও একটু কিছু শব্দ হইলে চারিদিকে গম্‌গম্ করিয়া প্রতিধ্বনি হইতে থাকে। সেই জলের উপর লোকে যখন নৌকা চালায় তখন জলের ছপ্‌ছপ্ শব্দ চারিদিক হইতে অন্ধকারে ফিস্‌ফিস্ করিতে থাকে—যেন পাতালপুরীর হাজার ভূতে কানে কানে কথা বলে।
    • সুকুমার রায় ,সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী ,পুণ্যলতা চক্রবর্তী, কল্যাণী কার্লেকর সম্পাদিত ,১৯৬০ (পৃ.১৫৯)
  • চতুর্দিকে কেবল বালুকারাশি ও মরুভূমি, তাহার মধ্যে একটি উন্নত পর্বত সেই পর্বতের শিখরের উপর যোধপুব দুর্গ যেন যোদ্ধার কিরীটের ন্যায় শোভা পাইতেছে। পর্বততলে নগর বিস্তৃত রহিয়াছে এবং নগরের ভিতর দুইটি সুন্দর হ্রদ; পূর্বদিকে রানী তলাও ও দক্ষিণ দিকে গোলাপ সাগর। নগরবাসিনী শত শত কামিনী হ্রদ হইতে জল লইতে আসিতেছ হ্রদের পার্শ্বস্থ সুন্দর উদ্যানে শত শত দাড়িম্ববৃক্ষ ফল ধারণ করিয়াছে ও নাগরিকগণ স্বচ্ছন্দচিত্তে সেই উদ্যানে বিচরণ করিতেছে।
    • রমেশচন্দ্র দত্ত ,মাধবীকঙ্কণ ,১৯৬০ (পৃ. ৫৬)
  • মরুর দেশের কথা বলিলাম। এখন মরু সাগরের (Dead Sea) কথা বলিয়া শেষ করি। মরু সাগরটি একটা মাঝারি গোছের হ্রদ-পঞ্চাশ মাইল লম্বা, আট-দশ মাইল চওড়া। কিন্তু তার মধ্যে কোথাও একটি মাছ বা কোনোরকম জলের প্রাণী নাই। সমুদ্রের জলকে শুকাইয়া ঘন করিলে যেরূপ হয়, মরু সাগরের অবস্থা ঠিক সেইরূপ। জল এমন ভারি যে তাহার মধ্যে ডুবিয়া মরিবার ভয় নাই আর এমন লবণাক্ত যে জলে স্নান করিলে সর্বাঙ্গে চাপ বাঁধিয়া নুন জমিতে থাকে।
    • সুকুমার রায় ,সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী ,পুণ্যলতা চক্রবর্তী, কল্যাণী কার্লেকর সম্পাদিত ,১৯৬০ (পৃ.১৮৯)

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]